বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা নিয়ে কিছু খসড়া আলাপ

29.12.24-7বিএনপিই এখন সারাদেশে নিয়ন্ত্রণ করছে। এর জন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু তাদের ক্ষমতা দরকার। রাজনৈতিক দল ক্ষমতা চাইবে এটা তারা চাইতে পারে কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিকালীন সময় এই আলটিমেটাম যদিও ইউনুস স্যারের ডিসেম্বর থেকে জুন থিউরির বাইরে নয়, তবু আটনেটাম না দিয়ে সময়ের প্রয়োজনীয়তার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে পারত।

বিএনপির এই চাওয়া, এটা সবায় চায়। কিন্তু ইউনুস স্যার কোন জবাবদিহিতা দিতে প্রস্তুত নয় বলে মনে হইতাছে। এটা তার ভাবমূর্তি অনেক খারাপ করবে। তার ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে যা করতে হবে বলে অনেকে মনে করছেন-

* জুলাই হত্যার বিচারের কাজ কতদিনে দৃশ্যমান হবে তার সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে।
* সংস্কারের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখনই দিতে হবে।
* নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করতে হবে।

ছাত্র জনতার দলকে রাজনৈতিক ভাবে জাতির কাছে হেয় করেছে এই সরকার।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এই সরকার নিজের উপর তার দায়িত্ব নিয়েছে। ভেবেছে সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে আসবে এই ঘোষণা। সকলকে একমত করা এইদেশে অসম্ভব, ইউনুস স্যারের তেমন নেতৃত্বগুন নেই যাতে করে সকলকে একত্রিত করে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে। এটা আলাদা গুন যা এই সরকারের নাই। তবু তারা এই দায়িত্ব নিজেরা নিয়েছে।

সরকার দিতে পারবে না। এনসিপিসহ সমমনা দলগুলো একত্রিত হয়ে এই ঘোষণা দিতে হবে এবং বলতে হবে এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করাই তাদের রাজনীতি। এই সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা সরকার। আর যাই হোক জুলাই ঘোষণা ঐক্যমতের ভিত্তিতে হওয়ার সম্ভাবনা কম, একেবারেই সম্ভাবনা নেই বলতে হবে। এটা এই সিদ্ধান্তহীনতা ভোগা সরকারের কাছে সময় ক্ষেপন করার কোন প্রয়োজন নেই বলে কেউ কেউ মত দেন।

পড়তে থাকুন জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা নিয়ে কিছু খসড়া আলাপ

আমাকে বাচ্চা বলবেন না আংকেল

FB_IMG_1748020841411ইশরাক কেন মেয়র হিসাবে শপথ নিতে হবে? তিনিতো বিএনপির লোক, বিএনপির ব্যাপক সমর্থন আছে দেশব্যাপী। পাড়া মহল্লা থেকে কোর্ট পর্যন্ত তাদের বিশাল প্রভাব এখন।

আলোচিত এই মামলায় কি বিচারককে সরাসরি হুমকি দেয়া হয় নাই? এই কারণে আইনজীবী ফোরামের প্রভাবশালী নেতা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রর্থনা করেন নাই?

এটাতো প্রকাশ্য বিষয়। অন্তরালে কি ঘটে তার কিছু অনুমান করা যায়, প্রকাশ্য ঘটনা বিশ্লেষণ করলে।

কেন জনাব ইশরাককে মেয়াদ উত্তির্ন মেয়রের পদ দখল করতে হবে? বিএনপি কেন এখানে নির্বাচন চায় না? কয়েকটি সিটি কর্পোরেশনের ইলেকশন হোক, এটা সাধারণত বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য। কিন্তু বিএনপি এটা চায় না। তারা এমন নির্বাচন নির্বাচন উচ্চারণ করছে যার প্রতিধ্বনি হয়ে আমাদের কানে আসছে, যেখানে ক্ষমতা নিশ্চিত সেখানে নির্বাচন দাও।
ক্ষমতায় এলে সব স্থানীয় প্রসাশনের নির্বাচন হবে দলীয় সরকারের আওতায়। বাস, সেই পুরাতন চিত্র।

এনসিপি দলটাতো দলই হয়ে উঠতে পারল না। চারদিকে এত মুত আর থুতুর বন্যা আর তুচ্ছতাচ্ছিল্য এতটা ব্যাপক যে, ওরা কথা বললেই বেয়াদব মনে হয়। তারপর আছে দুর্নীতিপ্রবন জনগোষ্ঠী যারা নানা ধরণের প্রস্তাব নিয়ে আসে এইসব কাচা বয়সের ছেলেদের কাছে, হয়ত বড় ধরনের ভুলই তারা করেছে। তাই  এখন পস্তাতে হচ্ছে কিন্তু ওদের বাচ্চা বলবেন না।  তারা কার্টুন চরিত্র শিবা’র মত বলে উঠবে – আমাকে বাচ্চা বলবেন না আংকেল। এনসিপি, এনসিপি আমার নাম, আমি আপনার সব অন্যায়ের পথকে ভেঙে দিতে এসেছি। ভালো হয়ে যান না, না হয় পস্তাতে হবে!!!!

পড়তে থাকুন আমাকে বাচ্চা বলবেন না আংকেল

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি কিছু প্রস্তাবনা

FB_IMG_1743394380296

 

আমাদের প্রফেসর ইউনুসকে প্রয়োজন, যেন তিনি আগামি নির্বাচন পর্যন্ত দেশের পথনির্দেশক হিসেবে থাকেন, তিনি জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের ঐক্যের প্রতীক –

#এখন পর্যন্ত যে সংস্কার পরিকল্পনা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে আগামি সরকারের হাতে ক্ষমতা শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করে যেতে পারেন ।

#যদি সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারগুলো অর্জিত না হয়, তবে একটা গন অভ্যুথানে ২০০০ মানুষের আত্মত্যাগের ন্যূনতম ফলও আসবে না এবং দেশ স্থিতিশীল হবে না। দেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না, বেকার সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।

**বিএনপি ছাড়া সংস্কারে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে ঐক্য হয়েছে তা প্রকাশ করতে হবে।

** সংস্কার কমিশন যা যা প্রস্তাব করেছিল তা পুস্তক আকারে প্রকাশ করতে হবে যাতে করে কোন রাজনৈতিক দল তাদের মুল এজেন্ডা হিসাবে ঘোষণা করতে পারে।

** বিএনপি সহ যে সকল বিষয় একমত হয়েছে তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

** কেউ চাক বা না চাক অবশ্যই রাজনৈতিক খুন, গুম, প্রকাশ্যে হত্যাসহ, বিশেষে করে এবং চিহ্নিত করে জুলাই বিপ্লবের সময়কার হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হুকুমদাতা ইত্যাদির বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি হতে হবে।

** সংস্কার ও বিচারের নামে কোন কালক্ষেপন করা যাবে না।

** তারপর নির্বাচন। তবে যেহেতু বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলে একটা আলটিমেটাম দিয়ে দিয়েছে তাই ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে সুবিধাজনক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের একটা সুনির্দিষ্ট টার্গেটেড সময় ঘোষণা করতে হবে।

** কয়েকটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করে নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমানিত হওয়ার পর স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭১ এর গণহত্যা ও জামায়াতে ইসলামী

আজ অনেক দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এই পোস্ট দিলাম। জানি আমি কোন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই। আমার মত একজন সাধারণ আম জনতার মতামতের কোন মূল্য নেই। তবু মত প্রকাশের এই সুবর্ণের দিনে নিজের মতামত দিলাম।

জামাতের বর্তমান আমীর ডা. শফীকুর রহমানের বক্তব্যে একথা স্পষ্ট যে, ৭১ তার দলের কেউ কোন অপরাধ করে থাকলে তাদের বিচার করা হোক। তিনি মনে করেন জামাতের যেসব নেতাদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তা ‘বিচারক গণহত্যা ‘। এবং তিনি বলেন ৭১ এ জামাতে ইসলামি পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছে কারণ তারা মনে করেছে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তান ভেঙে দেওয়ায় ষড়যন্ত্র। তারা পাকিস্তানকে অখণ্ড রাখতে এই স্ট্যান্ড নিয়েছিল। এবং এটা তারা করেছেন ইসলামের নামে।

স্বীকার করতে দ্বিধা কোথায় যে, আমরা অনেকেই ইসলামকে নিজেদের আদর্শ হিসাবে জানি এবং পালন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। আজ একথা বলতে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হইতাছে যে, অখণ্ড পাকিস্তানের জন্য ইসলামের নামে যে কয়টি রাজনৈতিক দলই পাকিস্তান আর্মিকে সমর্থন, সহযোগিতা করেছে তারা অনৈসলামিক কাজ করছিল।

