বিভাগের আর্কাইভঃ সমকালীন

ভেবে দেখেছো কিঃ ১

সবসময় ক্ষমতার সাথে থাকা, ক্ষমতাবানদের সাথে থাকা- মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। মানুষ সবসময় তাকে নিরাপদে রাখতে চায়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে জীবনের মুল লক্ষ্য মনে করে। নীতি নৈতিকতা বাহুল্য মনে হয়। এজন্য ক্ষমতাবানদের মধ্যে দুর্নীতিবাজদের দলটা ভারী। সৎ মানুষের সংখ্যা কম।

কঠোর আইন দন্তবিহীন হলেও, প্রকৃতির আইন কিন্তু দন্তবিহীন না। প্রকৃতির প্রতিশোধ ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ। এই প্রতিশোধ দুর্নীতি না থামাতে পারলেও, দুর্নীতিবাজদের ঠিকই থামিয়ে দিবে।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলা সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ করবেন এবং সেগুলোকে ডান হাতে নিয়ে বলবেন, ‘আমিই বাদশাহ। অত্যাচারী ও যালিমরা কোথায়? অহংকারীরা কোথায়?

অতপর সমস্ত জমিনগুলোকে ভাঁজ করবেন। অতপর সেগুলোকে বাম হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই মহারাজ। অত্যাচারী ও যালিমরা কোথায়? অহংকারীরা কোথায়? (মুসলিম)

সুতরাং সামান্য মশা ও পিপড়ার কামড় সহ্য করার ক্ষমতা যাদের নেই। তাদের অহংকার করা মানায় না, ক্ষমতার দাপট দেখানো মানায় না।

করোনাকালীন সময়ে সামান্য এক ভাইরাসের দাপটে ঠাণ্ডাজ্বরে যারা অস্থির হয়ে ওঠে, সেই মানুষ অন্যায়ভাবে অর্থ সম্পদ উপার্জন করার পূর্বে, অন্যের উপর জুলুম করার পূর্বে একবার ভেবে নেয়া উচিত এই অর্থ আর ক্ষমতা সত্যিকারের প্রয়োজনে একেবারে মূল্যহীন।

ভেবে দেখেছো কি, কতটা নশ্বর এই উপার্জিত সম্পদ, কতটা অসহায় ক্ষমতার দাপটে অন্ধ হওয়া মানুষগুলি।

প্রসঙ্গ: শব্দনীড় ব্লগ বন্ধ হবে … আপনার লেখার অনুলিপি নিন

14shobdonir

সৌহার্দ্য সম্প্রীতিতে মুখরিত থাক শব্দনীড়। থাকুক সর্বজনীনতা; থাক মুক্ত বাক্ স্বাধীনতার অনন্য একটি মঞ্চ যেখানে অনালোকিত নক্ষত্ররা হাতে হাতে রেখে তৈরী করবে ছায়াপথ … এই আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে শব্দনীড়ের পথচলা শুরু।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় শব্দনীড় আপনাদের পাশে থাকতে চেয়েছে এবং থেকেছে। অতঃপর দিনদিন পাঠক সংখ্য, ব্লগার সংখ্যা, মতামতের অনুপাত; ক্রমহারে হ্রাস পেতে থাকায় শব্দনীড় আর অন্তর্জালে থাকবে কিনা অথবা রাখা সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নের দরোজায় বিনা বাক্যে দাঁড়িয়ে যায়।

চলতি প্লাটফর্মটি কয়েকজন সু হৃদের শাব্দিক আশ্বাসের ভিত্তিতে চালু হয়। পারস্পরিক সম্পর্ক বা আর্থিক বিষয়টি নিয়মিত না থাকলে এই সাইট কতদিন চালু রাখা সম্ভব সেই প্রশ্নটিও নিরব ছিলো। সকল আশ্বাস এবং নিয়মিত বা অনিয়মিত সহযোগিতা যখন ধীরে ধীরে শূন্যের কোঠায় পৌঁছায় তখন একজন সুহৃদ ব্লগের হাল ধরলে শব্দনীড় তার পথচলা দিনে/দুর্দিনে সুগম রাখতে পেরেছে।

Divider-7aa

প্রিয় ব্লগার এবং লেখকবন্ধু।
শব্দনীড় আজ বাস্তব এক দিনক্ষণের মুখোমুখি। বন্ধ করে দিতে হচ্ছে শব্দনীড়কে।

আগামী ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩।
এর মধ্যে আপনার মূল্যবান লেখার অনুলিপি সংরক্ষণ করুন।
www

আপনারাই আমাদের বিকল্প এবং সর্বদা আমরা পরস্পর একে অন্যের পরিপূরক। আপনাদের ঐকান্তিক অংশগ্রহণে শব্দনীড় আজীবন কৃতজ্ঞ।

পরিশেষে সকলের প্রতি আমার হার্দিক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন। আনন্দে থাকুন। ধন্যবাদ। সবার জন্য শুভকামনা।

aaa_3

এক নজরে ব্লগ পরিসংখ্যান :
search_btn * নিবন্ধিত ব্যবহারকারী সংখ্যা : ৪০৮ জন।
search_btn * পোস্ট সংখ্যা : ১৫,৮৫০ টি।
search_btn * মন্তব্য সংখ্যা : ৯১,৮২৬ টি।

নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ

WhatsApp-Image-2023-07-16-at-23.22.35

নেতারা কি সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা করার কাজ করেন? না, মোটেও না। তারা সাধারণ জনগনের মাথায় টুপি পরিয়ে নিজেদের পকেট ভর্তি করেন। বর্তমানের এক একজন নেতাদের কাছে এক একটা করে তেলের খনি আছে, আর সে খনিতে অনভিজ্ঞ কর্মীরা টাকার বিনিময়ে তেল মালিশের কাজ করে।

যে দেশে দেশপ্রেম না থাকা স্বত্ত্বেও টাকার বিনিময় রাজনৈতিক অভিভাবক বা নেতা হওয়া যায় সে দেশে আবার রাজনৈতিক কোন দলকে ভালো বলবো? ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে যেমন ভগবত সিংহ কিংবা মহাত্মা গান্ধী বা জিন্নাহর যে দেশপ্রেম ছিল এবং পাকিস্তানের দুঃশাসন থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য সালাম, রফিক, বরকত, শফিক, বঙ্গবন্ধু, ভাসানী, সরোওয়ার্দী বা ফজলুল হকের মত যারা দেশপ্রেমিক ছিল তাদের মত এখন কি আর দেশপ্রেমিক আছে? কোথায় নুর উদ্দীন? কোথায় হিমাদ্রি সহ শত শত খুন হওয়া দেশপ্রেমিক ব্লগাররা?

আজ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে বলে হঠাৎ বড়লোক হওয়া হাজার হাজার ব্যাক্তি টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগের পদ নিয়ে কোটি টাকার সুবিধা নিচ্ছে। আর এইসব আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়া সমাজ সেবকদের কাছে সত্যিকার অর্থে আওয়ামীলীগ বা দেশপ্রেমিকেরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। যে লোকটির পরিবার দেশ স্বাধীন হোক চায় নাই, এমনকি আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করেছিল, সে ব্যক্তিটিও আজ টাকার বিনিময়ে বলে বেড়ায় সে একজন খাঁটি আওয়ামী লীগার।

আগের রাজনীতি ছিলো সেবা, এখন রাজনীতি হচ্ছে শোও-অফ সেবার নামে ব্যবসা। আগের রাজনীতি ছিলো মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য, এখন রাজনীতি হচ্ছে অধিকার হরণ করে ক্ষমতাবান হওয়া। আগের রাজনীতি ছিলো ধর্ম নিরপেক্ষতার রাজনীতি, এখন রাজনীতি হচ্ছে ধর্ম সহিংসতার রাজনীতি।

যে দেশে শুয়োরের মাংস খাওয়া হারাম বলে খায় না অথচ এর চেয়ে জঘন্য পাপ কাজ তথা পর-নারী বা পর-পুরুষের সাথে শয্যাশায়ী হওয়াকে আধুনিকতা বলে, আর সুদ খাওয়াকে মর্ডান বিজনেস বলে, সে দেশের মানুষদের রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলে লাভ কি?

