১
নির্লিপ্ত হবার মহান ব্রত আমার দীর্ঘদিনের। হৃদ মন্দিরের দেয়াল যত পাষাণ দিয়ে তৈরি করা যায় তাই চেয়েছি অনাদিকাল। খাঁটি এক পর্যটকের মত দেখে যেতে চাই। হয়তো এমন হতে পারলে সুখের অভাব হতোনা কস্মিনকালেও। আমি তেমন সুখের সন্ধানী। চলছিল বেশ।
হঠাৎ এক ঘুর্ণিঝড় যেন সবকিছু এলোমেলো করে দিল। পথের প্রতিটি ধূলিকণা আমার বেশ ভালো বন্ধু ছিল। তাদের দেখতে দেখতে আমার নিরন্তর পথচলা। আমায় না দেখে তারা যেমন থাকতে পারতোনা আমারও তাদের না দেখে যেন থাকা দায় ছিল। নির্মিলিত চোখ আজ উর্মিলিত হল এ কোন যাদুকরী শব্দে!
ক্যামন আছিস সীমান্ত?
জী, ভালো আছি। ভদ্রতার ন্যূনতম বালাই না দেখিয়ে কেটে পড়লাম।
তারপরও সিন্থিয়ার এমন সম্মোহনী সম্বোধন কেন যেন বারবার ধ্বনিত হতে লাগলো হৃদমন্দিরে। হয়তো এমন শব্দ এর আগে শুনিনি বলে তা যে ভাবনার বিষয় হতে পারে তাও ভাবার প্রয়োজন বোধ করিনি। ক্লাসের সবাই আমার আড়ালে আমাকে যে নিরামিষ বলে ডাকে তা যে আমার কানে আসেনি তা নয়। এ নিয়ে চিন্তা করার সময় আমার কোথায়! যার ভাবনা তার সাথে। আমারতো দিন ভালোই কাটে যাচ্ছে। জ্বালা নেই, নেই কোন যন্ত্রণা। সকালে ক্লাসে আসি, ক্লাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে বাসায় ফিরি। ট্রেনে কারো জন্য সীট পাহারা দেয়া, কারো জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার মত ফালতুসব দায়িত্ব আমার নেই। এমন ছেলেদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে আমার কেন যেন সবসময় একটা প্রশ্ন থেকে যেত। তাদের দেখলে সবসময় নিরীহ অসহায় মনে হত। উঠবস করতেও যেন পাশে বসে থাকা মেয়েটির অনুমতি নিতে হতো। কেমন অসহায়!
সিন্থিয়া আজ ক্যামন আছিস? এ কথা বলে ক্ষান্ত হয়নি, পেছন থেকে হাত টেনে ধরল।
আজও মুখস্ত করা সেই সরল উত্তর, জী ভালো আছি।
কোথায় যাচ্ছিলে?
জী, ক্লাসে যাবো।
নোটিশ দেখিস নি? স্যার আজ ক্লাস নেবেন না। চল, তুই আজ আমাদের চা খাওয়াবি। মা প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা দেয় ক্লাসে আসতে। আমি অক্ষত সে টাকাটি আবার বাসায় ফিরে মাকে ফেরত দিই। মা যে এতে খুশি হন তা বলা যায়না। আজও তাই পকেটে সে পঞ্চাশ টাকা আছে। তবু বললাম, আমার কাছে কোন টাকা নেই। সিন্থিয়া নাছোড়বান্ধা। সহজে হালছাড়ার পাত্রী নয়। ঠিক আছে আমি খাওয়াবো, চল। উপেক্ষা করার কঠিন বাঁধনে আবদ্ধ হলেও সেদিনে সে ডাক উপেক্ষা করতে পারিনি। যেতেই হল তাদের সাথে। তবে কি পাষাণ গলতে শুরু করেছে…।
২
সিন্থিয়া রুটিন করে আমাদের ডিপার্টমেন্টে আসা শুরু করেছে। আমার চেয়ে তার কাছেই আমাদের ক্লাসের খবর বেশি। আমার মাঝে আমি কোন একধরণের পরিবর্তন অনুভব করছি। কখনো তার আসতে দেরী হলে কেন জানি একধরণের অস্থিরতা অনুভব করি। আমিতো বৃক্ষ, ইচ্ছে থাকলেও নিজে তার ডিপার্টমেন্টে গিয়ে খবর নেয়ার সাধ্য নাই। অপেক্ষা করি, অপেক্ষা দীর্ঘতর হয়, অভিমান চেপে রাখি।
আমার অপেক্ষা ব্যর্থ হয়না। আমরা ইদানিং সবার থেকে আড়ালে বসতে পছন্দ করি। কিছু কিছু ক্লাস ফাঁকি দেওয়াও শুরু হয়েছে।
