চান্দ

চান্দ

: বাপু, রাইতের বয়স বাড়িলে পাহাড়ের মাথায় চান্দ নামিয়া আসিতো। বুদ্দার বাপ গলায় মাহুয়া ঢালিয়া কাহিতো, “বুদ্দার মা, আমি চান্দের সুবাস পাই, আমি জোৎসনার ঘিরান পাই…”

: তারপর?

: বাপু, তিন দিন ভুখা। তার লগে কাজিয়া কারিলাম। সে গলায় মাহুয়া ঢালিয়া কাহিলো, “আজ রাইতে চান্দ নামিয়া আসিলে তাহাকে শিকার কারিবো। পেট ভরিয়া খাইবো।”

: তারপর?

: বাপু, চৈত মাসের রাইত। পেটে খিদা। আসমানে বিশাল চান্দ। তিন বছরের বুদ্দা খিদায় কান্দিতে কান্দিতে নিন্দ গেছে। সে বুদ্দাকে চুম্মা খায়া বাহির হ ইলো। সে শিকার করিয়া আনিলে আমরা পেট ভরিয়া চান্দ খাইবো।

: তারপর?

: বাপু, মানুষটা সে রাইতে পাহাড় চূড়ায় এক চান্দ শিকার কারিয়া সুখের ঘর বান্ধিয়াছে। সে ঘরে দুইটা বাচ্চা হইয়াছে।

: তারপর?

: বাপু, আর কি কাহিবো! পুন্নিমার জোৎসনায় পাহাড় ভাসিলে বুদ্দা অস্থির হোয়া উঠে আর কহে, “মা’গো জোৎসনায় আমি মাহুয়ার সুবাস পাই.. শরীরে খুন ঝিলিক দেয়!! আমি চান্দ শিকারীর লগে শিকার শিকার খেলিতে পাহাড় চূড়ায় যামু…”

: তারপর?

: বাপু, আমি সাতারো বছরের বুদ্দাকে চিনিতে পারিনা। আমার ডর লাগে। চান্দের আলোয় বুদ্দার হাতে চিকচিক করে জানোয়ার শিকারের শান দেয়া হাসুয়া…

.
________________________________
গল্পগ্রন্থ: লংকা কিন্তু জ্বলছে না/আবু সাঈদ আহমেদ।

12 thoughts on “চান্দ

  1. জানোয়ার শিকারের শান দেয়া হাসুয়া। গা শিউরে ওঠার মতো ভূমিকম্প টের পেলাম।

    1. ও কিছু না মুরুব্বী আজাদ ভাই। ঠিক হয়ে যাবে। :)

  2. অদ্ভুত সাধারন হরবোলা আবু সাঈদ ভাই। 

    1. ধন্যবাদ সৌমিত্র ভাই। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।