নেতারা কথা দিয়ে কথা রাখে না ঠিকই তবে অর্থকড়ি আত্মসাৎ করে নেয়, কিন্তু বেশ্যার টাকার বিনিময়ে ঠিকই সাময়িক শারীরিক ক্ষুধা মিটিয়ে দেয়। তাই আমি মনে করি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ।

ব্রিকস

lavrov

আগামীর বিশ্ব নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচাইতে শক্তিশালী জোট হতে যাচ্ছে ব্রিকস। ব্রিকস কেন এত গুরুত্বপূর্ণ কারা আছে এই সংগঠনে কেন NATO এর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে কতটা শক্তিশালী ও অপশক্তির জন্য কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সেটাই জানার চেষ্টা করব।

BRICS, যার অর্থ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, প্রকৃতপক্ষে উদীয়মান অর্থনীতির একটি প্রভাবশালী ব্লক। যদিও এটা সত্য যে এই দেশগুলির উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক এবং সামরিক সক্ষমতা রয়েছে, তবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে তাদের ভূমিকার একটি সুষম বিশ্লেষণ প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিকস এবং পশ্চিমের কাছে তাদের তাৎপর্য:
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: ব্রিকস দেশগুলি সম্মিলিতভাবে বিশ্ব অর্থনীতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে প্রধান খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে। পশ্চিমারা ব্রিকসের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে একটি বৃহৎ ভোক্তা বাজার, বিনিয়োগের গন্তব্য এবং সম্পদের উৎস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব: BRICS-এর ক্রমবর্ধমান প্রভাব পশ্চিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই দেশগুলি আন্তর্জাতিক ফোরামগুলিতে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ওজনের অধিকারী এবং জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য নীতি এবং আঞ্চলিক সংঘাতের মতো বৈশ্বিক বিষয়গুলিতে আলোচনার আকার দিতে পারে। পশ্চিম তাদের নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থ অনুসরণ করতে এবং ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্রিকস দেশগুলির সাথে জড়িত হতে চায়।

বৈশ্বিক ব্যবস্থার পরিবর্তন: BRICS এর উত্থান পশ্চিমা শক্তি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের ঐতিহ্যগত আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে। ব্রিকস অর্থনীতির বিকাশ অব্যাহত থাকায়, তারা বৃহত্তর দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা এবং পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানের উপর কম নির্ভরতার উপর জোর দিয়ে উন্নয়নের একটি বিকল্প মডেল উপস্থাপন করে। বৈশ্বিক ব্যবস্থার এই পরিবর্তন পশ্চিমাদের উদ্বিগ্ন করে, কারণ এটি আন্তর্জাতিক নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিবর্তন ঘটাতে পারে যা ঐতিহাসিকভাবে পশ্চিমা স্বার্থকে সমর্থন করে।

সামরিক সক্ষমতা: যদিও এটা সত্য যে কিছু ব্রিকস দেশ উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তির অধিকারী, এটা মনে রাখা অপরিহার্য যে পশ্চিম, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো এখনও প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যায় এবং বৈশ্বিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সামরিক সুবিধা বজায় রেখেছে। সামরিক উপস্থিতি। যাই হোক, ব্রিকস দেশগুলির সামরিক সক্ষমতার অগ্রগতি পশ্চিমের জন্য উদ্বেগের কারণ, কারণ এটি নতুন চ্যালেঞ্জের সূচনা করে এবং ক্ষমতার ভারসাম্যকে সম্ভাব্যভাবে পরিবর্তন করে।

ব্রিকস এবং তাদের শক্তি গতিশীলতা:
চীন: চীন ব্রিকস দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এর দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সামরিক আধুনিকায়ন চীনকে বিশ্বশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) বিশ্বব্যাপী দেশগুলির সাথে সংযোগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে তার প্রভাব বিস্তার করেছে।

ভারত: ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ এবং একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি রয়েছে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য সামরিক এবং পারমাণবিক ক্ষমতার অধিকারী। ভারতের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এবং বৃহত্তর বৈশ্বিক ভূমিকার জন্য তার আকাঙ্ক্ষা G20-এর মত ফোরামে অন্তর্ভুক্তি এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসনের জন্য এর অন্বেষণের দিকে পরিচালিত করেছে।

রাশিয়া: রাশিয়া একটি শক্তিশালী সামরিক অধিকারী এবং একটি প্রধান পারমাণবিক শক্তি হিসাবে স্বীকৃত। যদিও এর অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে নিষেধাজ্ঞা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরতার কারণে, রাশিয়া শক্তি সম্পদ, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের মতো ক্ষেত্রে প্রভাব বজায় রাখে। এটি বৈশ্বিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো-চালিত সদস্য।

ব্রাজিল: ব্রাজিল ল্যাটিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশ এবং একটি বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি রয়েছে। এটি তেলের মজুদ সহ উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। BRICS-এ ব্রাজিলের অন্তর্ভুক্তি একটি উদীয়মান বৈশ্বিক খেলোয়াড় হিসাবে তার সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত করে, যদিও এর সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি এর গতিপথকে প্রভাবিত করেছে।

ব্রিকসের অর্থনৈতিক অবস্থা:
ব্রিকস দেশগুলির সম্মিলিতভাবে বিশ্বের জনসংখ্যা এবং জিডিপির একটি বড় অংশ রয়েছে। যাইহোক, তাদের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা এবং উন্নয়নে ভিন্নতা রয়েছে:

– চীন: চীন গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। এটি একটি প্রধান রপ্তানিকারক এবং বিদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে।

– ভারত: ভারত যথেষ্ট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, কিন্তু এটি এখনও দারিদ্র্য, আয়ের বৈষম্য এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এটির একটি বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি রয়েছে, তথ্য প্রযুক্তি, পরিষেবা এবং উত্পাদনের মতো খাতগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে।

– রাশিয়া:
রাশিয়ার একটি মিশ্র অর্থনীতি রয়েছে যা প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে তেল ও গ্যাস রপ্তানির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং কাঠামোগত সমস্যাগুলি এর অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যাইহোক, রাশিয়া শক্তির বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বজায় রাখে এবং প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশের মতো মূল শিল্পগুলি বজায় রাখে।

আমেরিকা, land of the free, home of the brave!