আমার ক্লাস ফাঁকি দেওয়া সিন্থিয়ার বেশ অপছন্দ। তাই কায়দা করে কিছুটা মিথ্যা আয়ত্ব করে নিয়েছি। আড্ডা চলে নিরন্তর। সিন্থিয়ার রিক্সা ছড়ার বেশ শখ। কারণে অকারণে কতবার রিক্সা ছড়েছি, তার পরিসংখ্যান নেই।
আজকাল সিন্থিয়াকে কেন জানি অন্যরকম মনে হয়। কী জানি কী হয়েছে। জিজ্ঞেস করার মত সাহসের অভাব তো আমার সেই জন্মলগ্ন থেকে। তাই জিজ্ঞেস করা হয়না। জিজ্ঞেস করেই বা কী লাভ। সবার তো একটা ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। ও তো আমার বন্ধু বৈ অন্য কিছু নয়। আমার কাছে তার কাজের হিসাব দিতে বাধ্য নয়। ঐ তো এসে গেছে।
চল, তোর সাথে আজ আমার গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। কোন ভূমিকা ছাড়াই বলতে শুরু করলো সিন্থিয়া। অপূর্ব আজ আমাকে প্রেম নিবেদন করে বসেছে। তার সাথে আমার সেই স্কুল থেকেই পরিচয়। শুন তোকে আজ একটা সত্যি কথা বলি, রাগ করবিনা তো? তার সাথে একদিন বাজী ধরে তোর সাথে বন্ধুত্ব শুরু করি। ওই তো অপূর্ব আসছে। চল, তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।
অপূর্ব, এই হচ্ছে সীমান্ত। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। দুজনে হাত মেলালাম।
অপূর্ব তাদের সাথে ঘুরতে যাবার আহ্বান জানালো। জরুরি ক্লাসের কথা বলে আমিই কেটে পড়লাম। মনকে প্রবোধ মানালাম, আমদের বন্ধুত্ব তো ঠিকই আছে। তবু নিঃসঙ্গতার মাঝে আলো আঁধারের খেলা চলে বারোমাস। অধিকার চাইনি বলে, ঘূর্ণিঝড় যে উঠেনা তা কিন্তু ঠিক নয়।
রাতের আঁধারে নিঃসঙ্গতার মাঝে আজকাল বেশ অশ্রুপাত হয়। সেটি সবার অলক্ষে হয় বলে, নিজের মাঝে কিঞ্চিত গর্ববোধ আছে তা নিয়ে। সকাল হলে পাষাণ হৃদয়ের মানুষ সেজে অভিনয় করি বন্ধুত্বের মহিমা বর্ণনায়। ইদানিং অনেকে প্রশ্ন করলে সগর্বে সেই সাজানো উত্তর ‘আমরা ভালো বন্ধু।‘ সিন্থিয়াও নিপূন অভিনেত্রী বটে। রুটিন করে দুজনের মন রক্ষা করে চলছে। আমিও মেনে নিয়েছি, আমার চেয়েতো অপূর্বের অধিকার একটু বেশি।
৩
জানিস সীমান্ত, অপূর্বর আবেগগুলো অনেক বেশি আমার কাছে জৈবিক মনে হয়। প্রেম করা মানে তো নিজের স্বক্রিয়তাকে বিসর্জন দেয়া নয়। আমি তোর কাছে আমার নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদ মনে করি। নীরব দর্শকের মত কথাগুলো শুনেই গেলাম। স্বান্ত্বনা দেয়া কিংবা কী বলব সে ভাষা খুঁজে পাইনি। তবে গর্ব করার মত একটা কথা আজও আমার হৃদয়ের দেয়ালে অক্ষয় রূপে খোদাই করা আছে,আমি তোর কাছে আমার নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদ মনে করি।
নিরাপদ মনেই বা করবেনা কেন, আমি তো এক কঠিন প্রতিজ্ঞার বাঁধনে আবদ্ধ। ক্ষত-বিক্ষত হতে হতে হৃদয়ের প্রতিটি দেয়াল রচনা করুক ধ্বংসস্তূপ। রক্ত ক্ষরণ হতে হতে বয়ে যাক রক্ত গঙ্গা। আমি রচিবো আজ বন্ধুত্বের বিজয়গাঁথা। আমার কোন দূর্বলতা পাছে ধরা পড়ুক তা কী করে সইবো। আরও একটা কারণ আছে তার প্রতি আমার ভালোবাসার গভীরতা, তার চেয়ে আমার নিজের প্রতি আমার অবিশ্বাসের মত্রাটা একটু বেশি। আমি চাইনা আমার কোন আচরণ আমাদের বন্ধুত্বের মাঝে বিন্দুমাত্র ফাটল ধরুক। অক্ষয় হয়ে থাকুক আমাদের বন্ধুত্ব।
