রাগ সমাচার

আচ্ছা মানুষ যখন রাগ করে তখন কি কি করতে পারে?..
উত্তরের লিস্টে মনে হয়না দুনিয়ার তাবৎ জিনিসের মধ্যে কোন কিছু বাদ পড়বে।

রাগের অনেক গুলো ধাপ আছে। এরমধ্যে রাগের সর্বোচ্চ ধাপের স্থায়িত্বকাল কিন্তু একেবারেই কম। এই ধাপে মানুষ নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। আর তাই সে এই সময়টাতে যা করে তা পুরোপুরিই তার স্বাভাবিক আচরণের বাইরে। কেউ কেউ জিনিসপত্র ভাংচুর করে। কেউবা তার প্রতিপক্ষকে আঘাত করে বসে। কেউবা সব ছেড়ে দূরে নিজেকে আড়াল করে ফেলে আবার কেউ কেউ হয়ত অতি রাগে নিজেকেই নিজে আঘাত করে বসে।

রাগ যখন পড়ে যায় তখন এর সবই তার কাছে পাগলামী মনে হয়। ভাল আর মন্দ গুণাবলির ভিত্তিতে মানব মস্তিষ্কের দুইটা স্তর আছে। মস্তিষ্কের উপরের স্তরে ভালবাসা, দয়া, ক্ষমা সহ যাবতীয় ভাল গুণগুলো অবস্থান করে। আর এর নিচের স্তরে থাকে রাগ, ঘৃণা, জিঘাংসা সহ মানব চরিত্রের সকল খারাপ দোষ-ত্রুটি। ভাল গুণগুলি উপরে থাকায় মানুষ সব সময় এগুলোর প্রভাবেই চলে। কিন্তু কখনও যদি এই স্তরের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি হয় তখন ধীরে ধীরে এই স্তরটি দূর্বল হয়ে পড়ে। ফলে নিচের স্তরের চাপা দোষগুলি আস্তে আস্তে মানুষটির উপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। আর এভাবেই আমরা মানুষকে বদলে যেতে দেখি চোখের সামনে। এবার আসা যাক উপরের স্তরে কখন চাপ সৃষ্টি হয় এই প্রসঙ্গে।

মাঝে মাঝে এমন কিছু পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যখন একটা মানুষ সত্য বলছে অথচ তার চারপাশের কেউ তাকে বিশ্বাস করছেনা কিংবা তার উপর মিথ্যা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার কেউবা অন্যের দ্বারা অপমানিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত কিন্তু সবাই দেখেও তা দেখছেনা। অর্থ সংকট, ব্যর্থতা, আকস্মিক দূর্ঘটনা, ঝগড়া-দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি যখন তার বর্তমান সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয় তখন তার মধ্যে আস্তে আস্তে রাগ আর হতাশা জমতে থাকে। রাগ আর হতাশাও কিন্তু নিচের স্তরের অংশ। ব্যক্তির মনের নাজুক পরিস্থিতিতে এরা প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে। আর এভাবে যদি দীর্ঘদিন একটা মানুষ সমস্যার মধ্যদিয়ে চলতে থাকে একসময় এরা পুরোপুরিই তাকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। আর তার মধ্যে দয়া, ক্ষমা সহ ভাল গুণগুলি আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হতে থাকে।

কিন্তু শুরুটা শুরু হয় এই রাগ দিয়েই। আর এই রাগ তার বিভিন্ন ধাপের মধ্য দিয়ে একসময় যখন সর্বোচ্চ ধাপে গিয়ে পৌঁছে তখন সব কিছুই তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

11 thoughts on “রাগ সমাচার

  1. প্রত্যূষেে ঈশ্বর বন্দনার পরপরই প্রথম শপথ হোক আমি যেন রাগ না করি বা যেন রেগে না যাই। রাগ ক্ষতিকর।

    1. আমাদের প্রত্যেকের জীবন হোক কল্যাণময়। ধন্যবাদ সৌমিত্র দা।

      1. দুঃখিত মুরুব্বী। ধন্যবাদ সুন্দর করে ভুলটি শোধরে দেওয়ার জন্য। অবশ্য লেখালেখির অংগনে আর মেধায় আপনি ত মুরব্বীই বটে। আবারও ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। 

        ভালো থাকবেন।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_smile.gif.gif

  2. রাগ সবসময়ের জন্য ক্ষতিকর। জেনে বুঝে কেনবা ভুল পথে হাঁটা।
    ভাল পরামর্শের পোস্ট হয়েছে দিদি ভাই। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।