ফেলে আসা রাত আর রাতজাগা পাখিদের গল্প


মধ্য রাতের শান্ত নগরী। রাতের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় ভরা পূর্ণিমার চাঁদ। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুপ্রাচীন বৃক্ষরাজি। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ ঘাসের চাদর। সেই চাদরে কৌতূহলী সন্তর্পণ পদক্ষেপ কদাচিত ভেসে আসে মৃদু যান্ত্রিক শব্দ কিংবা বিপরিত লিঙ্গের দৃষ্টি আকর্ষনের প্রচেষ্টায় রাতজাগা তরুণের আবাহন। কখনোবা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে ভেসে আসে অচেনা কোন বাঁশির সুর। রাতের মুগ্ধতা রুপ নেয় বিষণ্নতায়। জীবন বড্ড নেশাতুর লাগে।


রাতের বুক চিরে অঝর ধারায় বৃষ্টি নামে ধরণীর বুকে। দণ্ডায়মান বৃক্ষরাজি সিক্ত হয় তাতে। রাত্রির ঘন অন্ধকার, ল্যাম্প পোস্ট থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মি আর বৃষ্টির কনা মিলে চলে মনি-মুক্তোর ঝলকানি। হাতে ধূমায়িত কফি আর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ। চলে জীবনের আবাহন।


একদা এখানে রাত্রি এসেছিল ভয়াল রুপ নিয়ে। নিকষ কালো রাত্রি। হানাদাররা এসেছিলো পাশবিকতা আর মৃত্যুর ভয়াবহতা নিয়ে। হানাদারের বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করেছিলো সেদিনের রাতজাগা পাখিদের। সবুজ ঘাসের চাদরে বয়েছিলো রক্তের হুলিয়া।

এই যে সুপ্রাচীন বৃক্ষরাজি, সবুজ ঘাস, দণ্ডায়মান লাল ভবন আর এই চলার পথ থাকে রাতজাগা পাখিদের যাপিত জীবনের সাক্ষী হয়ে।।

(ইহা রোকেয়া হলের রোকেয়া হলের সব রাতজাগা পাখিদের জন্য)

রচনাকালঃ ২০০৯

9 thoughts on “ফেলে আসা রাত আর রাতজাগা পাখিদের গল্প

  1. স্মৃতি হচ্ছে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুখ স্মৃতি হচ্ছে মানুষের এক জীবনের সম্পদ।
    শুভেচ্ছা জানবেন আরিফা তাজরিমিন। যাপিত জীবন শেয়ার করলে ভালো লাগে।

  2. একদা এখানে রাত্রি এসেছিল ভয়াল রুপ নিয়ে। নিকষ কালো রাত্রি। হানাদাররা এসেছিলো পাশবিকতা আর মৃত্যুর ভয়াবহতা নিয়ে। হানাদারের বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করেছিলো সেদিনের রাতজাগা পাখিদের। সবুজ ঘাসের চাদরে বয়েছিলো রক্তের হুলিয়া।

    এত অল্প কথার বর্ণনাটি দারুনভাবে আপ্লুত করলো আমাকে।
    ধন্যবাদ।

  3. সুন্দর সাবলীল বর্ণনা! অসাধারণভাবে নির্দিষ্ট একটি সময়ে নিয়ে গেলেন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

  4. স্মৃতি তুমি পিছু ছেড়ে যেয়ো না, আমি যে তোমাতেই দেখতে পাই জীবনের ফেলে আসা স্বপ্নগুলি!

  5. সহজ ভাষায় লেখাটা পড়তে খুব ভালো লাগলো।
    শুভেচ্ছা নিবেন।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।