প্রিয়তমা, বিশ্বাস করো–
এই জীবনেও ব্যর্থ হলাম।
প্রবাল মালো এর সকল পোস্ট
অনুকাব্য-০১
আমি চলে যাচ্ছি বলে
দিনে দিনে সুন্দর হয়ে উঠছে পৃথিবী
এবং তুমিও……………..
অারো এক বিপন্ন বিষ্ময়…
ছবিটি বছর সাতেক অাগের। অামরা পাঁচ ভাই বোন। জীবন চলেছে ব’য়ে…! অামাদের এক একজনের জীবনে এক একটি গল্পের জন্ম হয়েছে। গল্পগুলো সুখ-দূঃখ, ঘাত-প্রতিঘাত, টানাপোড়েন ও জীবনযাপন নামক নানা সংগ্রামের। একদা দেশউদ্ধারের কাজে মিছিল-মিটিং-পার্টি করেছি। দু’চোখ ভরা স্বপ্ন ছিল বিপ্লবের, স্বপ্ন ছিল নতুন দিনের। ছবি এঁকেছি, বাঁশি বাজিয়েছি, অাবৃত্তি করেছি, কবিতা লিখেছি।
২০১৩-এর বই মেলায় একটি অকাব্যগ্রন্থও বেরিয়েছিল। এখন সব বিবর্ণ। বিবর্ণ ক্যানভাস, বাঁশিতে ঘুণ, চর্চা নেই অাবৃত্তি, হারিয়েছি কাব্যদেবী, হারিয়েছি কবিত্ব! কিছু মানুষ হয়তো পারে ঘর ভুলে অপরের তবে কাটাতে জীবন, অামি পারিনি। এখন সকাল থেকে রাত অবদি খাটছি ঘরের জন্য, কখনো পেরে উঠছি, কখনো ব্যর্থ হচ্ছি। জীবন হয়তো এমনই! কেউ কেউ অাজন্ম সহ্য করে অনন্ত দহন, কেউ হয়তো অাত্মভোলা হয়ে কাটায় প্রহর। কেউ পুঁড়ে যায় বলেই হয়তো কেউ পায় অালো। তবু জীবন যায় না থমকে, শুধু একদিন কোটি জীবনের গল্পের মাঝে হারিয়ে যায় এক একটি জীবন। জীবন মিশে যায় সাড়ে তিন হাত ভূমিতে; অথবা ভষ্ম হয়ে মেলায় কালিদহের জলে এক বিষণ্ন সন্ধ্যায়….
তথৈবচ
জীবনটাকে উড়িয়ে দেবো সুতো কাঁটা ঘুড়ির মতো
এক জীবনে একটি মানুষ
এক আকাশে একটি ফানুস
উড়িয়ে দিলে কার ক্ষতি হয়?
ঘর যদি হয় বিশাল আকাশ
কে আর করে ঘরে বাস!
এক আকাশে একটি ফানুস উড়িয়ে দিয়ে
রাতের দূঃখী তারাকে চোখ রাঙিয়ে
তোমার চোখের মহুয়া করে পান
জীবনটাকে উড়িয়ে দেবো সুতো কাঁটা ঘুড়ির মতো।
–
বহুকাল চার দেয়ালে বন্দি ছিলাম
বহুকাল মানুষ হয়ে দিন কাটালাম
এখন ভাবি কেন থাকবো বহুদূর!
তুমি আমি আমরা দুজন-
আমরা যখন দেখেই এলাম সমুদদূর।
সকালের শিশির ভেজা ঘাস মাড়িয়ে
বা হাতের পাঁচটি আঙুল তোমায় দিয়ে
তোমার চোখের মহুয়া করে পান
জীবনটাকে উড়িয়ে দেবো সুতো কাঁটা ঘুড়ির মতো।
নগ্ন রাজপথে
জ্যোৎস্নার সংগ্রাম তখনও অবিরত জোনাকির বিরুদ্ধে, চাঁদের
জবাবদিহিতা সূর্যের প্রতি তীব্র হয়ে ওঠে, নক্ষত্রগুলো প্রচণ্ড গতিতে
ছোটে মাটির দিকে, দুয়ারে ছেয়ে যাওয়া তমাল
পিষ্ট হয় অপেক্ষারত প্রেমিকের পায়চারিতে;
তবে আজ রাতে তুমি কি আসবে?
