মিছে প্রণয় ( পর্ব ২ )
আজ সকালে আধ ঘন্টা যাবত গলায় ফাঁসী দেবে বলে সিলিং ফ্যানে ওড়না আটকানোর চেষ্টা করছিল জয়িতা কিন্তু সে পারছেনা। কখনও সে ঠিক মতো ওড়নাটা ফ্যানের সাথে বাঁধতে পারছে না, কখনো বা তার মনে এতো সাহস পাচ্ছে না। মনে মনে ভাবছে – “এখন যদি কেউ রুমে এসে পড়ে ? বাসায় কেউ দেখে ফেললে জানাজানি হয়ে সাংঘাতিক ব্যাপার হয়ে যাবে…..
কিন্তু এভাবে আর কত দিন ? শোভনের বাচ্চা তার পেটে বাসায় যদি তা কোন ভাবে জানতে পারে এই মুখ আর দেখানো যাবেনা। তার চেয়ে ফাঁসী দেওয়াই ভালো, এবার ওড়নাটা ঠিক মতন বাঁধা হয়েছে কিনা চেক করে নিলো জয়িতা। কিন্তু এমন সময় একটি ছেলে রুমে ঢুকে দেখে ফেললো জয়িতা চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে সিলিং ফ্যানে তার ওড়না আটকানোর চেষ্টা করছিলো…..
বছর আঠারোর মতো হবে , এক ছেলে । চোখে সানগ্লাস, পরনে টিশার্ট আর জিন্স।
– কে আপনি আর এখানে কি করছেন ?
ম্যাডাম আপনি একি করছেন ? আপনি এখনই এখান থেকে চলে যান। কেউ দেখে ফেললে ভীষণ বিপদ হয়ে যাবে। এমনিতেই বিপদের মধ্যে আছি।
হ্যাঁ চলেই যাবো আমি এখানে থাকতে আসিনি। আপনার বাবা আমাকে ফোন দিয়েছিলো আপনার রুমের নাকি এসি নষ্ট হয়ে গেছে সেটা দেখতে এসেছি।
জয়িতা – আমি কিছু জানি না, আপনি এখান থেকে চলে যান ব্যাস।
ছেলে – দাঁড়ান, দেখি ওড়না টা ঠিক মত বেঁধেছেন কিনা। শেষমেষ খুলে গেলে তো না মরে হাত পা ভেঙে হাসপাতালে পড়ে থাকবেন।
জয়িতা – ঠাট্টা করছেন আমাকে নিয়ে ?
ছেলে – ঠাট্টা করব কেন, আমি তো আপনাকে সাহায্য করতে চাইছি।
ওড়নাটি টাইট করে বাঁধার অজুহাতে ফাঁস খুলে সেটি নামিয়ে নিয়ে এলো সেখান থেকে ছেলেটি। তারপর বলল –
এবার বলুনতো মরতে যাচ্ছিলেন কেন ?
জয়িতা – সেটা আপনাকে কেন বলব বলুনতো ? কে আপনি আর আমাকে বাঁচালেন ইবা কেন…..
ছেলে – আমার সামনে আপনি ফাঁসী দিতে যাচ্ছিলেন আর কি চেয়ে চেয়ে দেখব ? সত্যিকরে বলুন তো কেন এমন কাজ করছিলেন ?
চেয়ার থেকে নেমে দুচোখ থেকে ঝরঝর করে পানি ঝড়তে লাগলো জয়িতার…….
শুধু অনুভব করছে বুকের ভেতরের চাপা বর্ণহীন অনুভূতি আর একরাশ শুন্যতা। কি করবো আমি না শোভনের কাছে ফিরে যেতে পারবো, না এই বাচ্চা। কিন্তু এই নিষ্পাপ শিশুটি তো কোন অপরাধ করেনি। ভাবতে ভাবতে কাঁদতে লাগলো জয়িতা…….
লেখা : ফারজানা শারমিন
মিছে প্রণয় নিয়ে লেখা পড়ে ভালো লাগলো । তবে জানতে চাই, এ নিয়ে পর্ব কি আরও চলবে? যদি চলে, তো সাথে আছি। ধন্যবাদ ।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । একরাশ শুভেচ্ছা
মন আর্দ্র হয়ে যাবার মতো একটি লিখা পড়লাম।
অনেক ধন্যবাদ । একরাশ শুভেচ্ছা
আত্মহননের পথ সুখকর নয়। অণুগল্পের জন্য শুভেচ্ছা বোন ফারজানা মৌসুমী।
আপনাকেও ধন্যবাদ । একরাশ শুভেচ্ছা
পড়লাম তবে জানতে ইচ্ছে করছে লেখাটি অণুগল্প নাকি প্রবন্ধ দিদি ভাই ?
অনুকল্প । পড়ার জন্য ধন্যবাদ , একরাশ শুভেচ্ছা
শ্বাসরুদ্ধকর।
হুম । ধন্যবাদ একরাশ শুভেচ্ছা
বর্ণহীন অনুভূতি আর একরাশ শুন্যতা।
ঠিক তাই । ধন্যবাদ , একরাশ শুভেচ্ছা