34 বাহির হতে দেখলে মনে হবে এ আর এমন কি সমস্যা যা নিয়ে জাতি হিসাবে আমাদের ভাবতে হবে? আমেরিকা তার দেশে প্রবেশের উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যার চলমান কোন ইমপ্যাক্ট নেই। সবটাই সামনের নির্বাচনকে ঘিরে। ভবিষ্যতে কি হবে তা নিয়ে বর্তমানকে বিষাদময় করার কোন কারণ সাধারণ বাংলাদেশিদের নেই। অতীতেও ছিলনা বর্তমানেও নেই।

আমেরিকান ভিসা! বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির জন্যে এটাও কি একটা ফ্যাক্টর? এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলনা। আর দশটা দেশের মত আমেরিকাও দূরের একটা দেশ। যুব সমাজের অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হলেও কোটি কোটি সাধারণ বাংলাদেশির কাছে আমেরিকা একটি দেশের নাম। ভিসা নিয়ে ঐ দেশে যাওয়ার কোন কারণ নেই তাদের জন্যে। অথচ দেশে তোলপাড় হচ্ছে ভিসা নিয়ে মার্কিনীদের নতুন সিদ্ধান্তে। অনেকে এটাকে দেশটার চলমান নির্বাচনী রাজনীতিকে বদলে দেয়ার ইঙ্গিত হিসাবে দেখছেন।

একটা দেশের ভিসা নীতি তৃতীয় বিশ্বের আরেকটা দেশের রাজনীতি বদলে দেবে অবাক হওয়ার মত ঘটনা বৈকি। আসুন কাহিনীর ভেতর যে আরেক কাহিনী আছে সেখান হতে ঘুরে আসি। আলী বাবা ৪০ চোরের কাহিনীর সাথে আমাদের কমবেশি সবার পরিচয় আছে। এই কাহিনীর যদি একটা ম্যাথম্যাটিক্যাল মডেল তৈরি করি আমেরিকা হবে সেই গুহা যাকে চল্লিশ চোরের দল তাদের লুণ্ঠিত সম্পদ সংরক্ষণের নিরাপদ জায়গা হিসাবে ব্যবহার করে আসছে।

অনেকে প্রশ্ন করবেন গণতন্ত্র নিয়ে আমেরিকার আহাজারির শুরুটা হতে পারে নিজ দেশে চল্লিশ চোরের গুহার প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে। বাস্তবতা হচ্ছে আমেরিকা এটা কোনদিনই করতে যাবেনা। যেমনটা করবে না নিজ দেশে ঘাপটি মেরে থাকা চল্লিশ চোরদের কাউকে আইনের আওতায় আনতে। এর কারণ খুঁজতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে আমেরিকার ফাউন্ডেশনে।

১৫০০ বিসি’র শুরুর দিকে আদিবাসীদের আগমন শুরু হয় আমেরিকায়। ইউরোপিয়ানদের আগমন আরও পরে। পৃথিবীর বিভিন্ন কোনা হতে মানুষ ছুটে এসেছিল ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। দেশটার মাটির তলায় লুকিয়ে থাকা সোনা আহরণ ছিল অন্যতম কারণ। এভাবে লতায় পাতায় বেড়ে উঠেছে আমেরিকা। ১৭৬০ সালের মধ্যে ২৩ লাখ মানুষ নিয়ে ব্রিটিশরা ১৩টা কলোনি গঠন করে আটলান্টিক সাগরের পাড় ঘিরে। সাউদার্ন কলোনি গঠনের মূল ভিত্তি ছিল কৃষিকাজ। এই কলোনিই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ হতে মানুষ ধরে এনে দাস প্রথার প্রচলন করে। এই সাউদার্ন কলোনির এলাকা গুলোই পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিল গৃহযুদ্ধে পরাজিত হয়ে। এইসব অঙ্গরাজ্য গুলোই আজকে রেড সত্যায়িত হিসাবে পরিচিত, যার বাসিন্দারা ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান দলীয় সমর্থক।

লং স্টোরি শর্ট, আমেরিকা অভিবাসীদের দেশ। এ দেশে মানুষ এসেছিল ও আসছে ভাগ্যের সন্ধানে। আসছে লোভের বশবর্তী হয়ে। সময়ের বিবর্তনে এ দেশে ফাউন্ডাররা ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করে এমন একটা শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করেন যার ভিত্তি ছিল গণতন্ত্র ও ব্যক্তি স্বাধীনতার নিশ্চয়তা। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কথিত অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তার মত নিশ্চয়তা নেই আমেরিকান শাসনতন্ত্রে। এখানে বাঁচতে হলে লড়তে হয়, আয় করতে হয়, শ্রম দিতে হয়।

আমেরিকায় আপনি বাহির হতে কত আনলেন আর কত নিয়ে গেলেন এ নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই। বরং আনা-নেয়ার পথ সুগম ও মসৃণ রাখার নামই আমেরিকান ফ্রীডম। এই ফ্রীডমের সুযোগ নিয়েই বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের করাপ্ট মানুষ আমেরিকাকে নিজেদের অন্যায় ও অবৈধ উপার্জন সুরক্ষা করার গুহা হিসাবে ব্যবহার করে থাকে।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ছেলের কথা নাই-বা টানলাম, বরং নীচের লেভেলে অনেকে যেভাবে অর্থ পাচার করেছেন তার ক্ষুদ্র একটা উদাহরণ হিসাবে উপস্থাপন করা যায় দেশটার এক কালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মরহুম মোহম্মদ নাসিমের সন্তানের কথা। নিউ ইয়র্ক প্রবাসী এই ছাত্র ইতিমধ্যে ঐ শহরে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।

বর্তমান আওয়ামী সরকারের প্রায় সবার বিনিয়োগ আছে আমেরিকায়। এর সাথে যোগ হয়েছে দেশটার আমলা, সেনা, পুলিশ সহ সরকারী প্রতিষ্ঠানের অনেক হোমরা চোমরা। রাজনৈতিক ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট-খোরদের অনেকের পরিবার এখন আমেরিকায়। সন্তানরা লেখাপড়া করছে। স্ত্রীরা পানির মত অর্থ উড়াচ্ছে। ওরা আর দশটা খেটে খাওয়া বাংলাদেশির মত আমেরিকা হতে দেশে অর্থ পাঠায় না, বরং দেশ হতে অর্থ আনে। ওরা অর্থনীতির সবকটা খাত হতে লুটছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট ভেঙ্গেও অর্থ সরাচ্ছে। এসব জাতীয় লুটেরাদের মতে দেশ এখন পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিকেও নাকি হার মানিয়েছে। হ্যাঁ, হার মানিয়েছে সত্য, তবে তা সাধারণ মানুষের জন্যে না, বরং তাদের নিজেদের জন্যে।

আমেরিকা কি খুব একটা কেয়ার করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা নিয়ে?
সহজ উত্তর হবে, মোটেও না। আমেরিকা দেশে দেশে ছড়িয়ে থাকা এক ব্যাক্তি, এক দলীয় ও এক পরিবারের শাসনের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। এই তালিকায় যেমন আছে মধ্য প্রাচ্যের রাজা-বাদশার দল, তেমনি আছে সামরিক শাসকদের দল। নিজদের স্বার্থ অবিচ্ছিন্ন রাখার জন্যে আমেরিকা দেশে দেশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে স্বৈরশাসকদের। সেই আমেরিকা বাংলাদেশের মত দুর্বল ও বিশ্ব জিও-পলিটিক্স খেলার ইনসিগ্নিফিকেন্ট খেলোয়াড়কে নিয়ে খেলা শুরু করেছে। রহস্যটা কোথায়?

আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন আগ্রহের অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশটার চীন প্রীতি। বিশ্ব রাজনীতিতে চীন তার ফুট-প্রিন্ট শক্ত করার মানসে তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে দেদারসে বিনিয়োগ করছে। এবং এসব বিনিয়োগ দেউলিয়া বানাচ্ছে অনেক দেশের অর্থনীতি। চীনা বিনিয়োগের অন্যতম কম্পোনেন্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের দুর্নীতি। যেহেতু চীনা অর্থের মালিক দেশটার সরকার, তাই পদ্মা সেতু প্রকল্পের মত মেগা প্রকল্পে নিজদের হিস্যা আদায়ে রাজনীতিবিদদের বিশ্ব ব্যাংকের মত প্রাইভেট এনটিটিতে ধর্না দিতে হয়না। চীনা প্রকল্পে লেনা-দেনা রাজনীতিবিদদের জন্যে সুস্বাদু ও পানির মত মসৃণ। কারণ তা হয় অতি গোপনে উচ্চ পর্যায়ে।
চীনের সাথে মার্কিনীদের বৈরী সম্পর্ক। তার সাথে মরার উপর খরার ঘায়ের মত কাজ করেছে রুশদের ইউক্রেইন আক্রমণ। এই আক্রমণ পশ্চিমা বিশ্বকে এক করেছে। ইউরোপ ও আমেরিকা একহাট্টা হয়ে ইউক্রেইনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিচ্ছে। এবং এই জোট চাইছে বাকি বিশ্বও তাদের সাথে থাকুক।

