নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিনোদন! ফরম পূরণে ব্যর্থতায় মনোনয়ন ফরম বাতিল। উত্তাল যোগাযোগ মাধ্যম। এ নিয়ে পোষ্টের ছড়াছড়ি। গণনা মাধ্যমগুলিও পিছিয়ে নেই এসংক্রান্ত খবর প্রকাশে।
ক্ষমতাসীন সমর্থকদের হাসিমুখের মন্তব্য, ‘সঠিকভাবে পূরণে ব্যর্থ! এরাই ভবিষ্যৎ আইনপ্রণেতা? হাস্যকর ভুল, পড়তে জানেনা নাকি?’
বিরোধীদের ভ্রুকুঁঞ্চিত চেহারায় ক্রোধ, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যে কতটুকু লেভেল বুঝা গেলো। নীলনকশা? এজন্যই তো মনোনয়ন বাতিল।’
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। কে সঠিক?
এক ওভারব্রিজের নিচে, চা’র কাপ হাতে, একা একা ভাবে শিহাব। নির্বাচন এলেই বিনোদন। সরকারি-বিরোধী উভয়ে শিবির থেকেই আমজনতার জন্য এটা উপহার। অন্যান্য অনেক কিছুর মতো বাংগালী ভাঁড়ামিতেও সিদ্ধহস্ত।
পান মুখে ছাগলা দাড়ি চা’র দোকানদারের স্বগতোক্তি,
– নির্বাচনে টাহার ছড়াছড়ি। হ্যাতেগো পকেট ভারী। মোরা সাধারণ মানু, প্যাডের ক্ষুধায় মরি।
চা’র কাপ রেখে বিল মেটায় শিহাব। যাবার আগে বলে,
– মরাই পছন্দ তোদের। মরা আর মারা খাওয়া, এই দুইয়ের বাইরে কখনও ভাবতে শিখেছিস?
অবাক চা’র দোকানদার! নির্লিপ্ত চেয়ে রয় চলে যাওয়া শিহাবের পিঠের দিকে। কায়া আর ছায়া। কে বড়? লম্বা পিচের রাস্তায়, এক মধ্য দুপুরে, ছায়ারা ক্রমশঃ বিস্তৃত হয়।
ক্ষুদ্রতর কায়াদের বুকে জড়িয়ে চলা নতজানু এ এক বিধস্ত জনপদ। যেখানে প্রতি পাঁচ বছর শেষ হলেই আলো আঁধারের বুকে লুকায়। এরপর ক্রমশঃ ম্লান হতে হতে একসময় মিলিয়ে যায় নতুন করে জ্বলে ওঠবার আশায়।
দূর থেকে হুজুরদের মিছিল আসতে দেখে শিহাব। রাজপথ জুড়ে উত্তাল স্রোতের মতো এগিয়ে আসছে। তাবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হলো সেদিন, একজন নাকি মারাও গেছে। কে যেন বললো, ‘নির্বাচনের এই সময় হুজুরদের এই এক্টিভিটিজ ইন্টারন্যাশনাল মুভমেন্ট।’
ইন্টারন্যাশনাল মুভমেন্ট হোক আর যাইহোক, শিহাবের কাছে হুজুরদের এই মুভমেন্টও, নতজানু বাংগালী জীবনে বিনোদনের উপকরণ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না।
________________________
#মামুনের_অণুগল্প_ব্যাপক_বিনোদন
একেই বলে নির্বাচনী রঙ্গ। এই সময়টাতে শক্রু মিত্র লোভী গুহাবাসীও বেড়িয়ে আসে জনসমুখে। … শিহাব এর অবজারভেশন ঠিক আছে।
সঠিক বলেছেন আপনি ভাইয়া। নির্বাচন মানুষের চেহারার অদৃশ্য মুখোশ খুলে দেয়। লোভ ঠিকরে পড়া দু'চোখের মানুষদের দেখে এসময় শিহাব বড্ড বিরক্ত হয়।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা…

ভোটের হাওয়া মানব সন্তান দোলে। দোলে আমাদের আশপাশ। সত্য লিখা মহ. আল মামুন ভাই।
এভাবে দুলে দুলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই উপমহাদেশে নতজানু এবং ভংগুর সমাজব্যবস্থায় বেঁচে থাকে। এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে কেউ আগ্রহী নয়।
ধন্যবাদ প্রিয় কবিদাদা। শুভেচ্ছা..

পান মুখে ছাগলা দাড়ি চা’র দোকানদারের স্বগতোক্তি,
– নির্বাচনে টাহার ছড়াছড়ি। হ্যাতেগো পকেট ভারী। মোরা সাধারণ মানু, প্যাডের ক্ষুধায় মরি।
চা’র কাপ রেখে বিল মেটায় শিহাব। যাবার আগে বলে,
– মরাই পছন্দ তোদের। মরা আর মারা খাওয়া, এই দুইয়ের বাইরে কখনও ভাবতে শিখেছিস?
___ পশ্চিম বাংলায়ও এই একই চিত্র দেখি।
হ্যা দিদি। আমাদের এই দুই বাংলায় তথা আমাদের উপমহাদেশের চিত্র প্রায়ই একই। তবে সামগ্রিকভাবে ভারতের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা তুলনামুলকভাবে বেশী। সব মিলিয়ে আমরা (ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ) এবিষয়ে সূচকের নিম্নে রয়েছি। দুঃখজনক।
ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি জানানোর জন্য। ভালো থাকুন।
* শুভ কামনা মামুন ভাই…
ধন্যবাদ প্রিয় দিলওয়ার ভাই। আপনার জন্যও নিরন্তর শুভেচ্ছা…