পাকিস্তান আর্মি গণহত্যা চালাইতেছিল, এ দেশের নারীদের উপর যৌননিপীড়ন চালাইতেছিল। আর ইসলামের নামে তাদেরকে সহযোগিতা করছিল অনেকগুলো ইসলামি দলের সাথে জামাতে ইসলামি।

ইসলামের কোন দৃষ্টিকোণ থেকে এটা বৈধ!!! পাকিস্তান আর্মি ইসলাম প্রচারের যুদ্ধে লিপ্ত ছিল না। তারা জাতীয়তাবাদী চেতনায় নিজ দেশে অখণ্ডতা বজায় রাখতে দেশের এক অংশে (পুর্ব পাকিস্তান) ব্যাপক জুলুম হত্যা যৌন নির্যাতনের করছিল। পাকিস্তানিরা কোন অবস্থায়ই ইসলামের জন্য যুদ্ধ করে নাই আর এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা কোন অবস্থায় ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় নাই। মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল। এদেশ থেকে ইসলামকে মুছে দিতে হবে এই লক্ষ্যে কেউ যুদ্ধ করেনি কিম্বা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয় নি। শুধু জামাতসহ কিছু রাজনৈতিক দল ইসলামের নামে পাকিস্তান আর্মিকে সমর্থন ও প্রকাশ্য সহযোগিতা করেছিল।

জাতীয়তাবাদী চেডনায় সংঘটিত যুদ্ধে জুলুম-নির্যাতন-হত্যা-যৌন নিপীড়নকে সমর্থন ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করতে ইসলামের নাম ব্যবহার করে শুধু বাংলাদেশি জাতীয় চেতনায় নয় ইসলামের নামেও কলঙ্ক লেপে দিয়েছে।

যৌবনের শুরুতে শিবিরের ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পরতে যাওয়া অবস্থায় যে কারণে শিবিরে আর কন্টিনিউ করিনি, সেই একই কারণে আজ শেষ বয়সে এসে মুক্ত পরিবেশেও জামাতকে সমর্থন করতে পারছি না।

যদি এব্যাপারে তারা সুস্পষ্ট ভাবে ভুল স্বীকার না করে, জাতির কাছে ক্ষমা না চায় তবে আমি মনে করি তারা যতই ইসলামের জন্য কাজ করে কিম্বা দেশের জন্য কাজ করে তারা সমর্থনযোগ্য নয়।

নারীর শ্রেষ্ঠত্ব

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

পৃথিবীর সব দেশেই অপরাধীদের মধ্যে পরিসংখ্যানে নারীদের চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। চুরি ডাকাতি খুনের মতো যাবতীয় সাধারণ অপরাধের খতিয়ান দেখলে পুরুষ অপরাধীদের তুলনায় নারী অপরাধীর সংখ্যা নগণ্য। চুরি, জালিয়াতি করলেও নারী ডাকাত দল তেমন শোনা যায় না। ব্যতিক্রমী কিছু দস্যুরানী পুরুষ ডাকাত দলে পুরুষদের খুন ধর্ষণের ঢালাও অনুমতি দেওয়ার বিনিময়েই ক্ষমতা ভোগ করে থাকে। অবশ্য ড্রাগ পাচার ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মেয়েরা হামেশাই ব্যবহৃত হয় যা মুলত পুরুষরাই নিয়ন্ত্রণ করে।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

আমাদের দেশে থানায় ডায়রি থেকে মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের চিত্র থাকলেও পুরুষের তুলনায় নারী অপরাধীর অনুপাতের কোনও রেকর্ড নেই। যা আছে তা হল বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মহিলার কীর্তিকলাপের বর্ণনা ও তাদের নিয়ে কাহিনী। অন্যদিকে আমেরিকান ও ইওরোপীয় দেশগুলোতে অপরাধের লিঙ্গ ভিত্তিক পরিসংখ্যান যথেষ্ট বিশদে রাখা হয়। যার থেকে অপরাধ জগতে নারীর ভূমিকা কতটা তার একটা ছবি পাওয়া যায়। যেমন ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে নিক্ষিপ্ত আসামীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা (৫,০৩৭,০০০) মহিলাদের (৫৮১,০০০) তুলনায় ৯ গুণেরও বেশি ছিল।

২০১৪ সালে অসামাজিক কাজের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া মানুষের ৭৩% ছিল পুরুষ। এর মধ্যে হিংসাত্মক অপরাধের জন্য ধরা পড়া পুরুষের সংখ্যা ৮০.৪% এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ৬২.৯%। United States Department of Justice ১৯৮০ থেকে ২০০৮-এর মধ্যে খুনের একটা পরিসংখ্যান একত্রিত করে দেখা যায় – মোট অপরাধের ৯০.৫% করেছে পুরুষ বা ছেলেরা। অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!
…….

২০০২ সালে কানাডায় বার্ষিক মোট অপরাধী চিহ্নিত মানুষের মধ্যে পরিণত পুরুষ ৩,২৬,৫৩৬ জন, পরিণত মহিলা ৭১,০৫৮ জন, অপরিণত ছেলে ৭৪,৫১৩ জন এবং অপরিণত মেয়ের সংখ্যা ২৪,৪৮৭ জন। দেখা যাচ্ছে ছেলেরা অপরিণত বয়সেও মেয়েদের তুলনায় এমনকি পরিণত নারীর তুলনাতেও অপরাধে চাম্পিয়ান।
অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

পুরুষালি হিংস্রতার পেছনে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের (testosterone) ভূমিকা সংক্রান্ত প্রথম তত্ত্ব Challenge hypothesis অনুযায়ী- বয়ঃসন্ধিক্ষণে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ বৃদ্ধির ফলেই জননক্ষমতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভাব বেড়ে যায় যা আগ্রাসী আচরণের অন্যতম কারণ। বাস্তবে জেলে হিংস্র অপরাধীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে রক্তে টেস্টোস্টেরণের মাত্রা ও হিংস্রতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক প্রমাণ হয়েছে।

Merton’s theory of anomie অনুযায়ী নারীদের অপরাধ প্রবণতার পেছনে অনেক সময় তার মধ্যে পুরুষালি ভাবকে দায়ী মনে করা হয়। যেসব মেয়েরা সমাজ নির্ধারিত মেয়েলি ভূমিকা প্রত্যাখ্যান করে ‘টম বয়’ গোছের হয় তাদের মধ্যে অন্যান্য সাধারণ মেয়েদের তুলনায় অপরাধ প্রবণতা বেশি। একটু ডানপিটে ও স্বাধীনচেতা মেয়ে হলেই সে নিষ্ঠুর ও অপরাধী মনোবৃত্তির হবে এমন নয়। কিন্তু আগ্রাসী মনোভাব, অপরাধ ও হিংসার সাথে কোনওভাবে বিজ্ঞানীরা পুরুষালী বৈশিষ্ট্যের বিশেষত পুরুষ হরমোনের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। যেমন টেস্টোস্টেরন এই পুরুষ হরমোনটি নারী দেহেও কাম ও অন্যান্য উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

পুরুষদের মাঝে টেস্টোস্টেরন বিপাক হার নারীদের তুলনায় ২০ গুণ বেশি।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!৷
………

পৃথিবীর সকল নারীকেই প্রাকৃতিক একটি পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমাদের মা-খালারাও উঠতি বয়সে মাসিক বা ঋতুচক্রের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। একজন নারীকে ভবিষ্যতে সন্তানসম্ভবা হতে শারীরিকভাবে প্রস্তুত করে এই মাসিক প্রক্রিয়া। বাড়ন্ত কিশোরীর শরীরে মা হবার প্রক্রিয়া একেবারে প্রকৃতিভাবে যুক্ত করে দিয়েছে।

একজন কিশোরীর জন্য এটি প্রথম সংকেত যা বলে দেয় যে সে তার বাড়ন্ত কৈশোরে পা রাখতে যাচ্ছে। প্রতি মাসে ডিম্বাশয় একটি ডিম্বাণু উৎপাদন করে। সবচেয়ে পরিপক্ক বা পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণুটি ডিম্বনালির মধ্য দিয়ে জরায়ুতে চলে যায়। জরায়ু হচ্ছে দেহের এমন একটি অংশ যেখানে শিশু সুরক্ষিত থাকে ও প্রতিনিয়ত পুষ্টি পায়। যখন ডিম্বাণু পরিপক্ক হয় তখন শরীর জরায়ুতে রাসায়নিক সংকেত পাঠায়। ফলে জরায়ুর ভিতরের অংশ পুরু হয়ে ওঠে। ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্বাণু বেরিয়ে এসে ডিম্বনালীতে অবস্থান নেয়। এই পুরো প্রক্রিয়াকে বলে হয় ডিম্বাণু উৎপাদন প্রক্রিয়া।

