মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসীদের অভিবাদন গ্রহণ করুন

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আশা করেছেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতায় আসবে। এই আশাবাদ প্রায় সকলেরই। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য তার নেতৃত্ব দরকার।

বিগত বছরগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটে ভূমিকার জন্য শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। চলতি বছরের শেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক উচ্চপর্যায়ের সংলাপে অংশ নেন শেখ হাসিনা। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর, ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কের্স্টি কালিজুলেইদ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি মঘেরনিনি এবং মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত ক্রিশ্চিয়ানা স্ক্র্যানার বারগেনার জাতিসংঘ সদর দফতরে আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

এবারের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার উদ্ভব হয়েছে মিয়ানমারে, তাই এর সমাধান সেখানেই হতে হবে। বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে মিয়ানমার সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কথা জাতিসংঘে তুলে ধরে এক বছরেও প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নেতা হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আশাহত হয়েছি, কেননা আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ও টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমারের যে চুক্তি হয়েছে- আমরা তার আশু বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা দেখতে চাই। আমরা দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। মিয়ানমার মৌখিকভাবে সব সময়ই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে তারা কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে রোহিঙ্গারা যাতে সেখানে যেতে পারেন তার জন্যও আমি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা চাচ্ছি।’

নিউইয়র্ক এখন সরগরম। জাতিসংঘ অধিবেশন শুরু হয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এভিন্যুর অনেকগুলো সড়কও বন্ধ। বিশ্বের অনেক নেতানেত্রী এখন নিউইয়র্কে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন প্রতি বছর হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই অধিবেশনে যোগ দিতে প্রতি বছরই নিউইয়র্কে আসেন। আমেরিকার প্রবাসী বাংলাদেশীরা প্রতিবারই বিভিন্ন দাবি জানান। কেউ কি এসব দাবি শোনেন? এই দাবিগুলোর কিছুটাও কি পূরণ হয়?

এমন নজির খুব কম। উদাহরণ দেওয়া যায় অনেক। বিমান এখনো নিউইয়র্ক রুটে চালু হয়নি। অথচ গেলো বছরই আমাদের প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়ে গিয়েছিলেন। একই কথা এবারও বলেছেন নাগরিক সম্বর্ধনায়। প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করে অনেক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। প্লট আর ফ্ল্যাট ব্যবসায়ীরা কাউকে পথেও নামিয়েছে। দেখার কেউ নেই। দেশে গিয়ে প্রবাসীরা অনেক বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বিচার পাচ্ছেন না। সব রাঘব-বোয়ালের নদী একটাই। তারা এই নদীতেই সাঁতার কাটেন। তাদের কোনো দল-মত নেই, তারা ভোগে মেতে ওঠেন। ব্যবসা-বাণিজ্যও করেন দল-মত ভুলে। শুধুমাত্র টকশোতে তারা একে অন্যের প্রতিপক্ষ। কী আজব এই দেশ!

সরকার যায় সরকার আসে। এটা একটা নিয়মিত প্রসেস। যেসব মন্ত্রী কাজে ব্যর্থ হন- তাদের বাদ দেওয়া হয়। অন্তত শেখ হাসিনার সরকার তেমন কিছু নজির স্থাপন করেছেন। কিন্তু মন্ত্রীরা কি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়মিত তাদের রিপোর্ট দিচ্ছেন? তারা জানাচ্ছেন তাদের ব্যর্থতা?

মন্ত্রীরা সবসময়ই বড় বড় ভালো কথা বলেন। বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু একজন জাঁদরেল রাজনীতিক। তিনি মিডিয়ার বিষয়ে অনেক কথাই বলছেন। হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘সঠিক তথ্য জনগণের কাছে তুলে ধরা এবং খণ্ডিত তথ্য, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন, তথ্য আড়াল করা, অসৎ তথ্য প্রচার ও অসৎ সাংবাদিকতাকে নিরুৎসাহিত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করবো।’ আমরা দেখছি মিডিয়া এখন বিশ্বের একটি বড় আলোচিত বিষয়। মিডিয়া অনেক সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যাকে উৎসাহিত করছে- বিষয়টা নিয়ে ভাবার অবকাশ তো থাকছেই।

মন্ত্রীরা সব সময়ই বড় বড় কথাবার্তা বলেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশে সৃজনশীলতা যতোটা না এগুচ্ছে, চুরি-চামারি এগুচ্ছে তার বহুগুণ। এর প্রতিকারে সরকার কী করছে? কতোটা করছে? অপরাধের ধরন, অপরাধীর মানসিকতা বদলাচ্ছে। তাই আগে ছিল না, এমন অপরাধ দমনে নিরাপত্তা আইনও করতে পারে যে কোনো রাষ্ট্রপক্ষ। সমাজ বাঁচাবার জন্য সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আইন প্রণীত হতেই থাকে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা কালে কালে।

আমাদের এ বিষয়টিও লক্ষ রাখতে হবে, প্রণীত আইন কখনোই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য চাপিয়ে দেন না কিংবা বাকস্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা প্রকাশের স্বাধীনতার নামে জাতি-গোষ্ঠী বর্ণ-ধর্ম বৈষম্যমূলক ঘটনাবলীকেও প্রশ্রয় দেন না বিশ্বের বরেণ্য রাজনীতিকরা। অথচ আমরা দেখি বাংলাদেশে আইনের খড়গ নেমে আসে বিরোধীপক্ষের ওপর। একটা বিষয় আমরা খুব গভীরভাবে দেখছি, যখনই সরকারি বড় কোনো নেতা কোনো কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, তখনই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে খুব সূ²ভাবে। ধরা যাক হলমার্কের কথা। হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলা হয়েছিল। কিন্তু এর মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

বাংলাদেশে আসলে চলছে এটা সাপলুডু খেলা। সরকারেরই অংশীদার কয়েক নেতাই সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রকাশ্যে। এরশাদ কখন কী বলেন- তার ঠিক-ঠিকানা নেই। আমাদের মনে আছে, শেয়ারবাজারে কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী সর্বস্ব হারিয়েছে। ডেসটিনি ইউনিপেটুসহ এমএলএম কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছে। হলমার্ক এতো টাকা লুট করলো, অথচ এর সুরাহার ধীরগতি বিনিয়োগকারীদের হতাশ করছে তো বটেই। এই যে দুই চিত্র আমরা দেখছি, তা আসছে সরকারের ভেতর থেকেই। কোনটা জানবে, মানবে দেশের সাধারণ মানুষ!

