আল মামুন খানের দুইটি বিব্রতকর স্ট্যাটাস
আমার ফেসবুকে লেখালেখির শুরুর দিকে দুইটি স্ট্যাটাস নিয়ে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলাম। বিশেষ করে নারী বন্ধুরা তীব্র রিয়্যাক্ট করেছিলো সেইসময়। আজ অনেক বছর পরে হুবহু স্ট্যাটাস দু’টি তুলে ধরলাম আবারও…
১.
পৃথিবীতে অকৃত্রিম ভালোবাসা বলে যদি কিছু থাকে, সেটা হল বাবা এবং মেয়ের ভিতরের ভালোবাসা। আর বাকীগুলো সব হয় বাধ্যতামূলক, ঋণশোধ কিংবা চুক্তির বহিঃপ্রকাশ।
বাবা-মা এর প্রতি সন্তানের ভালোবাসা ঋণশোধের মত। আবার বাবা ছেলেকে যে ভালবাসে, সেটা ব্যাংকে জমানোর মত। ভবিষ্যতের আশায়।
বউকে তো কাবিন নামায় (যেটা ও একটা চুক্তিপত্র) স্বাক্ষর করেই বিয়ে করা হয়। এখানে উভয়পক্ষ থেকেই একটা দায়িত্বপালনের ব্যাপার থেকে যায়। তুমি এইটা করবে, আর আমি ওইটা করব- এমন ধরণের। যারা এখন বউকে বলে বেড়ায়, ‘তোমার প্রতি আমার ভালোবাসায় কোনো খাদ নাই’, এরা চরম মিথ্যুক।
ভালোবাসা এখন আর আগের মত নাই। চলছে ভালবাসার বিশ্ব বাণিজ্যিকীকরণ.. শ্রেফ বাবা-মেয়ের ভালোবাসা ছাড়া…।।
২.
“মেয়েদেরকে আমার সিগ্রেটের মত মনে হয়। সিগ্রেট যেমন বাদ দেয়ার চেষ্টা না করলে নেশাটা বাড়তেই থাকে এবং এক সময় চরম পরিণতি ডেকে আনে- মেয়েরাও তাই।
নারীদেরকে আমার খাবার খাওয়ার পরে প্রথম পানি’র মত মনে হয়। যেটা পানে খাবারের সকল তৃপ্তি আসে; কিন্তু একবার মিটলে বুভুক্ষের মত পান করার প্রয়োজন পড়ে না।
মা’কে বাতাসের মত মনে হয়। প্রতি মুহুর্তেই তাকে আমার প্রয়োজন!”
ফেসবুকে আমার এই স্ট্যাটাসটি আপডেট করার পরে ক’জন মেয়ে বন্ধু (শুধু মেয়েই না, তারা নারী এবং মা ও) তীব্র রিয়্যাক্ট করলো। ম্যাসেঞ্জারে খুব করে প্রতিবাদ জানালো মেয়েদেরকে সিগ্রেটের মতো মনে হয় এই কথা লিখবার জন্য।
এক মেয়ে বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, আমার বউ জানে কিনা। এই প্রথম ‘মেয়ে বন্ধু’ শব্দটি উল্লেখ করলাম, সাধারণত আমি বন্ধুর কখনো জেন্ডার বিশ্লেষণ করি না। আর মেয়েরা আমার কখনো বন্ধু হয় নাই। তারা আমাকে কোনো সময়ই পছন্দ করে নাই।
ভার্চুয়াল জগতে এসেও অনেককে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেখেছি, অধিকাংশই পেন্ডিং রেখে দিয়েছে। কেউ ব্লক করেছে, কেউ বা রিপোর্ট ও করেছে। আবার অনেকে ঝুলন্ত রেখে আমাকে বুঝিয়েছে, ‘দেখ, আমার কাছে তোমার এক পয়সারও মুল্য নাই।’
যাই হোক, উপরের আমার এই লেখাটায় আমি একজন Woman এর যে ক’টি রূপ সময়ের সাথে সামনে আসে, সেগুলো আমার নিজের চোখে এবং অনুভূতিতে কেমন সেটা বুঝানোর চেষ্টা করেছিলাম।
মেয়ে বলতে বিবাহ পূর্ববর্তী কিশোরী মেয়ে যার কেবল বাড়ন্ত বয়স, সমাজে আমার মত শকুনেরা যাদেরকে পেলেই খুবলে নেবার চেষ্টায় থাকে, তাকে বুঝিয়েছি।
নারী দিয়ে বউ তথা বিবাহ পরবর্তী নারীর রূপকে বুঝিয়েছি।
মা কে কি আর ব্যাখ্যা করতে হবে?