এখানেই সমস্যা বাংলাদেশের। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সহ অনেক উঁচু পর্যায়ে রুশদের পক্ষ নিয়েছে। ভোট দিয়েছে রুশদের অবৈধ আক্রমণ জাস্টিফাই করতে। আমেরিকা চোখ রেখেছে এসব রুশ মিত্রদের দিকে। নিশ্চিত ভাবে বলা যায় বাংলাদেশ উঠে এসেছ এ তালিকার অনেক উপরে।

মার্সিয়া বার্নিক্যাটের উপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা আমেরিকা হালকা ভাবে নিয়েছে ভেবে থাকলে আমরা ভুল করব। তার উপর যোগ হয়েছে বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঘেরাও অধ্যায়। বর্তমান সরকার গায়ে পড়ে আমেরিকার সাথে ঝগড়া বাধিয়েছে। পা দিয়েছে চীনের অনৈতিক অর্থনীতির ফাঁদে। বাংলাদেশ আমেরিকার চোখে এমন কোন দেশ নয় যা নিয়ে তাদের মাথা ঘামাত হবে। কিন্তু খোঁচা দিয়ে ঘুমন্ত সিংহকে জাগিয়ে দিলে কিছুটা যে ভয় পেতে হয় তার কিছু নমুনা ধেয়ে এসেছে সরকারের দিকে।

আমেরিকার সাথে ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশের আপাদমস্তক করাপ্ট সরকার। ভিসা বিধিনিষেধের বদলা নিতে উঠিয়ে নিয়েছে রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তা। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে ইসলামী সন্ত্রাসীরা যদি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপর হামলা চালায় তার দায়-দায়িত্ব হাসিনা সরকারকেই নিতে হবে। এমন কিছু হলে আমেরিকার বদলা হবে আরও কঠিন।

মোরাল অব দ্যা স্টোরি হচ্ছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে গেলেও তা বৈধ হবেনা আমেরিকার চোখে। তার প্রতিক্রিয়া কি হবে তা তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। সমস্যা এখানেই শেখ হাসিনার। দেশে হয়ত উচ্ছিষ্ট-খোরদের নিয়ে বহাল তবিয়তে রাজত্ব করতে পারবেন কিন্তু এই রাজত্বের মূল্য দিতে হবে তার আমেরিকা প্রবাসী ছেলেকে। মন্ত্রী সভার সদস্যরা যার বিনিয়োগ করেছেন আমেরিকায় তাদের। এই তালিকায় যোগ হবেন আমলা, সেনা অফিসার সহ আরও অনেকে। হারাবেন লুটের সম্পদ। এক কথায় আমেরিকার হাতে চলে যাবে সিসিম ফাঁক মন্ত্র। আর এই মন্ত্র বলে তারা উন্মুক্ত করবে শেখ হাসিনাদের ডার্টি লন্ড্রি।

আরও একটা বাস্তবতা আমাদের মনে রাখতে হবে; আমেরিকা একক একটা দেশ হলেও তার প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিশ্বব্যাপী। আমেরিকানদের ভিসা বিধি-নিষেধের উত্তাপ যে ইউরোপ সহ উন্নত বিশ্বের বাকি দেশেও ছড়িয়ে পারবেনা তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়?

শান্তির জন্য ধৈর্য

Wha

ভালোবাসাটাই ভালো না থাকার সব চেয়ে বড় কারণ। সুতরাং, আমরা কখনোই ভালো থাকতে পারবো না। কারণ, আমরা মায়া ছাড়তে পারবো না। আর মায়ার সাথে হৃদয় জড়িত, হৃদয় ছাড়া মানুষ বাঁচে না। অতএব, পৃথিবীতে আসার পরই আমাদের প্রথম শিক্ষা হওয়া উচিত ছিল, শান্তির জন্য ধৈর্যশীল হওয়া।

ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতা

আমরা প্রত্যেকেই ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছি, যেখানে আগে মানুষ হওয়ার কথা ছিল। পড়ালেখার সময়কাল সবাই বলি, পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হবো। আসলে কথাটা ধারণ না করে, অনুভব না করেই বলি। পড়ালেখা শেষ করে সবাই ধনী হওয়ার কথাটাই ভাবি, আমিও হয়তো এতোটা এর ব্যতিক্রম নয়। যদি মানুষই হতাম তাহলে হয়তো দেশে খুনী, ডাকাত, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, মীর জাফর, দেশদ্রোহী, অপব্যবহারকারী, সিন্ডিকেটকারী, অবৈধ পাচারকারী, অন্যায় ও অত্যাচারকারী তৈরী হতো না। চলো আমরা সবাই মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি।

বাংলা ভাষা

ভাষার লড়াই

বাংলা ভাষা আমার মায়ের
ভালোবাসি খুবই,
কথা কই বা কাব্য লিখতে
ছন্দ মালায় ডুবি।

বীর বাঙালি রক্ত ঢেলে
আনল বাংলা ভাষা,
জনগণ তাই বেজায় খুশি
পূর্ণ মায়ের আশা।

সালাম রফিক বরকত জব্বার
বাংলা ভাষার তরে,
রক্ত স্রোতে ভাসিয়ে প্রাণ
আনে বাংলা ঘরে।

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
বছরে যেই আসে,
বাংলার মানুষ আনন্দেতে
জয় উল্লাসে হাসে।

ফুল দেয় সবাই স্মৃতিসৌধে
অনেক দোয়া মাগে,
ভুলে না কেউ ভাষা পেলাম
তাঁদের প্রাণের ত্যাগে।

স্বরবৃত্তঃ ৪+৪/৪+২

ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে আমার কিছু কথা

এই মুহূর্তে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কথা বেশ মনে পড়ছে। সামনে পেলে তার কাছে ক্ষমা চাইতাম। কেন ক্ষমা চাইতাম অলরেডি চিন্তাশীল বন্ধুরা বুঝতে পেরেছেন। যারা কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করার মত সময় বা ধৈর্য পান না তাদের জন্য বলছি। ক্ষমা চাইতাম কারণ তাঁর বলা একটি কথা ‍শুনে আমরা হাসাহাসি করেছিলাম। সেই যে ৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে তিনি বলেছিলেন সামান্য টাকা। তখন আমরা হাসাহাসি করেছিলাম। ছয় হাজার কোটি টাকা নাকি সামান্য টাকা! আদার ব্যাপারি হয়ে জাহাজের খবর নিতে নেই প্রবাদটিও আবার প্রমাণিত হলো। আমরা আদার ব্যাপারী তাই জাহাজের খবর নিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছি। আমরা নবগঙ্গা নদীর মাঝি তাই সাগরের ঢেউ বা গভীরতা সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। সে কারণেই ৬ হাজার কোটি টাকাকে মাত্র বা সামান্য বলা শুনে আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি তার বলা কথাটা পুরোপুরি সত্য। এই যে কয়েকটি ব্যাংক থেকে একটি মাত্র গ্রুপ ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে এটা দেখেতো তাঁর কথাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ৩০ হাজার কোটি টাকার পাশে ছয় হাজার কোটি টাকা রাখলে তা অবশ্যই সামান্য মনে হবে। এই পরিমান টাকা খরচ করে পুরো পৃথিবীকে বিনোদন দিতে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে কাতার!

