বিভাগের আর্কাইভঃ আড্ডা

মুহূর্তের ডাক!

আমি মাবিয়া, আমার তেমন ভাবে বড় কোনও বর্ণনা না দিলেও চলবে। কারণ নিজেকে বর্ণনা করতে গেলে দেখা যাবে তখন মূল কথায়ই আসা হবে না। তবে এই টুকু বলতে পারি আমি অন্য সব সাধারণ মানুষদের থেকে একটু বেশি সাধারণই বটে।

আসলে কেও যদি আমাকে হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করে আমার জীবনের সব থেকে খুশির মুহূর্ত কি? তবে সত্যি বলতে আমি একটু ঘাবড়ে যাই। আমি তখন কিছুক্ষণ ভাবি। ভাবতে ভাবতে জীবনের একটু পেছনে চলে যাই। আমার অতীতের মুহূর্তগুলো বইয়ের পাতার মতো ঘাঁটাঘাঁটি করতে থাকি। আসলে কি, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার মধ্যেও কিন্তু একটা সুন্দর মুহূর্ত আছে। অজান্তেই এর মধ্যে কতো ঘটনা এই মস্তিস্কের মনে পরে যায়। যেমনটা এখানেরই উদাহরণ দিলাম। লিখাটা লিখার আগে মুহূর্ত খুঁজতে যেয়ে কতো সুন্দর মুহূর্তের সাথে পুনর্মিলনী করে নিলাম। মনটা তাই ভালো লাগছে।

যাই হোক আমার সুন্দর মুহূর্তটা একটু তুলে ধরি। জীবনে অনেক সুন্দর মুহূর্ত আছে তবে তুলে ধরার জন্য বেছে নিলাম আমার প্রথম মেলায় যাওয়া আমার দাদির সাথে। খুব ছোট্ট ছিলাম আমি। জীবনে তখন দুঃখের বলতে কোন অনুভব বা অনুভূতি ছিল না। চোখের সামনের যা আসত সবই সুন্দর ছিল।

আমি আমার দাদির হাত ধরে ছিলাম যেন কোন ভাবেই ভিড়ের মাঝে হারিয়ে না যাই। রঙ বেরঙ এঁর জিনিস গুলো আমার চোখকে মুগ্ধ করে দিলো। আমি প্রচণ্ড অবাক হয়ে এদিক সেদিক দেখেও যেন দেখার শেষ করতে পারলাম না। এতো মানুষ ছিল আমার চারো পাশে। সবার ভিড়ের মাঝে হঠাৎ দূরে একটা অদ্ভুত শব্দের বেশ বড় একটা বস্তু দেখতে পেলাম।

দাদি! দাদি! দাদি! আমাকে ঐ বড় বস্তুটার দিকে নিয়ে যাও না প্লিজ। আমি আমার দাদির হৃদয়। হাঁটা ধরলাম বলা মাত্র। আমার ছোটো ছোটো পা হাঁপাতে হাঁপাতে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলল। আমার খুশি ছিল আকাশ সমান। আমি এখন যেমন ছোট্ট বাচ্চাদের খুশি মুখটার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি সেদিন দাদিও হয়তো আমার দিকে বার বার তাকিয়ে হাসছিল। বাচ্চাদের মনটা কতো পবিত্র হয় তাই না? নতুন কিছু একটা দেখলেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।

সে দিন আমার সাথে ঠিক এমনটাই হয়ে ছিল। আস্তে আস্তে আমি গেলাম, হ্যাঁ! আমার জীবনের প্রথম অন্যতম খুশির মুহূর্ত। বড় একটা হা করে বস্তুটা ঘুরতে দেখছি আর তার অদ্ভুত শব্দে বুকের হার্ট বিট যেন ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। ভয় হচ্ছে খুব শব্দের উপর। কিন্তু বস্তুটার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাচ্ছে।

“এটাকে নাগর দোলা বলে” দাদি বলল আমাকে। আমি তেমন করে দাদির কথা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম না। আসলে কানের সামনে বাহারি শব্দের সাথে দাদির প্রতিটা কথা গুলো শুধু বাতাস এঁর মতো কথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমার কাছে আস্তে পারছিল না।

হঠাৎ বস্তুটা থেমে গেল! আমি কৌতূহলী… নষ্ট হয়ে গেল নাকি? ভাবছিলাম আর দাদি আমাকে বস্তুটার সামনে নিয়ে যেয়ে বসিয়ে দিলো। আমার সাথে আরো তিনটা মানুষ। আমি তাদের বেশি একটা মনোযোগ দিলাম না।
হঠাৎ লোকগুলো হাত দিয়ে বস্তুটাকে ঘুরানো শুরু করল। চোখের এক পলকেই আমি আকাশ এঁর দিকে উঠে গেলাম। আমি অবাক! হুট করে নিছে নেমে যাচ্ছি আবার হুট করে আকাশ এঁর দিকে উঠে যাচ্ছি।

এতো সুন্দর কেনো অনুভূতিটা? আমি নিজেই হতভম্ভ! উপরে উঠলেই সারাটা মেলা দেখা যায়। জমকালো আলোতে বাহারি রঙ্গের জিনিস গুলো আমার চোখকে ধাঁধিয়ে দিলো! পৃথিবী কি এতোই সুন্দর?

সব কিছুর মাঝে একটা অপরূপ হাসি নিয়ে আমার দাদি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ কতোটা বছর হয়ে এলো নাগর দোলায় চড়তে পারি কিন্তু এই হাসিটা আর দেখতে পাই না!

বইমেলা

বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য বই। তবে অন্যান্য বই খুব সামান্য বিক্রি হয়।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? এবং কখন পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে। যারা সাহিত্য চর্চা করে। যারা সাহিত্য ভালোবাসে এবং অবসর পায়। এরকম মানুষ পাঁচ দশ শতাংশের বেশি নয়।
এর বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ আছেন যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন পড়েন পড়তে বাধ্য হন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। প্রয়োজনে ও জীবনের টানে কিনতে হয় ও বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর দরকার হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ জীবনের বই নিয়ে।
ক’টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক’টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া সিক্স সেভেন থেকে বিএ বিএসি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কত আর আধুনিক কবিতা গল্প পড়বে?
ফেসবুক আসার পরে আবার কতশত কবি সাহিত্যিক। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও বিখ্যাত আসছে! যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছে। দিয়েই চলেছে। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাবা যায়!
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। কিন্তু গল্প কবিতার বই আমাদের মত সাধারণের কাছে নৈব নৈব চ।
যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কবিতা গল্প লিখি। সেই জীবন সচেতনতা যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্ল্যারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে।