সাদা ক্যানভাস আর তুলির আকর্ষণ ক্রমশ বিপরীত থেকে
বিপরীতমুখী- প্রত্যেকেই কর্মহীন-বেকার বসে ধুলোয় পুরোনো তাকে,
সারাদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে গাঙচিলের ডানার রং বিবর্ণ, ওদিকে
কোনো এক অখ্যাত কবির উচ্চারণ- ‘এ যেন গতকালের দৈনিক এক!’
তবে আজ রাতে তুমি কি আসবে?
অবলা নারীর রূপে যদি আসো-
তবে আরও একবার ধর্ষিতা হবে তুমি
আমাদের এই নগ্ন রাজপথে।
–
এই কলঙ্ক তোমার নয়, আমার;
এই নতমাথা তোমার নয়, আমার;
এর দায়ভার তোমাদের নয়, আমার;
শুধুই আমার।
হত্যা অথবা ভালোবাসা
কেবল সবাই হত্যা করতে চায় আমাকে,
শৈশব থেকে মধ্য যৌবন হন্তারকের দৃষ্টি এড়িয়ে চলেছি প্রতিদিন।
কেউ কেউ চাইলো ভালোবেসে হত্যা করতে-
ভালোবাসলে বুঝি দুধের পেয়ালায় মেশাতে হয় হেমলক?
ভালোবাসলে বুঝি দু’হাতে পেরেক ঠুকে ঝুলিয়ে দিতে হয় ক্রুশে?
–
আমার আত্মজীবনীর পাতায় পাতায় শুধু হত্যার ষড়যন্ত্র দেখি,
দেখি আমাকে ভালোবেসে হত্যার উৎসবে মেতেছে কতজন
কত ছলে-বলে-কৌশলে।
প্রথম যৌবনে আমার বালিকা প্রেমিকা একদিন আমাকে
বাড়িয়ে দিয়েছিল তার কোমল ওষ্ঠ,
আমি ওষ্ঠ স্পর্শে বুঝেছি সে আমাকে হত্যা করতে চায় ভালোবেসে;
তবে ভালোবেসে হত্যা করা-ই বুঝি ভালোবাসা!
–
কেবল সবাই হত্যা করতে চায় আমাকে,
আমার চারিদিকে শুধু হন্তারকের সতর্ক পাহারা সকাল দুপুর রাত্রি;
ওদিকে দ্যাখো, কী আশ্চর্য-
পৃথিবীও আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে নিয়মিত!

কুকুর
বড় বেশি প্রয়োজন বোধ করি তোমাকে আজ
নিজেকে বড় অভাবী মনে হয়
ঠিক এমনটি হয়তো বা মনে করে না-
কোনো পিতৃ-পরিচয়হীন রাস্তার শিশু।
রাতের প্রত্যেকটি তারা-নক্ষত্ররাজি
তোমার প্রতীক্ষায় অবসন্ন,
এখনও অস্তিত্বের গানে নির্ভুল ভূমিকায়
আরশোলা, বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি, বেলা শেষের
লাল টকটকে সূর্য।
–
যা কিছু আমি বুঝতে পারিনি
যা কিছু আমার বোধগম্য হ’লো না কোনোদিনও
সেই কথাগুলো নদীর প্রত্যেকটি ঢেউ জেনে গেছে
মশা গুনগুন শব্দে ব’লে গেছে মানুষের কানে
অথচ দ্যাখো, অনাহারী কুকুরগুলোও
লেজ নাড়িয়ে প্রভুর নিকট বিশ্বস্ততা প্রকাশ করে!