শুনতে ৩০ হাজার কোটি টাকা খুব সহজেই শোনা গেলেও বাস্তবে এই পরিমান টাকা একসাথে রাখলে পুুরো বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের মত একটা বড় বিল্ডিং ভরে যাবে। এখন কথা হলো ঘরের চালে যে টিন থাকে তাতে ছিদ্র কিন্তু একদিনে বড় হয় না। প্রথমে সুই হয়ে ঢোকে তারপর কুড়াল হয়ে বের হয় বলে যে একটা আঞ্চলিক প্রবাদ আছে ঘটনা কিন্তু সেরকম। এই যে বিরাট অংকের কারসাজি এটিতো একবারে হয়নি। হয়েছে ধীরে ধীরে এবং পরিকল্পিত ভাবে। আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া ছিল তা এক অজ্ঞাত কারণে ২০২০ সালে সরিয়ে নেওয়া হয়! জাতির সামনে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হতে পারে কেন এবং কোন যুক্তিতে পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল? যারা সরিয়ে নিয়েছিলেন তাদেরকে এর জবাব দিতে হবে। ঋণ অনিয়ম তো আজকের ঘটনা নয়। এই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল আরও এক যুগ আগে। ঋণ অনিয়মের আশঙ্কায় ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ব্যাংকটির বিভিন্ন সভায় অংশ নিতে শুরু করেন।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেলো বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি শিল্প গ্রুপের হাতে চলে যায়। প্রথম আলোর ভাসুর হয় বলে সম্ভবত গ্রুপের নাম উল্লেখ করা হয়নি অথবা তাদের কী এক সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী নাম উল্লেখ করেনি। তবে সবাই জানে গ্রুপটির নাম এস আলম গ্রুপ। এরপর ২০২০ সালের মার্চে ওই পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক! বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক (তৎকালীন) গভর্নর ফজলে কবির ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক রাখার পক্ষে ছিলেন না। এই তথ্যটি জেনে আমি সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছি। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর যদি পক্ষে না থাকেন তাহলে আর কী বলার থাকে। যদিও এখনো অন্য ছয়টি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিযুক্ত পর্যবেক্ষক রয়েছে। তাহলে ইসলামী ব্যাংকে থাকলে দোষ কী ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর নেই। এর বাইরে নতুন করে আরও কয়েকটি ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে যে মাননীয় গর্ভনর সাহেব কেন এবং কোন যুক্তিতে এর পক্ষে ছিলেন না?

মালিকানা বদলের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন বিবেচনায় পর্যবেক্ষক সরিয়ে নিল, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ এ কথাও বলছেন এখন, অনিয়মের সুযোগ করে দিতেই ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কাগুজে কোম্পানির নামে যে প্রক্রিয়ায় ব্যাংকটি থেকে অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের আদলেই। ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক ঋণ অনিয়মের ঘটনা সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক, বেসিক ও ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মের চেয়েও ভয়াবহ বলে মনে করছেন ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা। ব্যাংকটি থেকে কী পরিমাণ অর্থ এখন পর্যন্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা অনুসন্ধানে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শন দল। আমার মতে শুধু ওই ব্যাংকে খতিয়ে দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত হবে না বরং গ্রুপের অন্যান্য ব্যাংকেও খোঁজ নিতে হবে পাশাপাশি সেই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা পর্ববেক্ষক সরিয়ে নিয়েছিলেন তাদের বিষয়েও খোঁজ নিতে হবে। এবং এ ক্ষেত্রে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করলে তা কতটা স্বচ্ছ হবে সেটাও ভাবার বিষয়।

ধান ভানতে শীবের গীত বলে যে প্রবাদটি আছে তাও এখানে টেনে আনতে চাই। এই যে খাস বাংলায় বাঁশ খাওয়া বলে যে একটা কথা প্রচলিত আছে আমরা নানা ক্ষেত্রে তা দেখতে পাই। ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে কথাটা কিছুটা প্রযোজ্য কারণ বাঁশখালী,পটিয়া,সাতকানিয়া নামে এলাকাও যে এর সাথে কিছু অংশে যুক্ত। যাদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হওয়ার যোগ্যতা নেই তারাও বাঁশখালী ও এর আশেপাশের লোক হওয়ায় অনায়াসে ব্যাংকার বনে গেছে। শুধু তাই নয় যতটা জেনেছি তাতে বুঝেছি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় নিজস্ব লোক রাখা আছে এটা মনিটর করার জন্য যে কেউ যেন গ্রুপের বিষয়ে কিছু বললে তা উপর মহলকে জানানো যায়। চাকরি দেওয়ার সময় যোগ্যতা বিবেচনা না করে বাঁশখালী বা নির্দিষ্ট এলাকা বিবেচনা করে চাকরি দেওয়াটাও ব্যাংকের জন্য কাল হয়েছে। ক্ষমা চাইছি নানা ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি যারা করেন তাদের কাছে এবং পটিয়া,সাতকানিয়া, বাঁশখালীর অন্যদের কাছে। আমি তাদেরকে ছোট করতে চাইনি।

সাতকানিয়া,পটিয়া এবং বাঁশখালী এলাকার যত সংখ্যক মানুষ গ্রুপের ব্যাংকে আছে তার বিশ ভাগের একভাগ লোকও অন্যান্য পঞ্চাশটি ব্যাংকে নেই যাদের বাড়ি ওই এলাকায়। যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি না দিয়ে এলাকাভিত্তিক এবং নিজেদের ফায়দা লুটে নেওয়ার জন্য কিছু মানুষকে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ধ্বসে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে আপনাকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া মানেই আপনার মুখ বন্ধ রেখে আপনাকে দিয়ে কিছু করিয়ে নেওয়া। হয়েছেও তাই। একটি লোনের আবেদন থেকে শুরু করে পাশ হয়ে গ্রাহকের হাত অব্দি যাওয়া পর্যন্ত কী পরিমান প্রসিডিউর ফলো করতে হয় তা আমি ব্যক্তিগত লোন নিতে গিয়ে দেখেছি এবং স্টাডি করে দেখেছি বড় লোনগুলো আরও কতটা জটিল। এই যে ফিল্টারিং হয় বা স্তরে স্তরে ব্যারিকেড পার হয়ে একটি লোন পাশ হয়। কোথাও না কোথাও ঘাপলা ধরা পড়বেই। কিন্তু প্রতিটি চেক পোস্টে বাংলা সিনেমার মত যদি নিজস্ব চামচা বা পা-চাটা লোক থাকে তবে আপনাকে কোনো চেকপোস্টেই আটকানো হবে না। আপনি অনায়াসেই পার হয়ে যেতে পারবেন। ব্যাড লোনগুলোর ক্ষেত্রে বিষয়টা এমনই ঘটে। আর যখন ক্ষমতাধরদের অন্যায় কেউ আপস করতে রাজি হয় না তখন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। যার নজির অহরহ।

আবার ফিরে আসি প্রথম আলোর প্রতিবেদনে।এদিকে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে দেখলাম ইসলামী ব্যাংক থেকে কেন পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তার যথাযথ কোনো উত্তর দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো মন্তব্য না করার নীতি নিয়েছে। সংস্থাটির মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদের কাছে গতকাল সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়ার পর ব্যাংকটি থেকে কাগুজে কোম্পানি খুলে অর্থ বের করা শুরু হয়। প্রথমে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এই অনিয়ম শুরু হয়। ফলে পাঁচ বছরে এই শাখার ঋণ ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বের হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা।

চট্টগ্রামে ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শাখা থেকে একই প্রক্রিয়ায় টাকা বের করা হয়। আর ২০১৭ সাল থেকে খাতুনগঞ্জ শাখার দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ঋণসংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পাশাপাশি দ্রুত পদোন্নতি পাওয়া প্রধান কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তাও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। এভাবে ২০ থেকে ৩০ কর্মকর্তা মিলে ব্যাংকটিতে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। আর ব্যাংকটির পরিচালকেরা বেশির ভাগ একটি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হওয়ায় তারাও এতে সমর্থন দেয়।

