বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

যুদ্ধ কোনো কবিতা নয়

দু’ একটি বর্ণচোরা অপাংক্তেয় শব্দ…..
আজ হঠাৎ কমরেড হয়ে উঠতে চাইছে…
ওরা এমনই ভয়ংকর যে,
কোনোপ্রকার বুলেট-বোমার ধার ধারে না!
কালবৈশাখী ঝড়ের মতো সত্যকে সত্য বলে
টাইফুনের মতো মিথ্যাকে মিথ্যা বলে!!

অথচ সত্যবাদীকে কেউ কেউ বলে থাকেন
সম্ভবতঃ তাকে পাগলা কুত্তা কামড়াইছে,
তা না হলে এইভাবে কেউ নির্লজ্জের মতো
সত্য বলে!!

অতঃপর….
পর্দার অন্তরালে থেকে মিথ্যাবাদীরা তখন
মুচকি হাসতে হাসতে মঞ্চের দিকে হেঁটে চলে!

একটি কবিতার জন্মের জন্য যদি একটি
যুদ্ধ না হয়
তাহলে সে কবিতা, কতোটা কবিতা হয়??

তবুও আমার মতো নিরীহ, নিভৃতচারী কবি
বলতে চায়….
যুদ্ধ কোনো কবিতা নয়
যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান নয়…নয় নয়!!

কবিতা

তুমি হুইসেল বাজাতে জানো?
নিমেষে খান খান
ভেঙ্গে ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করতে পারো
স্থবির পাথরের জগদ্দল স্তব্ধতা?
একটি আকাশপাতাল জোড়া খাতা খুলে বসে আছি।
অমিয় ঘোরে নিষিক্ত নতুন শব্দ লেখা হোক কিছু
এমন ভাবতে ভাবতে
চুরি হয়ে গেলো ভৈঁরো রাগে বাঁধা বেলীর সুগন্ধ।
বাতাসের কানে কানে রেখে দেই তবে
কিছু নীরবতা।

এই জনমের আগে

resize

শীতের মধ্য রাত
রাতজাগা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দে
ঘুম ভেঙে যায়
মনে পড়ে যায় এই দেশে এই পথে
এসেছিলাম এর আগে
এই জনমের আগে
আরো একবার শতবার কিংবা সহস্রবার।

এই আনাচের ক্ষেত
এই ধুন্দল মটর মশুর ডালের ক্ষেত পেরিয়ে
এই জলাশয়ে জাগ দেয়া পাট শুকানোর ঘ্রাণ নিয়ে
এই গোধুলী সন্ধায় ধোঁয়াটে কুয়াশা চাদরের
মাঠ দেখতে দেখতে
এই বড়াল ব্রীজ চাটমোহর ঈশ্বরদী পেরিয়ে
চলে গেছি সুদূর দিনাজপুরে
দেখা হয়েছিল সেখানে
ক্যাডাভিয়ার সাথে
কথা হয়েছিল তার সাথে, তাহার সাথে
উষ্ণ নিশ্বাস ছেড়ে বলেছিল সে আমারে
এক পৃথিবী ভালোবাসা দিলাম আজ তোমারে।

সেই রাতে ডানা ঝাপটিয়েছিলো এক রাতজাগা পাখি
দেখেছিলাম আমরা মেলে আমাদের চারিটি আঁখি
ভয় পেয়েছিলো সে রাতে আমার ক্যাডাভিয়া
চারিদিকে ছিলো অন্ধকারের বিমূর্ত ছায়া
তাকিয়েছিলো সেই রাতে সে নক্ষত্রের পানে
কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলেছিলো আমার কানে কানে
চলে যেয়ো না কখনো তুমি আমায় ছেড়ে
কেউ যেনো তোমায় নেবে আমার থেকে কেড়ে।

দিয়েছিলাম কথা আমি তারে, তাহারে
যাবো না কখনো আমি তোমায় ছেড়ে
রাখতে পারনি আমি সেই কথা তার, তাহার
তাইতো ফিরে আসি আমি বারেবার
বহু দেশ ঘুরে ঘুরে খুঁজেছি তারে
পাইনিকো দেখা তারে, তাহারে
হয়তো বা কোন এক বলাকার বেশ ধরে
মনে পড়ে যায় এই দেশে এই পথে
এসেছিলাম এর আগে
এই জনমের আগে
আরো একবার শতবার কিংবা সহস্রবার।

