শিরোনাম হীন লেখা

বাঙালি সুস্থ চিন্তা ভুলে যাচ্ছে। সব সময় খোঁজে আছে খারাপ কিছুর। এরা পদ্মাসেতুতে মাথা লাগে এইটাতে বিশ্বাস করেছে। ছেলেধরা সন্দেহ করে মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে মেরেছে। আহত করেছে অনেককে। কিন্তু প্রকৃত ছেলেধরার সাথে একটি ঘটনারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে এই যে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল, এতগুলো মানুষ আহত হলেন তাদের কি হবে?

সবসময় মানুষের রক্ত টগবগ করছে। এরা গরম গরম কিছু চাচ্ছে অনবরত। স্বাভাবিকতা, সুস্থতা তারা গ্রহণ করতে পারছে না। চরম কিছু চায় এরা। ধুমধাম না হলে এদের গা ম্যাজম্যাজ করে। গা ম্যাজম্যাজ থেকেই অপরকে পিটিয়ে এরা চরমানন্দ খুঁজছে। এরা ভালো জিনিস মানতে পারছে না।

ইউএনও’র ফোন পানিতে পড়ে গেছে। এক ছাগল মার্কা সাংবাদিক সেটাকে রসিয়ে বসিয়ে ইউএনও’র স্ত্রীর সাধের মোবাইল ফোন বলে রিপোর্ট করলো। ক্ষমতা দেখিয়ে বউয়ের ঐ সাধের মোবাইলখানি ফায়ার সারভিসের লোক দিয়ে উঠানো হয়েছে বলেও খবর করা হলো। পাবলিক সেটাই খেয়ে নিল। ভাইরাল হলো। কিন্তু দেখা গেল ঘটনা খুব সাধারণ। ফোনটা মোটেও ঐ সরকারি কর্মকর্র্তার স্ত্রীর ফোন নয়।

ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নির্বাচক সুজন বিদেশে গিয়ে ক্যাসিনো খেলেছেন কি খেলেননি, ছবি তুলে প্রচার করে দেওয়া হলো। আসলে মানুষ তক্কে তক্কে আছে এমন খারাপ কিছু গ্রহণের জন্য। অর্থাৎ এগুলোই এখন স্বাভাবিক ঘটনা। কাউকে বিশ্বাস নেই।

ভিআইপি আসবেন বলে ফেরি বন্ধ করে রাখা হলো। ওদিকে অসুস্থ এক কিশোরের এ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকল। সে অবস্থায়ই প্রাণ গেল তার। খবর হলো। পাবলিক সেটা খেলো। এখন পর্যন্ত খবর হচ্ছে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অর্থাৎ সেদিন আদৌ কোনো ভিআইপি সেই ফেরি পার হয়নি।

দোষটা আসলে কাদের? দোষটা সার্বিক পচন ধরা সমাজের। অসুস্থ হিট সিকার কিছু সাংবাদিক পিলে চমকানো শিরোনাম খুঁজছেন, পিলে চমকানো ঘটনা তৈরি করছেন। ক্রমাগত দুর্নীতিতে ছেয়ে যাওয়া সমাজের মানুষ বেড়ে যাওয়ার কারণে যে কারো নামে যে কোনো কিছু বললেই মানুষ সেটাকে প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করে নিচ্ছে। বিশ্বাস করবেই না কেন? নিজের উপর বিশ্বাস না থাকলে অন্যের উপর কি বিশ্বাস রাখা যায়? আর পুরো সমাজটাতো এমনই হয়ে গেছে। মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেছে। ঠকলে কার বিশ্বাস ঠিক থাকে।

এই অবিশ্বাসে ভরা সমাজের এখন ধ্বংসের পালা। সামান্য ঘটনা থেকে বড় বড় কাণ্ড ঘটতে থাকবে এখন। অসুস্থ খানা খেয়ে হজম করা মানুষের উপর এসব বিষের ক্রিয়া তো কোনো না কোনোভাবে হবেই। ইমান-বিশ্বাস গেছে, মানবতা অনেক আগেই বিদেয় নিয়েছে। এখন মানুষ শুধুমাত্র একটা জীব হিসেবে টিকে আছে। ভয়ানক ক্ষমতাসম্পন্ন এত জীব- জানোয়ার সুস্থভাবে টিকতে পারে না। এরা কামড়াকামড়ি করবেই। এটাই স্বাভাবিক।

17 thoughts on “শিরোনাম হীন লেখা

  1. সবসময় মানুষের রক্ত টগবগ করছে। এরা গরম গরম কিছু চাচ্ছে অনবরত। চরম কিছু চায় এরা। ধুমধাম না হলে এদের গা ম্যাজম্যাজ করে। এরা ভালো জিনিস মানতে পারছে না। দোষটা সার্বিক পচন ধরা সমাজের। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  2. চা এর দোকানে বসে মিথ্যাকে সত্যের খোলসে গুজবের ফানুস উড়াই। বহুরুপিতায় আজ ক্লান্ত পৃথিবী।

  3. আপনি ঠিকই বলেছেন সালজার সাবু ভাই। দোষটা সার্বিক পচন ধরা সমাজের।

    1. ধন্যবাদ, কিন্তু আমাদের কে নিয়েই সমাজ     

  4. বাঙালি সুস্থ চিন্তা ভুলে গেছে। সব সময় খোঁজে আছে খারাপ কিছুর। পুরোপুরি সত্য কথা বলেছেন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  5. আমরা বোধকবি খুব বেশী ডিপ্রেশনে ভুগছি। :(

  6. ঘুরে দাঁড়ানোর সময়টা কিন্তু এখনই   

  7. ভিআইপির জন্য কিতাবের মৃত্যু হয়েছে আর আপনি বলছেন তখন কোনো ভিআইপি ছিলো না। অথচ এটার ওপর রিট পর্যন্ত হয়েছে 

    ভিআইপি যে ছিলো না তার কোনো তথ্যসুত্র আছে?

  8. জানি না কি নিয়ে মরবো কিভাবে মরবো ! তবে আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন ইমান নিয়ে মরতে পারি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।