আমার এমন কী আছে তাকে সুখি করার। আমি চাই, তার জীবনে এমন কেউ আসুক যে কানায় কানায় সুখের বন্যায় ভাসিয়ে দিক তার জীবন। তার সুখই তো আমার সুখ। যা আমি তাকে দিতে পারবোনা, তার মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ কী? তার সুখি মুখ আমার আজন্ম সাধনা। দেখে যাক মানুষ, নারী- পুরুষের সম্পর্ক মানে শুধু প্রেম নয়, নারী -পুরুষের সম্পর্ক শুধু জৈবিক চাহিদায় নয়। তারাও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বন্ধু হতে পারে। প্লেটোনিক ঝড় চলে নিজের মাঝে। মুখ দিয়ে একটি কথাও বের হয়না। দুজনে আজ লম্বা একটা নীরব সময় অতিবাহিত করি। অপূর্ব আজ ক্যাম্পাসে আসেনি বলে পুরো সময়টা সিন্থিয়া আমার সাথেই ছিল। ক্লাসে যাবার প্রবল আগ্রহ কারোরই ছিল না।
ক্যাম্পাসেই তাদের বাসা। রিক্সায় তাকে বাসায় দিয়ে এলাম । একধরণের জোর করেই সিন্থিয়া তাদের বাসায় নিয়ে গেলো। তার পরিবারের সবার সাথে পরিচয় হল। বেশ ছোটখাটো গুছানো পরিবার। বাবা একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ভালো বেতন পান। মোটামোটি বেশ কেটে যাচ্ছে সংসার।
বিকেলে বাসায় ফিরে এলাম। কিন্তু বিষণ্ণতা কাটছেনা কোন মতে। বিশাল শূন্যতা অনুভব করতে লাগলাম। কোন কিছুতেই যেন মন বসছেনা। বারবার মনে হতে লাগলো, আমার কি কিছুই করার নেই। কিন্তু পেছন থেকে কে যেন চিৎকার করে বলতে লাগলো, তাকে যে পরিমাণ সুখি দেখতে চাও সে পরিমাণ সুখ দেওয়ার ক্ষমতা তোমার নাই। তুমি বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে বড়জোর একটা কলেজের শিক্ষক হতে পারবে, তার চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার ক্ষমতা তোমার নেই। ওই যে বাগানে একটা গোলাপ দেখছো, সকালের শিশির ফোটা গোলাপের পাপড়িতে মুক্তোর দেখায়। তার প্রতি লোকের ভালোবাসা অফুরান। শিশির ফোটার আড়ালে যে পচন ধরেছে তা দূর থেকে দেখা যায়না বলে তার ভালোবাসার ঘাটতি নেই। তুমিও তাই। দূরে আছ, বেশ ভালো আছ। কাছে যেওনা। তাকে দেয়ার তোমার কী আছে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনে… ।
৪
ইদানিং অপূর্ব আমাকে ঈর্ষা করতে শুরু করেছে। সিন্থিয়া আমার সাথে মিশুক তা সে পছন্দ করছেনা। সিন্থিয়া না বললেও কথাগুলো আমার কানে এসে যাওয়ায় নিজেকে একটু ব্যস্ত করে নেয়ার চেষ্টা করছি। সিন্থিয়া একটুও বদলায়নি। যে মেয়েটা একদিন বন্ধুদের সাথে বাজী ধরে আমাকে বদলাতে এসেছে সে আজ আরও ঘনিষ্ট হতে চলেছে। তার সকল কথার গোপন বাক্স আমি। এমন কোন কথা নেই যা আমার সাথে আলাপ করেনি। এমন কিছু কথা আছে যা আমার কাছে বিব্রতকর মনে হয়, তাও সে অবলীলায় বলে দিতে পারে।
সিন্থিয়ার এমন আস্থাভাজন হতে পেরে নিজের মাঝে গর্ববোধ হয় মাঝে মাঝে। মনে হয় তার বন্ধু হয়ে বেশ করেছি। বন্ধুর ক্যানভাস অনেক বিশাল। যার সীমা পরিসীমা কেউ কোনদিন ছুঁতে পারেনি, পারবেওনা কোনদিন। স্বামী হওয়ার চেয়ে বন্ধু হওয়া অনেক গৌরবের। তাতে নেই কোন ক্লেশ, প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির যোগ বিয়োগের খেলা। পুরোটাই প্রাপ্তি পুরোটাই বিসর্জন। আমি এমন বন্ধু হয়ে বেঁচে থাকতে চাই যুগযুগান্তর।
