আজ্ঞানুবর্তী

আমাকে কেউ গোণেনা,
আমাকে কেউ ধরেও না
আমাকে কেউ গোণায় ধরেনা
আমি এলেবেলে
আমার বহুত খুঁত
বহুত সমস্যা
কেউ বলে স্বয়ম্ভূ
কেউ বলে পাগল
আমি বলি, উঁহু
আমি স্বয়ং পাগলা গারদ

এরপরে কিছু রাত কাটে যেন মোহগ্রস্ত
শহরের কোলাহলে রাত নামলে তক্ষক যেন ডাকে
আমি শুনতে পাই কাছে দূরে শেয়ালের ডাক
দূরে যেন উড়ে উড়ে জোনাক
কুকুরের মারামারি
আমি যেন স্পষ্ট দেখি চাঁদ নেমে এলো
আমি যেন স্পষ্ট দেখি যীশুর মতন কেউ
উড়ে নেমে এলো জানালায়; আমার প্রেমিক কোনো
তার লম্বা ঘুঙুর চুলের ভেজা ডগা
চুল বেয়ে নামছে ছিটে ছিটে জল
নাকফুলের মতন ঝিলিক দেয়া
আমি যেন দেখি গভীর তারার চোখ
কোনো মুগ্ধতা নয়
কোনো অতিশয়োক্তি নয়
কেবল ভালবাসবার জন্য নয়
আমি দেখি সেই পুরুষের চোখ

গলে গলে জোস্নার স্নান
নারিকেলের তিরতির পাতায়
ও জ্যোৎস্না তুই গলে পড়িস কেন?
চোখের পাতায়?
আমার যে ভীষন কান্না পায়
অথচ হেসে উঠি খিলখিল
মনিকা এগিয়ে দিয়েছে স্লেট
লিখতে লিখতে চলে যেন যাই দূরে
ফরমান জারী হয়েছে
আরো যেন কাঁদি
আরো হাসি
লোকে পাগল বলুক আরো

এরপরে সুবহে সাদিক
আমার সেজদা থেকে উঠে আসে
সবুজ শ্যাওলার ঘ্রাণ
পারিনা আরও যুক্ত হতে
কি সে দ্বিধা ভাবতে ভাবতে
ভোরের প্রথম আলোয় কুসুম রঙে
চুপচাপ ডুবে যেতে থাকি
একটা দিনের দিকে এগুতে গিয়েও ফেরত আসি তবু
একজন যীশু পুরুষ মিটিমিটি হাসে

দুপুরের ক্লান্ত রোদ প্রতিদিনের মতো
ঘোষণা দেয়
আমি পাগলই
আমি কারো গোণায় পড়িনা
শুধু গুনাহর পারদ বাড়ে
তাপমাত্রা বাড়ে
আমি সত্যিই সয়ম্ভূ হয়ে যাই
তবু রাতের আশায় থাকি
যদি আরো সেজদা থেকে উঠে আসে
সত্যিকারের অরূপরতন কোনো
সত্যিকারের কোনো প্রেম!

সে পুরুষ নয় যেন, নয় মানবমানবী প্রেম
কি যে হারাই, কি যেন পাই
খুঁজে খুঁজে
মিছেমিছি ভাবনার ভেতর
ঘুমে থাকি চতুর এক
জেগে উঠি যেন পাগল হয়ে
আমাকে গোনায় ধরেনা কেউ জেনেও
একা একা হেঁটে যেতে থাকি ছায়া হয়ে, মায়া হয়ে
কার্নিশ বেয়ে টুপ করে সূর্যও পড়ে গিয়ে ভিনদেশে
এই অবসরে
অজস্র পাগলের বেদনা বুকে ধরে
আমিও সত্যিই এক অতিজাত পাগলা গারদ হয়ে যাই।

4 thoughts on “আজ্ঞানুবর্তী

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।