ডিম্বানুটি শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত হলে গর্ভসঞ্চার হয়। গর্ভবতী অবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণুটি ডিম্বনালীর মধ্য দিয়ে জরায়ুতে আসে। ৬ দিনের মধ্যে নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুতে সৃষ্ট নরম, পুরু আবরণের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। আর যদি গর্ভবতী না হয়, তাহলে অনিষিক্ত ডিম্বাণুটি নষ্ট হয়ে যায়। জরায়ুর ভেতরে কোন শিশু জন্ম না নেওয়ায় নরম ও পুরু আবরণটিও ভেঙে যায়; শরীর থেকে রক্তের আকারে বের হয়ে আসে। এভাবেই মাসিকের শুরু হয়। প্রকৃতি একজন নারীকে মাসের সাত দিন (কম বেশি হতে পারে) অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ সময় জননী হওয়ার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাখে। যেখানে পুরুষ প্রকৃতিগতভাবে বেশি অপরাধ প্রবণতায় যুক্ত।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!৷

এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কে আমার উত্তম আচরণ পাওয়ার বেশি হকদার?’ তিনি বললেন ‘তোমার মা’; সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা’; সে আবারও বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা’। সে পুনরায় বলল, ‘এরপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার পিতা’। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, ‘জান্নাত মায়ের পদতলে’। (মুসলিম)৷

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!!

সিনায় সিনায় জিকির উঠে নির্বাচন নির্বাচন

Civil_Rights_March_on_Washington,_D.C._(Leaders_of_the_march_posing_in_front_of_the_statue_of_Abraham_Lincoln..._-_NARA_-_542063_(cropped)

১.
এমনভাবে বলা হয়ে থাকে যেন নির্বাচন ব্যবস্থা সাম্যবাদী। ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সমান চোখে দেখে। চরিত্রের বিবেচনায় তাই নির্বাচনকে সমাজতান্ত্রিক বলেও চিহ্নিত করা যায় বৈকি! একথা সত্যি বটে নির্বাচন সকলের জন্য, তাত্ত্বিকভাবে ধনী গরীব আলাদা করে না। এক্ষেত্রে নির্বাচনকে শ্রেণি নিরপেক্ষ বলা যেতেই পারে। কিন্তু রাষ্ট্র কাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা নিরপেক্ষ নয়।

২.
রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচন বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণাগুলো আমরা সবাই দেখছি। একটা বিশেষ দল রাজনৈতিক ক্ষমতায় এলেই সব সমস্যার সমাধান। সব জায়গাই বলেছে, নির্বাচনে থাকুন। বেশি বেশি করে স্মরন করে দিতাছে আপনারা এখন যারা দেশ পরিচালনা করছেন তারা সব অনির্বাচিত। বলে দিয়েছেন নেতা প্রতিদিনই স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে। জনগনকে বলছে, নির্বাচন নির্বাচন করুন। যাদের শুনার ক্ষমতা আছে তারা শুনতে পারছে- জনগণের এক অংশ তাদের বলছে প্রোটিন-জাতীয় খাবার আর ফল-মূল ও শাক-সবজি খান। মানে এগুলো খেলে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। শরীরের প্রতিরোধের কাছে ধরাশায়ী হবে রোগশোক। তবে কি তারা অসুস্থ! তবে কি তারা করোনায় আক্রান্ত! জনগণের এই অংশ কি নির্বাচন আকাঙ্খা কারীদের ঘরে অবস্থান করতে আহ্বান করছে!

কিন্তু প্রোটিনের উৎস মাছ-মাংস-ডিম-দুধ-বাদাম। দামী খাবার। উচ্চবিত্তের খাবার। ধরে নিচ্ছি, নিম্ন-মধ্যবিত্তরাও মোটামুটি প্রোটিনের ব্যবস্থা করতে পারলো। কিন্তু গরীবের উপায় কী? গরীবদের শুধু ডাল। ডালে প্রোটিন আছে। তা বটে! মোটা চালের ভাত আর ডাল। ডালই শেষ আশ্রয়।

গরীবের টাকা নেই। সিস্টেম মতো সন্তানের জন্য উচ্চশিক্ষা নেই; ভালো চাকরী নেই; বড় চাকরী নেই, বড় বেতন নেই। ভালো বাসস্থান নেই এবং ডাল ছাড়া পুষ্টিকর খাবার নেই; রোগ-বালাইয়ের শেষ নেই; বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। তাতো যাবেই। তাইতো?

গরীব নির্বাচন খাবে! গরীবের দরিদ্রতা নিরসনে নির্বাচনের আর ক্ষমতাই কতটা?
গরীব ধরাশায়ী।

৩.
রাষ্ট্রের বড় মাথা। বড় ভাবনা। নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্টযন্ত্র দখল করে নিবে বড় বড় ব্যবসায়ীরা। সংসদের ভিতর কতজন বণিক শ্রেণীর জানা আছে তো? তাই বড় মাথায় বড় বড় বণিকের কথা থাকে। তাদের জন্য প্রণোদনা আসে। ডুবে যাওয়া লঞ্চকে টেনে তুলতে যায় উদ্ধারকারী জাহাজ। আর শিল্পপতিদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ।

এসব প্রণোদনার অর্থ আসে কোত্থেকে? বাণিজ্যের পেছনে ঢেলে দেয়া হয় রাষ্ট্রের কোষাগারে থাকা কৃষক-কামার-কুমার-তাঁতি-জেলের অর্থ, বিদেশের মাটিতে কামলা খাটা গণমানুষের পাঠানো রেমিট্যান্স অপমান আর ঘাম থেকে। নির্বাচিত সাংসদরা আর বণিকেরা লাভ গুলো গচ্ছিত রাখে নিজেদের একাউন্টে। আর লোকসানের ভারটুকু চাপিয়ে দেয় জনতার কাঁধে।

এভাবে চক্করে পরে গরীব হয় প্রতারিত। নির্বাচন নির্বাচন মহামারির এই দিনে মুক্তিকামী গরীব শ্রেণী নাভিশ্বাস উঠে মরছে। কিন্তু রাষ্ট্রের মগজে নির্বাচন ব্যবসায়ীদের দখলে। তারা লুটপাটে মেতে উঠেছে!

৪.
এই দুর্দিনে কীভাবে চলে কৃষক-শ্রমিক-কুলি-মজুর-তাঁতি-জেলে-কুমার-দেহপসারিনী-গৃহপরিচারিকাদের সংসার? উবার-পাঠাও চালিয়ে, টিউশনি করে, কাপড় আয়রন করার দোকান দিয়ে, পার্ট-টাইম সেলসম্যান এর কাজ করে যারা চলতো, কী করে চলছে তাদের?

বহু মধ্যবিত্তের জীবনও প্রকাশ করতে না পাড়ার বোবা কান্নায় নীরব হাহাকার। একেবারে গরীবের তো মাথা ঢাকলে পা উদাম। কাজ নেই। আয়-রোজগার নেই। সঞ্চয়ও কারো শেষ, কারো বা তলানিতে। প্রায় ছয় কোটি মানুষ দিনে ১০০ টাকা আয়ে চলে! এরা কি সত্যি চলে?

The Prime Minister, Shri Narendra Modi meeting the Prime Minister of Bangladesh, Ms. Sheikh Hasina, on the sidelines of the 4th BIMSTEC Summit, in Kathmandu, Nepal on August 30, 2018.
The Prime Minister, Shri Narendra Modi meeting the Prime Minister of Bangladesh, Ms. Sheikh Hasina, on the sidelines of the 4th BIMSTEC Summit, in Kathmandu, Nepal on August 30, 2018.

৫.
প্রতিদিন একজনকে দেখতাম উন্নয়নের নানা তথ্য নিয়ে আসতো। মিডিয়াগুলো উন্নয়ন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত নারী-পুরুষের অনুপাত জানিয়ে দেয় কি? মিডিয়া বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানও রসিয়ে রসিয়ে বলেন যেন কত সুখকর কাহিনী বলে যাচ্ছেন। আমার তো মাঝে মাঝে এক বয়োবৃদ্ধ অর্থমন্ত্রীর মতো বলতে ইচ্ছা করতো-রাবিশ। আপনারা কি ভাবেন? যা খুশি ভাবুন। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন ভাইরাসে আক্রান্তদের শ্রেণি-পরিচয় জানতে পান কি?

