ভালোবাসা ঠিক কি তা বোঝা হল না আমার। আবার ভালোবাসার অভিনয়ও রপ্ত করতে পারলাম না। বন্ধুরা আমাকে অবশ্য বলতো “তোর যা অহংকার! শেষে কারো ভালবাসা পেলে হয়।” আমি তো হেসেই উড়িয়ে দিতাম তাদের কথা। প্রিয় বান্ধবী শম্পা অবশ্য আমাকে প্রায়ই বলতো আর কাউকে নয়, তুই ভালোবাসাকে ভালোবেসে বসে আছিস রে, কি জানি এর কি মানে! তবে মনে হয়, যদি সত্যিই পারতাম মনের মতো করে ভালোবাসতে ; শান্ত-নরম-গভীর-আস্ফালনহীন-নিস্তব্ধ-নিঃস্বার্থ-নিঃশর্ত-অথচ দৃঢ়। কিন্তু আমাকেও তো কেউ ভালোবাসবে। আচ্ছা আমাকে কি সত্যিই ভালবাসা যায়? কি জানি? আমি কিন্তু গাছ, পাখি, পাহাড়, নদী খুব ভালোবাসি, আর যা যা কিছু আছে আরো খানিকটা দূরে সেখানেও ভালোবাসা আছে। তবে ঠিক কতদূরে? স্বপ্নের কাছাকাছি গিয়ে বোধ হয়। যেখানে গিয়ে থেমে যায় ভালোবাসা। কতদূরে বলত, ঠিক কতদূরে, অনেকটা দূরে কি? সেই আকাশ মাটির সাথে মেশে, তার থেকেও কি দূরে? মাঝে মাঝে স্বপ্নে চুপচাপ শুয়ে থাকি সেই না দেখা দিগন্তের মধ্যে, তাকিয়ে দেখি ঝিরঝিরে হাওয়ার তুলিতে আলো আঁকে মেঘের ক্যানভাসে। ঠিক তক্ষুণি সে আলো- বাতাস- আর আকাশ, মেঘটাকেও ভালোবেসে ফেলি। স্বপ্ন পেরিয়ে আসার পরেও বুকের মনিকোঠায় চুপ থাকে বেঁচে থাকা। কিংবা সেই যে নদীটা, যাকে খুঁজেছি কতবার আমার স্বপ্নে, সেই যে পাহাড়, যেই পাহাড়ের কোলে ছোট্ট সেই গ্রাম, সেইখানে আমার ছোট্ট স্বপ্নে আঁকা যে ঘর! যা প্রায়ই আসে আমার স্বপ্নে। যেখানে থেকে যেতে চাই কোন বৃদ্ধাশ্রমে একা। তাকেও তো ভালোবাসি। ভালোবাসি আমার সেই নির্বাসন জীবনকে। তবুও কেন জানি না কখনও কখনও এইসব কিছু অসহ্য হয়ে ওঠে, মনে হয় আগুন জ্বেলে ছাই হয়ে যাই, নিঃশব্দে। চলে যাই মেঘের দেশে।
আগুনেতো শুধু নিজেকেই পোড়াতে চেয়েছি। পুড়িয়েছি বারবার। দাদু বলতেন, “আত্মাকে কষ্ট দিওনা কখনও”, আত্মা কে তা তো জানি না আমি, তবে তাকে কি ভালোবাসতে ভুল হয়ে গেল? তার কষ্টে আজ তাই এ দূর্বিষহ প্রায়শ্চিত্ত? একটা একটা করে খুলে ফেলেছি আভরণ, একটু একটু করে মুছে গেছে চাওয়া, তিল তিল করে জমানো অভিমান, আজ পাহাড় প্রমাণ। নিজের অহংকার বিসর্জন দিয়ে, সব ভুলে আমি আবার প্রাণপণে সেই স্বপ্নের কাছে গেছি, যদি স্বপ্ন ভুল করে একবার ফিরে চায়! না, ভুল যে স্বপ্নদের হয় না। মন, সবটুকু ঠিক, তোর বেঠিকটাও যে ঠিকই; তবে কি তুই স্বৈরাচারী? আমি তাই চুপ থেকে আরো বেশি নিস্তব্ধতায় ডুবি। আলো চেয়েছিলাম, যাতে ভুলে থাকি যন্ত্রণা। আলো, এতো অভিমান! নির্বাসন দিস আমাকে। বেশ তবে,অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসুক। এ শুধু আমার প্রায়শ্চিত্ত, তাই আমি সহ্যের পরীক্ষা দিই। শুধু মাঝে মাঝে যন্ত্রণায় জ্ঞান হারাবার আগে আজও দাদুকেই খুঁজি অভ্যেস বশে।
