বিচিত্র এক মানব সভ্যতা

প্রকৃতির সকল উপাদান আমরা ভোগ করলেও প্রকৃতির অন্যান্য প্রাণীর মতো আমরা নই। যদি ধরে নেয়া যায় পৃথিবীর যত প্রাণীকুল রয়েছে’ তাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য খাদ্যাভ্যাস হতে শুরু করে যার যা কিছু প্রয়োজন পড়ে সবকিছু প্রকৃতি থেকেই পায় তাদের কোন কিছু কেনার প্রয়োজন হয় না।

খাদ্য পোশাক বাসস্থান জৈবিক চাহিদা পথে-ঘাটে চলাচলের জন্য বিস্তৃত রাস্তা পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে সবকিছুর প্রয়োজন মেটায় তাদের বিস্তৃত পথ তৈরি করে। অথচ আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব বলে দাবিদার একমাত্র মানবজাতি পৃথিবীর সকল মহোৎসব পালনের জন্য রাখতে হয় অসীম অর্থ ভাণ্ডার আর অর্থনৈতিকভাবে আমরা সেভাবেই গড়ে নিয়েছি সব কিছু আমাদের স্থান কাল পাত্রের যে অমোঘ সূচনা হয়েছে তাঁর প্রত্যেকটি চাহিদা মেটাতে রয়েছে অর্থের প্রয়োজন।

আমরা প্রকৃতির শক্তির উৎস থেকে আমাদের প্রয়োজন মেটাতে গেলেও মানবের তৈরীকৃত যে অর্থের প্রয়োজন পড়ে সেটাই এক আশ্চর্য ব্যাপার আমরা পৃথিবীর এই প্রকাণ্ড ব্রহ্মাণ্ডের যেখানেই ছুটে যাই না কেন এর পেছনের যে মেধা শক্তি সামর্থ বিদ্যাবুদ্ধি চিন্তা চেতনা জ্ঞান বিজ্ঞানের হাত রয়েছে তা আমরা মরণশীল মানুষ নিজেদের আয়ত্তে নিতে পেরেছি আর এসবের প্রয়োজন ছিল বলেই তার সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ উৎকৃষ্ট ভাবে এগিয়ে নিয়েছি যেখানে কোন কিছুরই কমতি ছিল না (!) বলে মনে পড়ে না।

তবে এখনো আমাদের অনেক কিছু করার বাকি আছে অনেক পথ অতিক্রম করার জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ চিন্তাকে আগামীর দিকে নিয়ে যাওয়ার নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে ভবিষ্যতে যা আরও গভীর ভাবে মানবের বহুল আলোচিত মন জ্ঞানগর্ভ ভাবে ভাবতে শুরু করবে। তবে, আমরাই প্রথম সভ্যতা গড়ি আবার ভেঙে ফেলি আমাদের দাঁড়ায় ধ্বংস বিনাশ শুরু এবং শেষ হয়। বিগত ৪৫০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর সকল প্রাণীকুল যেভাবে বিনা অর্থে তাঁদের জৈবিক চাহিদা পূরণ করে আসছিল তা ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে থাকে মানব সভ্যতার উষা লগ্নে।

আমরা যেভাবে প্রকৃতিকে নির্বাচন করেছি অর্থনৈতিক অবকাঠামো থেকে সেভাবে যদি অন্যান্য প্রাণীকুল তাঁদের অভ্যাসগুলো গড়ে নিতো পারতো তবে কোনো সভ্যতাই ঠিক ঠিক টিকে থাকতে পারতো না। এমতো অবস্থায় প্রকৃতিতে কোন প্রাণী খাদ্যের অভাবে মৃত্যুবরণ করে না এদিকে আমরা মানবজাতি প্রতিদিন খাদ্যের জন্য যুদ্ধ করতে হয় খাদ্যের জন্য প্রাণ দিতে হয় বাসস্থানের জন্য যুদ্ধ করতে হয় বাসস্থানের জন্য প্রাণ দিতে হয় মাটির জন্য যুদ্ধ করতে হয় মাটির জন্য প্রাণ দিতে হয়।

শত্রুর মোকাবেলা প্রকৃতিও করে প্রকৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠা প্রাণীরাও করে প্রকৃতির নিয়মে এতটাই নিখুঁত ( প্রকৃতি ও নিখুঁত নয় প্রকৃতিতেও ধ্বংস হয় সৃষ্টি হয় প্রকৃতির এই অপার অপরূপ বিচিত্র বিকিরণ) যে কেউ যদি অন্যায় করে প্রকৃতিই তাঁর দায়িত্ব নেয় এদিকে মানবজাতি নিজেরাই তাঁর স্বজাতিকে শাস্তির বিধান পড়িয়ে শোনায় আবার তারাই শাস্তি নির্ধারণ করে।

মৃত্যু নিশ্চিত করে সবলের শক্তি হয় দুর্বলের উপর এ এক বিচিত্র শিহরণ, এ এক বিচিত্র নিয়ম যেখানে প্রতিনিয়ত ঘটে চলে সত্য আর মিথ্যার খেলা। আমাদের মধ্যে রচনা হয়েছে জাত পাত ঘৃণা বিদ্বেষ অবহেলা যুদ্ধ বিগ্রহ লোভ লালসা বিচার অবিচার শান্তি অশান্তি ভালো মন্দ এসবের সবকিছু নিয়েই আমরা মানুষ আমাদের কাছে সবকিছু বিক্রি করা যায় বিক্রি হওয়া যায় আমরাই নিজের সম্ভবত আমরাই এক মানব জাতি আপন ইচ্ছেতে করি আমাদের দাসত্ব।

3 thoughts on “বিচিত্র এক মানব সভ্যতা

  1. শুরুতেই জীবনবোধের অসাধারণ সত্য তুলে ধরে এমন ভাবে এই এপিসোড সাজিয়েছেন; একদম শেষ পর্যন্ত … যা এককথায় ভীষণ অনবদ্য। শুভেচ্ছা শামীম। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।