আমরা খবর পাই উন্নয়ন মন্ত্রের দখল নিতে নির্বাচন নির্বাচন জপ করা অধিকাংশই অভিজাত শ্রেণির বাসিন্দা। শুনতে পেয়েছিলাম, তখন বেদনাক্রান্ত হয়ে শুনতে পাই পাশ্ববর্তী দেশগুলো থেকে থেকে এয়ার এম্বুলেন্সে ডজন খানিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এনেও বাঁচানোই যায়নি না রাজনৈতিক অভিজাতদের।

ব্যাস হয়ে গেল! কথা কি এখানে শেষ?

ধনী অভিজাতদের চিকিৎসার সুযোগ ও সামর্থ্য বেশি। তারা বিদেশে চলে যায় চিকিৎসা করাতে। কিন্তু গরীবের মধ্যেও যারা একেবারে গরীব, অজপাড়াগাঁ, দুর্গম চর বা হাওরাঞ্চলে যারা থাকে অথবা মফস্বলে ও উপজেলা অঞ্চলে যে গরীব জনগোষ্ঠী আছে, চিকিৎসার সামান্যতম সুযোগ না থাকায় তারা যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাই করাতে পারছে না, বেহুদা মরে যাচ্ছে বেখবরে তার তদন্ত বা পরিসংখ্যান হাসিমুখে বর্ণনা করে কি কোন অভিজাত নির্বাচন প্রত্যাশী জনতার কন্ঠস্বরের দাবীদারেরা?
করে না। তারা জনগনের মাঝেও এটা ছড়িয়ে দিতে পারছে নির্বাচনই সমাধান।

৬.
রাজনীতির কর্ণধার আর সরকারি কর্তাদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা এসেছে। এইতো মাত্র একটি নির্বাচন। দামী প্রাণ ওদের। সরকারতো ওদেরই, লাগে টাকা দেবে করদাতাগণ।
হায়! বেসরকারি প্রাণ। আহা! আধমরা হয়ে কেবল বেঁচে থাকা। মুড়ি -মুড়কির চেয়েও সস্তা। উন্নয়ন উন্নয়ন, ধনতন্ত্রের উৎসবের অকাতরে বলি হয় এইসব প্রাণ।

দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার আদলে রূপান্তরের রূপকথার গল্প চলছে হরদম।
FB_IMG_1743206802817

৭.
উন্নয়ন বহু যুগ উপর থেকে নিচে চুঁইয়েছে, এবার নিচ থেকে উপরে যাবার বন্দোবস্ত করে দেখুন। লুটপাটের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনীতিকে নিয়ে আসি নিয়ন্ত্রণে। জবাবদিহিতা করি নিশ্চিত আর ক্ষমতা পারিবারিক বলয়ে আটকে না রেখে উন্মুক্ত করে দেই গণতান্ত্রিক ধারায়। যার যোগ্যতা আছে দেশকে কিছু দেবার, তাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসি। গাছের শেকড় থেকে যেভাবে কাণ্ড ও পাতায় যায় প্রাণ রস, সেইভাবে উন্নয়নকেও চালনা করুন। এই আহ্বান জানিয়ে লেখাটি শেষ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি জানি এভাবে হয় না কিছুই। অধিকার কেউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়।

কোথায় সেই প্রচেষ্টা?

কষ্ট

নিয়ে কষ্ট ঝোলা, ডাকে ফেরিয়লা-পুব রাস্তা ধারে
বসে বসে ভাবি, আছে অভাবী আজব এ সংসারে
কষ্ট কিনতে চায়! চুপি চুপি সুধায়- “এসো ভাই
ফুরিয়ে গেছে সব কষ্টের কলোরব কষ্ট নাই?”
ছেলে মেয়েরা, গুটিয়ে বই পড়া বারবার চায়
তাদের কষ্ট চাই, উপায় নাই- কষ্টরা কোথায়!
এসব হবে নাকি? গিয়ে দেখি কষ্টের ফেরিয়লা
এনেছে এমন এতো আয়োজন ডাকে মনভোলা!

নানান কষ্ট লাল নীল নষ্ট দেখতে পেয়ে ভাবি
চাপা ঘাসে সাদা আনে একগাদা- আসল এ সবি?
ফেরিয়লার ঝোলা হলে খোলা কপাল পুড়া গন্ধ
একেবারে আসল, নয় কিছু ছল- কাটলো দ্বন্ধ
কে দেবে পুষ্ট তার মত কষ্ট বলছে বারবার
হৃষ্টপুষ্টগুলি রেখেছে ঝুলি বাহারি কারবার!
আমায় দেখে হেসে, বলে অবশেষে – “শব্দ কান্ডরী
নাও কিনে কিছু ছুটিয়া পিছু কেন করছ দেরি।”

“শব্দ এমন হৃদয়ে হরদম তোলে তোলপাড়
প্রকাশের যাতনা অগ্রন্থিত কামনা হাহাকার
আনন্দ উচ্ছ্বাস অযত্ন পরিহাস উঠবে ভাসি
আকারে সরব করবে কলোরব ফুটাবে হাসি
কবুতরের ডাক,কালো কাক, লাল রক্তকরবী
শিশির পতন, বাতাস, বন চিত্রিত হয় সবি
কষ্ট হতে, নাও ভরে দুহাতে-ওরে চিত্র দিশারী
চিত্ররূপ হবে যে অপরূপ তবু করছ দেরি?”

“যা স্মরণীয়, বহু বরণীয় বোধগুলো দুঃখের”
ফেরিয়লা আমায় বলে যায়-“বেলা হয়েছে ঢের
অলংকারে মুগ্ধতা চারিধারে যদি ছড়াতে চাও
কাছে এসে স্তব্ধতা ভালোবেসে কষ্ট কিনে নাও।”
শুধাই বারবার থাক সংসার সব নিব কিনে
মাল গাড়িতে নিব দুহাতে ফিরব না দুঃখহীনে
কান্ড একি! ঝোলাতে নাই বাকি, এখন কি যে করি!
কখন চুপিসারে সব কষ্ট নিয়ে চলে গেছে সুন্দরী!

আবেদন …

জানুয়ারী ২০২৫ থেকে শব্দনীড়কে শব্দলিপি নামে পুনরায় চালু করা হয়েছে সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে শব্দলিপি চালু আছে। শব্দলিপির আয়ের নির্দিষ্ট কোন উৎস নেই। এই সাইট চালু রাখতে ডোমেইন ,সার্ভার,হোষ্টিং,ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আপনার প্রতিষ্টানের বিজ্ঞাপন শব্দলিপিতে দিতে পারেন। এক কালীন বা মাসিক ভিত্তিতেও অনুদান বা সাহায্য করতে পারেন ।
আপনার অনুদান ছোট হলেও ক্ষতি নেই। শব্দলিপি হিসাব খাতে স্বনাম প্রকাশ অথবা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিসেবেও আপনি থাকতে পারেন শব্দলিপির পাশে। শব্দলিপি অনলাইনে রাখার জন্য আপনার সহায়তা কামনা করছে।
বিজ্ঞাপন বা অনুদান দিতে মন্তব্যে জানালে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করবো, সাথে থাকুন ।

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী করার পরিকল্পনা ফাঁস

৫ আগস্টের পর বাংলাদেশিদের মাথায় ভর করেছে একটা নাম- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

images

ওয়াজের সুপারস্টার মিজানুর রহমান আজারি, মুফতি ইব্রাহিম, রফিকুল্লাহ আফসারী, আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন মনমানসিকতার ইসলাম প্রচারকসহ- রমজানে দেশের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ আজ একটা নাম উচ্চারণ করছে- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। আপনি যদি জনগণের কন্ঠস্বরকে উপলব্ধি করতে পারেন তবে বুঝতে পারবেন- ডক্টর ইউনুস ইজ অন প্রেইজড। প্রসংশার বানে ভাসছেন – ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

বাঙালি ভূতগ্রস্তের মত আচরণ করছে। আর ভুত তাড়নী ওঝা হয়ে আসছে আর এক উচ্চারিত ইসমে আজম- নির্বাচন নির্বাচন।

৭১ পূর্ববর্তী বাঙালি জাতিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এক সাধারণ লেবাসের মাওলানা ও গরীব মানুষের সমাজতান্ত্রিক কন্ঠস্বর মহান নেতা মাওলানা ভাসানী ও ৭৫ পরবর্তী আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিন্তানায়ক ও রূপকার মেজর জিয়াউর রহমান। এই দুই নেতাই ছিলেন সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যতদ্রষ্টা, চালচলনে সাধারণ। এই দুই নেতা বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে ভালোবাসার সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে! অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই। সুযোগ পেয়েই তিনি নিজেকে আস্তে আস্তে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।

জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। যেন তাকে ভূতে ভর করেছে- আবোলতাবোল বলে বসলেন- তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার ইচ্ছা লালন করেন । মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