ব্যাংকটির ঋণের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কাগুজে কোম্পানিগুলোর নামে সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ ছিল দেড় হাজার কোটি টাকার কিছু কম। কারণ, ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৩০ কোটি টাকা। এর ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১ হাজার ৫০৪ কোটি ঋণ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। আর ওই পরিমাণের কম ঋণ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার দরকার হয় না। তাই কাগুজে কোম্পানিগুলোর ঋণের পরিমাণ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়।

সাম্প্রতিক একটি ঘটনা উল্লেখ করি। আমার ফেসবুক বন্ধু নুরুল আবসার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন যার শিরোনাম ছিল “শেষ পযর্ন্ত ইসলামী ব্যাংকেও খেয়ে দিতে হলো”? আমি সেখানে মন্তব্য করেছিলাম এটা কি আজকের ঘটনা? যবে থেকে এস আলম গ্রুপের হাতে গেছে ব্যাংক তবে থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। এখন আমার ফ্রেন্ডলিস্টে নেই এমন এক ভদ্রলোক আমাকে মেসেজ দিয়ে জানতে চেয়েছেন “এস আলম গ্রুপ আপনার কোনো ক্ষতি করেছে?” দেখলাম ভদ্রলোক অফিসার হিসেবে ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত আছেন। আমি বললাম তর্ক করতে চাই না। পত্র পত্রিকায়তো দেখতেই পাচ্ছেন। আমি যদিও তার সাথে তর্ক করতে তো চাইনি তবে আমি একজন সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং চিন্তক হিসেবে আমার মতামত নিশ্চই বলতে পারি। তিনি জানতে চেয়েছিলেন আমার কোনো ক্ষতি করেছে কি না। আমার স্পষ্ট জবাব আমার কোনো ক্ষতি করেনি। কিন্তু ক্ষতি করেছে পুরো দেশের,পুরো জাতির! আর সেই জাতির একজনতো আমিও। সুতরাং আমারওতো ক্ষতি করেছে বলতে হয়। কিভাবে করেছে তা নিশ্চই বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। তবুও অল্প কথায় বলি। আর্থিক এই বিরাট অনিয়মের কারণে দেশের মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে এবং দেশের অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উপর প্রেসার বেড়েছে। তাদের মর্যাদাও নষ্ট হচ্ছে। রেপুটেশন খারাপ হচ্ছে। জনমনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে যে সব ব্যাংক এভাবে দেউলিয়া হয়ে যাবে বা গ্রাহকের টাকা হারিয়ে যাবে। এ বিষয়ে আপনারা নিশ্চই জানেন যে কিছুদিন আগেও এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক বাধ্য হয়ে সার্কুলার জারি করে কিছুটা সামাল দিয়েছে। পাশাপাশি আমি দেখেছি আমার লিস্টের ব্যাংকার বন্ধুরাও তাদের টাইমলাইনে সেটা পোস্ট করে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে।

একটি প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের নয়ছয় বা খামখেয়ালিতো শুধু ওই প্রতিষ্ঠানকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেয় না বরং একই ঘরানার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং পুরো জাতিকেই বিব্রত করে। পুরো জাতির ক্ষতি করে। শুধু তাই নয় হয়তো দেখা যাবে অনেক ব্যক্তির নামেও দুই চার কোটি টাকার লোন হয়ে আছে কিন্তু সে জানেই না! যারা নামে বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলে হাজার কোটি টাকা নিয়ে নেয় তারা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কারো ছবি আর নাম ব্যবহার করে দুই চার কোটি নিতে পারে না বা নেয়নি তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। যদি এমন হয়ে থাকে তবে আল্লাহ ভালো জানেন কতজনের কপাল পুড়বে। ধরুন যে অফিসারটি ৬০ হাজার বা এক লাখ টাকা বেতন পান এবং একমাত্র আয়ের মাধ্যম তার ওই বেতন তার নামে দুই চার কোটি টাকা লোন পাশ হয়ে গেছে কিন্তু সে জানেই না। তাহলে পরে যদি এটা সে জানতে পারে তার কি সাধ্য আছে সেটা শোধ করার? আমরা দেখেছি ২০/৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ করতে পারেনি বলে কত কৃষকের কোমরে দড়ি (রুপক অর্থে অথবা বাস্তবে) বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ রাঘববোয়ালরা সব সময় অধরাই থেকে গেছে। যখন যোগ্য ও মেধাবীদের বদলে অযোগ্য আর সুবিধাবাদীদের নিয়োগ দেওয়া হয় বা দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন ফলাফল ভালো হয় না। সেটা ক্রিকেট খেলা হোক, ফুটবল খেলা হোক, রাজনৈতিক দল হোক বা কোনো চাকরি হোক। সবক্ষেত্রেই অযোগ্যদের দায়িত্ব দিলে সর্বনাশই হয়। আর একদল মানুষ চায় ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান বা দেশের ক্ষতি হয় হোক আমার ক্ষতি না হলেই হলো। আর তাইতো কিছু মানুষ লুটেপুটে সুইস ব্যাংক বোঝাই করে। বলির পাঠা হয় দেশ এবং দেশের আপামর খেটে খাওয়া মানুষ। দুর্নামের ভাগিদার হয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। সন্দেহ মাথায় নিয়ে সংসার করতে হয়। উল্লেখ্য এই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সনদ চেক করলে অনেক জাল সনদও পাওয়া যাবে বলে আমার ধারণা। কারণ এর আগে যতদূর জানি ইউনিয়ন ব্যাংকে এমন জাল সনদধারীদের ২৭ জনের চাকরি গিয়েছিল। ইউনিয়ন ব্যাংকের যে ঘটনাটি উল্লেখ করলাম তার তথ্যসূত্র আমার কাছে নেই।

লেখকঃ জাজাফী
১ ডিসেম্বর ২০২২

পরিবহন কথা

82730
প্রতীকি ছবি

মিনিট দশেক অপেক্ষা করে বাস পেলাম। বাসে উঠতে না উঠতেই দুজন দীর্ঘদেহী মানবের বাঁধায় থমকে গেলাম; পথ আটকে দাঁড়িয়েছিলেন। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। পরের স্টপে আরও কয়েকজন বাসে উঠছে দেখে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু না, সেই দীর্ঘদেহী ব্যক্তিদ্বয়ের কারণে পারলাম না। পিছন ফিরে দেখলাম পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা ভিড়ে নিষ্পেষিত হচ্ছে প্রায়। এদিকে নিজেরও বেহাল দশা!

সুযোগ পেতেই ওই মানবদ্বয়ের মাঝ-বরাবর নির্ঝঞ্ঝাটভাবে ঢুকে পড়লাম। পাতলা গোছের মানুষ বিধায় খুব একটা অসুবিধা হয়নি। দুজনের মাঝে জোর করে ঢুকে শক্ত চাপ সৃষ্টি করলাম। এতে উভয়ের ভুঁড়ি দু’দিকের দুটো সিটে লেগে যাওয়ায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করতে লাগলেন। মূহুর্তেই মুখের লাবণ্যতা হারিয়ে ফেললেন দুজনেই। ব্যথার চটে বেশ কাবু হয়েছেন বটে!