শাসন

স্কুলে বেত থাকবে না তা কখনও হয়। স্কুল হচ্ছে মানুষ তৈরির কারিগর। শাসন ছাড়া কেউ কখনও মানুষ হয়? বেত হাতে টহল দিতেন আমাদের প্রধান শিক্ষক মহাশয়। আমরা সবাই ভয়ে কাঁপতাম।
ভয়ে কাঁপতাম তিনি মারবেন বলে নয়, ভয়ে কাঁপতাম পড়া জিজ্ঞেস করলে পারব না তাই। ক্লাস চলাকালীন দুষ্টুমি করলে ঠিক চোখে পড়বে তাই। নিয়মিত স্কুলে আসি না তাই। মিথ্যে বাহানা ঠিক ধরে ফেলতেন তাই। পড়া বলা শুরু করলেই ঠিক বুঝতে পারতেন দায়সারা পড়া পড়ে এসেছি তাই।
যারা সত্যিকারের ছাত্রছাত্রী। পড়া করত। পড়া বুঝত। নিয়মিত পড়ত। তাদের কাছে বেতের কোন ভয় ছিল না। কিংবা বেতের জন্য আমরা অনেকেই ছাত্রছাত্রী হয়ে গিয়েছিলাম।
সুশীলবাবু গৌরবাবু অনিলবাবু সতীশবাবু মন্মথবাবু বিষ্ণুবাবু যার হাতে বেত থাক না কেন সবাই চিনতেন কে ছাত্রছাত্রী আর কে ছাত্রছাত্রী নয়। তৃতীয় নয়ন দিয়ে ঠিক চিনতেন কে কে ‘ছাত্রানাং অধ্যয়ন তপ’ হিসেবে স্কুলে আসছে আর কে আসছে না।
তুমি স্কুলে আসবে আর ওই তো একটু আধটু পড়লেই হল কিংবা না পড়লেই হল অথবা ছাড় তো পড়ে আর কি হবে এবং কত আর পড়ব পাশ করলেই হল বা ঠিক স্টেজে মেকাপ দিয়ে দেব কিংবা পড়ার জ্বালায় জীবনে আর থাকল কি এ রকম ভাবলে কিংবা মানলে চলবে না। জীবনের এই সময়টা শেখার সময় তাই স্কুলে এসে পড়তেই হবে। ‘ছাত্রানাং অধ্যয়ন তপ’ হতেই হবে। এই ব্যাপারটা আমাদের শিক্ষক মহাশয় বেত হাতেই বুঝিয়ে দিতেন।
শিক্ষক হিসেবে স্কুলের বেতের সাথে সাথে সেই ভাবনাটিও পোষণ করতেন। তাই আমাদের কাছে বেত বা শাসন ছিল মানুষ হওয়ার অবস্থান। আমরা বেতের দু চার ঘা খেলে বাড়িতে বলতেই পারতাম না। কিংবা বললে আরো দু চার ঘা খেতে হত।
একদিন দুদিন পড়া না করে গেলেই যে তুমি বেতের মার খাবে তা কিন্তু নয়, পড়া করে গেলে কিন্তু তোমার বুদ্ধিতে অত ভাল পড়া বলতে পারলে না তার জন্য যে শাস্তি পাবে তা কিন্তু নয়, পড়াশুনার সাথে সাথে যদি তুমি দুষ্টুমি কর তাহলে দুষ্টুমির জন্য তুমি শাস্তি পাবে তা কিন্তু নয়।
কোন শিক্ষা সে পারিবারিক হোক বা সামাজিক হোক কিংবা বোধ বুদ্ধির অথবা খেলাধূলার সেখানে শাসন থাকা খুব জরুরী। মনে আছে ‘দঙ্গল’ ছবির কথা। বাবা যখন মেয়েদের চুল কেটে দিচ্ছে, মেয়েদের ভোর পাঁচটার সময় ঘুম থেকে তুলছে, ছেলেদের সাথে কুস্তি করাচ্ছে তখন কিন্তু সেই বাবা জানত না তার মেয়ে দেশের হয়ে সোনার মেডেল আনবে। যদি মেয়েরা মেডেল আনতে না পারত তা হলে ঐ বাবা নিষ্ঠুর প্রমানিত হত। শুরুতে সবাই তাই বলেছিল। বাঘা যতীন যখন একবার পুকুরের ঝাঁঝিতে পায়ে আটকে গিয়েছিল তখন পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে তার বাবা বলেছিল – তোমাকে নিজেকেই বিপদ কাটিয়ে উঠে আসতে হবে। বাঘা যতীন উঠে এসেছিল।
তবেই না তাঁরা বরেণ্য।
আমাদের ক্লাসে অলক ফার্স্ট হত। কিন্তু স্যাররা তিন চার সাত আট রোল নম্বরের পার্থ নিমাই কিংবা সুরেশকে পছন্দ করত। কেন না স্যাররা জানতেন কার মধ্যে কি আছে। এবং সত্যি সত্যি পরবর্তীতে অলক কেবল ক্লার্ক। কিন্তু পার্থ নিমাই অরূপ সাধন এরা কেউ বিজ্ঞানী কেউ ডাক্তার কেউ আধিকারিক। এই উপলব্ধি স্যারেদের মধ্যে ছিল বলেই না বেত নিয়ে ক্লাসে এলেও স্যারেদের খুব মানাত।
সেইসব দিন পেরিয়ে এসে, সেই সব বেত দেখে ভয়ে ভয়ে কেঁপে ওঠা একজন শিক্ষার্থীও বলবে না যে সেদিনের সেই বেত, স্কুলের বেত, বেত হাতে ক্লাসে প্রবেশ করা স্যার ভুল ছিল।
শাস্তি নয় শাসন। শাসন থাকা খুব জরুরী। শাসন না থাকলে শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না।
আমাদের ক্লাসে বিনয় একেবারেই পড়া পারত না। অঙ্ক টুকটাক পারত কিন্তু ইংরেজীতে একেব্বারে কাঁচা। স্যার বলতেন – তোর বাড়িতে ইংরেজীর চাষ হয় যে নিজের মত ইংরেজী বলছিস?
তো সেই বিনয়কে কোন স্যার মারত না। বরং স্কুলের সব কাজে স্যারেরা বিনয়কে ডাকত। স্কুলের কোন অনুষ্ঠানে চেয়ার বেঞ্চি বয়ে দেওয়া খাওয়ার এনে দেওয়া তদারকি করা সব কাজে বিনয়। এমন কি বেত এনে দেওয়াটাও বিনয় করে দিত। সেই বিনয় এখন বড় হোলসেল বিজনেস করে। আমাদের গ্রামের বেশ বর্ধিষ্ণু নাগরিক। বকাটে উচ্ছন্নের দলে নাম লেখায় নি। স্কুল থেকে বেত উঠে গেল। বেতের সেই চোখ চলে গেল। কত ভাল স্কুলে দিয়ে টাকা পয়সা খরচ করেও ফটাফট ইংরেজী বলা বিনয়ের ছেলে মেয়ে বকাটের দলে উচ্ছন্নের দলে ভিড়ে গেল। বিনয় দুঃখ করে।

