নূপুর, ঘুঙুর ইত্যাদি

নূপুর, ঘুঙুর ইত্যাদি

আমার মা আর বোন এখনো বিশ্বাস করে
আমার চাচা আসলে মারা যাননি
যেমন যুদ্ধ থেকে না ফেরা বাবার লাশটাও
আদতে তার লাশ ছিল না।

প্রতিবার বলতে বাধ্য হয়েছি, এরা নাবালক
প্রতিবারই আমাদের শিঙ্গারদানীর নীচে
একটা দাড়িওয়ালা ছাগল হেসে উঠতো খুকখুক করে
আর আয়নায় তখন দেখতাম দু’টো লাশের অবয়ব।

আমার মা আর খালার মধ্যে তখনো গলা জড়াজড়ি ভাব
খালার ছোট্ট ফুল ফুল ছেলেটাকে কফিনে শোয়ানোর পর
মা জানিয়ে দিলো, ও আসলে মরে গেছে
খালা বেহুদাই মাকে ধরে একটু কেঁদে পালিয়ে গেল।

দেশে সেবার মরমর দুর্ভিক্ষ
আমাদের সবগুলো আয়না ভেঙে খানখান
জুয়েলারী দোকানে মানুষ নাকি গয়না জমা দিতে ঢুকতো
সেদিকে তাকিয়ে মা বললো, এই বেজন্মাগুলো মরে না কেন?

ততদিনে আমাদের শিঙ্গারদানী বিক্রি হয়ে গেছে খাদ্যাভাবে
এ যাত্রা আর ছাগলদাড়ির হাসি বা কান্না কিছুই শুনতে হলো না।

1 thought on “নূপুর, ঘুঙুর ইত্যাদি

  1. নির্মম এই বাস্তব জীবনের প্রতিবিম্ব উঠে এসেছে লিখায়।
    শব্দানুভূতির দহন অনুভব করলাম বন্ধু তুবা।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।