এবার, এই যে সিগ্রেট, পানি, বাতাস এগুলো দিয়ে কেন বুঝালাম? কিংবা নারীকে ভোগের পন্য হিসাবে কেন দেখালাম? কিছু Woman এর এই অভিযোগ।
মেয়েকে সিগ্রেট দিয়ে বুঝানো হয়েছে, ওই কিশোরী বয়সে যেন সে সিগ্রেট এর মতই পরিত্যাজ্য থাকে। একজন নারীতে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত যেন সে পুরুষের কাছে নিষিদ্ধই থাকে।
নারী, তার বিকাশ ঘটবেই নর এর সাথে মিলনে। এটা তো প্রকৃতিরই নিয়ম। পানি দিয়ে একটা অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ইলিমেন্টসকে বুঝিয়েছি। তবে অবস্থাভেদে পানিও জীবন নাশকারী হিসেবে আসতে পারে। নারীকে অতিমাত্রায় ভোগ তার মানসিক ক্ষতির কারন হতে পারে। আমাদের এই সমাজে বিকৃত মানুষেরও তো অভাব নাই।
মা আমাদের কাছে বাতাসের চেয়েও বেশী দরকারী, যাদের মা নাই, এটা তারা এখন উপলব্ধি করছে।
এখন আসা যাক, ভোগ্য পন্য হিসাবে নারীকে যদিও বা তুলনা করি, সেটা কি একেবারেই মিথ্যা হবে? সৃষ্টিকর্তা আদমের সঙ্গী হিসেবে হাওয়াকে বানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকৃতিতে হাওয়া ছিলেন ভোগের সমস্ত উপকরণসমুহ দিয়েই। এজন্য আদম ঘুম থেকে উঠেই যখন প্রথম হাওয়াকে দেখেন, তিনি হাত বাড়িয়েছিলেন কিন্তু মিলনের জন্যই। খোদাতায়ালা তখন তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন যার পরিণতি যেভাবেই দেখিনা কেন, উভয়ের ইন্দ্রিয় সুখের জন্যই। যাকে ভোগ বললে ভুল হবে না। সেই থেকে আজ পর্যন্ত সব ধর্মেই ‘বিবাহ’ নামক একটি রাবার স্ট্যাম্প দিয়ে এই একই সিলসিলা চলে আসছে।
মুখে যতই নারী বলে থাকুক, তারা ভোগের পন্য নয়। কিন্তু ঠিকমত তাদেরকে আবার ভোগ করতে না পারলেও কিন্তু তারা দ্বিচারিণীতে পরিণত হয়। এখন যেটাকে আমরা পরকীয়া প্রেম বলে থাকি। তখন অভিযোগের আঙ্গুল কিন্তু এই আমি পুরুষের দিকেই তাক করা হয়, যে তাকে আমি ঠিকমত ভোগ করতে পারছি না নপুংসক বলে!
এখন আমরা পুরুষেরা যদি নারীদেরকে দেবীর আসন দিয়ে ‘শোকেসে’ সাজিয়ে রাখি, তাতেও ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিবে। দিনে বা রাতে, সকাল কিংবা বিকেলে অথবা মধ্যরাতে, শরীরের যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে দেবীর আসন থেকে নীচে নেমে নারী, আমি পুরুষের পিছনেই ঘুরঘুর করতে থাকবে 😀
আর যে সকল পুরুষ বন্ধুরা নারীদেরকে দেবীর আসন থেকে নামানোর চেষ্টা করবে, তারাও কি তখন দেবী মনে করে নামাবে? ঘুরে ফিরে তো সেই ভোগ/কামনা/বাসনা’/বিলাস ব্যসন নয় কি?
ছবিঃ জাহাংগীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের।
বলতেই হবে মহ. আল মামুন ভাই। আপনার দুটি স্ট্যাটাসই কারু কারু কাছে বিষমাখা যথেষ্ঠ তীর মনে হতে পারে।
হ্যা কবিদা'
এই লেখাগুলি আরো ৭ বছর আগের। তখন একটু একটু ভার্চুয়াল জগতের সাথে পরিচিত হচ্ছিলাম। এসময় এই লেখা।
এরপর থেকে বিষাক্ত তীর আর ছুড়ি নাই কখনো।

পড়লাম গল্প দা মামুন।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
শুভেচ্ছা।
তবে সময়ের সাথে আমার বর্ণিত অনুভবের পরিবর্তন হয়েছে। নারী আমার সাথে সাথে পাশাপাশি চলার এক বন্ধু এবং অনুপ্রেরণাকারী মানুষ হিসেবে আমার কাছে পরিগনিত হয়েছে। আমার অর্ধাংগিণী এই অনুভব এনে দিয়েছে আমাকে।
* মামুন ভাই, মুগ্ধ হয়ে পড়ে নিলাম।
শুভরাত্রি।
আপনার মুগ্ধতার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
"আমরা পুরুষেরা যদি নারীদেরকে দেবীর আসন দিয়ে ‘শোকেসে’ সাজিয়ে রাখি, তাতেও ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিবে। দিনে বা রাতে, সকাল কিংবা বিকেলে অথবা মধ্যরাতে, শরীরের যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে দেবীর আসন থেকে নীচে নেমে নারী, আমি পুরুষের পিছনেই ঘুরঘুর করতে থাকবে।" ___ লজিক আছে মি. মামুন।
এই অংশটুকুতে সহমত পোষনের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুভ সকাল।