ভণিতা না করেই

ভণিতা না করে যা বলব সত্য বলব বলে গোপলা মানে আমি, খুব রেগে মেগে জ্বলে পুড়ে জ্বলে উঠেও কিছু করতে পারি না। কারণ ও চুপচাপ ঘরের কাজ নিজের আত্মভোলা মনে করতে লাগল। আমি যত বলি, এটা কি একটা সংসার কেউ কারো কথা শোনে না। যত সব অনিয়মে ঘর বাঁধতে গেলে সংসার কিন্তু ভেসে যাবে। ও হাসল। বলল – চা দেব। পেট গরম হয়েছে।
সমস্যায় পড়লে বিকৃত মুখ করে বসে থাকি। বলব নাকি বলব না। ভাবতে ভাবতে বলে ফেলি। ও সব শুনে টুনে এত সহজ সরল এবং প্রাঞ্জল সমাধান করে দেয় যা এক কথায় বললে বলতে হয় এক্সসেলেন্ট। যা শুনে আমি বুঝলাম ভালোবাসা কারে কয়।
ও রান্না করতে কিছুতেই পছন্দ করে না। কিন্তু যখন সামনে পরিবার এসে পড়ে। বলে, নিজের ছেলে, নিজের স্বামী, নিজের মা, নিজের বাবা তখন তারা কি খাবে সকালে কি খাবে বিকালে কি খাবে ইত্যাদি ভেবে ভেবে নিজের হাতে রোজ রান্না করে। আমি কিছু সাহায্য করি। অবে তা নামমাত্র। তখন কোন কষ্ট কোন রাগ কোন অভিমান থাকে না। বরং রান্নার মধ্যে মিষ্টতা ঝরে পড়ে।
সন্তান মানুষ করার ব্যাপারে ওর সমস্ত দায় দেখে আমি অবাক হই। কেন না একটানা পেছনে লেগে পড়াশুনা কিভাবে ছেলেকে করাতে হয়। কিভাবে পড়াশুনা করিয়ে নিতে হয় তা আমি বার বার শিখি। যা আমার পক্ষে কখনই সম্ভব হত না। তবু তার মাঝে সন্তানের প্রতি মাতৃত্বের বিন্দুমাত্র ভালোবাসা কম হয় না।
এর পর আসি কিছু না না। রেগে গেলে চুপ করে থাকা যে মানুষের এক বৃহৎ গুণ এবং তার ফলে ফল সন্তোষজনকভাবে নিজের দিকে এসে পড়ে তা আমার অর্ধাঙ্গিনীর কাছ থেকে আমি শিখেছি। ফলে ও নিজে রাগলেও যেমন পরিস্থিতি অনুকূল হয় তেমনি আমি রাগলেও তাও অনুকূল হয়। কিন্তু রাগ ষোলআনা থাকে।
আমি বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে তবু ইত্যবসরে বলে ফেলাই ভাল যে বিয়ের পরে প্রেমই আসল প্রেম। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমার ও। সংসারে পা দিয়ে তারপর একসাথে পায়ে পায়ে চলার নাম প্রেম।
ও, আর একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি পড়াশুনায় কিন্তু বি সিরিয়াস। নিজের এবং অন্যের। অফিসে যখন যায় তখন ঘর পরিপাটি করে নিরাপদের দরজা জানলা খোলা রেখে তবে যায়। আর অফিসে কারো আঙুল তোলার পর্যন্ত সুযোগ দেয় না। আসলে যে পারে সে সব পারে। বিন্দাস পরিপাটি চুল বাঁধতে পারে আর ঘরে বাইরে সামলাতেও পারে। এমনি কি দ্রৌপদীর মত রাঁধতে।
রমণীর গুণ আমি আমার মাকে দেখেছি এবং পত্নী রূপে তেমনি পেয়েছি।
এ পর্যন্ত ও ও করেই শুরু এবং শেষ করলাম। কেন না শুধু লেখা হোক বা সাহিত্য। ঘরের কথা যেমন বাইরে বলতে নেই তেমনি বাইরের লোকের কথায় আমিও সাহিত্য করতে রাজি নই। তাই যা বলব তা বলার জন্য বললাম। এ আমি নয় আর ও ও নয়। ঠিক আছে? হয়তো বা সবাই ঠিক নেই শুধু আমি ঠিক আছি।

জ্ঞান ও তথ্য

বহু লোক তথ্য সংগ্রহকারী কিন্তু জ্ঞানী নয়। আসলে তথ্য সংগ্রহ করে তাকে জীবন চিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে নিজস্বতা গড়ে তোলার নাম জ্ঞান।
তাই ক্লাসে বহু ছেলে মেয়ে ফার্স্ট হয় কিন্তু জ্ঞানী হতে পারে না। কেন না জ্ঞানী হতে হলে আপনার মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি গড়ে তুলতে হবে। ক্লাসে যা পড়ানো হয় তার মধ্যে বেশিরভাগ তথ্যমূলক। তাই স্কুলের পড়াশুনার সাথে সাথে যদি নিজস্ব ভাবনার পরিসর থাকে তবেই সেই ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তথ্যের মধ্য থেকে জ্ঞান সে সংগ্রহ করতে পারবে।
আমাদের দেশে বহু ছেলে মেয়ে পরীক্ষায় নম্বরের খেলায় শুধু তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে গড়ে উঠছে। কেন না বাংলা ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞান এবং অঙ্কে যদি ঠিক মত তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে তাহলে সেই ছেলেমেয়ে অঙ্কে বিজ্ঞানে ইতিহাসে নম্বর কম পাবে।
স্কুলে কিংবা বাড়িতে কোথাও প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছে না ফলে ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান অর্জন হচ্ছে না। অথবা কম হচ্ছে।

নপুংশক জাতীর অহংকার: প্রসঙ্গ কিছু আলোচিত মন্তব্য

শ্রদ্ধেয় একজন ব্লগার পূর্ববর্তী এক পোস্টে তার মূল্যবান মন্তব্য করেছেন এবং তাতে আরেকজন ব্লগার সমর্থনও করেছেন। আমার কাছে মনে হলো এটা নিয়ে কিছু তথ্যবিভ্রাট সম্পর্কিত আলোচনার দাবী রাখে।

১৯৪৭, ৬৬, ৭১ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে প্রচুর প্রচুর বাঙ্গালী হিন্দু মাইগ্রেশন নিয়েছে ভারতে। হিন্দুস্থান ভাবতে এরা পুলকিত হয়। প্রণামে আর ঈশ্বর কৃপায় মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে ফেলেন আর কি। বৃষ্টি হয় এখানে আর মাথায় ছাতা তুলে দেশে।