সিন্থিয়াকে আজ সকাল থেকে বেশ বিষণ্ণ মনে হচ্ছে। রাতে ফোন করে বলেছিল জরুরি কথা আছে। তাই আমিও কিছুটা উদগ্রীব। সীমান্ত জানিস, আমার কোন কিছুই ভালো লাগেনা। গতকাল অপূর্বের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান ছিল একটা হোটেলে। তার অনেক বন্ধু বান্ধবী সেখানে উপস্থিত ছিল। তোর কাছে গোপন করি এমন কোন শব্দ আমার অভিধানে নেই। আমার মা জানেনা যে কথা সে কথাও তুই জানিস। গতকালের তার আচরণগুলো তোকে বলতেও আমার বিবেকে বাঁধছে। এমন রুপদিয়ে কী হবে যা অন্যের কাজে যদি না লাগে। আমি কোন মতে পালিয়ে এসে যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছি। আমার ছোটবোন দীপা পর্যন্ত বলছে আপু তুমি ভুল জায়গায় পা দিয়েছ।
সীমান্ত আমি তোর সাথে আজীবন সঙ্গী হয়ে থাকতে পারলে অনেক অনেক বেশি সুখি হতাম। তোর মত মানুষ হয়না। সীমান্ত আমি ভুল করেছি। সীমান্ত, আমি মানুষ চিনতে ভুল করেছি…। কথাগুলো বলতে বলতে সিন্থিয়া হেঁটে চলল বাসার দিকে।
………………………………………
গল্প আমাকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেল; গল্পে ভরা একটা গল্প পড়লাম।
অভিনন্দন !
* সুপ্রিয়, গল্প লেখার এটা প্রথম প্রয়াস। আপনার মন্তব্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকলো।
শুভরাত্রি।
আপনার লেখনী পড়ে ভালো লাগলো। এমন আরও পাবো কি? ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় দিলওয়ার দাদা।
* প্রিয় কবি দাদা, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনাদের মত পাঠক পাওয়া গেলে চেষ্টা করতে দোষ কী…
শুভরাত্রি।
অনেকদিন পর আপনার লিখা গল্প পড়লাম।
* সুপ্রিয় প্রেরণাদাতা মুরুব্বী, আমাকে দিয়ে বড় কিছু হয়না। অল্পকথায় যদ্দুর যাওয়া যায়। শুভরাত্রি।
অনেক ভাল একটি লেখা পড়লাম মনে হলো। এটা সত্য গল্প আপনার খুব কম পড়েছি।
* প্রিয় কবি, আপনার মন্তব্য চলার পাথেয় হয়ে রইলো…

বন্ধুর ক্যানভাস অনেক বিশাল। যার সীমা পরিসীমা কেউ কোনদিন ছুঁতে পারেনি, পারবেও না কোনদিন। স্বামী হওয়ার চেয়ে বন্ধু হওয়া অনেক গৌরবের। তাতে নেই কোন ক্লেশ, প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির যোগ বিয়োগের খেলা। পুরোটাই প্রাপ্তি পুরোটাই বিসর্জন। আমি এমন বন্ধু হয়ে বেঁচে থাকতে চাই যুগযুগান্তর। সীমান্ত গ্রেট।
* প্রিয় কবি দাদা, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
গল্পের ম্যাসেজটা ঠিকই আপনার চোখে ধরা পড়েছে…
সম্মোহনী সম্বোধন – ভালো লেগেছে এই কথাটা।
ছেলেদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে আমার কেন যেন সবসময় একটা প্রশ্ন থেকে যেত। তাদের দেখলে সবসময় নিরীহ অসহায় মনে হত। উঠবস করতেও যেন পাশে বসে থাকা মেয়েটির অনুমতি নিতে হতো। কেমন অসহায়! এই কথাটাও বেশ চমৎকার
হায় নারী – তোমার জন্য বয়ে যাচ্ছে কত নদী রক্ত
* অনেক অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয়…