দীপঙ্কর বেরা এর সকল পোস্ট

দীপঙ্কর বেরা সম্পর্কে

আমি বাংলা ভালোবাসি। বাংলাকে ভালোবাসি।

সেরার সেরা

পথের ধারে কত যে ফুল
দেখছি ফুটে আছে
মৌমাছি আর প্রজাপতি
উড়ছে তাদের কাছে।

সবুজ পাতা গাছের সারি
পথ গিয়েছে বেঁকে
লম্বা ব্রিজ উঁচু ফ্ল্যাট
ডাইনে বাঁয়ে রেখে।

করছে পাখি কিচিরমিচির
চলছে গাড়ি ঘোড়া
কত রকম যাচ্ছে মানুষ
রঙিন জামায় মোড়া।

রোদের খেলা শিশির ঘাসে
নীল আকাশের নিচে
মাঠ ফসলের লাগছে দোলা
তারই পিছে পিছে।

স্কুলের পথে এসব দেখে
থাকে তুলনাতে
তাই তো খুকু পড়াশুনায়
সেরার সেরা তাতে।

দেখবে এসো

দেখবে এসো পড়ছে বৃষ্টি
সারা আকাশ কালো করে
ঝমঝমিয়ে উঠোন জুড়ে
ঝরঝরিয়ে যাচ্ছে ঝরে।

ছুটছে ঘোড়া টিনের চালে
জল জমেছে পথের পাশে
গাছের পাতা করছে স্নান
খিলখিলিয়ে শুধুই হাসে।

ঐ যে দেখো ঝাপসা দূরে
ঘর বাড়ি সব যায় না দেখা
ঠায় দাঁড়িয়ে ভিজছে মাটি
সরস সজীব একলা একা।

কড়কড়াকড় পড়ছে যে বাজ
ঝলকানিতে ভরছে আলো
গুরু গুরু মেঘের ডাকে
লাগছে ভয় আর লাগছে ভালো।

দেখবে এসো বৃষ্টি একা
আকাশ থেকে পড়ছে ঝরে
বাঁচব আমরা ভালোবেসে
এমন করে আঁকড়ে ধরে।

প্রেম পিয়াসা

ভালোবাসা মন রাঙা পুণ্য তীর্থ গড়া
প্রেম পুষ্পে গাঁথা মালা বুকে থাকে ধরা,
ছলে বলে অধিকারে যদি তাকে চাও
তাহলে চোখের জল শুধু ফেলে যাও।

হৃদয় অপার মর্ম পরস্পর পাশে
বাঁধনে জড়িয়ে থাকে অগাধ বিশ্বাসে,
একে অপরের কাছে শুধু হাতে হাত
এগিয়ে চলার পথে থাকে সাথে সাথ।

অন্তরে চির সবুজ বন পাখি গান
মিলন পিয়াসা হয় করে আনচান,
অনুরাগ অভিমান আনে শান্তি সুখে
চোখে চোখ শান্ত মন দেখে তার মুখ।

কি বা জয় পরাজয় নাই শুরু শেষ
তুমি আমি একাকার আশা অনিমেষ,
মনের দীপন জ্বেলে ধরে রাখে হাল
এ পৃথিবী প্রেমময় বাঁচে চিরকাল।

বিরহ ফেরায় মুখ বুকে ব্যথা লাগে
প্রেম হীন সঙ্গী হারা চলে পিছে আগে,
রূপে মগ্ন বিধি বাম প্রেম চলে হেসে
যতটুকু বাঁচো সবে থেকো ভালোবেসে।

রবীন্দ্রনাথ

21114

মানুষ মনের ফুল বাগানে
ভাবের যা ফুল ফোটে
সব কিছু তার রবীন্দ্রনাথ
সাহিত্য সুখ লোটে।

