যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়
মাকরুহ অর্থ অপছন্দনীয়। যেসব কাজ করলে গুনাহ হয় না; তবে ইসলামে অপছন্দ করা হয়েছে সেগুলোকে মাকরুহ বলে। রোজার ক্ষেত্রেও অনেক কাজ এমন রয়েছে, যেগুলো করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এ ধরনের কাজ করা ঠিক নয়।
১. মিথ্যা কথা বলা।
২. গিবত বা চোগলখোরি করা।
৩. গালাগাল বা ঝগড়া-ফ্যাসাদ করা।
৪. কোন কবিরাহ গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
৫. সকালবেলায় নাপাক অবস্থায় থাকা।
৬. রোজার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা প্রকাশ করা।
৭. কয়লা, মাজন, টুথপাউডার, টুথপেস্ট বা গুল দিয়ে দাঁত মাজা।
৮. অনর্থক কোনো জিনিস মুখের ভেতরে দিয়ে রাখা।
৯. অহেতুক কোনো জিনিস চিবানো বা চেখে দেখা।
১০. কুলি করার সময় গড়গড়া করা।
১১. নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া। (কিন্তু ওই পানি গলায় পৌঁছলে রোজ ভেঙে যাবে।)
১২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুতু জমা করে গিলে ফেলা।
১৩. ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করা।
সূত্র: দুররে মুখতার: ২/৪১৬, বাদাইউস সানায়ে: ২/৬৩৫, কিতাবুল ফিকহ: ১/৯২৩
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ সুরাইয়া নাজনীন।
আলহামদুলিল্লাহ। পবিত্র এই দিনে আমাদের সবাইকে পবিত্র থাকা উচিত।
সহজ সরল বিষয়টি কঠিন করা হয়েছে । ইতিহাসে পাই, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো বিষয়ে মাসলা জানতে চাইলে বিশ্বনবী (সা.) প্রথমে তা বলে দিতেন। কিন্তু কেউ যদি আরও একটু খুঁটিয়ে জানতে চাইতো তাহলেই তিনি রেগে যেতেন। কারণ তিনি জানতেন ঐ কাজ করেই অর্থাৎ অতি বিশ্লেষণ ও ফতোওয়াবাজী করেই তার আগের নবীদের জাতিগুলো সহজ-সরল দ্বীনকে জটিল ও দুর্বোধ্য করে ফেলে ধ্বংস হয়ে গেছে। কাজেই আল্লাহ যেটুকু বলেছেন ও আল্লাহর রসুল যেভাবে করেছেন, আমাদের উচিত কেবল সেভাবেই আমল করা, বাড়াবাড়ি না করে ফেলা, দ্বীনকে জটিল করে না ফেলা। মনে রাখতে হবে, ইসলামের কোনো আমলই মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়, মানুষের উপকারের জন্যই। একদিন এক ব্যক্তি নবীর (সা.) নিকট এসে অনুতাপের সঙ্গে বলল, ‘এই বদ-নসিব ধ্বংস হয়েছে।’ নবী জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার কী হয়েছে?’ আমি সওম থাকা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তোমার কি একজন ক্রীতদাস মুক্ত করার ক্ষমতা আছে? না;
২ মাস সওম থাকতে পারবে? না। ৬০ জন গরিবকে খাওয়াতে পারবে? না। এমন সময় এক লোক বড় পাত্রভরা খেজুর নিয়ে আসলো। তখন নবী (সা.) ঐ ব্যক্তিকে বললেন, ‘ঐ খেজুর নিয়ে যাও এবং স্বীয় গোনাহর কাফফারা হিসেবে সদকা দাও।’ সে বলল, এটা কি এমন লোককে দেব যে আমার চেয়ে অধিক গরিব? আমি কসম করে বলছি, আমার মতো গরিব এ এলাকায় আর কেউ নেই।’ তিনি এ কথা শুনে স্বভাবগত মৃদু হাসির চেয়ে একটু অধিক হেসে বললেন, ‘ঠিক আছে, তুমি তোমার পরিবারবর্গকেই খেতে দাও। (আয়েশা রা. থেকে বোখারী, ২য় খ–, ৮ম সংস্করণ; আ. হক,পৃ: ১৭৫)।
এ থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই? এক কথায় দ্বীনের সরলতার শিক্ষা পাই। আল্লাহ মানুষকে কষ্ট দিতে চান না, পরিশুদ্ধ করতে চান। সওম না রাখার জন্য তিনি কাউকে জাহান্নামে দিবেন বা শাস্তি দিবেন এমন কথা কোর’আনে কোথাও নেই। তবে মো’মেন সওম (সংযম সাধনা) না রাখলে তার আত্মিক অবনতি হবে, তার কাক্সিক্ষত চারিত্রিক গুণাবলী অর্জিত হবে না, সে স্বার্থপর হবে। সমাজের মানুষগুলো সমমর্মিতা, ত্যাগ, ইন্দ্রিয়সংযম ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত হবে না। ফলে সমাজ শান্তিদায়ক না হয়ে অশান্তিতে পূর্ণ থাকবে। কাজেই মো’মেনের কল্যাণের জন্যই সওমের নির্দেশ। কিন্তু বাড়াবাড়ির কারণে এই কল্যাণকর আমলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
হাদিসটি থেকে আরেকটি শিক্ষা হচ্ছে সওম না রাখতে পারার কাফফারা বা ফিদিয়া এমনভাবে ধার্য করা যাতে সমাজ উপকৃত হয়, দারিদ্র্য দূর হয়। যেমন- দাসমুক্ত করা, দরিদ্রকে খাওয়ানো, সদকা দেওয়া ইত্যাদি। রমজান মাসে সদকা বা ফেতরা প্রদান করাও গুরুত্বপূর্ণ আমল যা মানুষের উপকারে আসে। এভাবে বিচার করলে দেখা যাবে ইসলামের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনয়ন।
জানলাম বোন সুরাইয়া নাজনীন।
পরিচ্ছন্ন থাকাও ভালো গুণ। শুভেচ্ছা প্রিয় দিদি ভাই।
রোজার ক্ষেত্রেও অনেক কাজ এমন রয়েছে, যেগুলো করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এ ধরনের কাজ করা ঠিক নয়।