রক্ত নয়, বেশ্যার সিঁদুর
মুছে ফেলো স্মৃতিরাশি, কাগজের নৌকায় ভাসাও পাতার শরীর
গতরাতে বেশ্যার ঘরে মরেছে ফ্রয়েড লজ্জায় ও ক্ষোভে
কবিতার সাথে কবির হয়েছে অন্ধকারে রক্তচোখা দৃষ্টি বিনিময়
না গো প্রিয় নারী, রক্ত নয়- শরীরে লেগেছে বেশ্যার সিঁদুর
–
শোনো আর না শোনো- ওদিকে ভ্রুক্ষেপ করে না কবন্ধ প্রেমিক
ফুলের বাগানে প্রস্ফুটিত কলি আসে অলি অরণ্যে নব পল্লব
রাত্রিহর্ষক ঘোর অন্ধকারে শিকার করে চন্দ্র নয়- ক্ষুদ্র জোনাকি
কেটে যায় নষ্ট সময়, রক্ত নয়- শরীরে লেগেছে বেশ্যার সিঁদুর
–
ভুলি না, একদা রাজপথ পেছনে ফেলে এসেছি রবীন্দ্রনাথে
মাথায় থাক রবীন্দ্রনাথ- এই বলে হেঁটেছি রেলপথ হাতে ছিল হাত
পোড়া কপালে ফ্রয়েড শেষে তুমি মরলে অন্ধগলিতে বেশ্যার ঘরে
জেনো, রক্ত নয়- বুকের গভীর ক্ষতে সুচতুর বেশ্যার সিঁদুর
তারপর
তারপর কত গল্প মিশে গেছে পৃথিবীর পথে,
কত তারা ঝরে গেছে মধ্যরাতে।
বহু শতাব্দী আগে কোনো এক শেষরাতে
ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বলে দেখেছিলে অকৃত্রিম জ্যোৎস্না,
আর আমি আকণ্ঠ জ্যোৎস্নাপানে অতৃপ্ত হয়ে
ছুটেছিলাম তোমার নগরে এক বিন্দু জলের আশায়।
–
তারপর কেটে গেছে অনেক শতাব্দী,
নদী আর সাগর ভরে গেছে বরফ গলে গলে।
তারা চায়নি তবুও পেয়েছে তারা জল;
অথচ যে আমি আজন্ম তৃষ্ণার্ত
শতাব্দী থেকে শতাব্দী ছুটেছি তোমার নগরে
বারবার তোমার দুয়ারে বাড়িয়েছি হাত-
তাকে তুমি তৃষ্ণার্ত-ই রাখলে, শ্যামা মেয়ে!
দেখলে না একটি বার-
এই ব্যস্ত শহরের একটি নির্জন ঘরে
কত নির্ঘুম রাত একা একা কেটে গেল তার।
অন্ধকার
অন্ধকারে ছিলাম অন্ধকারে আছি অন্ধকারে হারিয়ে যাবো।
অন্ধকার আমার কণ্ঠনালীতে,
অন্ধকার আমার শিরায় শিরায়,
অন্ধকার আমার রক্তে।
আমার পূর্বপুরুষ অন্ধকার ভালোবাসতো,
আমি অন্ধকার ভালোবাসি,
আমার উত্তরসূরিও অন্ধকার ভালোবাসবে।
আমি আর চোখ মেলে দেখবো না,
চোখ মেলে দেখতে পারে ক’জন?
আমি আর আলো দেখবো না,
তাই জোনাকিকে বালিশে চেপে রাখি সারারাত-
শ্বাসরোধ করে হত্যা করি বারংবার।
আমি আর সত্য শব্দ উচ্চারণ করবো না,
তাই ছুঁড়ে ফেলি কবিতার খাতা।
.
