সর্বহারার প্রার্থনা

যে মেয়েটা একবার বিক্রি হয়ে যায়, সে যেন হঠাৎ জ্বলন্ত কয়লায় ডুবে যায়। চাপিয়ে দেয়া ধর্মকর্মও নরক মনে হয়, আর এটা তো জোর করে মহাপাপে ডুবিয়ে রাখা, সারাক্ষণ। এখানকার মাসী, দালাল, খদ্দের সবাই নির্দয়, লোভী। সবাই চেষ্টা করে যত ঠকানো যায়, যত কম দিয়ে যত বেশি লুটে নেয়া যায়।

নিজের উপরে এতো নির্মমতা, কঠোরতা কার সহ্য হয় মন থেকে? শুধু আদর মমতার লোভই না, বাবা-মা ভাই-বোনের জন্যও মায়া লাগে। সে বাড়ি ফিরে যেতে চায়। তবে স্বাভাবিক বাড়ি ফিরে যাওয়া, সমাজের মেনে নেয়াটা একেবারে অসম্ভব। ফিরতে পারলে দেখতো, এখনো কিছুটা মান বাঁচানোর জন্য বাবা কিভাবে গরুর ডান্ডা বা চাবুক দিয়ে পিটিয়ে চৌকাঠ থেকে নামিয়ে দেয়।

সে তো ইচ্ছা করে বিক্রি হয় নি, যে বিক্রি করে দিয়েছে সে তার মালিকও নয়। কিন্তু তারপরেও এই সমাজ আর তাকে মেনে নিবেনা। তাই সে প্রার্থনা করে, “সবার মেয়েই একবার করে বিক্রি হয়ে যাক, তখন সমাজ ঠিকই গ্রহণ করবে।”

যে ছেলে সমাজবিরোধী কাজে চিহ্নিত হয়েছে বা মাদকের ছোবলে সমাজে নিজের সন্মান খুইয়েছে। সেও জানে এই মানুষ বা সমাজ একবার খারাপ পেলেই মুখ ঘুরিয়ে নিবে। নিজের খুব কাছের আত্মীয় মামা-চাচা, ঘনিষ্ঠ বন্ধু, এমনকি বন্ধুর ছোটভাইও। যে আগে শ্রদ্ধা ও ভয়ে নিচু হয়ে থাকতো, সেও এড়িয়ে চলে যাবে, দূরে সরিয়ে দিবে।

একটা দরিদ্র ছাত্রকেও রাস্তায় দেখা হলে বন্ধুর মা বলে, “বাসায় এসো কিন্তু।” একটা কেরানী বা পিওনকেও মানুষ বিশ্বাস করে, খবর নেয়াটাও একটা ভালো কাজ মনে করে।

কিন্তু সমাজ বর্জিত সর্বহারাদের দেখেও, “দেখিনি ভাই” ভান করে। কেউকেউ সোজা বলে দেয়, “বেরিয়ে যাও”। এতো অসম্মান, প্রতিকূলতা নিয়ে এই সমাজে চলা খুব কঠিন। তখন সেও চায় সবার ছেলেই একবার করে অপরাধে জড়াক, মাদকের নেশায় বন্ধুর বাসা থেকে ক্যালকুলেটর চুরি করে পালাক। তাহলে সমাজে সে আবার “সাধারণ” হিসাবে প্রমোশন পাবে।

এরা তখন এরা প্রচার করে, “সবাই এইসব পারেনা, সাহস থাকা লাগে। পুরুষ হওয়া লাগে, ভদ্র ছেলেরা তো হাফলেডিস। এতো পড়া লেখা করে কি হবে বোকার দল? চাকরী করে একমাসে যে টাকা উপার্জন করে, বুদ্ধি আর সাহস থাকলে, একদিনেই সেটা করা যায়। একঢোক মদ খেলেই এদের হুঁস থাকবেনা, আমার তো এক বোতলও কিছু হয় না। ফিটনেস, পুরুষালী বিষয়, বুঝতে হবে।”

সর্বহারা ছেলেমেয়েদের সংখ্যা আজ কম না। এরা সংঘটিত হয়ে, সর্বনাশে ঝাঁপ দেবার আহবান করছে সব গলি থেকেই। “সবার সর্বনাশ হোক” চাইছে সাংকেতিক ভাষায়।

18 thoughts on “সর্বহারার প্রার্থনা

  1. লিখাটি পড়লাম ঠিকই তবে মিনিং বা সামগ্রিক বার্তাটি এখনও আমার কাছে সহজে সহজ হলো না। মূল বক্তব্যটি ফোকাসড মনে হয়নি। অনুগ্রহ করে দেখুন তো এখানে কোন গতি প্রবাহিত করা যায় কিনা মি. আহমেদ। 

    দাসত্ব বুঝলাম, বিকিকিনি বুঝলাম মাদক বুঝলাম। তবু কোথাও যেন কিন্তু রইলো।

    1. আমিতো সবার সর্বনাশ চাইনি, এমনটা চায় তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। শিরোনামই বদলে দিলাম। এখন চলে ভাইয়া?

      এটা কাউকে ইংগিত করে লিখা না। সব হারানোরা মানুষরা চায় সবাই তাদের কাতারে চলে আসুক। তাদের সহযোগীতা করা এবং সাবধানতা দরকার সে বলতে চাইছি 

    2. মন্তব্যে আপনার বক্তব্য পরিস্কার মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ। :)

  2. ঠিক আছে। সবার সর্বনাশ হোক। অভিশাপ ছাড়া আর কোন মন্তব্য নাই ভাইজান। 

    1. আমিতো সবার সর্বনাশ চাইনি, এমনটা চায় তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। শিরোনামই বদলে দিলাম। এখন চলে সাঈদ ভাই? 

  3. নীরিক্ষাধর্মী লিখা মনে হলো আসিফ আহমেদ ভাই। চলুক। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আমিতো সবার সর্বনাশ চাইনি, এমনটা চায় তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। শিরোনামই বদলে দিলাম। এখন চলে সুমন ভাই? 

  4. সবার সর্বনাশ হোক এমনটা বলতে চাই না দাদা। অনিয়ম বা সংস্কৃতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসুক ্এমন প্রত্যাশা করি। অমানুষ মানুষ হোক। দূর হোক সমাজের অসঙ্গতি।

    1. আমিতো সবার সর্বনাশ চাইনি, এমনটা চায় তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। শিরোনামই বদলে দিলাম। এখন চলে দিদি?

  5. আমিতো সবার সর্বনাশ চাইনি, এমনটা চায় তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। শিরোনামই বদলে দিলাম। ঠিক আছে তো? 

    এটা কাউকে ইংগিত করে লিখা না। সব হারানোরা মানুষরা চায় সবাই তাদের কাতারে চলে আসুক। তাদের সহযোগীতা করা এবং সাবধানতা দরকার সে বলতে চাইছি 

    1. ঠিক আছে আসিফ ভাই। ইতিবৃত্ত পড়লাম। মন্দ লিখেন নাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।