“দাঙ্গার ইতিহাস” লিখেছেন শৈলেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, রকমারীতে পাবেন। বইটি সংগ্রহে রাখার মতো। বেশ বস্তুনিষ্ঠ দলিল এজন্য বলবো যে ততকালীন পত্র পত্রিকা ও দস্তাবেজ ঘাটলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। কলকাতায় দাঙ্গা শুরু হয়েগেছে এবং সে খবরে বাংলাও বেশ গরম। ঈদুল ফিতরের নামাজের পর নোয়াখালীর পীর গোলাম সারোয়ার হুসেনী জনসমাবেশে হিন্দুদের ওপর সরাসরি আক্রমন করার নির্দেশ দেন নবী মোহাম্মদের ফিদায়ী অভিযান ও বানু কুরায়জার গনহত্যার রেফারেন্স টেনে। তখন তার নিজস্ব মিঞা বাহিনী ও এলাকার মুসলমান অনুসারীরা হিন্দুদের ওপর আক্রমন করে হাটের মধ্যে। শুরু হয়ে যায় দাঙ্গা। পুরো দাঙ্গায় মৃত্যু হয় প্রায় ৫০০০০ হিন্দু এবং ধর্ষিতা হয় লক্ষাধিক নারী। কখনো কখনো নবী মোহাম্মদের সাফিয়া ধর্ষন অনুসরনে সেখানকার বনেদী ব্যাবসায়িক পরিবারের প্রধান কর্তা, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যা করে যুবতী ও কিশোরী নারীদের ধর্ষন করা হতো গনিমতের মাল হিসেবে এবং তাদেরকে উপহার হিসেবে বন্টন করে দেয়া হতো। প্রতিবেশী হিসেবে থাকা মুসলমানেরা তাদের হিন্দু প্রতিবেশীদের ঘরে ঢুকে হত্যা ধর্ষন কিছুই বাদ রাখেনি। পরে যখন নোয়াখালী ছেড়ে রায়টের ভয়াবহতা কুমিল্লা চাঁদপুর ছড়িয়ে পড়ে তখন মুসলিম লীগের পান্ডারা তাতে যোগ দেয় এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম আক্রান্ত হয়।

ততকালীন মাংলার মূখ্যমন্ত্রী হোসেন সোহরাওয়ার্দী এটাকে তুচ্ছ সন্ত্রাসী ঘটনা বলে উড়িয়ে মুসলমান জঙ্গিদের আরও সুযোগ করে দেন সাম্প্রাদায়িক দাঙ্গার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করতে। যখন কেন্দ্রিয় সরকার থেকে প্রচন্ড চাপ আসতে থাকে এবং স্বয়ং গান্ধীজি স্বদ্যোগী হন তখন তিনি মেনে নেন। কতটা চশমখোর হলে এটা সম্ভব, চিন্তা করা যায়? এমনকি কাজী নজরুল ইসলামের টাকা মেরে খাওয়া আরেক জোচ্চর শেরে বাংলা ফজলুল হক বলে বসেন হিন্দু নারীদের ধর্ষন সম্পর্কে: হিন্দু নারীরা প্রাকৃতিক ভাবেই বেশী সুন্দরী।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫০ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজারে কম্যুনিস্ট ধরবার নামে এক হিন্দু বাসায় গিয়ে স্ত্রী কন্যাকে একি বিছানায় ধর্ষন করতে উদ্যোত হলে জয়দেবের বর্শায় খোচায় দুই ধর্ষক মুসলমান কনস্টেবল জায়গায় অক্কা পায় এবং শুরু হয় ৫০ এর রায়ট যা ছড়িয়ে পড়ে বরিশাল খুলনা পর্যন্ত। নাচোলের গনহত্যার নাম শুনে থাকবেন হয়তো। এরকম আপ্যায়নের কথার সাথে “হিন্দুস্থান ভাবতে এরা পুলকিত হয়।” এ কথাটি যায় না।

সত্যিকারের অত্যাচারিত কত জন সেটা বলা যাবে না। আমি তো অন্তত বিশ্বাস করি না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা সব দেশেই আছে।

মন্তব্যে এ কথাটা তৎকালীন বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হোসেন সোহরাওয়ার্দী বললেও যখন গান্ধীজি এবং কেন্দ্রিয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী আকাশযোগে উপদ্রুত এলাকা পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখার সিদ্ধান্ত নিলেন তখন সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে সেসব এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে নামসর্বস্ব তদন্তকমিটি গঠন করলেন। কিন্তু সেসব এলাকার জঙ্গি মুসলমানরা এক অদ্ভুত টেকনিক হাতে নিলো। তারা ধর্ষিতা ও গনিমতের মাল হিসেবে রেখে দেয়া নারীদের দ্রুত কাগজ কলমে টিপসই নিয়ে ধার্মান্তরীত করে বোরখা পড়াতে শুরু করলেন। যাতে করে স হসা না চেনা যায়। এবং যারা বেচে গেছেন তাদের কাছ থেকে মুসলিম লীগের জিহাদী ভাইয়েরা জিজিয়া করের নামে চাঁদা ওঠাতে লাগলেন। পরে যখন কেন্দ্রীয় সরকার স হ ব্রিটিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন রিপোর্ট দেয়া শুরু করলো তখন বাঙ্গালী জঙ্গি মুলসমানদের হত্যাকান্ডগুলো বানু কুরায়জার ওপর নবী মোহাম্মদের ফিদায়ী অভিযান বা আলির খাওয়াজিরী গনহত্যা বা বক্কর উমরের রিদ্দার যুদ্ধে অনুসৃত নৃশংস ও বর্বরতম পদ্ধতিগুলো অনুসরন করা হয়েছে যেসবের বর্ননা দেখলে আতকে উঠতেই হয় এবং শুধু শৈলেশের বই নয়, ১৯৬০ সালে লেখা মোকসেদের লেখা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নামের বইতেও সেটা উঠে এসেছে। এরপরও প্রচুর দাঙ্গা হয়েছে এবং সেসবে বাঙ্গালী জঙ্গি মুসলমানদের বর্বরতা পাকিস্থানীদের হার মানায়। আর ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সেই পাকিস্থানী মুসলিম ভাইয়েরাই ১৯৭১ সালে বাঙ্গালি মুসলমানদের একই রকম ফিদায়ী ধর্ম যুদ্ধ শুরু করে যার ফলাফল হয় রক্তাক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। কিন্তু যে জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফিদায়ী অভিযান, আমাদিয়া ইশতিশাদী, ইন ঘিমাসের মতো জিহাদী চেতনা সে দেশ কিভাবে সাম্প্রদায়িক না হয়ে থাকতে পারে?

কাগজে কাগজে যতই সেক্যুলারিজমের কথা বলা হোক না কেন; বর্তমানে ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশ আপনিও ভালো জানেন। ভারত এখন আর অসাম্প্রদায়িক দেশ নয়। হিংসাত্মক অত্যাচার কতটা আর এর চেহারা কতটা ভয়াবহ তা কিন্তু বাংলাদেশের নব্য মাথামোটাদের ধারণায়ই আসবে না। বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে।