অন্ধকারে ছিলাম অন্ধকারে আছি অন্ধকারে হারিয়ে যাবো।
আমি চিরস্থায়ী অন্ধকার চাই,
আমি চিরস্থায়ী কৃষ্ণপক্ষ চাই,
আমি চিরস্থায়ী অদ্ভুত আঁধার চাই।
অন্ধকারে ছিলাম অন্ধকারে আছি অন্ধকারে থাকবো চিরকাল।
উচ্চাভিলাষী
যদিও বৃষ্টির পূর্বমুহূর্তে মেঘের গর্জনে
অসামান্য উচ্চাভিলাষী মানুষেরা,
সন্ধের অবকাশ যাপনের অগোচরে
পাগলের প্রলাপ ও কবিতার পঙ্ক্তির
পার্থক্য নির্ণয় অযোগ্য।
–
আমি জানি, ফসলের কতভাগ
কৃষকের গোলায়, কতটা শোষকের ঘরে,
শ্রমিকের রক্তশূন্য দেহে লোভাতুর
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এখনও কোন্ প্রভু,
রাজপথ প্রিয় স্বপ্নগুলোকে
ফুটপাথের অন্ধগলিতে বিক্রি করে কারা,
কারা পুরুষের বেশে প্রতিরাতে
বালিকার দেহে ভিড় জমায়।
–
তুমি জানো না, বন্ধু, তোমার অলক্ষ্যে
ফসলের শরীরের জল চুষে নেয় কারা,
তবু কী আমরা মেঘের গর্জনেই উচ্চাভিলাষী
থেকে যাবো অসামান্য!
চশমায় বৃষ্টি
সারারাত বৃষ্টি ঘরের চালে টাপুর টুপুর-
যেন অভিমানী নর্তকীর নুপুরের শব্দ।
তুমি বলেছিলে- মেঘ ও বৃষ্টির
গোপন প্রণয়ের ইতিকথা
আর তাদেরই বিরহের আখ্যানভাগ।
সেই থেকে রাত জেগে জেগে
অভাগিনী বৃষ্টির কান্না শুনি-
নিজেরই বুকের ভেতর,
সে কাঁদে, সে অভিমান করে, সে হাসে,
নিজেরই বুকের ভেতর।
.
বৃষ্টি হলে সারারাত মেঘ ঘুমিয়ে থাকে
অবুঝ শিশুটির মতো,
বৃষ্টি হলে সারারাত শুধু আমি জেগে থাকি
চশমায় নিয়ে দু’ফোটা বৃষ্টি।
রাত্রি, অষ্টাদশী অনূঢ়া
রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া,
সারা শরীরে তোমার কাঁচা সোনা।
রাত্রি, তোমাকে ছেড়ে যেতে চেয়ে যেতে পারি না
যখন ভাবি ছেড়ে যাবো-
তুমি আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে
নিয়ে যাও স্নানঘরে, ঝরণার জলে ভিজিয়ে
দেখাও তোমার নগ্ন শরীর;
আমি ফিরতে পারি না
আমার ফেরা হয় না ঘরে
কেবল তাকিয়ে থাকি আর মুগ্ধ নয়নে
দেখি তোমার অকৃত্রিম রূপ-জ্যোৎস্না-অন্ধকার।
বহুবার তুমি আমাকে বানিয়েছো সিদ্ধার্থ
বহুবার তুমি আমাকে করেছো রক্তাক্ত
জ্যোৎস্নায় গা রাঙিয়ে যখন তুমি
কপালে পড়ো চাঁদটিপ, পাগল দশা হয় আমার।
রাত্রি, তুমি মধ্যরাতের সেই সুন্দরী পতিতা,
তোমার এক ইশারায় প্রলুব্ধ হয় সমস্ত পুরুষ সমস্ত কবি।
.
রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া,
তোমার কাছে এসে দূরে যাওয়া কঠিন।
তুমি এলে যখন সমস- শহর মরে যায়
একজন কবিকে দেখি- ক’জন নিশাচর
কবিকে দেখি তোমার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রাখতে,
তোমার চোখে তাকিয়ে থাকতে।
.