মন চোখ

imag

তোমরা যে চোখে দেখছো সবাই
সেই চোখের দেওয়ালে স্বার্থপরের
বারুদ লেগে আছে; আমার নাকে
বারুদের গন্ধ আর হাহাকার চিহ্ন-
মন সাগর ঢেউয়ে- ঢেউয়ে ভাঙ্গছে
চোখের সীমানা পার- তাকেই বলছো
অথৈ সুখের ঠিকানা, মাটির ভাবনায়
ভেবে দেখো কি আর্তনাদ, দোআঁশ?
দুচোখ অন্ধ হলো- কিছুই বোঝবে না
সময়ের মূল্য! সময়ে দেখো মন চোখ।

০৩ কার্তিক ১৪২৯, ১৯ অক্টোবর ’২২

জলভূগোল

তুমি পড়েই যাচ্ছ অক্ষাংশ – দ্রাঘিমাংশ
আর আমি ঘুরছি সুমেরু – কুমেরু
হিম সময়ে মেলে দিয়েছি কাশ্মীরী শালের ওম
অনবরত নাচছে সেথায় ভালোবাসার সবুজদানা

আমার ভূগোল – যাচ্ছে ঢুকে তোমার ভেতর
রোদ পোহাচ্ছে কমলালেবু ঠোঁটের ওপর
নিরক্ষরেখায় হাঁটছি আমি সন্ধ্যা – সকাল
পথগুলো সব হারিয়ে যাচ্ছে ’ম্যাপ’এর ভেতর।

ছড়িয়ে দিয়েছি ভূগোলরেখা শরীরের ওপর
রুক্ষ ঝড়ে ছলছল করে জলাবায়ু অঞ্চল
কুমন্ত্রণা দিচ্ছে জল বদলের এই বায়ুটা
দুজন মানুষ এক হলে, জলের কেন ভূগোল লাগে?

দাস- ইতিহাস

ওই যারা ঘাড় উঁচু সূর্যটা দেখতে গিয়ে
বেমালুম চুর্ করে মালাইচাকিটা,
নাম কাটা যায় তার দৌড়সারিতে
আর পাঁচটা গড়-পড়তা কাঁধে কাঁধ দিতে।

রাজপথের আদত নির্মিতিই যেন
বহমান প্রাণমিছিল উগলে দিতে,
এবং এ সংসার যার সঙ্গে বাধ্যতার কালই কাটায়

সে-ই বা কীভাবে পেরে ওঠে
ঝিম্ মেরে সেঁটে যেতে
চলন্ত রাস্তা- বিপরীতে।

আজ নয় ন্যালাক্ষ্যাপা জামবাটি হাতে।
কিন্তু এতোদিনে কতো কতো ঋণই জমেছে
হাওয়া-মাটি-কাঁটা-এর-তার কাছে
আর তিনি গাছ….
তিনি যদি সত্যি বৈরাগী,
তার চ্যালা তবে নির্মোহ ঘাস।

দান-সাগর ভক্তির তিরতিরে হিমেল আভাস
পরাস্ত সৈনিকের ভ্রুতে ঝ’রে ঝ’রে
নির্বিঘ্নে ফের দেয় চালু করে
হাঁটুমোড়া কুর্ণিশের দাস-ইতিহাস।

তুই চোখের আড়াল, নয় ঠোঁটের আড়াল

3111

তুই চোখের আড়াল হতে পারিস, ঠোঁটের আড়াল নয়,
তোর সাথেই রোজ সকালে বাড়াই প্রণয়,
তুই দূরে কিংবা থাকিস কাছে, তোকে পেলেই যে তৃপ্তি,
এক চুমুকে তোকে গিলি, দেহে ফুরফুরে আলোর দীপ্তি।

তুই হাত ছুঁয়ে থাকিস, থাকিস জিভ ছুঁয়ে,
তোকে টেনে নেই ঠোঁটে মায়াবি এক ফুঁয়ে,
তোকে মনেr ফ্রেমে করেছি বাঁধাই,
তাই তোকে নিয়ে অপূর্ব আসর সাজাই।

তুই আছিস আমার ক্লান্ত বেলায়,
তুই আছিস সদা আড্ডার মেলায়,
তোর ধোঁয়ায় ওড়ে মিহি ঘ্রাণ
তোকেই টানি কাছে যখন বিতৃষ্ণায় প্রাণ করে আনচান।