এই ভুঁড়িকষ্ট থেকে বাঁচতে চেষ্টার কমতি রাখলেন না। কিন্তু আমি তো নাছোড়বান্দা, সেখান থেকে সরার নাম-ই নেই। পরক্ষণে তাদের ভুঁড়ির দুর্দশার কথা চিন্তা করে বেরিয়ে এলাম। দেখলাম, দুজনে ভুঁড়িতে হাত বোলাচ্ছে। হাসি পেল কিন্তু হাসলাম না। নয়তো প্রতিবেশী যাত্রীরা ভাববে কারো সর্বনাশ, কারো পৌষ মাস।

অতঃপর একজন সে স্টপেই নেমে গেল; অন্যজন ল্যাম্পপোস্টের মতো দাঁড়িয়ে রইল। যতক্ষণ বাসে ছিলাম তার দিকেই খেয়াল ছিল- বেচারা কোন কথা বলেনি। অনেকেই তাকে অতিক্রম করে নামা-উঠার সময় নানান কথা বললেও তিনি উত্তর করেননি। চালকের সহযোগী বারবার ধমক দিচ্ছেন কিন্তু সেই দীর্ঘদেহী ভদ্রলোক নির্বাক জানালা ভেদ করে উঁচু উঁচু দালানের দিকে তাকিয়ে রইলেন।

ছোটন ভাই এবং আমাদের গোল্ডকাপ

im

পোস্টারে, মিডিয়া এবং আলোতে সবাই আছে কিন্তু নেই শুধু মহিলা ফুটবল দলের কারিগর কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ২০০৯ সাল হতে জীবনের সব কিছু বিসর্জন দিয়ে পড়ে আছেন মহিলা ফুটবল দলের পিছনে। নিজ সন্তানের মত অত্যন্ত আদর যন্ত্রে গড়ে তুলে এশিয়া সেরা করেছেন। মানুষের কটু কথা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য এমনকি রটনা ও ঘটনা কোনো কিছুই তোয়াক্কা করেননি।

কলসিন্দুর স্কুলের শিক্ষক মিনতি রাণী শীল ও মফিজ উদ্দিন, এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের অজপাড়া গাঁয়ে নিরীহ স্কুলে নীরবে তৈরি করেছেন দেশ সেরা এক মহিলা ফুটবল টিম। নিজ টাকায় খেলার সরঞ্জাম এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের। অথচ মিডিয়ার আলোর ঝলকানিতে তাঁরা নেই, এমনকি নামও নেই কোনো প্রিন্ট মিডিয়া কিংবা ইলেকট্রিক মিডিয়ায়। মফিজ উদ্দিন অবশ্যই মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে তবুও উনার নামটা স্মরণ করা যেত। প্রচার করা যেত উনার পরিবারের গভীর অনুভূতি।

আজ বড় বড় কর্মকর্তাদের ছবি আর বক্তব্যে সয়লাব সব মিডিয়া। সামনের মানুষ গোলাম রব্বানী ছোটন আর সাবিনা পিছনে অসহায় দাঁড়ানো। মেদওয়ালা পিছনের মানুষ হাসি মুখ নিয়ে সামনে চেয়ারে বসা। ছোটন ভাই আপনি ঘরহীন সম্পদহীন সংগ্রামী একদল আন্তরিক লড়াকু সৈনিক দিয়ে ফুটবল দলকে জিতিয়ে দেশকে সম্মানিত করেছেন তাই আপনার স্থান ১৬কোটি মানুষের হৃদয়ের গভীরে।

আপনাদের অবহেলা আর অপমান জনগণ মেনে নেয়নি তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের প্রচণ্ড ঝড়। মাথা মোটা কিছু লোক হয়তো অচিরে আপনাকে কিংবা আপনাদেরকে জনগণ হতে দুরে সরিয়ে দিবে। তবে এর বিচারও জনগণ কঠোরভাবে করবে, নিশ্চিত থাকুন। দেশের প্রতি আস্থা রাখুন ভালোবাসায় অবিচল থাকুন। গোল্ডকাপ জেতা ওরা সবাই জনগণের মাথার মুকুট।

Pic# LinkedIn

প্রতীক্ষায় তখন আসমুদ্রহিমাচল

সেদিন ১৯৭২-এর ১০ই জানুয়ারী
প্রতীক্ষায় তখন আসমুদ্রহিমাচল
কোটি মানুষের স্বপ্ন হলো উচ্ছ্বল
বাংলার মাটি কলরবে গেল ভরি।

অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
সাত কোটি মানুষ হলো শান্ত তৃপ্ত
আনন্দ-গুঞ্জনে চারিদিক মুখরিত
জনতার ঢল যেন এক বিস্ফোরণ।

বিমান ছুঁলো বাংলার মাটি ; আর
বেড়িয়ে আসেন কিংবদন্তি নেতা
প্রতিষ্ঠাতা, বাঙালি জাতির পিতা
খুশিতে আকাশ বাতাস, বাংলার।

ছিলেন যে কারাগারের অন্ধকারে
পাকিস্তানীদের কি নির্দয় আচরণ
ভাঙতে পারেনি আত্ম বিশ্বাস মন
বাংলার চিন্তা যে তাঁর হৃদয়জুড়ে।

মঞ্চে তিনি সন্মুখে লাখো জনতা
এত প্রেম মানুষে, হলে অশ্রুসিক্ত
ভাবলে, আমাকে ভালোবাস এত
তুমিই তো এনে দিলে স্বাধীনতা।

হাত নাড়ালে তুমি, মানুষের প্রতি
বাংলার বিজয় পেলো যেন পূর্ণতা
হৃদ-স্পন্দন ফিরে পেলো জনতা
ফিরে পেলো বন্ধ, বাংলার স্থপতি।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২০

আমরা মুখোশধারী

1632911392166

যে ছেলেটি মদ্যপ এবং নেশা করে তাকে সমাজ বখে গিয়েছে বলে। পরিবার কুদৃষ্টিতে দেখে। কিন্তু কেন?

আপনি তো ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। আপনি জানেন কি? মিথ্যা বলা, গীবত করা, পরনিন্দা, লোভ, অহংকার এবং মানুষ ঠকানো মদপানের চেয়ে জঘণ্য ও মহাপাপ। অথচ আপনি আমি উক্ত শব্দদ্বয়গুলির সাথে বসবাস করছি। মিথ্যা বলি, গীবত করি, গুজব রটাই ইত্যাদি প্রতিনিয়ত যারা করছে তাদের কেন মুসলমান সমাজে জায়গা হবে? যদি সেই মদ্যপ ছেলেটি খারাপ বলে পরিচিত হয় তাহলে তারা কেন ভদ্রতার আসনে বসে থাকবে?

আপনি নিজেকে মুসলমান দাবী করছেন। আপনি রোহিঙ্গা ও কাশ্মীরে হামলার প্রতিবাদ করেন কিন্তু বেলুচিস্তান ও ইয়ামেনের হামলার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেন না। কেন? আপনি ফেলানীর জন্য প্রতিবাদ করেন কিন্তু সৌদি থেকে হাজার হাজার নারী নির্যাতিত হয়ে দেশে ফিরছে তার প্রতিবাদ করেন না। কেন?

আপনি মুসলমান অথচ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছেন পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টোর জন্য। যে আশ্রয় দিয়েছিল সেই কর্নেল তাহেরের জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছেন জিয়াউর রহমানের জন্য। কেন ভাই? শেখ মুজিব আর কর্নেল তাহের কি মুসলমান ছিলেন না?

