বৈশাখের বাস্তবতা

একটা পহেলা বৈশাখ আসে,
একটা নববর্ষের বারতা নিয়ে,
নতুন এক দিনের আশায়,
নতুন এক সুর্যের আলোয়,
নিজেদের রাংগিয়ে নেওয়ার শপথে।

এমন দৃঢ়তায় শুরু হয় প্রভাত ফেরী,
রমনার বটমূল থেকে বাংলার আনাচ কানাচ।
শাসকের রক্তচক্ষু আর দালালের বেঈমানী,
আর সব বাধা ডিংগিয়ে,
এক নদী রক্তের স্রোত পেরিয়ে,
মা বোনের সব সম্ভ্রম হারিয়ে।

বাবার ফিরে না আসা
ভাইয়ের নিখোঁজ সংবাদ,
ধর্ষিত বোনের কড়িকাঠে ঝুলন্ত লাশ,
আগুনে ঝলসে যাওয়া বিস্তৃণ ফসলের ক্ষেত,
সবকিছু মেনে নিয়ে পথ চলা।
বৈশাখী ঝড়ের সাথে যুদ্ধ জয়ী জাতি,
সব ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায় আবার,
উঠে দাঁড়ায় সব হারানোর ব্যথা ভুলে,
উঠে দাঁড়ায় জীবনের শেষ সম্বল নিয়ে।
টিকে থাকার যুদ্ধে আবারো হানা,
জীবনের জয়ী হওয়া যুদ্ধে আবারো হানা,
সেই পুরানো শকুন, সেই পরাজিত দানব।

স্বাধীন দেশের মাটি আজ চারণ ভুমি,
ধর্ষক আর ভন্ড মাওলানা,
পুরোহিত কিম্বা নানক,
বাবা অথবা পরুষ,
সবাই আজ মূর্তিমান আতংক।

কোমলমতি শিশু আর নারী,
মাদ্রাসা, উপসনালয়, শিক্ষাংগন,
বাসা অথবা আত্মীয়স্বজন,
রাস্তাঘাট অথবা যানবাহন,
মানুষরূপী জানোয়ারের আতংকে
হারিয়েছে শৈশব আর জীবনের উচ্ছলতা।
নারী আজ নিরাপত্তা খুজে ফেরে
ঘেরাটোপের অন্ধকারে,
তবুও শান্তি নেই, স্বস্তি নেই,
নেই ধর্ষণ থেকে মুক্তি।
এমনই এক অন্ধকার সময় কে
সাথে নিয়ে বৈশাখ আসে বাংলায়,
যেখানে আজ নুসরাত প্রাণ দেয়,
তনু হয় ধর্ষিতা আর খুন,
ঘরের ভিতরে আটকে থেকে আগুনে
পুড়ে যায় চার নারী।
নারী স্বাধীনতা আর নারী মুক্তি
নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা,
সে শুধু ম্যাজিক বাক্সের নিতান্তই ভোগ্যপণ্য।

7 thoughts on “বৈশাখের বাস্তবতা

  1. ঘেরাটোপের অন্ধকারে, আমাদের শান্তিও নেই স্বস্তি নেই। নিরানন্দের বৈশাখ।

  2. একটা পহেলা বৈশাখ আসে মা বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে। :(

  3. আনন্দ বাস্তবতার সংজ্ঞা দিন দিন কেমন জানি বদলে যাচ্ছে। 

  4. আহ বাহ মান গ্রাম বাংলার এক করুণ ও আনন্দময় 

    চিত্র ফুটে তুলেছেন। শুভেচ্ছা জানবেন।       

  5. যত কষ্ট হোক, যত আঘাত আসুক, যত দুঃখই থাকুক; বৈশাখ কিন্তু থামছে না। বৈশাখ আসছে আসবে। উৎসব হচ্ছে, হবেও! বৈশাখ বেঁচে থাকুক অনন্তকাল বাঙালির হৃদয়ে।

    ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় কাজী রাশেদ দাদা। আশা করি ভালো থাকবেন সবসময় ।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।