ওদিকে ভূতছাড়ানো জপমালা- নির্বাচন, নির্বাচন। এদিকে সরসিজ নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে দেখা!!! নাহ্, ভাবা যাচ্ছে নাহ্।

কি ভাবে সম্ভব?
কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে দীর্ঘমেয়াদী পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন। আর দিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক খেলায় মাতিয়ে তুলবেন। কিন্তু নিজ দেশ ও জাতি তাকে চাইছে। এ চাওয়া আরও দৃঢ হচ্ছে।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি মাওলানা ও মেজর সাহেবের পর তিনি হতে পারেন অনন্য গ্রহণযোগ্য নেতা। তিনি যেমনি আন্তর্জাতিক ভাবে কোয়ালিফাইড ও স্বীকৃত, তেমনি গরীব গন মানুষের জন্য আছে তার অর্থনৈতিক ভাবনা। পুঁজিবাদ ও কমিউনিস্ট মতাদর্শের ব্যর্থতার পর তার মতবাদ আলোচিত, স্বীকৃত। যদি তার অর্থনৈতিক মতবাদ থেকে সুদকে বাদ দেয়া যায় তবে বিস্মিত হয়ে লক্ষ করা যায় যে, তার চিন্তাধারা ইসলামি আদর্শের বিপরীততো নয়ই বরং সমার্থক। ( এই ব্যাপারে আলোচনা চলতে পারে)। ফলে এই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তার মতবাদ জনগন কতৃক সমাদৃত হতে পারে।

আমরা কেবল বলতে পারি। কিন্তু তিনি যোগ্যতা রাখেন। তার চালচলন অনাড়ম্বর, বেশভূষা সাধারণ, মানুষকে প্রভাবিত করার অনন্য দক্ষতা আছে তার। তাকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভূতগ্রস্ত মানুষের ডাকে।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী কয়েক মাসের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। কেমন হবে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামো। এটা তার মানের হলে হয়ে উঠবে একটা রাজনৈতিক দলের ইশতেহার।

বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে।

এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে পাস করিয়ে নেয়া হতে পারে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

এর মধ্যে আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ফিরে আসবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় কোন অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় থাকলে আইনমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সংশোধিত করে নিতে হবে।

এই বর্তমান সরকারের মধ্যে হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে যাদের কাজ হবে নির্বাচন করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের পদ হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা।

।। ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে সুদৃঢ করতে হবে এবং নির্বচনের প্রস্তুতি নিবে।।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা সর্বস্তরের ব্যাপক সাড়া ও সফলতা পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির ইতিহাসে অনন্য কর্ণধার।

খোলা চিঠি

রক্ত

প্রিয়তমা,

কলম হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। কী লিখব, কোথা থেকে শুরু করব, বুঝে উঠতে পারছি না। বুকের মধ্যে একরাশ কষ্ট আর অপরাধবোধ জমাট বেঁধে আছে। তবুও আজ তোমার কাছে মনের সবকিছু খুলে বলতে চাই।

তুমি কেমন আছো? এই প্রশ্ন করাটা হয়তো বোকামি, কারণ আমি জানি, তোমার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবই আজ আমার ব্যর্থতার সাথে জড়িয়ে আছে। তোমার মুখের সেই নির্মল হাসিটা বহুদিন দেখিনি। তোমার চোখের গভীরে যে স্বপ্নগুলো ছিল, সেগুলো যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে, আর আমি শুধু নির্বাক দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে দেখছি।

জানো, আমি কতটা চেষ্টা করি? প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে চাই, প্রতিদিন প্রতিজ্ঞা করি যে, তোমার জীবনটাকে সুখের আলোকিত পথে নিয়ে যাবো। কিন্তু বাস্তবতা আমাকে প্রতিবার থামিয়ে দেয়। একের পর এক ব্যর্থতা আমাকে গ্রাস করে, আর আমি ধীরে ধীরে এক অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। তবু তুমি আছো, আমার পাশে, নিরব সাক্ষী হয়ে।

আমি জানি, আমার অভাব-অনটন তোমাকে কষ্ট দেয়। হয়তো অন্যদের মতো তোমার জীবনটা সুন্দর হতে পারত, নিশ্চিন্তে কাটাতে পারতে তোমার দিনগুলো। কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারিনি তোমাকে, কিছুই না! শুধু এই অপরাধবোধে আমি প্রতিদিন নিজেকে শাস্তি দিচ্ছি।

তবুও আমি তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি, এক নিঃশ্বাসে, এক অন্তরের গভীরতম কোণ থেকে। তুমি আমার জীবনের সেই আলো, যে আমাকে বারবার ভেঙে পড়ার পরও বাঁচতে শেখায়। তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি এখনো স্বপ্ন দেখি, এখনো বিশ্বাস করতে চাই, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

যদি কখনো মনে হয় আমি তোমার বোঝা, যদি কখনো মনে হয় আমার ব্যর্থতা তোমাকে দাবিয়ে ফেলছে—তবে একটিবার আমার হৃদয়ের ভেতরটা অনুভব করো। দেখবে, সেখানে শুধু একটাই নাম লেখা—তোমার নাম!

তুমি আমার শ্বাস, আমার অস্তিত্ব, আমার শেষ আশ্রয়। যদি আমি শতবারও ভেঙে পড়ি, তবুও আমি তোমার হাতটা ছাড়বো না। কারণ, আমি তোমাকে সত্যি সত্যি, নিখুঁতভাবে, অসম্ভব রকম ভালোবাসি।

চিরদিনের জন্য,
অকৃতজ্ঞ এক মানুষ

ঈদ মুবারকঃ কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন

FB_IMG_1743394380296হাই হ্যালো।
কেমন আছেন?
সকলকে জানাই ঈদ মুবারক। সকলে আমার পক্ষ থেকে গ্রহণ করুন লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।

আচ্ছা, ঐ যে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সাদা শুভ্র সফেদ পাঞ্জাবি পড়া ক্লিনম্যান আমেজের মান্যবর। কি বললেন? এই শুভকামনা আপনি গ্রহন করবেন না!!! কি আশ্চর্য, কেন?

ঃ কারণ তার আগে চাই নির্বাচন।

আচ্ছা সব কথায় আপনি নির্বাচন টেনে আনছেন কেন?

ঃ আপনি বক্তৃতার ভাষায় শুনভেন, নাকি কবিতায়। আমি একটা কবিতা লিখেছি। চাইলে আপনাকে শুনাতে পারি।

আচ্ছা, তবে তাই করুন।

ঃ আমি কোন শুভেচ্ছা নিব না আজ। আমি আপনাদের একটা কবিতা শুনাবো…

আচ্ছা বুড়ো বাবু সোনা কবিতা আবৃত্তি করুন।

ঃ শুনুন আমার কবিতাটি
কবিতার নাম

ঈদ মুবারক, কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচনঃ

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একসেট সোনার গহনা, নিদেনপক্ষে নাকের নোলক একখানা।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি আশ্চর্য সুন্দর ইজিপ্সীয়ান কার্পেট।
মখমল-নীল শাড়ি প’রে তুমি ভেসে বেড়াবে সারা ঘরময় রাজহাঁস;
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি ছোট্র সুন্দর লেফটহ্যান্ড ড্রাইভ গাড়ি,
হলুদ, খয়েরী, নীল- যা চাও।
তুমি মধুপুর কিংবা ঢাকায় ছুটে যেতে পারবে দ্রুত, আরামে,
যখন যেমন ইচ্ছে।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
জাপানের সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার টিকেট,
কিংবা কক্সবাজারের ধু ধু বেলাভূমি, নীল সাগরের ঢেউ,
শৈলচূড়ার মেঘ আর আন্তর্জাতিকতাময় নীলাকাশ…।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন কিনে দেবো
একটা সবুজ রঙের হাঙ্গেরিয়ান ব্রা এবং একটি আশ্চর্য লাল সূর্যের মত স্কার্ফ।
তোমার নরোম কোমল কোল জুড়ে নিশ্চয়ই একদিন
সবুজ পাতার মতো ফুটফুটে শিশু ফুটবে, বৃষ্টিধারার মতো
পর্বতের ঢালু বেয়ে নেমে আসবে তার খহিলখিল হাসির শব্দ।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

একদিন নিশ্চয়ই আমাদের পৃথিবী আর এরকম থাকবে না,
একদিন নিশ্চয়ই অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে।
অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে…

আর কবিতায় থাকতে পারছি না। ভাইসব, সব বাদ। সংস্কার হবে, সব হবে, আমার মত করে হবে, আপনারা আমাকে ভালোবাসেন না!!! আমি যেভাবে চাই সেভাবে চলবে চলতে হবে! কিন্তু তার আগে চাই আমার ক্ষমতা। কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন। তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণী চাই।