কথার ভিড়ে মুক্ত আকাশ
সবুজ নবীন আলো
রবীন্দ্রনাথ ভাবনা ভাবায়
যা কিছু সব ভালো।

সবার হৃদয় সাদর বরণ
ডাক দিয়ে যায় প্রাণে
এই পঁচিশে বৈশাখ যেন
আবার জীবন আনে।

ঠাকুর ভজন মনের পূজন
রবীন্দ্রনাথ বুকে
ভাবের অসীম সোনার তরী
ফসল ফলায় সুখে।

রোজ ফোটে যে ফুলের শোভা
দাঁড়ায় মানুষ এসে
রবীন্দ্রনাথ বাগান হয়ে
থাকে ভালোবেসে।

নববর্ষে

নতুন বছর নতুন বছর
পুরাতন যাও ফেলে
একটা বছর হিসেব নিকেশ
দাও তুমি সব মেলে।

পুরাতন যত ভুল অপরাধ
মনের ভাবনা বুঝে
শুধরে নেওয়া সুযোগ দিনের
নতুনকে নেয় খুঁজে।

নতুন বছর শুভ কামনায়
চাইছে নতুন আশা
নতুন স্বপ্ন উদ্যমে আজ
জীবনের ভালো বাসা।

নতুন বছর বাংলা বাঙালি
শুভেচ্ছা ভরা মনে
চৈত্র শেষের বৈশাখী সুর
হৃদয়ের এক কোণে।

বিদায় বছর নতুন বছর
যাওয়া আসা আছে
নতুন বছর নতুন কিছু
হোক সকলের কাছে।

কি অপরূপ

ফুল বাগানে সবার আগে
পাখিরা সব ডাকে
পূব আকাশে রবির আলো
পড়ে পথের বাঁকে।

শিশির কণা সবুজ ঘাসে
রঙের খেলা করে
মৌমাছি আর ভ্রমরেরা
ওড়ে ফুলের পরে।

দীঘির জলে শালুক ফুলে
চলছে ডিঙি একা
গাছের ফাঁকে ওই যে দূরে
দিচ্ছে রবি দেখা।

হাঁস মোরগে খাচ্ছে খুঁটে
দেখছে আশে পাশে
গরু ছাগল যাচ্ছে মাঠে
কাজের অভিলাষে।

তাই তো খুকি চোখটি মেলে
দেখে এমন শোভা
পৃথিবী জুড়ে কি অপরূপ
দৃশ্য মনোলোভা!

রবীন্দ্রনাথ

এত প্রাণ নেই আর কোন গানে
রবীন্দ্র সঙ্গীত ছাড়া
যে কোন সময়ে যে কোন স্থানে
গাইলেই পাবে সাড়া।

যে কোন কথায় যে কোন ব্যথায়
রবীন্দ্র উক্তি যোগ্য
উৎসবে ব্যসনে আবেগে বিষন্নে
রবীন্দ্র জীবন ভোগ্য।

সাহিত্য ধারায় মনের বিকাশ
রবীন্দ্র পঠন শিক্ষা
সহজ পাঠ ও সঞ্চয়িতা
দিয়ে যায় কত দীক্ষা

বাঙালীর মুখে রবীন্দ্র বলা
বলছে বাংলা ভাষা
যুগের ধারায় ব্যপ্তি দিয়েছে
চিন্তন ভালোবাসা।

রবীন্দ্র অক্ষর ছড়ায় দ্যুতি
ভাবনা সাগর আলো
রবীন্দ্র চেতনে হৃদয় মিলনে
দূর হয়ে যায় কালো।

দিনের জন্য দিন

যখন তখন নেমে আসতে পারে
দিনের ধূসর
পথ চলতি কেড়ে নিতে পারে
অখণ্ড অবসর।
প্রতীক্ষার ডুব সাঁতারে স্তব্ধ ঢেউ
লেগে থাকে
যারা দাঁড় বেয়ে চলে যায় আজ
নদীর বাঁকে।

রাত এসব শোনে না হয়ে আসে
গহীন ক্রমে
এক একটা মানুষ সকাল হয়
নিজস্ব বিক্রমে,
তারপর নিজেকে দ্বন্দ্বে ভরায়
আকাশ বাতাস
দিনের জন্য দিন খুঁজে ফেরে
আবার আশ্বাস।

স্বপ্নের সোপান

ভুল করে তুমি এই পথে এসে
মনকে দুষছ কালো
গহীন গহন গুহার বাইরে
ওই দেখা যায় আলো,

স্বপ্ন ওখানে সাজানো গুছানো
ফেরিওয়ালার বেশে
মুক্তির পথে আছে দিশা কত
দিগন্ত ভালোবেসে।

ছেড়ে দিতে পারি পাথরের গড়া
ভাঙা মন্দির খেলা
ওখানেই আছে স্বপ্নের সোপান
শুধু মানুষের মেলা।

আবার বসেছে সূর্যের কিরণে
স্বপ্ন রাঙানো শ্লোগান
উঁচুতে ওঠা মানুষের কল্যাণ
হয়ে যায় আগুয়ান।

