মামুনের অণুগল্প : একদিন স্রোতের অনুকূলে

একজন পুরুষ গল্পকার এবং একজন নারী কবি, নিজেদের বৈবাহিক জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অনুভব করেন, নিজ নিজ বিবাহিত জীবনে তারা অতৃপ্ত! শারিরীক সম্পর্কের দিক থেকেই এই অতৃপ্তি।
অথচ তাদের যার যার জুটি তাদের জন্য সব কিছুই করে চলেছেন।

এরপরও তারা মনোদৈহিক অতৃপ্তি মেটানোর বিকল্প পথ খুঁজেন। কিন্তু পথের শেষে দাঁড়ানো এই দু’জন সামাজিক ও পারিবারিক লোকলজ্জা এবং আনুষঙ্গিক আরো নানা বাঁধার কারণে কাছে আসতে পারেন না।

এক বিষণ্ণ বিকেলে, কবি ভার্চুয়ালি কাছে আসতে চান গল্পকারের। গল্পকার নিজের ভূবনে মগ্ন। তীব্র শারিরীক চাহিদা ছাপিয়ে তার ভিতরে তখন অক্ষরের উল্লাসে মেতে ওঠার সাগরসম আকর্ষণ! তিনি কবিকে উপেক্ষা করে অপেক্ষা করতে বলে নিজে সেকথা বিস্মৃত হন।

গল্পকারের উপেক্ষায় জীবন নদীর অপর পাড়ে বসে থাকা কবি’র ভিতরে যন্ত্রণার উদ্রেক করে। তিনি গল্পকারের কাছে আসার জন্য মনে মনে সেতু তৈরী করে চলেন.. ভালোলাগার নুড়ি পাথর একটা একটা করে কুড়িয়ে জমা করেন।

গল্পকার নিজের পাড়ে বসে ভাবনাবিলাস থেকে হঠাৎ জেগে ওঠেন। চোখ মেলেন। দেখেন, ওপাড়ে অপেক্ষমান বিবশ নারী।

নদীতে তীব্র স্রোত.. তাতে গল্প-কবিতা সব হারিয়ে যায়। ভালোলাগা আর ভালোবাসায় পুড়ে পুড়ে সকল অতৃপ্তি, লোকলজ্জা আর বাঁধা ভেসে যায়। সামনে এসে দাঁড়ায় ‘প্রেম’!

তখনও নদীতে তীব্র স্রোত..
স্রোতের অনুকূলে আদিম আকর্ষণে ভেসে চলেন এক জোড়া মানব-মানবী।।

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

9 thoughts on “মামুনের অণুগল্প : একদিন স্রোতের অনুকূলে

  1. সাধারণত আপনি যেমনটা লিখে এসেছেন, এই লিখাটি পূর্ণ স্বতন্ত্র। অসাধারণ চিত্রায়ণ। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  2. গল্পকার পুরুষ ও একজন নারী কবির আলাপন ও তাদের চাহিদা সম্পর্কে জানলাম। ভীষণ চিন্তার বিষয়। 

  3. খুব সরল ভাবে আপনার বক্তব্যটি উঠে এসেছে মামুন ভাই। এ জীবন অনেকের জীবন। 

  4. একজন পুরুষ গল্পকার এবং একজন নারী কবি, নিজেদের বৈবাহিক জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অনুভব করেন, নিজ নিজ বিবাহিত জীবনে তারা অতৃপ্ত! অথচ তাদের যার যার জুটি তাদের জন্য সব কিছুই করে চলেছেন।

    এমন অনেকের জীবন আমি দেখেছি ভাই।

  5. এই বৈপিরিত্বে কত সংসারকে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে দেখেছি। 

  6. একদিন স্রোতের অনুকূলে নয় মহ. আল মামুন ভাই। প্রতিদিন স্রোতের প্রতিকূলে।

  7. খুবই ভালো হয়েছে লিখাটি প্রিয় গল্প দা। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।