না ভাবনার কিছু বিচিত্র

ভাবনা এভাবে শুরু করা যেতে পারে। ছেলে না মেয়ে। নারী না পুরুষ। সমান তালে দুজনেই সমরেখ কি?
যদিও প্রথম পার্থক্য। নারী এবং পুরুষ।
কিন্তু শিশু বলতে উভয়কেই বোঝায়। আর তাদের মানুষ হিসেবে মানুষ করার দায়িত্ব থাকে বাবা মায়ের এবং সমাজের। এই মানুষ করা ভাবনা থেকে ছেলে মেয়ে বিভাজন শুরু হয়ে যায়।
মেয়ে মানুষ করার ক্ষেত্রে পর পর ভাবনা থাকে। আর ছেলে আপন আপন। অর্থাৎ নিজের বা নিজেদের কাছে কাছাকাছি রাখা বা রাখা যাবে এই ভাবনায় শিশুটির খাওয়া পরা দেখাশোনা আদব কায়দা ও পড়াশোনা ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
যেমন, মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে যাবে তাই যতটা শিখে শিখুক না হলেও ক্ষতি নেই। ফলে সেও সেই মানসিকতায় বড় হয়। হয়তো বাড়ির কেউ সেভাবে ভাবে না। কিন্তু সমাজ দেখে এবং শিশুটিও দেখে। ফাঁকির রাস্তা সেখান থেকে শুরু।
অন্যদিকে ছেলের ক্ষেত্রে একটা কিছু করতেই হবে। তার মানে সেভাবে চাপ তৈরি করা। আবার সেই চাপের জন্য সেই চাপে সেই শিশু কিছুটা রাস্তায় ফাঁক খুঁজতে থাকে। তার মানে, ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো মানসিকতা, না হলে বাবা মায়ের ব্যর্থতা প্রকট। আবার মেয়ের ক্ষেত্রে সেই মানসিকতা হল, কিছু করা গেল তো ঠিক আছে, না হলে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেব ওখানে ভাল থাকবেই।
তাহলে কি দাঁড়াল? ছেলে মানুষ করা কঠিন, মেয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সহজ। আপনাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয় আপনি কি চাইবেন? ছেলে না মেয়ে? ভাবুন।
এবার ছেলের ক্ষেত্রে আপনি টিন এজের পর আর তার যৌবন আগমন জনিত কাজকর্মের অনেককিছুই টের পাবেন না। দেখবেন বাবা মায়ের নানান ঘেরাটোপের বাইরে সেও ঠিক চালাকি অনায়াসে বেছে নেয়। কিছুতেই মনের খারাপ ভাল ইত্যাদির হদিশ পাবেন না। বাবা মা যতই বন্ধুর মত ব্যবহার করুক, বন্ধু যে হাতছানিকে ডাক দেবে, প্রশয় দেবে তা বাবা মা কিছুতেই মেনে নেবে না। অর্থাৎ সে কিছুতেই আপনার সাথে সে সব শেয়ার করবেই না। এই হাতছানি থেকে অনেক ছেলে বেরতেই পারে না। অনেক সময় জানা গেলেও তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। নাগালের বাইরে।
সে তুলনায় মেয়ে আপনার সীমানার মধ্যেই থাকবে বা থাকে। যেহেতু আপনি জানেন মেয়ে মানেই অনেকটাই বেশি মান সম্মান জড়ানো। সেও নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কে সমাজের ভিন্ন মানসিকতায় ওয়াকিবহাল। তাকে সেই মর্যাদার বিবেচনায় বড় হতে দিলে খুব একটা অসুবিধা হবে না। সে তার সমস্ত হয়তো মাকে কিংবা বাবাকে বলবে না বা বলতে চাইবে না। কিন্তু ঠিক মত ওয়াচ করলে হয়তো বোঝা যেতেই পারে। বাইরের অনধিকার হাতছানিতে মেয়েরা চট করে সাড়া দেয় না। সে তার সীমানায় একটা বেড়া খুঁজে পায়। বাবা মায়ের অনেকবেশি না-নজরে সে বেরিয়ে যেতে পারে। না হলে সম্ভাবনা কম।
আবার ঠিক একই রকমভাবে নেশার ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যে যতটা ছড়ায় ছেলেদের ক্ষেত্রে তা পুরো শতাংশই ছড়িয়ে যায়। এই নেশা ধরা পান বিড়ি সিগারেট খৈনি গুটখা মদ ভাঙ ড্রাগ ইত্যাদি কিছুতেই ছেলেদের ক্ষেত্রে ওয়াচ করেও ধরতে পারবেন না। যেদিকে বাঁধন দেবেন তার ঠিক অন্য দিকে দিয়ে অন্য রাস্তা খুঁজে ছেলেরা বেরিয়ে যাবে। ঠিক এই কারনে সমস্ত নেশা সামগ্রী বেশিরভাগ ছেলেদের হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ছে।
মেয়েরা যদিও বা করে আপনি এলার্ট থাকলে তা সহজেই ধরতে পারবেন। বাবা মায়ের দায়িত্বশীল ভাবনায় সহজেই ফিরিয়ে আনা যায়।
এই বিপথে যাওয়া ছেলে মেয়ের মধ্যে মেয়েকে যত সহজে ফিরিয়ে আনতে পারবেন ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। যদি না ছেলে নিজে ফিরতে না চায়। একটা জেদি একগুঁয়ে ভাব কাজ করে। এই একগুঁয়ে মনোভাব মেয়ের ক্ষেত্রে যতটা পরিবর্তনশীল ছেলের ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাই বিপথে যাওয়া থেকে ফেরাতে ছেলের ক্ষেত্রে খুব সাবধানে মেপে এগোতে হয়। কখন কি করে বসে কিংবা আরও বেশি কিছু না হয়ে যায়। মেয়ের ক্ষেত্রে এই ফেরানো একটু রূঢ় হওয়া যেতেই পারে। আর একটু বেশি নিরাপত্তা নির্ভরতার আশ্বাস দিলে সহজেই মানানো যায়।
এবার যদিও আপন তবুও যদি এ রকম ভাবনা ভাবি যে এই শিশুটি শুধু ছেলে, এই শিশুটি শুধু মেয়ে। তাহলে দুজনকে যদি সমানভাবে মানুষ করি তাহলে মেয়েরা যার ঘরে যাবে তার ঘর থেকে মেয়ে বেরিয়ে আসবে ফলে সবার ঘরে এই মানুষ করা মানসিকতায় জোর থাকবে। ছেলেও এই বিভাজন থেকে বেরিয়ে আপনাআপনি দৃঢ় চেতা হতে শিখবে।

2 thoughts on “না ভাবনার কিছু বিচিত্র

  1. সমকালীন এই আলোচ্য বিষয়টি যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
    নিবন্ধের পরামর্শ আমরা যারা অভিভাবক রয়েছি মাথায় রাখতে পারি।

    1. ধন্যবাদ। তবে আরও সুচিন্তিত মতামত পেলে আরও ভাল লাগত। ভাল থাকবেন।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।