রোজ ফেরি করে নবীন সকাল
মুঠো মুঠো রঙ্গোলি
আলোর ফুলকি কিশলয় হয়ে
ফোটায় মনের কলি।

কথামালা

যে বা যারা নিষ্ঠুর
আমি তাদের বলেছিলাম একবার গাও
মোর বীণা ওঠে কোন সুরে বাজি,
যে বা যারা বোমা বাঁধে রোজ
তাদের বলেছিলাম একবার জোরে জোরে বলো
আজই এ প্রভাতে রবির কর কেমনে পশিল প্রাণের পর,
যে বা যারা তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে
দমিয়ে রাখে এক একটা এলাকা
আমি তাদের বলেছিলাম এসো আমরা দুজনে গাই
সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনায়,
বিশাল জনস্রোতে যে বা যারা অন্যকে মারতে চেয়েছিল
তাদের আমি বলেছিলাম তুমি কি জানো
বসুধাকে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি
পৌরুষেরে করে নি শতধা,
যে এবং যারা ভুক্তভোগী তাদের বলেছিলাম
এ বড় বিচিত্র
কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই।

এদের সবার সঙ্গে আমার বারবার যতবার
দেখা হয় মুখোমুখি হয়
ততবার আরও আরও বেশি ধারালো হয়
আমার এই জীবনের কথামালা।

প্রভুত্ব

ক্ষমতা ছেড়ে মহান হওয়া মানুষের ধাতে নেই
তাই তো তার বোধপরিচয় হারিয়ে ফেলে খেই,
যে করে হোক আকাশকে তার রাখবে ধরাছোঁয়ায়
ইচ্ছে খুশি ঘোরাবে ছড়ি পোয়া বারোর মায়ায়।

এলাকা তার চিহ্নিত থাকে প্রভুর আসনে প্রভু
কোন কিছুতেই হার মানতে চাইবে না তো কভু,
সেভাবেই ঘর সাজিয়ে গুছিয়ে চলছে চলমান
ক্ষমতা তার পৃথিবীর বুকে এমনই আবহমান।

একজন কেউ ছেড়ে দিলে ছিনিয়ে সেই ক্ষমতা
প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই চালায় পেতে প্রভুর সমতা,
কাঠের পুতুল যদিও সাজায় সিংহাসনের ত্যাগ
গণ্যমান্য ক্ষমতা আসলে খুচরো পয়সার ব্যাগ।

নিজের মত বাঁচা

কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত বাঁচা উচিত। কিন্তু নিজের মত বাঁচা অত সোজা না।
নিজের মত যা মনে হবে তাই করব, যা বলতে ইচ্ছে করবে তাই বলব, যা দেখতে ইচ্ছে হবে তাই দেখব, যা শুনতে ইচ্ছে হবে তাই শুনব, যা করতে ইচ্ছে হবে তাই করব তা কিন্তু নয়।
মানুষ মাত্রেই সমাজ বদ্ধ জীব। সমাজের সঙ্গে মানিয়ে বলা দেখা শোনা বা করা উচিত। তবে সমাজের মধ্যে অনেক সংস্কার কুসংস্কার বাসা বেঁধে বসে আছে। সে সব কিছুকে পরোয়া না করে বাঁচা যায়।
তবে তার জন্য একটা পর্যায় পর্যন্ত আপনাকে যেতে হবে। নিজের মধ্যে সেই পর্যায় তৈরি করতে হবে। শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান বোধ বুদ্ধি ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নিজেকে উন্নিত করতে হয়। তারপর আপনি বলতেই পারেন ‘আমি আমার মত চলব।’
না হলে কারো কথা না শুনে নিজের মত চলতে গিয়ে সেই যদি পিছলে পড়েন তখন কিন্তু আপনার পাশে কেউ থাকবে না।
কেন না মানুষের জীবন এমনই প্রতি পদে পদে নিজে পিছলে পড়ে কিংবা পেছন থেকে কেউ আপনাকে পিছলের ফেলে দিতে পারে। সে সব কিন্তু পার করার এবিলিটি যদি আপনি নিজের মধ্যে প্রস্তুত করতে পারেন তাহলে কারো কথায় কান না দিয়ে আপনি আপনার মত চলতেই পারে।
কিন্তু আমাদের সমাজে বহু মানুষকে দেখেছি শুধু সমাজকে লণ্ডভণ্ড করার জন্য, সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য, সামগ্রিক বাদ দিয়ে নিজেকে নিজে উপভোগ করার জন্য নিজের মত বাঁচে।
তাই নিজের মত বাঁচা বর্তমানে অনেকটা উৎশৃঙ্খল জীবন যাপনের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কিছুটি না জেনে না বুঝে নিজের মত বাঁচতে গিয়ে নিজের এবং সমাজের পতন ডেকে আনছে। লোকের কথায় কান দেওয়া যেমন উচিত নয় তেমনই চোখ কান খোলা রেখে জীবন যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া উচিত।
তুমি বলছ তাই মানব না, লোকে চলছে তাই চলব না অতএব আমি নিজের মত চলব তাহলে তা এ তরফা জীবন যাত্রায় একক চলা হয়ে যায়।

