জোরে, বেশ জোরে বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির শব্দ শুনছি। বৃষ্টি মানুষ কে অন্যমনস্ক উদাস করে দেয়। আমিও অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছি। মন কখনো অতীত, কখনো বর্তমান, কখনো ভবিষ্যৎ এ চলে যাচ্ছে। বৃষ্টির শব্দ মস্তিষ্কে মাদকতা সৃষ্টি করছে। মাথায় আসছে হাজারো লেখার প্লট। আমি বৃষ্টি দেখবো বলে সম্মোহিতের মত বারান্দায় চলে আসলাম।
শিশির কণার মত খুব ছোট বিন্দু বিন্দু পানির কণা, ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে আমার শরীরে পড়ছে। আত্মাকে স্পর্শ করে, পবিত্র করে দিচ্ছে। আমি প্রকৃতির সাথে আরো একাত্ম হতে মনোযোগ দিচ্ছি।
প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে বজ্রপাত আঘাত করছে পৃথিবীটাকে। মনে হচ্ছে, কোন ক্ষুব্ধ মনের প্রচণ্ড ক্রোধ এভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। অন্ধকারে শিকড়ের মত শাখাপ্রশাখা নিয়ে আবির্ভূত হচ্ছে সাদা আলোর রেখা। মুহূর্তেই দিগন্তরেখা পর্যন্ত সাদা আলোয় প্লাবিত করে করে আবার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। এতো অল্পসময়ের জন্য আলোকিত হয়ে উঠছে, গাছের পাতা সবুজ বুঝতে পারার আগেই অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে। যেন অন্ধকারে ভেসে উঠছে অনেক বেশি ব্রাইটনেস দিয়ে এডিট করা একটা সাদাকালো ছবি।
আমার পা ভিজে গেছে ছিটকে আসা পানিতে, ঠান্ডা বাতাসে শরীরে কাঁপুনি অনুভব করছি। তারপরেও সম্মোহিতের মত বড় বড় চোখ করে বৃষ্টি দেখছি।
বৃষ্টির শব্দটা কেমন যেন, মনেই হয়না এটা পানি পড়ার শব্দ। যেন অনেক মানুষ চাপা, গম্ভীর স্বরে কথা বলছে। কিছুটা দূর থেকে হাটের শব্দ যেমন শোনায়, অনেকটা তেমন। নিরব প্রকৃতি জেগে ওঠার শব্দ এটা। বৃষ্টির মধ্যে কিছু রহস্যময়, অতিপ্রাকৃত ব্যাপার আছে। বৃষ্টি বা মেঘের গর্জনের শব্দে ঘুমের কোন ব্যাঘাত ঘটেনা, বরং মানুষ আরো গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়। রহস্যময় বৃষ্টি এবার শুষ্ক, মৃত জমি কে করবে সুফলা। মৃত নদী কে আবার জীবন ফিরিয়ে দিবে বা ধূসর গাছে ঘনসবুজ পাতা, ফুলে ছেয়ে দিবে। রুক্ষ লু হাওয়া কে, শরীর জুড়ানো সরেস, শীতল করে দিবে। এই জন্যই হয় তো সব ধর্ম এবং প্রাচীন লোককথায় বৃষ্টি কে কল্যাণের প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই জন্যই বৃষ্টির শব্দে, মেরুদণ্ডে একটা আনন্দের ঢেউ খেলে যায়।
# কাল্পনিক
কখনও কোন বৃষ্টি সন্ধ্যা অথবা বৃষ্টি প্রত্যুষে মন এমন হয় মি. আসিফ আহমেদ। মন ভালো থাকা বা হবার জন্য নির্দিষ্ট কারণের প্রয়োজনের বাইরেও আমাদের নস্টালজিক করে তোলে। মানুষের মন বিচিত্র।
ধন্যবাদ আপনার ভাবনা শেয়ার করার জন্য। শুভ সন্ধ্যা।
বৃষ্টি আমাকে জানালার কাছে নিয়ে যায়, ফ্যান অফ করায় যেন শব্দটা পরিষ্কার শোনা যায়।
অনেক ধন্যবাদ আজাদ ভাইয়া
হৃদয় স্নাত করে দিলেন। মনে চাইছে আপনার সাথে জলে নেমে পড়ি।
দারুণ একটা মন্তব্য, টনিক বরাবর।
সৌমিত্র দার জয় হোক





প্রবাসে আছি বলে বহুকাল আমার দেশের বৃষ্টির শব্দ আমি পাই না। বৃষ্টি কথা শুনলেই বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করে।
আমিও ভীষণ পছন্দ করি গাঢ় কাল মেঘ, মুষলধারায় বৃষ্টি, বজ্রপাত।
অনেক ধন্যবাদ সাজিয়া আপা
বৃষ্টিতে শরীর জুড়ানো সরেস আর শীতল হতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। শুভেচ্ছা ভাই।
আমরা সবাই বাঙালী, বুঝতে হবে।
বৃষ্টিকে আমি সহজ বিলাস বলি না; বলি মন ফুরফুরে করে দেবার ঈশ্বরের দান।
বৃষ্টি রহস্যময়, অলৌকিক, সম্মোহনী, বৃষ্টি আশীর্বাদ, বৃষ্টি মানে পুনঃর্জীবন।
অনেক ধন্যবাদ সাহিত্যপ্রচারক রিয়া দেবী



কে কহিলো আপনি ভালো লিখিতে জানেন না ভাইজান। দূর্বার লিখা উপহার দিয়েছেন আজ। মঙ্গলময় থাকুন।
আপনার মন্তব্য আমাকে আবেগাপ্লুত করে দিলো।
আসলে আমি কবিতা এবং জটিল ভাষায় লেখা বুঝি না। বোকা তো
আমি বৃষ্টি দেখি, বৃষ্টির শব্দ শুনি, ফোটা গুলোন গোনার চেষ্টা করি। ভেজা হয়না।
বৃষ্টিতে ভিজলে সর্দী লাগে এটা ভুল ধারণা। ভিজবেন কফ সিরাপ খেয়ে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে আরো।
দেশে যখন বৃষ্টি পড়ে আনন্দ হয়।এখন বুঝতে পারি এই আনন্দ ভালোলাগা ছিলো কারণ বৃষ্টি একই সাথে সুশীতল করে প্রকৃতি। ফলে একটা আরামকদায়ক অবস্থা বিরাজ করে প্রকৃতিতে।অস্ট্রেলিয়াতে শীতিকালেই বৃষ্টিটা হয়। একে তো ঠান্ডা তার উপর প্যাচপ্যাচে বৃষ্টি – এতো যে অসহ্য এই বৃষ্টি এটা অস্ট্রেলিয়ায় না আসলে বুঝতে পারতাম না
অনেক ধন্যবাদ আপা,
বাঙালীদের অস্ট্রেলিয়ার বৃষ্টি সহ্য হবার কথাও না। অস্ট্রেলিয়ানরা দেখবেন ঠিকই কবিতা লিখে ফেলছে তাদের বৃষ্টি দেখে।