কারণ আপনাদের মধ্যে আল্লাহর আনুগত্যতা নেই আছে ধর্মান্ধতা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। আপনারা নিজ ধর্মের বিধিনিষেধ পালন করবেন না কিন্তু গুজব রটানোর জন্য ধর্মকে হাতিয়ার করে মায়া কান্না আর ভন্ডামি করতে ওস্তাদ। আপনারা শুধু সামাজিক যোগাযোগে নিজেকে মুসলামান দাবী করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবেন কিন্তু গাম্বিয়ার মত আর্ন্তজাতিক আদালতে মামলা করার সাহস করবেন না। কারণ আপনাদের ঈমানী দুর্বলতা অধিক থেকে অধিকতর এবং আপনারা সুবিধাবাদী।

আপনারা সত্যিই সুবিধাবাদী। ৯০দশকেও এইদেশে টিভি দেখা হারাম ছিল। ছবি তোলা নাজায়েজ ছিল। এখন আপনাদের সুবিধার্থে ধর্মকে পরিবর্তন করে জায়েজ করে নিলেন। ইসলাম ধর্মে সকল ধরণের খেলা হারাম শুধু ঢাল-তলোয়ার খেলা ছাড়া অথচ আমরা বর্তমানের সকল ধরণের খেলাকে জায়েজ করে নিজেদের মগ্ন রাখি, আর বলি আমি মুসলমান।

আপনার ছেলে-মেয়ে পড়াশুনার নামে বাহিরে গিয়ে সবার অগোচরে প্রেম লীলায় মগ্ন অথবা আপনি অনলাইনে ফটকামী করে বেড়াচ্ছেন, যা ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ আর সেই আপনারাই গলাবাজি করেন রোহিঙ্গা মারছে, কাশ্মীর মারছে, তসলিমাকে হঠাও। তসলিমা নাসরিনের সাথে আপনার পার্থক্য কোথায়? তসলিমা সরাসরি ধর্মকে অস্বীকার করছে আর আপনি ধর্মের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ধর্মকে পরোক্ষভাবে অস্বীকার করছেন।

আপনি নিজেকে মুসলমান দাবী করেন কিন্তু আল্লাহকেও অস্বীকার করেন। বিশ্বাস হচ্ছে না? ঠিক আছে, একজন সুন্দরী রমনীর সাথে আপনাকে এক সপ্তাহের জন্য একটা আবদ্ধ ঘরে থাকতে দিবো। তারপর আপনি নিজেই রাসলীলায় মেতে উঠবেন আর তখনই ভুলে যাবেন আপনার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথা।

এমন কোনো পুরুষ আছেন যারা একবারের বেশি দু’বার কোনো বেগানা নারীর দিকে দৃষ্টি দেন নাই? নাই ভাই, এমন কেউ নাই। একবারের বেশি দু’বার তাকাতে আল্লাহ আপনাকে নিষেধ করেছেন অথচ কোনো সুন্দরীকে দেখলে ধর্মের হুকুমকে উপেক্ষা করে দৃষ্টি দিয়ে চোখের যেনা করছেন। কেন? আপনি তো মুসলামান!

পিতা-মাতার হক কতজনই পালন করেন? যে ছেলেটি রাজপথে কাশ্মীরীদের জন্য স্লোগান তুলছেন সেই ছেলেটি কি তার পিতা-মাতা হোক জীবিত কি মৃত তাদের হক পালন করেছে কিংবা করে? ধর্মের নামে যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখন মানববন্ধন, প্রতিবাদ, কুশপুত্তলিকা পোড়ানোসহ কত কি করেন অথচ যারা আল্লাহর হুকুম অমান্য করে বৃদ্ধাশ্রমে পিতা-মাতাকে ছুঁড়ে আসে তাদের বিরুদ্ধে কখনো রাজপথে নেমেছিলেন? নামেন নি। তাহলে আপনি কিভাবে মুসলমান দাবী করেন?

ইসলাম ধর্ম একমাত্র আল্লাহর ধর্ম যা মহানবী (সঃ)’র মাধ্যমে প্রেরিত। যদি তাই বিশ্বাস করেন তাহলে ধর্মকে যেমন ইচ্ছা তেমন না সাজিয়ে নিজেকে শুধরিয়ে ঈমানকে পাক্কা করুন। আমি হলফ করে বলতে পারি আমার দেশের ৮৫% মানুষের ঈমান ঠিক নাই। অথচ নিজেকে ধার্মিক দাবী করে।

মাটিতে সিজদা দিলেই নামাজ কায়েম হয় না। মাটিতে সিজদা তো হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টানরাও দেয়। যারা জুমার দিন নামাজে যান তারা কি আল্লাহকে ভয় করে জুমার নামাজ আদায় করেন? নারে ভাই। পারিবারিক অভ্যস্ততার কারণে শুক্রবারে মসজিদে যায়। যদি আল্লাহকে ভয় করতো তাহলে মিথ্যা, গীবত, পরশ্রীকাতরতা সহ ইসলাম বিরোধী সকল নিষেধ পরিহার করে ইসলামের হুকুম-আহকামের উপর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করতো।

নামাজ কায়েম করতে হলে আগে নিজেকে বিশ্বাসী করে তুলুন, আল্লাহ ও তাঁর নবীর হুকুম আহকাম গুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করে তারপর নিজেকে মুসলমান দাবী করে গলাবাজি করবেন। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না করে, ধর্মীয় শুদ্ধতা চর্চা করুন। তাহলে দেশ, জাতি ও আপনার মঙ্গল এবং আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন।

একটি কুড়ি দুইটি পাতা

বাবু,
কি দেখিস?
পাতা তোলার মুগ্ধকর ছবি-
নাকি জরাজীর্ণ দেহটা?

যদু, কি ভাবছিস অমন করে,
পাতা তোল-
চব্বিশ কেজিতেই পাবি একশো বিশ টাকা-
পাতা তোল, পাতা তোল।

অমোধিনী দেবীর ক্রোড়ে সন্তান কাঁদছে,
বাবু, কি দেখিস?
শুকনো মুখের করুণ দৃষ্টি-
নাকি পাতা তোলা দেখছিস?

বাগানের পাশের ছেলেটা স্কুলে যাচ্ছে,
কি সুন্দর দেখতে!
দেবী, তোর ছেলে স্কুলে যাবে না?
অমন বলিস না আমাদের পড়তে নেই।

নাপিতের দোকানে চাকরি পেয়েছে বাবুন,
ভালো মন্দ খেতে পারবি!
বাগানে বসে অমন ভাবছো-
বাজারে যাও আগে দেখি!

বাবু,
ছবি তুলিস না,
গতরে কাপড় নেই-
ছোট জাতের ইজ্জতই তো আছে।

চব্বিশ কেজিতে একশো বিশ,
বিষ বেঁধেছে গলায়,
আমরা আবার মানুষ কবের?
মরলেই তো বাঁচে দেশ।

বাবু,
কি লেখছিস?
অমন করিস নাতো-
এইসব বলতে নেই।

অবিনিশ বুড়ো লাঠি ঠকঠকে,
ক্ষণিক কেশে বলে-
বাবু,
একটি কুড়ি দুইটি পাতা এই গল্প লেখো!

দেবীর করুণ চাহনিতে,
কত গল্প ভেসে উঠে,
তবে, মানুষের মননে ঠিক একটাই গল্প-
একটি কুড়ি দুইটি পাতা।

২৫ শের প্রাতে

Sha

পদ্মা নিয়ে গুণীজনেরা
গুন গান করেছেন কত পদ্যে।
সর্বনাশা কৃতীনাশার কত গল্প
ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পে।

কত বিরহ কত বেদনা কত অশ্রু
মিশেছে এই জলে।
কত প্রেম কত সুর কত গান
জন্ম নিয়েছে পলে পলে।

বানভাসিরা ভারী করেছে পাড়
ছেড়েছে দীর্ঘ শ্বাস।
বাস্তু ভিটা সব হারিয়ে
ছুটেচলা উদ্ধোশ্বাস।

ভাবতো বসে কূলের নাগাল
কি করে বাগে আনবে।
স্বপ্ন দেখালো পিতা পাখির মত
উপর দিয়ে ই পারাপার হবে।

পিতা পুত্রীর মিলিত স্বপ্নে
খুললো দখিন দুয়ার।
সব বাঁধা উপড়ে ফেললে তুমি
জয় হাসিনা র সরকার।

সাহসিকতার বিজয় গাঁথা
জবাব প্রতি হিংসার।
গৌরব আর সষমতার প্রতীক
স্বাধীন বাংলা র।

পদ্মার বুকে যেনো ফুটেছে শত পদ্ম
নয়নাভিরাম রাতে।
এপার ওপারের মিলনমেলা
রচিত হল ২৫শের প্রাতে।