বাংলা আমার মাতৃভাষা

নিজের ভাষা ছেড়ে যদি অন্য ভাষায় থাকো
তবে তুমি ভাবের প্রকাশ কিছু বোঝো নাকো।

যে ভাষায় পশু ডাকে পাখি গায় নদী বয়ে চলে
যে ভাষায় শিশু মায়ের কোলে কত কথা বলে,
যে ভাষায় সকলে প্রাণের আবেগ করে প্রকাশ
সেই ভাষাতেই গড়ে ওঠে ভালোবাসার নিবাস।

ভাষা তাই মানুষের নিজস্ব মর্যাদার পরিচয়
পৃথিবীর বুকে তার স্বাক্ষর ভাষাগত হয়ে রয়,
তারপরেও সে শিখতে পারে আরো কত ভাষা
শিক্ষার সোপানে রেখে যায় ভাষা ভালোবাসা।

মায়ের ভাষা মাতৃভাষা অমৃত করে যায় দান
বাংলা এমনই মধুর ভাষা বাড়ায় হৃদয় সম্মান,
সেই ভাষাতে আ মরি গেয়ে যাই জীবনের গান
বাংলা আমার মাতৃভাষা গর্বে ভরে ওঠে প্রাণ।

চিঠি

IMG_20190511_131733509

আন্তরিক
আমাদের এখানে একটাও কৃষ্ণচূড়া পলাশ নেই। অন্য কিছু ফুল ফোটানোর লোভে মাটি খুঁজতে খুঁজতে পেরিয়ে যাচ্ছে যুগান্তর। ভাবছি রুক্ষ মাটিতে গোলাপ চাষ অসম্ভব হলেও অসাধ্য নয়। শুধু তুমি হৃদয় হয়ে দাঁড়ালে।

তুমি তো জানো, আমি গোলাপ ছাড়া কিছু পারি না। একে বাঁচানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। সবাই বলেছে তুমি এ যুগের অচল।

তুমি আমি আছে, অথচ গোলাপ নেই তা কখনও হয়? ঝিমিয়ে পড়া, নুয়ে পড়া, ছিঁড়ে ফেলা, উৎসাহ হয়ে যাওয়া গোলাপ দেখে আমিও যে বারে বারে আহত হই, হয়তো বা নিহত। কিন্তু আমরাই তো বাঁচাবো, তাই বাঁচব।

আমি নেই তুমি আছো, তার মানে তুমিই আমি। আবার তুমি নেই আমি আছি। এ তো ধ্বংসলীলা। তাই তোমাকে পাশে পেতে চাই। রোজ তোমার সাথে আমার দেখা হয়, কিন্তু এসব বলতে পারি না। এ তো তোমার হৃদয়ে আছে, তাকে তুমিই জাগাবে। আমি বলে বলে জাগাতে পারি। তাই আমি এই। ভালো থেকে। পাশে এসো।
গোলাপচাষী

বইমেলা

বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য বই। তবে অন্যান্য বই খুব সামান্য বিক্রি হয়।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? এবং কখন পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে। যারা সাহিত্য চর্চা করে। যারা সাহিত্য ভালোবাসে এবং অবসর পায়। এরকম মানুষ পাঁচ দশ শতাংশের বেশি নয়।
এর বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ আছেন যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন পড়েন পড়তে বাধ্য হন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। প্রয়োজনে ও জীবনের টানে কিনতে হয় ও বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর দরকার হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ জীবনের বই নিয়ে।
ক’টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক’টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া সিক্স সেভেন থেকে বিএ বিএসি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কত আর আধুনিক কবিতা গল্প পড়বে?
ফেসবুক আসার পরে আবার কতশত কবি সাহিত্যিক। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও বিখ্যাত আসছে! যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছে। দিয়েই চলেছে। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাবা যায়!
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। কিন্তু গল্প কবিতার বই আমাদের মত সাধারণের কাছে নৈব নৈব চ।
যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কবিতা গল্প লিখি। সেই জীবন সচেতনতা যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্ল্যারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে।