থমকে থাকা সময়

থমকে থাকা সময়

এখন অনেকটা পুড়ে গেছে মন, অনেকটা ধুয়ে গেছে মন। বার বার ভুলে গেছে ভুলে যেতে। জানি অনেক লেখার মতন এ লেখাও ঠাঁই পাবে waste paper basket এ। চোখ দুটো আজ টলটলে দিঘী। ডুব জলে সেই কবে মন কেমন অবগাহন। ভালো লাগা গুলো পলির মতো জমে মনের মোহনায়। সেই পলি ছেঁচে নিয়ে চোখ আঁকে খরস্রোতা ছলাৎছলাৎ। এখন একা হওয়া সময় গুলোতে আর যাওয়া হয়না ছাতের সে কার্ণীশ বেয়ে। মেঘেরা আজও আসে একবার করে শার্সীর আর্শীতে আর্জি জানিয়ে যায় আমাকে ভেজাতে চাওয়ার, ভিজে যায় মন-চোখ-শরীর। দৃষ্টির এতটুকু আকাশ, চাইতে গিয়ে গুটিয়ে গিয়েছি নিজেকে নিজের কোলের ভিতরে।

আজকাল আমি রাতের পর রাত নিজেকে নিজেরই কোল পেতে ঘুম পাড়াই। মন এখন অগুন্তি তারার গাঢ় পর্দার ওদিকে। আস্তে আস্তে বড় হয় দীর্ঘশ্বাস। একটু একটু করে নীল রঙা রাতভোর। আর শিশির ভেজা মাটির গন্ধের মতোই একটু একটু করে রোদ পেয়ে মুছে স্বপ্নগুলো। আমার এইসব হেঁয়ালি উদবৃত্ত বড়। উপাচারে যেমন অসম্মানিত ঈশ্বর, অবহেলায় তেমনি মনের বিসর্জন।

এখনও আমি হারিয়ে যাওয়া আমাকে খুঁজি রোজ। ঝরে পরা পাতাদের কানে কানে রোজ বলি, ভালো থেকো, আমিও তোমাদের একজন। ডাল ভেঙে এক ঝড়ের তান্ডবে ঝরে গেছি। আজও নদী খুঁজি রোজ, চুপি চুপি আনমনে, শহরের পথে পথে, মনে মনে, বিসর্জনের সময় এসেছে বোধে-অবোধে। বুঝতে কি চেয়েছে কেউ? বা আমি? পাঁজরের খাঁচার একটা একটা করে আগল উপড়ে নিচ্ছি রোজ। আর একটু একটু করে নিজেকে রোজ ভাসান দিচ্ছি ঘোলা জলে। বৃষ্টির সামনে রোজ হাঁটু গেড়ে বসি, দুহাত পেতে ভিখারির মতোই বলি, নদী দে, ভাসিয়ে নিয়ে যাক। নদী দে আরোও একবার।

12 thoughts on “থমকে থাকা সময়

  1. "আজও নদী খুঁজি রোজ, চুপি চুপি আনমনে, শহরের পথে পথে, মনে মনে, বিসর্জনের সময় এসেছে বোধে-অবোধে। বুঝতে কি চেয়েছে কেউ? বা আমি? পাঁজরের খাঁচার একটা একটা করে আগল উপড়ে নিচ্ছি রোজ।"

    জীবনের গল্প অথবা অনুভূতি গুলো সম্ভবত এমনই বন্ধু রিয়া রিয়া।

  2. * সময়ের বাস্তবতায় আসা হয়নি।
    আজ এসে প্রিয় লেখকের ভালো একটা লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
    ভালো থাকুন সুপ্রিয়… https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  3. রিয়া রিয়া: চোখ দুটো আজ টলটলে দিঘী। ডুব জলে সেই কবে মন কেমন অবগাহন। সুন্দর প্রকাশ দি'ভাই।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  4. পড়লাম আর নিজে মিশে গেলাম। 

    "বৃষ্টির সামনে রোজ হাঁটু গেড়ে বসি, দুহাত পেতে ভিখারির মতোই বলি, নদী দে, ভাসিয়ে নিয়ে যাক। নদী দে আরোও একবার"।

    পড়তে পড়তে মিশতে মিশতে দ্রবণটা কোথায় গিয়ে যেন একটা ঢেউ তুললো; একটা ঝাঁপটা দিলো।

    মুগ্ধ দিদি!

    1. আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম মিড দা। আমার শুভেচ্ছা জানবেন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।