ভারতের কাগজে কলমে অসাম্প্রদায়িক হলেও তার কিছুটা ধরে রেখেছিলো বলেই আবুল কালাম আজাদ নামের মুসলিম বিজ্ঞানী প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন। সেখানে হিন্দু মুসলমান সবাই উচ্চ পর্যায়ে যেতে পারে। এটা ঠিক মোদীর থিওক্রেটিক চেহারার ভারত কখনোই কারো কাছে কাম্য নয় এবং সেজন্যই সেখানে এর জোরালো প্রতিবাদ হচ্ছে। বর্তমানে ভারত বিজ্ঞান স হ অন্যান্য বিষয়ে যতটা এগিয়েছে সেটা আপনি ভাবতে পারবেন না। আবার বাংলাদেশের যত মানুষ ভারতে অবৈধভাবে পাড়ি দেয়, শোনা যায় না কাশ্মীর বা অন্যান্য অঞ্চল থেকে মুসলমানরা নিগৃহিত হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। ভারতে মুসলমানরা যদি খারাপ হয়েই থাকবে তাহলে চলচ্চিত্র তারকা নুসরাত কিভাবে লোকসভায় আসন পায় এবং ধুমধাম করে শাদী করে। অথবা সালমান খান শাহরুখ খান? আপনি হয়তো বলবেন এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা তাহলে আসুন পরিসংখ্যান। অন্তত মানুষের মুখের গুজব ও মিথ্যা কথার জবাব পরিসংখ্যান ভিন্ন কিছু হতে পারে না
উইকির এই পেজ অনুসারে আপনি বাংলাদেশ থেকে কত হিন্দু, এমনকি মুসলমানরাও সেখানে যাচ্ছে। বারাকাত সাহেবের পরিসংখ্যান আপনাদের বিশ্বাস হবে না কারন উনি নিজে কিছু অন্যান্য দুর্নীতির সাথে যুক্ত থাকায় তার সবকিছুই এখন প্রশ্নবিদ্ধ কিন্তু উইকির ঐ পেজে বেশ কিছু একাডেমিক ও স্বাধীন পরিসংখ্যান আছে সেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ করতে যাওয়া হাস্যকর। যদিও বাঙ্গালী যেখানে এখনও বিশ্বাস করে চাঁদে নবী মোহাম্মদের দ্বিখন্ডনের দাগ আছে বা চাঁদে নাসা যাইনি কিন্তু সাঈদিকে দেখা গেছে, তাদের কাছে একাডেমিক গবেষনা মানেই নাপাকী জিনিস, তাই না?

আরেক জায়গায় বলা হয়েছে

আমার আশেপাশে মুসলিম যারা রয়েছেন, আমি দেখেছি তারা কখনও ভিন্ন দেশে ইমিগ্র্যান্ট হবার চিন্তাই করে না।

ইউরোপীয়ান মাইগ্রেশন কাউন্সেলিং এর তথ্যমতে ইউরোপে রেকর্ডসংখ্যক মুসলিমরা অভিবাসী হয়। এদের বেশীরভাগই যুদ্ধ বিদ্ধস্ত, দুর্ভিক্ষপীড়িত এবং নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে। সবচেয়ে আশ্চর্য্যের বিষয় হলো মাইগ্রেশন পলিসির তথ্যমতে লিবিয়া দুবাই হয়ে সাগর পথে পাড়ি দেয়া সবচেয়ে অবৈধ অভিবাসী হলো বাংলাদেশীরা। ইউরোপীয়ানরা এই পরিসংখ্যান এজন্য অবাক হন যে বাংলাদেশে নেই কোনো দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ বা কোনোকিছু। আবার আপনিও বলছেন এদেশে হিন্দু মুসলমান সবাই ভারতের থেকে অনেক ভালো।

আবার কমেন্টের সাথে সহমত জানিয়ে আরেক সহব্লগার যে কমেন্ট করেছেন, প্রোফাইল ঘেটে দেখলাম উনি অস্ট্রেলিয়া নিবাসী। তবে এটা ঠিক ব্যাক্তিগত জীবনে আমরা সবাই এমন কিছু ঘটনার মুখোমুখি হই যেটা কিনা আমাদের ভাবনার মানসপটে এবং চিন্তা চেতনায় প্রভাব ফেলে

গতকাল বাবাকে ফোন দিলাম দেশের পরিস্থিতি জানার জন্য উনি বললেন গুজব নাকি ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্র। আমি তার উত্তরে বললাম, গুজব সবচেয়ে বেশী হয় পুরান ঢাকায় এটা তুমি নিজেও জানো। এবং এসব অশিক্ষিত লোকজন কি ভারত থেকে টাকা খাইছে? এটা তোমার মনে হয়?

তখন সে একটু চিন্তা করে বললো, তুমি ঠিক বলছো। অশিক্ষিতদের দোষ দিয়ে হবে, শিক্ষিতরাও তো করতেছে। সবাই করতেছে। আমি বুঝি না দোষটা তো সব তো দেখি আমাদের। আমরা এমন হইলাম কেন?

বাবার এ প্রশ্নের উত্তর আমি জানি। কিন্তু তাকে দিতে মন চাচ্ছে না। উনি আবার আগামী বছর দ্বিতীয় হজ্ব করার স্বপ্ন দেখছেন।

শুভ ব্লগিং

ভালবাসা

সুপ্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আস সালামু আলাইকুম, কে কেমন আছেন? স্নিগ্ধ শরতের বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে আনন্দ সুখের ভেলা। আপনজনকে সাথে নিয়ে শুনছেন অদৃশ্য কোন সেতারে মধুর সুর, তাই না? এইতো জীবন পথের ভেলা, এই ভেলায় চরে পাড়ি দিতে হবে দূরের সেই চেনা জগতের অচেনা ভুবনে।
আমারও ভীষণ ভাল লাগছে পরিবারের সাথে এই দিনগুলি কাটাতে। ঢাকা শহরের রাস্তা ঘাটের এই অসহনীয় জ্যাম ডিঙ্গিয়ে সারা দিনের ক্লান্তির পরে বাড়ি ফিরে এসেই স্ত্রী সন্তানের মুখ দেখে সব ক্লান্তি ভুলে বলি আমি তোমাদের কতো ভালবাসি, সারা ইনের ক্লান্তি মুছে গেল। ছট মেয়ে এক গ্লাস পানি এনে দিল তারপরে গিন্নি কিছু হালকা নাস্তা আর তার সাথে এক কাপ গরম চা, আহ! প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। আপনারা কে কিভাবে দিন কাটান তাই নিয়ে আসুন আড্ডা দেই।
সু স্বাগতম সবাইকে, যারা বিগত ঈদে বাড়ি গিয়েছিলেন আপন জনের সাথে মিলিত হতে। আপন জন, আত্মীয় স্বজন, পারা পড়শি, বন্ধু বান্ধব, হিতাকাঙ্ক্ষী শুভাকাঙ্ক্ষী সবার সাথে দেখা করেছেন? একান্ত জনকে কি বলেছেন আমি তোমাকে ভালবাসি কিংবা I love you? কিংবা আমি তোমাকে/তোকে কত আদর করি, কত মায়া তোর জন্য, সব সময় তোর কথা আমার মনে হয় কিংবা মা তোমার মত মা এই জগতে আর নেই, তুমি সত্যিই খুব ভাল মা, আমি তোমাকে কতো ভালবাসি মা। মনে করতে পারেন স্ত্রী কিংবা স্বামীকে জীবনে কয়বার বলেছেন আমি তোমাকে ভালবাসি? যদি বলে থাকেন তাহলে ভাল কথা। আর যদি নিতান্ত আনন্দের আতিশয্যে বা ভুলে বা লজ্জায় বা শুধুমাত্র তাচ্ছিল্য করে না বলে থাকেন তাহলে আজই ফোন করে বা নিতান্ত একটা sms করে বলে দিন। “আমি তোমাকে ভালবাসি”। আমাদের জীবন পথের জন্য অন্যান্য যে সব কথা নিত্য বলে থাকি সে তুলনায় খুবই ছোট্ট একটা কথা কিন্তু এর আবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই তিন শব্দের কথা কয়টি বদলে দিতে পারে আপনার আমার সাথে এই পৃথিবীর সম্পর্কের ধরন এবং গতি প্রকৃতি।
ইংরেজি ভাষায় যেমন তিনটি যাদু শব্দ রয়েছে প্লিজ, এক্সকিউজ মি এবং সরি তেমনি এই বাক্যটিতে ও একটু যাদু রয়েছে। ইংরেজরা ওই তিনটি জাদু খুবই সম্মানের সাথে মেনে চলে আমি নিজ চোখে দেখেছি। আমরাও কি পারিনা তেমনি করে এই সামান্য কয়টি শব্দ প্রিয়জনকে বলতে। আমি আমার স্ত্রী সন্তানদের প্রায় প্রতিদিনই এই কথাটি বলি। এমনকি জেনে অবাক হবেন যে আমি সন্তানদের সামনেও স্ত্রীকে এই কথাটা বলি এমনকি আমার নাতি রিজভান রিহানকেও শিখিয়েছি I love you, তোমাকে ভাল বাসি। যেখানে স্বার্থের কোন বালাই নেই যেখানে ভালবাসা অর্থের মাপে মাপা যায় না সেখানে এই কয়েকটি শব্দের মূল্য অনেক অনেক অনেক। এই সুখের স্মৃতি ধরে রাখতে আমাদের ভালবাসা গুলি বিলিয়ে দেই চারিদিকে ছোট বড়, চেনা অচেনা, জানা অজানা সবার জন্য।