ঠিক ছোটবেলায় অসহ্য যন্ত্রণায় যখন অজ্ঞান হয়ে যেতাম দাদুই তো ছুটে আসতো। এইসব স্বপ্ন-আর আমার ঘোর-যন্ত্রণা আর প্রায়শ্চিত্ত নিয়ে আছি আজও বেঁচে। মাঝে মাঝে ওই দূরের দিগন্তে হারিয়ে যাই, তারপর আবার ফিরে আসি আমারই কাছে। আর রাত্রি আবারো এক আকাশ তারা ছড়িয়ে দেয়, একটা একটা করে রোজ গুনে তুলে রাখি আমার মনের মনি কোঠায় আর অপেক্ষা করি আমার সেই অমোঘ মুহূর্তের যেখানে আমি সেই পছন্দের তারাদের সাথে মিশে যাবো।
সত্য যে … জীবনবোধের যে চিত্র উঠে এসেছে, একে সহজে অন্যের ভাবতে কষ্ট হয়।
মনে হয় বা হলো আমারই কথা বলে গেলেন প্রিয় এই লিখক রিয়া রিয়া।
শুভেচ্ছা নেবেন বন্ধু।
* জীবনের প্রতিবিম্ব…
ভালোলাগা রেখে গেলাম।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
দাদু ঠিকই বলতেন “আত্মাকে কষ্ট দিওনা কখনও”।
অসম্ভব সুন্দর ও সুক্ষতম জীবন বোধের অনুভুতি একরাশ কষ্ট নমজ্জিত সুখ দিয়ে দিয়ে গেল যেন !
শুভেচ্ছা প্রিয় দা।
অসাধারণ প্রকাশ কবি রিয়া চক্রবর্তী।
অসংখ্য ধন্যবাদ কবি সুমন দা।
যুগে যুগে কালে কালে মহা মানবেরা এই আত্মাকে উপলব্দির সাধনাই করে গেছেন।
মানুষ নিজের আত্মাকে উপলব্দি করতে পারেল স্রষ্টা কে উপলব্দি করতে সক্ষম হতে পারে।
দিদি আপনার জীবন ভিত্তিক লিখা গুলো আমার খুব ভাল লাগে, নিজের ভবনা গুলোকে খুজে পাই।
ভালবাসা জানবেন।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
তাকেও তো ভালোবাসি। ভালোবাসি আমার সেই নির্বাসন জীবনকে। তবুও কেন জানি না কখনও কখনও এইসব কিছু অসহ্য হয়ে ওঠে, মনে হয় আগুন জ্বেলে ছাই হয়ে যাই, নিঃশব্দে। চলে যাই মেঘের দেশে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা কবি দিদি ভাই।
সুন্দর উপস্থাপনা। বিষয়বস্তু অসাধারণ। পাঠ করে মুগ্ধ হলাম।
শুভেচ্ছা রইল কবিবোন।
জয়গুরু!
কেমন আছেন আপনি? অনেক দিন পরে আপনার লেখা পড়লাম।
লেখা ভালো লেগেছে। এটা কি আত্মজীবনি?
বিবেকের কথা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। লেখাটা প্যারা প্যারা করে মনে হয় ভালো হতো।
ধন্যবাদ।
অসাধারণ বিষয়বস্তু । চমৎকার উপস্থাপন ।