বাংলাদেশ জিয়াউর রহমানকে পেয়েছিল একবার, এবার ড. ইউনুস

দেশের সাধারণ মানুষ বিএনপির পক্ষে, এটা বহুদিন শুনে আসছি। দেখেও আসছি মানুষ বিএনপিকে কতটা পছন্দ করে। দেখে মনে হয়, সব মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। বিএনপির নেতৃত্ব বোধ হয় এটা জানে না। তারা পেশিশক্তির উপর নির্ভর করছে, করছে বিদেশি শক্তির উপর। যেহেতু নির্বাচন হয় না বহুদিন তাই বলা যায় না বিএনপির সেই ভোট এখনও আছে কিন। তবে ধারণা করি- বিএনপির সেই স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে ভাটা পরছে। বিএনপি ২৪ এর বিপ্লবকে ধারণ করেনি। তাই তরুনদের দল ভোটের রাজনীতিতে ভালো করুক এটা এখন অনেকের প্রত্যাশা। এরাই বাংলাদেশকে সেবা করার সুযোগ করে দিয়াছে ড. ইউনুসের মত কোয়ালিটি নেতার। আশা করা যায় জনগন নির্বাচনের মাধ্যমে এই তরুণদের সুযোগ করে দিলে ডক্টর ইউনুস স্যারকে আবার আমরা যথাযথ মর্যাদায় দেখতে পাব।
FB_IMG_1743206802817
ড. ইউনুস ধীরে ধীরে স্টেটসম্যান হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। তার চলার গতি ধীর এবং মাপা – তবে গন্তব্য এক প্রকার নিশ্চিত।

এমন না যে তিনি এরই মধ্যে খুব বড় কিছু করে ফেলেছেন – তবে পলিটিক্সে জনগণের পারসেপশন যতটা ম্যাটার করে, রিয়েলিটি ততটা করে না।

মার্চ মাসের রেমিট্যান্সের দিকে তাকালে এটার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ৩ বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্স কিছুটা বাড়তে পারে – তবে এভাবে হাই জাম্প দিয়ে আকাশে উঠে যেতে পারে না।

জিনিসপত্রের দামের কথাই চিন্তা করুন। গত বছর ১৫ টাকা পিস দরে ডিম কিনতে হয়েছে। এবার প্রায় অর্ধেক! এত সস্তায় যে ইহজন্মে ডিম খেতে পারবো সেটা কি ৬ মাস আগেও ভেবেছিলাম?

ড. ইউনুসের প্রতি সরকারের আস্থা অনেকটা বাড়ছে। রেমিট্যান্স বেড়ে কোথায় পৌছেছে! রমাজেনে জিসিপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে, বিদ্যুতেনলোড শেডিং এক প্রকার নেই বললেই চলে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্তত এই রমজানে অনেকটা স্থিতিশীল ছিল অন্তত এটা বোঝা গেছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাইয়া যাইতাছেন,মানুষতো অবাক সময়মত ট্রেন আসছে আর যাত্রী নিয়ে সময়মত যাইতাছে, বাসগুলিতে কমছে হয়রানি, রাস্তায় রাস্তায় যে চাঁদার মহোৎসব বইত তা দেখা যাইতাছে কম। মনে হইতাছে, ডা. ইউনুসের দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা দ্বারা সকলে প্রভাবিত হইতাছে।

ড. ইউনুসের আগে এতটা দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা এবং দক্ষতা নিয়ে স্রেফ একজন মানুষই সরকার চালিয়েছিলেন – জিয়াউর রহমান। আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে তিনি বেশিদিন সময় পাননি, ইউনুসও সম্ভবত পাবেন না।

জিয়াউর রহমানের জন্ম বগুড়ায়, যৌবন কেটেছে পশ্চিম পাকিস্তানে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার মনে হলো যে ঢাকায় কিছু সম্পদ থাকা দরকার। সাভারে একটা বাড়ি পছন্দ হলো। বুকিং মানি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পর পর দুটো কিস্তি মিস করলেন। চিঠি পাঠিয়ে সময় চাইলেন। তাকে সময় দেয়া হলো। তবে লাভ হয়নি – পরের কিস্তিটাও মিস হয়ে গেল। তিনি আবারও চিঠি দিলেন – বগুড়ায় তার পৈতৃক জমিটা বিক্রি করে টাকা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওটা বিক্রি করতে পারেননি। ফলে সাভারের বাড়িটা আর কেনা সম্ভব হবে না। জরিমানা দিয়ে বুকিং মানি ফেরত নিয়ে গেলেন জিয়া।

তার মৃত্যুর পর দেখা গেল – স্ত্রী আর দুই ছেলের মাথা গোঁজার মতো একটা বাড়িও রেখে যেতে পারেননি তিনি।

জিয়া স্টেটসম্যান হতে পেরেছেন, কারণ তার মাথায় নিজের জন্য কিছু করার চিন্তা ছিল না। যা করেছেন, সবটাই দেশের জন্য।

ইউনুসেরও নিজের জন্য কিছু করার প্রয়োজন নেই। এই দুনিয়াতে একজন মানুষ যতভাবে সম্মানিত হতে পারে তার সবটুকুই তিনি এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন। ফলে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করাটা তার জন্য সহজ।

যেখানে বাইডেনের সাথে সল্ফি তুলতে পাইরা অনেক দেশনেতাদের আনন্দের সীমা থাকে না সেখানে ইউনুস স্যারকে বাইডেন নিজে ডেকে নিয়ে গেলেন। জড়িয়ে ধরে ছবি তুললেন।

চীনেও সফলতা দেখাইছেন। শি জিনপিং এর থেকে শেখ হাছিন আদায় করেছিল ১৪ কোটি ডলার – সেটাও অনেক মুলোমুলির পর। ইউনুসকে জিনপিং দিচ্ছেন ২ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান যে বিশ্বনেতাদের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে না দাঁড়িয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন, ছবি তুলবেন – এটাই তো আমরা কোনোদিন ভাবিনি। এর আগে জিয়াকে দেখেছিলাম জিমি কার্টারের পাশে পায়ের ওপর পা তুলে কথা বলতে। এবার দেখছি ইউনুসকে।

গরিব দেশের সরকারপ্রধানকে স্মার্ট হতে হয়। জিয়া স্মার্ট ছিলেন। সৌদি আরবে যাওয়ার সময় তিনি উপহার নিয়ে গেলেন ৫০০টা নিম গাছের চারা। বললেন, মহামান্য বাদশা! আমি গরিব দেশের প্রতিনিধি। কী আর দিতে পারি আপনাকে? এই কয়েকটা গাছ দিলাম শুধু।

বাদশা জড়িয়ে ধরেছিলেন জিয়াকে। জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশের জন্য উনি কী করতে পারেন। জবাবে জিয়া ভিক্ষা চাননি। বরং চাইলেন চাকরি। বাঙালি শ্রমিকদের যেন মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি দেয়া হয়।

শুরু হলো আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী খাতটা – প্রবাসী আয়।

ইউনুসও ভীষন স্মার্ট। এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে জাতিসংঘ মহাসচিবকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিয়ে ইফতার করালেন ইউনুস। মাতৃভাষায় বললেন, আগামী ঈদ আপনারা নিজের দেশে করবেন। প্রতিবেশী পরাশক্তিকে এভাবে থোড়াই কেয়ার করার সামর্থ্য সবার থাকে না। ইউনুসের আছে। রোহিঙ্গাদের সামনে তিনি খুব সহজ অথচ খুব ভয়ংকর একটা মেসেজ দিয়ে এসেছেন।

জিয়ারও ছিল। সুন্দরবনের কাছে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। ভারত সেটাকে নিজেদের বলে দাবি করে ইন্ডিয়ান নেভির একটা জাহাজ পাঠিয়ে দখল করে নিয়েছিল।

জিয়া সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোস্টগার্ডের গানবোট পাঠিয়ে ভারতীয় সেনাচৌকিতে হামলা চালান তিনি। বিপদ বুঝতে পেরে ভারত চুপ করে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়।

এত বড় বুকের পাটা খুব বেশি লোকের থাকে না আসলে।

শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার সময় কী বলেছিল মনে আছে? বলেছিল যে, ১৬ কোটি মানুষকে আমি খাওয়াতে পারি, আর ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে পারবো না?

খোদাতালা অহংকারীকে পছন্দ করেন না!!!