আবার নতুন করে শুরু করি বিদ্বেষ, হিংসা, মোহ আর আক্রোশ থেকে বেরিয়ে আসার নতুন এক প্রযুক্তি যার নাম ভালবাসার যাদু।
আসুন আজ থেকে আমরা আবার নতুন করে ভালবাসার প্রকল্প হাতে নিই। আমাদের ভালবাসার নীরব আর অদৃশ্য সৌধ রেখে যাই আমাদের উত্তর পুরুষের জন্য, শূন্যতার অভিশাপ মুছে রেখে যাই আগামীর জন্য। আগামী যেন দাঁড়াতে পারে তার নিজ মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে। আমাদের জীবনের ব্রত হোক সবাইকে হাসিমুখে ভালবাসা, এবং তাকে জানতে দেয়া যে, আমি তোমাকে ভালবাসি।
ধন্যবাদ সবাইকে

মজার রেসিপি কাচ্চি বিরিয়ানি

অনেককেই দেখছি নানান রকমারি রেসিপি লিখছেন। শাপলা (ইদানিং তাকে দেখাই যাচ্ছে না), আমার প্রিয়তমা এবং একমাত্র প্রেমিকা ইজি রেসিপি এদের এই সব মজার মজার রেসিপি দেখে আমা্রও একটু সাধ হল দেশের পাবলিক, জনগন এবং জাতির উদ্দেশ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার। যেমন কথা তেমন কাজ, সাথে সাথে কলম কেঁচি হাতে বসে পড়লাম এমন একটা মজার রেসিপি লেখার জন্য। আমাকে দেখতে শান্ত সুবোধ বালকের মত মনে হলে কি হবে আমি কিন্তু আসলে অতিমাত্রায় অস্থির প্রকৃতির মানুষ। যখন যা ভাবি তা না করা পর্যন্ত স্থির হতে পারি না।
যাক, এমন কথা বললে সারা দিন ধরেই বলা যায় কিন্তু তাতে কি এমন আসে যায়? কাজে চলে আসি?
তাহলে আজ আমি একটা বিরিয়ানির রেসিপি দেই? ভয়ের কিছু নেই, নিতান্ত খারাপ কিছু হবে বলে আমি মনেই করি না। তা হলে শুরু করছি:

উপকরণঃ
১। কাচ্চি বিরিয়ানি- এক প্লেট।
২। শামি কাবাব- দুইটা কিংবা চিকেন কাটলেট হলেও চালিয়ে নেয়া যাবে।
৩। চিকেন ফ্রাই- দুই টুকরা, এর সাথে অল্প কিছু ফ্রেঞ্চ চিপস নিতে পারেন।
৪। টমাটো, শশা, কাঁচা মরিচ, পিঁয়াজ, লেটুস পাতা ও ধনে পাতার সালাদ- এক কোয়ার্টার প্লেট।
৫। মাটন রেজালা- এক পেয়ালা।
৬। এক গ্লাস বোরহানি, বোরহানি না পেলে কোক বা স্প্রাইট দিয়ে আজকের মত চালিয়ে দিন।
৭। রাইস পুডিং/আইসক্রিম/ফ্রুট কাস্টার্ড- এক বাটি।
৮। পানি- এক গ্লাস।

কি ভাবে সদ্ব্যবহার করবেনঃ
(যদি আপনি হাত দিয়ে খেতে পারেন তাহলে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন আর যদি ছুড়ি কাটা দিয়ে খাবার অভ্যাস থাকে তাহলে ডান হাতে কাটা নিয়ে শুরু করুন)
১। হাত মুখ ভাল করে ধুয়ে টেবিলে বসুন।
২। সালাদের প্লেট থেকে দুই এক টুকরা শশা কিংবা লেটুস নিয়ে চিবিয়ে খেতে থাকুন। এতে মুখে এনজাইম নিঃসৃত হবে এবং খাবার খুব সহজেই হজম হবে।
৩। একটু বোরহানি চুমুক দিন। রুচি বৃদ্ধি পাবে।
৪। প্লেট থেকে কাবাব কিংবা চিকেন ফ্রাই আপনার পছন্দ মত তুলে খেতে থাকুন।
৫। এবার একটু একটু করে বিরিয়ানি মুখে দিন। সাথে একটু সালাদ/বোরহানি নিতে পারেন।
৬। এই ভাবে কার কথায় কান না দিয়ে কিংবা অন্য কোন দিকে মনযোগ না দিয়ে আপনার সম্পূর্ণ ইচ্ছে মত খেয়ে শেষ করুন।
৭। গ্লাসের তলানি বোরহানি বা কোক এক চুমুকে শেষ করে নিন।
৮। এবার ডেজার্ট এর পেয়ালা থেকে আপনার রুচি মত যা সম্ভব খেয়ে নিন।
৯। কিছুক্ষণ পরে পানির গ্লাসে চুমুক দিয়ে পান করে নিন।

আর কিছু মনে হয় বাকি নেই তাই এবার পাশের দোকানে গিয়ে এক খিলি পান কিনে চিবুতে থাকুন। সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন কিন্তু…………। যদি কেহ এর চেয়ে কোন উন্নত কিছু করতে চান তাহলে অনাদরে গৃহিত হবে, এব্যাপারে কোন ভাবনা করবেননা।
বিঃদ্রঃ রেসিপিটা কেমন লাগল জানাবেন, না জানালে এই পোস্ট দেখা নিষেধ।

ব্লগিং এর মূলমন্ত্র

এই ছবিটি লক্ষ করে দেখুন এখানে একটা ব্লগে যা যা প্রয়োজন বা ব্লগিং করতে যেসব উপাদান দরকার তার অনেক কিছুই লিখা রয়েছে।

আমরা একটা ব্লগে কি চাই?

সবাইকে এই কথাটাই মনে রাখতে হবে ব্লগিং কোন পেশা নয়। ব্লগিং করা সবারই একটা নেশা। এখানে প্রতিযোগিতার চেয়ে সহ অবস্থানটাই, সবার আগে বিবেচ্য। এখানে যে যা পারছে যে যা ভাবছে তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে ছোট্ট একটু মতামত চাইছে। নিজের চেয়ে জ্ঞানে গুণে বড় বা নিজের সমসাময়িক এমন সবার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছে। তবে এখানে লিখতে লিখতে যে কেউ কোনদিন হুমায়ুন আহমেদ বা ইমদাদুল হক হয়ে যাবে না, তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?

এখানে অনেকেই নয়; কেউ কেউ নিজের পরিচিতি অংশে নিজেকে এমন করে জাহির করছেন যেন, তিনি এ দেশের কোন একজন মস্ত মহাজন পদের জন্য নিজের বায়োডাটা সকলকে জানাচ্ছেন।

আসলে তার কোন প্রয়োজন আছে কি?
এখানে বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন চরিত্রের, বিভিন্ন পরিবেশের, বিভিন্ন পেশার ব্লগার রয়েছেন। কেউ হয়ত বিমানের পাইলট, কেউ হয়ত জাহাজের ক্যাপ্টেন, কেউ সরকারি সচিবালয়ের উপ-সচিব, কেউ কৃষক, কেউ ডাক্তার আবার কেউবা নিতান্ত কাঠমিস্ত্রি কিংবা সাধারণ দোকানদার। অতএব সঙ্গত কারণেই সবার মন, মনন, চিন্তাশক্তি, ধ্যান ধারনা, লেখার গভীরতা, ভাবনার প্রশস্ততা যার যার মতই। এদের কাউকে বাদ দিয়ে কিন্তু আমরা ব্লগিং করতে পারব না। সবাইকে নিয়েই আমাদের এক সাথে চলতে হবে। এতে যদি আপনার ভাল না লাগে তাহলে কে কি করবে বলুন! এখানে কারোও সাথে কারও প্রতিযোগিতা কাম্য নয়। কেউ কারো সাথে প্রতিযোগিতার জন্য এখানে আসেনি। প্রতিযোগিতা হয় সমসাময়িকদের সাথে। অসম প্রতিযোগিতা সুন্দর বা সহনীয় হয় না। সবাই সবার সঙ্গে মিশবে, ছোটরা নতুনরা বড়দের কাছে অভিজ্ঞদের কাছে শিখবে, আলাপ আলোচনা করবে তবেই না হবে সহ অবস্থান।

আর প্রতিযোগিতা যেখানে আছে, যে ব্লগেই এমন প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা ছিল বা আছে সেখানে কি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পেরেছে কেউ? আর নিরপেক্ষতাই যদি না থাকে তাহলে আবার কিসের প্রতিযোগিতা? আমি ভাত রান্না করব, আপনি সুন্দর কবিতা লিখবেন, তিনি সুন্দর উপন্যাস লিখবেন, রহিম সুন্দর ফুল ফোটাবে, জামাল বাঘ শিকারের গল্প বলবে, কামাল রাঙ্গামাটি বা টোকিও বেড়াবার গল্প বলবে, মামুন খেজুরের রস খাবার ছবি দেখাবে, কোন সুন্দর বাগানের ছবি দেখাবে এদের কার সাথে কার প্রতিযোগিতা করবেন? কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়েই কি আর ব্লগ চলে? কখনও চলেছে বলে বিশ্বাসও করি না।

ছবিতে দেখুন সবাই মিলেমিশে কি সুন্দর ব্লগিং করছে!

আপনি একে দেখে নাক সিঁটকাবেন, ওর ব্লগে যাবেন না, এর ব্লগে মতামত বা আপনার প্রতিক্রিয়া জানাবেন না, এতে আপনার মান রক্ষা হবে না, এমনকি আপনার লেখায় মতামত করলেও নিতান্ত ভদ্রতা করে হলেও তাকে চা নাস্তা খাওয়ানো তো দূরের কথা ধন্যবাদ টুকু জানাতে কৃপণতা করবেন তাহলে আর এক সাথে থাকার ইচ্ছা কেন? আপনি বড় পদে চাকরি করেন কিংবা বড় ব্যবসায়ী বলেই যদি আপনি বড় মানুষ হয়ে থাকেন, বড় কিছু লিখতে পারেন তাহলে তো আপনি ব্যবসায়িক সফল ব্যক্তি, আপনি আর কেন ব্লগিং করে সময় নষ্ট করবেন?

প্রতিযোগিতার মনোভাব ছেড়ে, ছোট বড়র বিভেদ ছেড়ে আসুন আমরা সবাই একই শব্দনীড়ের ছায়ায় বসে হাসি তামাশা করে, আনন্দ পাবার চেষ্টা করি, সময়গুলোকে রাঙ্গিয়ে তুলি। ক’দিনেরই বা এই জীবন! আসুন সবাই সবাইকে ভালবাসি। পরস্পরকে ভালবেসে নিজ অবস্থান থেকে শব্দনীড়কে রাঙ্গিয়ে তুলি।

সকলে আমরা সকলের তরে প্রবাদটি শুধু কথায় নয় কাজে ফুটিয়ে তুলি। ধন্যবাদ।
আবার দেখা হবে আগামীতে কোন আনন্দ উৎসবে যদি কেও হাসের মাংস আর খিচুরি রান্না করে নিমন্ত্রণ করে!

কবি- লেখক- ব্লগারদের সাক্ষাৎকার

আমরা যারা ব্লগে কিংবা নানা প্রকার অনলাইন ফোরামে লেখলেখি করি তাদের জন্যই এই সাক্ষাৎকার পর্বের আয়োজন।
মূলত ধরা হয়ে থাকে যে বর্তমান সময়ের লেখকদের চিন্তা-চেতনা বেশ এই সময়কে কেন্দ্র করেই এবং কখনো কখনো তা সময়ের বাইরে গিয়েও পাঠকদের ভাবাতে সাহায্য করে।

একজন লেখক বা কবির সাথে পাঠকদের সরাসরি মিথোষ্ক্রিয়ার তেমন কোন সুযোগ থাকে না। পাঠক তার প্রিয় লেখকের লেখা হয়ত পড়তে পায় কিন্তু তার চিন্তা জগতের বৃহৎ একটা অংশ প্রায় বলতে গেলে অপ্রকাশিতই থেকে যায় সাধারণ পাঠকের কাছে।
পাঠক যেন কিছুটা হলেও লেখকের সেইসব চিন্তা সম্পর্কে জানতে পারেন এবং লেখক যেন কিছুটা হলেও পাঠকের নৈকট্যে যেতে পারেন সেই প্রায়াস রেখেই এই অনলাইন সাক্ষাৎকার পর্ব।

প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সাধারণ পাঠকদের বা সমালোচকদের পক্ষ থেকে প্রশ্নগুলো সাজিয়ে দিচ্ছি আমি জাহিদ অনিক।
(আমি নিজেও সাক্ষাৎকার পর্বে অংশ নিয়েছি।)

যাইহোক, আর কথা না বাড়াই, নিচে দেয়া গুগল ফর্মের লিংকে গিয়ে আপনি অংশ নিতে পারবেন সাক্ষাৎকারে। সেখানে কতগুলো প্রশ্ন লিখিত আকারে আছে আপনাকেও সেই প্রশ্নের উত্তর লিখিত আকারেই দিতে হবে।
এটা সত্যি যে সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও প্রদানে যে আমেজ পাওয়া যায় তার সিকি ভাগও এই লিখিত প্রশ্নোত্তর দিয়ে পাওয়া যায় না। তবুও———- কিছু তো পাওয়া যায়।

আপনাদের আন্তরিক অংশগ্রহণ কামনা করছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

সাক্ষাৎকার লিংক —
কবি- লেখক- ব্লগারদের সাক্ষাৎকার

দ্রষ্টব্যঃ এই লেখাটি আমি আমার ফেসবুক ওয়াল সহ আরও একটা ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জন লেখক-কবি ও ব্লগার অংশ নিয়েছেন এই ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে।

জীবনের অনু পরমানু-২

অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন ছিল কিছু লেখা লেখি করব কিংবা গঠন মূলক কিছু করব। বিশেষ করে যখন একটা বৃটিশ কোম্পানির জাহাজে ডেক ক্যাডেট হিসেবে জয়েন করে হুট করে একেবারে বাংলাদেশের বাইরে এক দেশের বন্দর ছেড়ে আর এক দেশে যেতাম, আসা যাওয়ায় পথে সমুদ্রের নানা রূপ কখনও রুদ্র আবার কখনও শান্ত রূপ দেখতাম, ঢেউ এর তান্ডব, উদাসী বালুকাবেলার সম্মোহনী রূপ দেখতাম, আবার এই বালিয়ারীতে নানা রঙ এর, নানা বর্ণের মানুষের আনন্দ উচ্ছাস দেখতাম। ওদিকে আবার নানা শহরের বিচিত্র মানুষের আনাগোনা রঙ ঢং দেখতাম সেই তখন থেকে।

অনেকদিন এই স্বপ্ন লালন করলেও তখন কিন্তু লেখার সুযোগ পাইনি! সুযোগ পেলাম বা বাস্তবায়ন শুরু করলাম যখন আটলান্টিকের দ্বিপ বৃটেনের জীবন কাটাতে শুরু করলাম তখন। হাতে প্রচুর সময় ছিল। সাথে ছিল চারিদিকে সবুজ আর সবুজের সমারোহ আর ছিল তুষার ঝরার স্বপ্নীল মোহনীয় পরিবেশ।
এদিকে লিখে ফেললাম ৫/৭টি গ্রন্থ। গল্প, গীতকবিতা, উপন্যাস এবং নানা কিছু আবোল তাবোল।

দেশে ফিরে এসে এর মধ্যে থেকে কয়েকটা গ্রন্থ আকারে নিজের গাইটের টাকা খরচ করে কয়েকটা বই মেলায় প্রকাশ করলাম।

স্বপ্নের ধারা বদলে গেল সময়ের চাহিদা/ইচ্ছার বহুরূপী চাহিদা/ মনের সুপ্ত বাসনার কারণে। শুধু শুধু বই গুলি ঘরের কোণে ফেলে রেখে কি হবে? কে জানবে এই কাহিনীর কথা, আমার এত বছরের সঞ্চিত তিলে তিলে জমানো অভিজ্ঞতা সবাইকে না জানালে এটা কি ব্যর্থ হয়ে অন্ধকার বাক্সের ভিতর বা বইয়ের শোকেসের ভিতরে শুধু গুমরে কেদে এক সময় উই পোকার খাদ্যে পরিণত হবে? এখন মনে হচ্ছে দুইটা উপন্যাস “মম চিত্তে নিতি নৃত্যে” নিটোল এক প্রেমের কাহিনী এবং “নক্ষত্রের গোধূলি” পৃথিবীর ৫টা মহাদেশের পটভূমিকায় নানা শ্রেনীর চরিত্র এসেছে এই উপন্যাসে। এই কাহিনী দুইটি নিয়ে মনে একটা বাসনা জন্মাতে চাইছে নাটক বা সিনেমা করতে পারলে মানুষের মনে সাহিত্যের একটা নতুন দিগন্ত ছড়িয়ে দেয়া যেতো। মানুষ ভ্রমন কাহিনীর ছলে সামাজিক নিত্য ঘটা কাহিনীর সাথে আবার নতুন করে জেনে নেয়ার প্রচেষ্টা হতে পারে। মনে মনে নায়িকা এবং নায়কের চেহারাও একে রেখেছি। কিন্তু নিরালায় একা একা বসে বসে ভাবি এত টাকা কোথায় পাব?? এই একটা প্রশ্নের জন্যেই মনটা থাকে বিষণ্ন।

আবারো শব্দনীড়ে!

এক সময়কার অনেক প্রিয় ব্লগ শব্দনীড়ে আবারো এলাম। পরিচিত অনেককেই দেখতে পাচ্ছি। আশা করি সবার সাথে আবারো কথায়-গল্পে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। সবার জন্যে একটা ছবি পোস্ট দিয়ে শুরু করলাম। :)

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে মেঘের আনাগোনা। বান্দরবান শহরের কাছেই নীলাচল পাহাড়ের ছবিটি আমার বাড়ির ব্যালকনি থেকে তোলা।

জীবনের অনু পরমানু-১

আমিতো ভালই ছিলাম, উচু দেয়ালের পাশে দিয়ে হেটে যাবার সময় আশেপাশের ইট জড় করে তার ওপরে উঠে দেখার চেষ্টা করতা ওপাশে কি আছে দেখতে। সেই দিনগুলি কি নেহায়েত খারাপ ছিল?
তারপর একদিন বাবা ইস্কুলে নিয়ে রেখে আসলেন। এক গাদা বই খাতা পেন্সিল ইত্যাদি কিনে দিলেন। সকাল সন্ধ্যা সময় করে পড়াতে বসতেন। পড়তাম লিখতাম আবার পরদিন ইসকুল যেতাম। ইসকুলে বন্ধুদের সাথে গল্প করতাম, মার্বেল খেলতাম, খেলার তালিকায় ডাঙ্গগুলিও ছিল। খেলতাম আর ইচ্ছে ডানা মেলে উড়ে যেতাম ময়ূরপঙ্খি চেপে। বেশ চলছিল।

২০১৭ সালে পড়া বই

প্রিয় শব্দনীড় ব্লগারবৃন্দ ২০১৭ সালে আপনাদের পড়া সেরা বইগুলোর একটা তালিকা করতে চাই। আপনাদের পড়া দেশী-বিদেশী ভালোলাগা বইগুলো মন্তব্যের ঘরে জানান। সাথে অবশ্যই লেখকের নাম দিবেন। দু এক কলম লিখে দিলে তো আরও ভাল। ২০১৮ সালে কি পড়তে চান সেই নিয়েও আলোচনা হতে পারে। কোন বইগুলো পড়বেন সে নামগুলোও লিখুন।