তুই আমার সারাবেলা এক চিমটি শান্তি
তোকে আঙ্গুল পেঁচিয়ে ধরলেই মুছে যায় ক্লান্তি,
তুই যেন বসন্ত হাওয়া, নাম দিয়ে দিয়েছি সুপেয় জল
তোকে পেতে কাছে সকাল সন্ধ্যা থাকি কপিঞ্জল।

তুই এলেই হাতের মুঠোয় উষ্ণতা নেই ছুঁয়ে
তুই যেন দেহ জমিনে প্রশান্তিই রাখিস রুয়ে,
তুই আমার মন খারাপের সাথী,
তুই যেন আমার চন্দ্রিমা রাতি।

শুষে নেই তোর দেহ আলগোছে, ঠোঁটে
তোকে চুমুকে টানলেই দেহ মনে উচ্ছলতার ফুল ফুটে,
তোর নাম চা, তুই মাথা ব্যথার বড়ি,
তোকে পেতে তো হয় না ব্যয় অথৈ কড়ি।

(স্যামসাং এস নাইন প্লাস, ঢাকা)

আর কিছু হই বা না হই

3109

পরের জন্মে আমি আয়না হবো,
তোমার ঘরের আয়না হবো।
কাজল দেবার ছল্ করে চোখে চোখ রেখে
চুপটি করে দেখবো তোমায়।

আর কিছু হই বা না হই,
পরের জন্মে ঠিকই আমি তোমার কপালে টিপ হবো।
মাতাল ওই ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক হবো।

আর কিছু হই বা না হই,
পরের জন্মে ঠিকই আমি তোমার হবো।
এ জন্মের দুঃখটা পরের জন্মে ঘুচিয়ে দিবো।
পরের জন্মে আমি শুধু তোমার হবো।

আর কিছু হই বা না হই –
তোমার চোখের কাজল হবো, পায়ে পায়েল হবো।
বৃষ্টি সুরে সুরে গান শোনাবো।

আর কিছু হই বা না হই –
তোমার কানের দুল হবো, খোঁপায় গাঁথা বেলি হবো।
বাদল দিনের কদম হবো।
আর কিছু হই বা না হই–
তোমার ঘরের আয়না হবো, অপলকে তোমায় দেখবো।

চোখের তারায় আকাশ আঁকবো।
আর কিছু হই বা না হই –
তোমার নাকের নোলক হবো, শ্বাস প্রশ্বাসে ছোঁয়া পাবো।
এ জন্মের দূরত্বটা এক নিমিষেই ভুলে যাবো।

হাসির পুনর্লিখন

যা কিছু দেখছি তার কোনো শরীর নেই
স্যাঁতসেঁতে রাস্তায় নিজেকে দাঁড় করিয়ে
শাদা রেসের ঘোড়া দেখি-জ্বালানি খেয়ে
ছুটছে বুনো হুইসেল, লাল হলুদ বাতিগুলো

তুমুল স্যাডনেসে হাসা ছাড়া উপায় কী,
নদীপাড়ের তিতপুঁটির মতো লাফাচ্ছি
লজ্জা চেপে, এমন চাবুকের তলে
ম্যানহোলে নেমে পড়া মানুষ প্রচুর ভাত
কুড়োচ্ছে। শরীর কেটেকুটে রোদ বেরোয়-
সহজ অনুবাদে সফল হাসির পুনর্লিখন

সুতীব্র লোশনের ভার প্রচুর গ্রহণ করি
একটা-একটা পশম গুনে-তার ছায়াকণা-
বুক পকেটে বুনো হাতির মৃৎশিল্প সেরে
নিঝুম অন্ধকারের ওধারে গোলাপ ধরি
এসো বন্ধু, অশ্রুবিন্দু চূড়ায় আমরাই রাজা!

মায়ের প্রস্থান নাই

301

মাটির গন্ধে মিশে থাকে
নিবিড়তার সুবাস,
শব যাত্রীরা চলে গেলে-
পড়ে থাকে দীর্ঘশ্বাস!
দূর আকাশে উড়ে যায়
স্বজনের কান্না
চল্লিশ কদমে স্মৃতির সংলাপ
বিশদ বিলাপ-
নিষিক্ত বীণা…
চোখে চোখে মায়ার মন্থন
ডুকরে কাঁদে কন্যারা, পুত্রের বুকে গুপ্ত ক্ষরণ…
অসহায় কণ্ঠ জড়িয়ে আসে
দূর কৈলাসে ভালো নেই হিমাংশুর মন;

আজ বুঝি অবুঝ সবাই।
সান্ত্বনার পরশে-
কাছে এসে নির্বাক আপনজন!
মা চলে গেছে
ছিন্ন করে সমস্ত মায়ার বন্ধন-
কেউ জানবে না-
অন্তরে তার কোন প্রস্থান নাই, বিচ্ছেদ নাই
সংসারে যিনি চিরন্তন ছায়া… আশ্রয় আজীবন …
.