জিয়াউর রহমান শহিদ হওয়ার পর গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব একটা এগোতে পারেনি। জিয়া যেখানে রেখে গিয়েছিলেন, সেখানেই আছে। তেমন কোনো নতুন সেক্টর তৈরি হয়নি, তেমন কোনো ডাইভার্সিফিকেশন হয়নি। সবাই শুধু ক্ষমতা আর সম্পদ চেয়েছে, দেশের ভালো ছিল গৌণ ব্যাপার।

এই প্রথম একজন কেউ এসেছেন, যার কাছে ক্ষমতা মুখ্য না। যিনি বারবার বলছেন যে ডিসেম্বর অথবা জুন – এরপরে তাকে ধরেবেঁধেও বসিয়ে রাখা যাবে না। উনার কথা না শুনলে উনি আরো আগেই চলে যাবেন।

এই প্রথম কেউ একজন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাচ্ছে – তবু আমরা ভাবছি, ইশ! লোকটাকে যদি আরো কিছুদিন রেখে দিতে পারতাম!

প্রায় নব্বই ভাগ দূর্নীতিগ্রস্থ একটা দেশে জিয়াউর রহমানের মত দেশনায়ক বাংলাদেশ পেয়েছিল একবার, তারপর এবার ড. ইউনুস। জিয়া বেশিদিন সময় পান নাই, এবারও ভোট ভোট করে তাকে বিদায় করার জন্য উঠে পরেছে জিয়াউর রহমানের নিজের হাতে গঠন করা দল বিএনপি!!!

অনেক বছর পর আর একজন দেশপ্রেমিক নির্লোভী দক্ষ বিচক্ষণ একজন বিশ্বমানের নেতার কাছে এসেছে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব।৷ আমরা বড়ই অভাগা এক জাতি।

মন্তব্যের ঘরে লেখাটার রেফারেন্স লিংক দিয়ে দিলাম।
IMG_20210119_132651images

২৪ এর ২য় স্বাধীনতাঃ প্রত্যাশা ও সম্ভবনা

৭১ আর ২৪ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। জিগাইতে মন চায় তুলনা আসছে কেন? আইছা, তুলনাই হোক।

৭১ আর ২৪ দুইটা আলাদা সময়ের।

৭১ এর ঘটনা ঘটেছে ৪৭ এর স্বাধীন রাস্ট্র পাকিস্তানে। ভৌগোলিক , ভাষা, সংস্কৃতিতে একই রাস্ট্রের দুই প্রদেশের ভিতর বিস্তর ফারাক ছিল। কিন্তু এই ফারাকের কারণে নয় বরং শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরনের কারণে প্রদেশ দুইটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আলাদা হয়ে যায়। জন্ম নেয় স্বাধীন রাস্ট্র বাংলাদেশ। ৭১এর ইতিহাস বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস। সেই সময় সারা পৃথিবীতে চলছিল কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিজয় কাল। এই মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে ছিল সারা পৃথিবী। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা তার ব্যতিক্রম ছিল না। মাওলানা ভাসানীর মহামানব সুলভ পোষাক, আচরণ, বাগ্মিতা, বাম ধারার চিন্তা চেতনা এই অঞ্চলের মানুষকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। মাওলানা ভাসানী ও তার সুযোগ্য শিষ্য বঙ্গবন্ধু উপাধি পাওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক নেতৃত্বে প্রভাবিত হয়ে একটি গোটা জাতি জুলুমের প্রতিবাদে সংগ্রাম মুখর হয়ে পরে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে জন্ম নেয় একটি স্বাধীন রাস্ট্র ভাগ হয়ে আর একটি স্বাধীন রাস্ট্র।

স্বাধীনতা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ অঞ্চলের মানুষের মননে তৈরি হয় শোষণ বঞ্চনাহীন এক বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের। কিন্তু হতাশার কথা তেমন সমাজতো পাওয়া যায়নি বরং রাজনৈতিক ও সামরিক বাহিনীর হানাহানির কারণে রাজনৈতিক খুনাখুনি অব্যাহত থাকে। মানুষের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা আর ক্ষোভ। স্বাধীনতা এলো বটে, কিন্তু জনগন কিছুই অর্জন করতে না পাওয়ার বেদনায় মর্মাহত হয়।

একটা রক্তক্ষয়ী ও বিপুল নর নারীর ইজ্জত সম্ভ্রম আর জীবনের আত্মত্যাগের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারা প্রবীণদের অস্বীকার করে। সামাজিক, রাস্ট্রীয়ভাবে, সামরিক বাহিনীর ভিতরে তরুন মুক্তিযুদ্ধারা পরস্পর খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। এর পর হতে রাজনৈতিক নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হতে থাকে।

২৪ ঘটেছে ৭১ এর স্বাধীন রাস্ট্রের শাসকদের অর্ধশতকব্যাপী রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতা ও শোষণের কারণে।
মুক্তিযুদ্ধে তরুনেরা অংশগ্রহণ করে কিন্তু নেতৃত্বে ছিল প্রবীন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা, প্রকাশ্য ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ভারত সরকারের সামরিক সহযোগিতায় ডরুনেরা একটি রাস্ট্রের সূচনা করে। এবং জড়িয়ে পরে নানা রকমের অনৈতিক ক্ষমতার চর্চায়। দেশ গঠনের অনন্য সুযোগ পাওয়ার পরও একটি প্রতিবন্ধী রাস্ট্র হিসাবে থেকে যায় কেবল মাত্র সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতা ও অসাধুতার কারণে জনগন পরাধীন জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়।

২৪ এ প্রবীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের শোষন, ফ্যাসিবাদী জুলুম এবং বিরোধী দলের চরম ব্যর্থতার কারণে তরুনদের নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে আর একবার দেশের জনগন মুক্তির স্বাদ উপভোগ করে। এক অনন্য সুযোগ হাতে চলে আসে দেশকে পুনর্গঠনের। এমন এক নেতৃত্ব চলে আসে রাস্ট্রীয় পর্যায়ে যারা কখনওই কলুষিত রাজনৈতিক চর্চায় নিজেদের নিয়োজিত করে নাই। মানুষের কাছে এ আরেক স্বাধীনতা। একে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা যায়। যারা একে স্বাধীনতা বলতে দ্বিধাবোধ বা বিরোধিতা করছে তারা স্বাধীনতার এই সুযোগকে জনগনের দরজায় পৌছে দিতে চায় না। তারা পূর্বের মত হানাহানি ও জুলুম পীড়ন ফ্যাসিবাদী আচরণ অব্যাহত রেখে শোষন অব্যাহত রাখতে চায়।

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধাদের মত ২৪ এ নেতৃত্বদেয়া তরুণদের মাঝে দেখা যায় পারস্পরিক বিভিক্তি। শুধু তাই না ৭১ ও ২৪ সংগ্রামকারী তরুনেরা প্রবীণদের চোখে বেয়াদপ আখ্যা পাচ্ছে। যতটুকু বুঝা যাচ্ছে, এই তরুণরা করে যাচ্ছে সমাজ ও রাস্ট্রের নিয়ন্ত্রণ।

২৪ নিয়ে মুল্যায়ন করার সময় এখন হয় নাই। তবে ২৪ এর অর্জনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসাবে স্বীকৃতি না দেয়ার কোন কারণ নেই। এটা ২য় স্বাধীনতা। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে কতটুকু কাজে লাগাতে পারবে তা নির্ভর করবে এই দূর্নীতিতে সয়লাব হয়ে যাওয়া দেশে, দূর্ণীতির ফাদ থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে তরুনরা কতটুকু পজেটিভ ভূমিকা রাখতে পারবে তার উপর।

FB_IMG_1743038324132

আপাতত তাদেরকে সমর্থন ও পরামর্শ দিয়ে সঠিক পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করা ছাড়া কোন বিকল্প দেখছি না। এখানকার প্রভাবশালী প্রবীণ নেতৃত্ব পচে গেছে। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া লুটপাট দেখে তরুণদের উপহার দেয়া স্বাধীনতা পেয়ে নিজেরা সেই রেজিমের মত অবৈধ ভোগবিলাসের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে।

FB_IMG_1743038324132

৭১ এর স্বাধীনতার ফসল জনগনের ঘরে উঠেনি। ২৪ এর স্বাধীনতাকেও কি হারিয়ে ফেলছি কিনা তারজন্য সতর্ক সাবধান হতে হবে। যে সুযোগ সঠিক নেতৃত্বের হাতে দেশ পরিচালনার সুযোগ এনে দিয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে এবং পরবর্তীতে তরুন প্রজন্মের হাত ধরে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ হয়ে উঠুক এক মর্যাদাবান কল্যান রাস্ট্র এই প্রত্যাশা রইল।

যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়া পড়শীর ঘুম নাই

যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়া পড়শীর ঘুম নাই। আচ্ছা, এটা কি প্রবাদ? নাকি গ্রাম্য একটা কথার কথা?