আমরা দেখছি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দল গুছানোর কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূলে এখন ভাগ-বাটোয়ারার রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘অনেক ইউনিয়ন আর উপজেলায় সম্মেলন হচ্ছে। এখান থেকেই নতুন নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। গিয়ে ঘুরে আসা নয়। বসে থেকে সম্মেলন করতে হবে’ কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে শেখ হাসিনা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সময় বেশি নেই। আমার বিশ্বাস, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারবো। আর ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবো।’

আমরা যারা অভিবাসী তারাও একটি উন্নত মাতৃভূমি চাই। আমরা চাই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। কথা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ আপন গতিতেই এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতির কথা এলেই সামনে চলে আসে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আমরা দেখেছি, দেশের ডানপন্থী একটি পক্ষ তরুণ প্রজন্মকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা প্রয়োজনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে কিছু নেই’ এমন তত্ত্বও শোনাচ্ছে যত্রতত্র। যারা একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার নায়ক ছিল, যারা একাত্তরে এ দেশের মা- বোনদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করেছিল, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্যই এই সরকারকে মানুষ ভোট দিয়েছিল। সেই বিচার কাজ চলছে। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। ঘাতক রাজাকার আলবদরদের বিচারের দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই প্রজন্মকে অবশ্যই মাঠে থাকতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সহনশীলতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশে খুব কঠিন কাজ ছিল না। যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রধান দলগুলোকে সমানভাবে সম্মান করতো। এটা হয়নি। বরং কেউ কেউ এই চেতনাকে নিজ স্বার্থ হাসিলের কাজে লাগিয়েছে। অথচ জাতীয় উন্নয়নে সেটাই প্রধান রক্ষাকবচ। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের এখনো মনে আছে কী চেতনা বুকে নিয়ে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেই শাণিত শক্তির আজ খুব বেশি প্রয়োজন। এ প্রজন্ম বাঙালি জাতিসত্তাকে বলীয়ান করেই বিশ্বে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে, সরকার এর সঠিক মূল্যায়ন করতে পারলো না। যে কথাটি না বললেই নয়, তা হলো বিএনপি-জামাত জোট যদি রাষ্ট্রক্ষমতা পায় তখন আজ যারা জেলে বসে হাসছে, তারা বেরিয়ে আসবে খুব সহজে। এরপর দেশের পরিণতি কী হবে- তা অনুমান করা কঠিন নয়।

মনে রাখা দরকার দেশের মানুষ জঙ্গিবাদের হোতাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু চরম লুটপাটকারীদের হাত থেকেও রেহাই পেতে চায় সাধারণ মানুষ। একটা সময় আসবে, প্রবাসী সমাজ আর দাবি জানাবেন না। তারা ইতোমধ্যে কুয়েত এয়ারওয়েজ, ইত্তেহাদ, কাতার এয়ারওয়েজ, গালফ, তার্কিশ এয়ারকে বেছে নিয়েছেন বাহন হিসেবে। তারা এখন মাতৃভূমিতে নিরাপত্তাহীন হয়ে বিদেশেই বিনিয়োগ করছেন। এর জন্য দায় বাংলাদেশের রাজনীতিকদেরই নিতে হবে। এভাবে এই প্রজন্ম ক্রমশই স্বদেশবিমুখ হবে। দেশের কথা মনেও করবে না। এর দায় রাজনীতিকরা এড়াতে পারবেন না কোনোমতেই।

আমরা দেখছি, এই প্রবাসেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর দলাদলিতে ব্যস্ত আওয়ামী রাজনীতিকরা। এর অবসান দরকার। কারণ হানাহানি প্রতিপক্ষকেই সুযোগ করে দেয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ২০১৮-তেও জাতিসংঘে ভাষণ দিচ্ছেন। স্মরণ করেছেন জাতির জনককে। এটা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। আমি যে বিষয়টি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই তাহলো, ফিলিস্তিনি মজলুম মানুষের পক্ষে অনেক বৃহৎ শক্তি যখন কথা বলেনি, তখন বাংলাদেশ কথা বলেছে। কথা বলেছেন এই সময়ের সাহসী বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ এভাবেই সত্যের পক্ষে থাকতে চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- আপনি লাখ লাখ প্রবাসী বাঙালির অভিবাদন গ্রহণ করুন। ন্যায়ের পক্ষে আপনার জয় অব্যাহত থাকুক।

ফকির ইলিয়াস: সাংবাদিক।

3 thoughts on “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসীদের অভিবাদন গ্রহণ করুন

  1. 'যারা একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার নায়ক ছিল, যারা একাত্তরে এ দেশের মা- বোনদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করেছিল, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্যই এই সরকারকে মানুষ ভোট দিয়েছিল। সেই বিচার কাজ চলছে। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। ঘাতক রাজাকার আলবদরদের বিচারের দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই প্রজন্মকে অবশ্যই মাঠে থাকতে হবে।' _______ আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।