(গত ১৫ই আগষ্ট ছিলো আমার শাশুড়ী আম্মার প্রয়াণ দিবস। উক্ত কবিতাটি মমতাময়ী মা কে নিবেদন করে লেখা। আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসীব করুন )

শেখ রাসেলের কররেখা

ikh-R

বিশ্বের এই অভিযাত্রী আলোয় আরও একজন মানুষের নাম
যুক্ত হতে পারতো বড় গর্বের সাথে। আরও দুটি হাতের
কররেখা দেখে পুলকিত হতে পারতো টুঙ্গিপাড়ার আকাশ।
না- ভুল বললাম,
আলোকিত হতে পারতো এই বাংলার মাটি, বিশ্বে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে থাকা প্রতিটি বাঙালীর রোজনামচার পাতা।

সিলিকন ভ্যালি থেকে পুরো দুনিয়ায় বিচ্ছুরিত হচ্ছে যে
জ্ঞানের জ্যোতি, একজন শেখ রাসেলের চোখ ধারণ করতে
পারতো সেই ঝলক। সেই বিনয়ী চাঁদের সাথে জীবনের
গল্প বলতে বলতে একজন শিশুর জানা হয়ে যেত
মহান একাত্তর, প্রিয় বিজয়ের অমর উপাখ্যান।

পঁচাত্তরের সেই রক্তাক্ত ভোরে, জনক ও মা-ভাই হারিয়ে
আমরা যারা কেঁদেছিলাম- তাদের দাবী একটিই ছিল
এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিচার চাই। চাই এমন এক স্বদেশ,
যেখানে আমরা শোধ করতে পারবো মুজিবের রক্তঋণ।

আজকের এই বাংলায় আমি কোটি তরুণের চোখে
শেখ রাসেলের সেই স্বপ্ন দেখি। দেখি সোনার ফসলে
ভরে যায় যে বাংলাদেশ- সেই জমিনে জমিনে লুকিয়ে থাকে
তাঁর ছায়া। পদ্মা-সুরমা-যমুনার হাওয়ায় ভেসে যাওয়া নিঃশ্বাস।

আপনি সেই নিশ্বাস বহন করে চলেছেন, হে গণমানুষের নেত্রী।
তাঁর কররেখায় আপনি আঁকছেন এই প্রজন্মের জন্য
যে সবুজ সীমারেখা- তার মাঝেই জেগে উঠছে আমাদের
আস্থা ও অস্তিত্ব। জেগে উঠছে জাতির জনকের সেই শাণিত আঙুল।

একটি মহাকাব্য লিখবো বলে

বিমূর্ত এক ঘোর অন্ধকারে
হেঁটেছি আমি পঁয়ত্রিশ বছর ধরে
একটি হৃদয়ের আশ্রয় পাবো বলে
যে হৃদয় এ হৃদয়ের কথা বলে

যে চোখ এ চোখে দৃষ্টি দিলে
বুঝে নেবে কি ব্যাথা এ অশ্রু জলে
এ জল কেন যে জ্বলে পুড়ে জ্বলে
এ হৃদয় কেন যে অন্তর দহনে জ্বলে

দেখেছিলাম তারে আমি এক কবিতার আসরে
দিয়েছিল উকি অযুত প্রেম আধো-আলো আধাঁরে
ফেলে আসা তিন যুগ অন্ধকারে
অংশু জেগেছে নিমগ্ন মধ্য রাত-দুপুরে

দেখেছিলাম সেই রাতে আমি তারে এ মন প্রাণ ভরে
তাকিয়েছিলাম আমি দু চোখে তার তাই বারে বারে
পঁয়ত্রিশ বছরেও আসেনি যে ভালোবাসা
তার সে চাহনিতে ছিল সেই মায়াবী আশা