সেই যাই হোক আমি আজকে এই বাক্যটাকে প্রসঙ্গিক করে তুলব। ঠিকাছে!!!

FB_IMG_1742738580694

হাসনাত আবদুল্লাহ একটা পোস্ট দিল। সারসিজ আলম কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করে আর একটা পোস্ট দিল। পাটোয়ারী বলে বসল, ফেসবুকে এভাবে পোস্ট দেয়া শিষ্টাচার বহির্ভূত। আর এক নেতা হান্নাম মাসুদ প্রকাশ্য নিজ দলের যে কোন একজনকে মিথ্যা বলছে রায় দিল। এদের কার্যকলাপকে অনেকে নাবালক সুলভ বলে আখ্যা দিল।

এনপিপির তথাকথিত নাবলক ছেলেরা এমন একটা অবস্থান তৈরি করেছে বারবার তারা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে। এমন কি নেত্র নিউজ, আমি আগে কখন এর নাম শুনিনি, তারা সেনাপ্রধানের বক্তব্য কোড করেছেন। এবি পার্টির ব্যরিস্টার ফুয়াদ শিস্টাচার বহির্ভূত ভাবে সেনাবাহিনীকে প্রজাতন্ত্রের চাকর বলে কড়া উগ্র বক্তব্য দিলেন। বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল তাদের মত দিতে শুরু করলেন।

সকলের মতকে যদি একসাথে একত্রিত করা যায় তাহলে এটা বলা যায় যে, আওয়ামী লীগকে রিফাইন্ড করে তারা নির্বাচন করতে মাঠে নামতে দিবন কি দিবেন না, এ বিষয়ে নানা জন যার যার মত দিতাছেন, বক্তব্য দিতাছেন। বেশ জমে উঠেছে, এতটাই জমে উঠেছে যে, কেই কেউ গৃহযুদ্ধের পদধ্বনি শুনতে পাইছেন। আমরা শংকিত হয়ে উঠছি। কথা ঠিক।

কিন্তু আমার মনে একটা চিন্তা হইতাছে, যে আওয়ামী লীগকে নিয়ে এত আলোচনা তারা কি রিফাইন্ড হয়ে নির্বাচন করতে চাইছে? এই দলটি দেড় দশক ধরে নির্বাচনকে পেশিশক্তির সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ কথাতো বলাই যায় তারা কোন নির্বচন চায়নি। তারা জয়ী হতে চেয়েছে, ক্ষমতা চেয়েছে। এমন কি এখনও তারা পেশিশক্তির প্রয়োগকারী হিসাবে দেশে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে আছে। বিদেশে বসে দেশের ভিতর হুমকি দিতাছে।

যখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন শাখাওয়াত সাহেব তখন তিনি আওয়ামী লীগকে সঠিক পরামর্শ দিয়েছিলেন। মনে পড়ে, তিনি বলছিলেন আপনারা নিজেদের দলকে গুছান, ঠিক ভাষাটা মনে নেই তবে সব্ভবত তিনি এখন যেই রিফর্মেশনের কথা বলা হইতাছে তেমন কিছুই বলতে চাইছিলেন। এবং বলেছিলেন, (আমি আমার ভাষায় বলচি) পেশিশক্তির যে ব্যবহার করতে চাইছেন, এই আন্দোলন, সেই আনসার বাহিনীকে মাঠে নাইতাছেন আরও এই চট করে ঢুকে যাইতাছেন, হরতাল ডাকতাছেন এসব বাদ দিন, এসব করে কোন লাভ হবে না।

শাখাওয়াত সাহেবকে বদলে ফেলা হল। এই পক্ষ ও পক্ষ কেউ তার কথার মূল্যায়ন করলো না। আমাদের শতভাগ ঠান্ডা মস্তিষ্কের প্রফেশনাল সেনাপ্রধানও বলে বসলেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন ইনক্লুসিভ হবে না। তাই তিনি তাদের রিফাইন্ড গ্রুপকে নেতৃত্ব এনে নির্বাচনে দেখতে চান।

আমার মনে প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ নিয়ে এত কথা, সমালোচনা। ফেসবুক পোস্ট, তর্ক বিতর্ক। আওয়ামী লীগ কি কেথাও কোন পর্যায়ে নিজেদের শুদ্ধ হবার কোন প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছ?

আমি কোথাও দেখি নাই। আমি আমার মনে বেজে উঠছে!যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাই!!!

পোস্টমর্টেম : আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন

বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুইটি পোস্ট আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পোস্ট দুইটি পাশাপাশি রেখে আলোচনা চলতে পারে।
yunus-waker
পোস্ট -১

শনিবার নেত্র নিউজকে দেয়া সেনা সদরের এক বিবৃতিতে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে যে সেনানিবাসে খোদ সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গেই ১১ মার্চ বৈঠকটি হয়েছিল। তবে হাসনাত আব্দুল্লাহকে “ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদেরকে প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগে”র অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বরং হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার দলের আরেক মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের আগ্রহেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি সেনা সদরের বক্তব্যে অস্বীকার করা হয়নি। সেখানে বলা হয় আলোচনায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ উঠে আসলে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান নিজের অভিমতের কথা ছাত্রনেতাদের জানান।

বিবৃতিতে সেনাপ্রধানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা ফৌজদারি মামলায় জড়িত নয় ও ক্লিন ইমেজের অধিকারী তাদের সমন্বয়ে নতুন আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ফলপ্রসু ও আন্তর্জাতিক মহলে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকার ও সব রাজনৈতিক দল মিলে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।”
post_img-1737023028546-633243425
হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক স্ট্যাটাসকে তার দলের লোকেরাই শিষ্টাচার বহির্ভূত বলেছে। আমরা তাকে বা তার পোস্টকে আমলে না নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অর্থপূর্ণ মনে করি। তিনি তার বক্তব্যে জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে না দিয়ে বরং বলেছেন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলিকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। খুবই পজেটিভ ভাবে দেখছি তার বক্তব্য।

আজকেই নিচের পোস্টটি নজরে এলো। পোস্টের লিংকটি মন্তব্যের ঘরে দিয়ে দিলাম।
FB_IMG_1742709686112

https://www.facebook.com/share/p/16F2ySxoLm/

পোস্ট -২

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফেরত আনার প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছেন। সরকারি কাজে তিনি যুক্তরাজ্যে থাকাকালীন আমার সুযোগ হয় UK পার্লামেন্টের Anti-Corruption ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়ার—যেখানে আলোচনা হলো, কীভাবে বাংলাদেশ থেকে সুসংগঠিতভাবে টাকা পাচার হয়েছে এবং Democratic Transition in Bangladesh—কিভাবে সাপোর্ট করা যায়।

গভর্নর বললেন, ২০১৭ সালের পর ৮-৯টি ব্যাংক Systemic Robbery-র শিকার হয়েছে। এমনকি DGFI—এর ক্ষমতা ছিল Fund Divert করার !

শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, চুরি যাওয়া টাকার পরিমাণ নাকি ৭০ বিলিয়ন ডলার ছুঁতে পারে! যদি এটি ফেরত আনা যায়, তাহলে এটাই হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় Asset Recovery.

এ প্রসঙ্গে গভর্নর যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা এই পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে and take a global lead in Anti-Corruption.

‼️আমার প্রশ্ন ছিল—এই দীর্ঘ ও জটিল Asset Recovery প্রক্রিয়ায় সাধারণ জনগণের উপর কতটা চাপ পড়বে? How much price the ordinary citizens have to pay❓যেহেতু একটা পরিসংখ্যান বলছে, আগামী ১০০ বছর যদি বাংলাদেশিরা নিয়মিত Tax দেয়, তবেই এই লুটপাট করা টাকার পরিমাণের সাথে সামঞ্জস্য আসবে!

গভর্নরের response ছিল unfiltered and painful—“Yes, citizens will have to pay the full price, and even future generations will suffer the consequences.”

দেখেন, money laundering is not a victimless crime. This is a direct violation of people’s economic and civic rights. এটা শুধু টাকার হিসাব না, it will have long-term consequences on future generations—impacting their overall quality of life.

Just pause and think—একটা স্বৈরশাসনের লুটপাট শুধু বর্তমানই না, দেশের ভবিষ্যৎকেও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে!

……….

জুলাই আন্দোলন ২০২৪ চলাকালীন সমশ ও দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে সকল ফৌজদারী অপরাধ করেছে, এইসকল অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার অবশ্যই করতে হবে। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের আলোকে যদি সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি আলোচনায় বসে তবে আমরা সাধারণরা উপরের দুই নম্বার পোস্ট বিবেচনায় নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানাব।