পারুর বুকে আতরের ঘ্রাণ : অণুগল্প ৪২৯

বিভ্রান্তি মনের ভেতর। মস্তিষ্কে হ্যালুসিনেশন। অনুভব অসার। রুদ্ধ দুয়ার। বোধশক্তি অপার।
.

শীতের আমেজে না নিজের একাকীত্ব কাটাতে উষ্ণতা পাবার জন্য আগুন জ্বালতে চাইছে একজন? আগুনের মতো আলো ছিলো সে।
.

নিজের শীতলতা নিজেই দুর না করা কেনো? কেউই জ্বালবে না। কারো জ্বালানোর ও দরকার নাই। জানার ও। সবার ভিতরেই আগুন আছে। শীত। শীতলতা। পোড়ানোর বা পুড়বার ইচ্ছে সবার ভিতরের আগুনের নেই। হৃদয়হীনাদের অন্যকে পোড়ানোর সব গুণ থাকলে ও, হৃদয় নেই বলে, সে অন্যের হৃদয়ের জ্বালা ও জুড়াতে পারে না।
.

পারুরা এই টাইপের। ওরা দেবদা’ কে দাস বানাতে পছন্দ করে। পারুল থেকে হয়ে উঠে পারু। সর্বনাশী। বিণাশিনী। দ্বিচারিণী। তবে দেবদাসের উত্তরসুরীরা, এই কুহকিনীদের খপ্পর থেকে কেনো জানি বের হতে পারে না। বড় মায়া পারুর বুকে! অসহ্য আতরের ঘ্রাণ ঐ উপত্যকায়! বড্ড নরম পারু। ছলনাময়ীরা কি নরম-ই হয়?
.

ভাবনায় ডুবে যায় শিহাব। ওহ! অসহ্য সাইনাস পেইন। হৃদয় খামচে টেনে নিয়ে আসে কিছু একটা। জ্বলে। আগুন। কোথায় যেনো। হৃদয়ে ও। অহর্ণিশি। জ্বলে। পারুর আগুনের আলো। জ্বলে। জ্বালা ধরায়। ভালোবাসা পোড়ে?
.

কেউ দেখে?
কেউ কি দেখো? দেখতে চাও? দেখবে আমায়!
ভাবে শিহাব। ঐ শহরে কাঁদে পারু? এই শহরে কাঁদায় শিহাবকে!
.

মায়ায় মায়ায় কায়া হারানো ছায়ামানবের কষ্টের রং নীল। পারুও কি নীলা? নীলাভ নীল বিষ!
শিহাব জানে না।

#পারুর_বুকে_আতরের_ঘ্রাণ_অণুগল্প_৪২৯

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

4 thoughts on “পারুর বুকে আতরের ঘ্রাণ : অণুগল্প ৪২৯

  1. পারুর বুকে আতরের ঘ্রাণ এ চমৎকার সব অনুভব বিশ্লেষণ ভালোই এগিয়েছে। মনে মনে বাহ্ বাহ্ করছিলাম। অন্তিমে শিহাব এর দেখা পেয়ে গেলাম। দারুণ সারপ্রাইজ !! :) :yes:

    1. আপনার মনের অনুভবের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

      লেখার বিভিন্ন পয়েন্টে হঠাৎ টার্ণ কিভাবে নেয়া যায় সেটা ভাবার চেষ্টা করছি,হচ্ছে না। আমি এমন কিছু লিখতে চাই যেখানে পাঠকের মনে হবে তিনি সঠিক পথেই আগাচ্ছেন, তবে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গিয়ে দেখবেন না , ভুল পথে আগিয়েছেন, তবে শেষে গিয়ে অনুভব করবেন- হ্যা, ঠিক বাড়ির সামনেই তো এসেছি।

      কিভাবে ভিন্নতা আনবো, যাতে করে আমার লেখা সারা বিশ্বে আর কারো লেখার সাথে মিলবে না, এক স্বকীয় উপস্থাপনায় মামুনের সব গল্প শ্রেফ মামুনের মতই যেন হয় এমন ভাবে চাইছি লিখতে। কিন্তু হচ্ছে না।

       

      শুভেচ্ছা আপনার জন্য নিরন্তর…https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

  2. ওয়াও গল্পদা মামুন!! অনেক সুন্দর হয়েছে তো!! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. ধন্যবাদ রিয়াদি'

      আপনার অনুভূতি লেখার প্রেরণা হলো জানবেন।

       

      শুভেচ্ছা…https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।