রাত্রি, তুমি অষ্টাদশী এক সুন্দরী অনূঢ়া;
সকাল হলে যখন তুমি চলে যাও কবিকে ফেলে-
কবি সারাদিন প্রেমবিষকাব্য লিখে অপেক্ষায় থাকে
কখন সব পাখি ঘরে যাবে…
চারুলতার জন্য পঙতিমালা
হাতের শেষ পারাবতটিও উড়িয়েছি আকাশে
ঝরে গেছে দশ আঙুলে ফোটা প্রজাপতি ফুল
দিগন্তের নীল লুটে নিলো কালো কালো মেঘ
শহরের সবগুলো ল্যাম্পপোস্টকে পিছে ফেলে
বলেছি- আজ রাতে আর ঘরে ফিরবো না।
.
দূরে বহুদূর সপ্তর্ষিমণ্ডলে কার মুখ ভেসে ওঠে
কার মুখ ক্ষণিক দেখা দিয়ে মেলায় তমসায়
এই সে দেখা দেয় পূর্বে এই আবার পশ্চিমে
এই আবার হারায়, নাই কোথাও সে নাই
জলে যে প্রতিবিম্ব সে আমি না চারুলতা!
.
ঘুম ঘুম চোখে অস্পষ্ট কণ্ঠে বলিনি তোমার নাম
মনে মনে বলেছি- আজ সব ব্যর্থ পঙ্তির জন্ম দেবো
যে পঙ্তি মস্তিষ্কে গতরাতে মরেছে শিরোনামহীন
যে পঙ্তি তোমার ওষ্ঠে ঠাঁই পাইনি কোনোদিন
ওদের বলেছি- চারুলতার কাছে আমার অনেক ঋণ।
.
কে চারুলতা? চারুলতা আমার বহু পুরোনো মদ
দূর আকাশে যে মুখ ভেসে ওঠে বার বার, কে সে?
চারুলতা ঘুমিয়ে গেলে কে আর থাকে জেগে?
কে বলে আর- সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য।
ল্যাম্পপোস্টকে বলে দিয়েছি- আজ আর ঘরে ফিরবো না।
.
যা পারাবত আরো দূর আকাশে চলে যা
তোকে আর ডাকবো না এই গোধূলী বেলায়
এখানে বড্ড হানাহানি স্বার্থের দ্বন্দ নোংড়া খেলা
আমাদের দেখা হবে নীলিমায়, দেখা হবে সপ্তর্ষিমণ্ডলে
ছায়াপথ মহাকাল কৃষ্ণগহ্বর যেখানে একাকার।
.
চারুলতা, তোমাকে দেবার নেই কিছুই, আমার শূণ্য আঙুল
চারুলতা, এখানে পাবার নেই কিছু্ই, জলে ভেসে গেছে ফুল
সবগুলো ব্যর্থ পঙ্তি শুধু কাঁদে অষ্টপ্রহর রাতদিন
রাতের ল্যাম্বপোস্ট শুধু জানে- চারুলতার কাছে আমার ঋণ
চারুলতা, ও চারুলতা, কোন্ সপ্তর্ষিমণ্ডলে তুমি থাকো?
মুক্তি
১.
ছেঁড়া চটির কাছে আমার দু’পা একুশ বছরের সশ্রম কারাবন্দি,
প্রলাপের ভঙ্গিতে উঁকি মারে মুক্তির আবেদন
বৃষ্টি ও কবিতার যৌথ কর্ম-বিরতির দিনগুলোতে;
মুক্তিদাতা আজ প্রত্যেকেই আমার চারপাশে-
তবু হুইল-চেয়ারের মুক্তির জন্যে
অথর্ব পিতার মৃত্যুকামনাও বাদ পড়লো না ভাবনায়।
.
২.
সিদ্ধার্থও একদিন চেয়েছিলেন মুক্তি
কবে এক গভীর পূর্ণিমা রাতে, হয়তো
চাঁদ বলেছিল- ‘হে পথিক কোন্ পথে যাবে?’
ঘর ছেড়েছি ঘরের খোঁজে নয়-
ঘর ছেড়েছি আকাশ পাবো বলে,
কালিদহে ডুবলে ডুবুক সপ্তডিঙ্গা
চাঁদ সদাগর পড়ে রবে মাস্তুলে!