রাত্রি, অষ্টাদশী অনূঢ়া

রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া,
সারা শরীরে তোমার কাঁচা সোনা।
রাত্রি, তোমাকে ছেড়ে যেতে চেয়ে যেতে পারি না
যখন ভাবি ছেড়ে যাবো-
তুমি আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে
নিয়ে যাও স্নানঘরে, ঝরণার জলে ভিজিয়ে
দেখাও তোমার নগ্ন শরীর;
আমি ফিরতে পারি না
আমার ফেরা হয় না ঘরে
কেবল তাকিয়ে থাকি আর মুগ্ধ নয়নে
দেখি তোমার অকৃত্রিম রূপ-জ্যোৎস্না-অন্ধকার।
বহুবার তুমি আমাকে বানিয়েছো সিদ্ধার্থ
বহুবার তুমি আমাকে করেছো রক্তাক্ত
জ্যোৎস্নায় গা রাঙিয়ে যখন তুমি
কপালে পড়ো চাঁদটিপ, পাগল দশা হয় আমার।
রাত্রি, তুমি মধ্যরাতের সেই সুন্দরী পতিতা,
তোমার এক ইশারায় প্রলুব্ধ হয় সমস্ত পুরুষ সমস্ত কবি।
.
রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া,
তোমার কাছে এসে দূরে যাওয়া কঠিন।
তুমি এলে যখন সমস- শহর মরে যায়
একজন কবিকে দেখি- ক’জন নিশাচর
কবিকে দেখি তোমার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রাখতে,
তোমার চোখে তাকিয়ে থাকতে।
.
রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া;
সকাল হলে যখন তুমি চলে যাও কবিকে ফেলে-
কবি সারাদিন প্রেমবিষকাব্য লিখে অপেক্ষায় থাকে
কখন সব পাখি ঘরে যাবে…

প্রবাল মালো সম্পর্কে

ক্রমশ অবচেতনে বেড়ে যায় জয় আর পরাজয়ের বোঝা, ক্লান্ত আমি- নিজেকে লুকোই বালকের প্রথম প্রেমের চিহ্নের মতো। কোনো অর্জন নেই আমার- কেবলই অবক্ষয়-ধ্বংস-মৃত্যু, জয়ের আনন্দে বিহ্বলতা নেই- আছে গোপন কান্না, প্রতিটি প্রাপ্তির পেছনে উপলব্ধি ঘৃণার-সংশয় বোধের, প্রকৃতির নীরবতা-নম্রতার পেছনে হিংস্রতার প্রেতছায়া, মৃত্তিকার অগভীরে শেকড়ের ভয়ংকর নগ্নতার ছাপ, নদীর ঢেউয়ের গোপনীয়তা থেকে দোয়েলের সুমিষ্ট শিসের ঘ্রাণ, ঘাসের বেড়ে ওঠা নীরবে- কিছুই তো অজানা নয় মানুষগুলোর, তবু কেন এই অশনি সংকেত! ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে স্বীকারোক্তি দেবে কে? তোমার স্মৃতিগুলোতো ক্রমে অস্পষ্ট, তবুও তোমার দেহের ভঙ্গিমা সবচেয়ে সুখকর- সরল জীবনের মতো, সে-জীবন খোঁজে কবি, কবিতা, প্রেমিক, ঘাস, হৃদয়; তবু কেন মানুষ নয়!

2 thoughts on “রাত্রি, অষ্টাদশী অনূঢ়া

  1. চমৎকার লাগে আপনার প্রতিটি লিখা। শুভেচ্ছা প্রিয় কবি।
    মন্তব্য প্রতি-মন্তব্যে ব্লগিং হোক আনন্দের … https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  2. আপনার কবিতাগুলো যা পড়ছি তাতে বেশ ভাল লাগছে।
    শুভেচ্ছা জানাই।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।