তুলেছে সে এ হৃদয়ে এক অদ্ভুত ঝড়ো হাওয়া
যে ঝড়ে গেছে উড়ে সব অবহেলা আর না পাওয়া
পঁয়ত্রিশ বছরের প্রেমহীন ক্ষত জ্বালা যন্ত্রণা
গেছে উড়ে নিরবে নিভৃতের অশ্রু ব্যাথা বোবা-কান্না

জেনেছিল কি সে এ হৃদয়ের কথা
বুঝেছিল কি সে চোখের ভাষা

হয়তো তুলেছে ঝড় তার মনে অন্যজন আরেক জন
জানে কি সে তার তরে কাঁদে এ হৃদয় মন সারাক্ষণ

চাই শুধু একটি বার মুখোমুখি বসবার সাথে তার
তিন যুগের কথা আছে যে জমে তার সাথে বলবার

বসবে কি সে একান্ত নিবিড়ে শুধু আমার পাশে!
নীল সমুদ্র যেখানে মিশে গেছে নীল আকাশে!

একটি বার শুধু মেশাবো আমার অশ্রু জল তার অশ্রু জলে
জলে জল মিলিয়ে জ্বলে পুড়ে জ্বলে জ্বলে
একটি অবিনশ্বর মহাকাব্য লিখবো বলে।

আধেক সেই প্রেম তৃঞ্চা

——–আধেক সেই প্রেম তৃঞ্চা

তোমার হাতের অস্থির রেখা!
আমাকে টানেনি কখনও,তাই বোধ হয়
অভিমানে মুছে গেছে সব
প্রেম অধ্যায়গুলো ছানি পোড়া চোখের মতো
আঁড়ালে রয়ে গেল; সদলবলে।

প্রেম কি আলো হারা সাঁঝ?
জোনাক আশ্রয়ে বাঁচে; ঠিক দাঁড়িয়ে থাকে
তারকার রোশনাই ক্ষয়ে।

সদ্য লজ্জাবতী ছুঁয়ে
যে ফড়িং ডানা মেলে হা্ওয়ায়
তাকে তুমিই খুঁজে ফিরো জীবন ভর;
আধেক সেই প্রেম তৃঞ্চা।
======

সিজোফ্রেনিয়া

হাত রেখে দিয়েছি, ডিপ ফ্রিজে। বরফের মতো
আপন কিছুই নেই জেনে, ভুলে যেতে চাইছি
বিগত বিষণ্ণতা। ভোর আমার দরজার প্রহরী
ছিল বহুকাল- লিখছি এমন ঘটনার উপসংহারপর্ব।

দেখছি, মৃত মানুষগুলো হয়ে উঠছে আমার বন্ধু
আর জীবিতেরা চোখে কালো কাপড় বেঁধে
কেবল গাইছে আদিম হিংস্রতার গান।
আগুন পুড়ছে ঝরণা বুকে নিয়ে। ভালোবাসা-
বলে যে জগতে কোনো গ্রহ ছিল না- সেই
জাগতিক ব্যাসার্ধে ঝুলে থাকছে কয়েকটি হুইস্কিসন্ধ্যা।

কুসুমপুরের কুসুমগুলো, আর ঝরবে না বলে
করছে প্রতিজ্ঞা। ঝরায় বীরত্ব নেই- ঘোষণা দিয়ে
মেঘ, আকাশেই জন্ম দিচ্ছে পাথরপ্রজন্ম।

একাকী

83e644a4-be23-45cd-a02e-f0f4f3eaeeda_lg একাকী

সবুজ আকাশটা কেমন জানি
নীল- নীল লাগছে-কাল মেঘে
ধুয়ে যাচ্ছে বন্ধু হারানো শোক;
বৃষ্টির গায়ে দুঃখ কষ্ট নেই- নিরবধি
হাত ছুঁয়া মাটির ঘরে শুধু একাকী।
হয় তো অপেক্ষা করছে প্রিয় বন্ধু
কিছু ঋণের পরিশোধ চাওয়া পাওয়া,
ভাবিস না- অন্ত ক্ষরণ বয়ে যাচ্ছে
তোর খুব কাছাকাছি- আগের মতো
দুষ্টমি আনন্দ আড্ডা হবে না- জানি!
শুধু দেখে যাবো দুজনা-আকাশ মাটি-
এই ভেবেই যাচ্ছি,কবে হবো একাকী।

২৯ আশ্বিন ১৪২৯, ১৪ অক্টোবর ’২২