অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দ্বিতীয় পর্ব )

অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দ্বিতীয় পর্ব )
সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।

অজয় নদী হল একটি বন্যাসঙ্কুল নদী যা গঙ্গার অন্যতম প্রধান শাখা ভাগীরথী হুগলির উপনদী। মুঙ্গের জেলায় একটি ৩০০ মিটার উচু পাহাড় থেকে উৎসারিত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহী অজয় ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চিত্তরঞ্জনের নিকট শিমজুড়িতে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে এবং বর্ধমান ও বীরভূম জেলার প্রাকৃতিক সীমানা হিসাবে পূর্বে প্রবাহিত হয়ে বর্ধমানের কাটোয়া সাবডিভিসনের কেতুগ্রাম থানা অঞ্চলে বর্ধমানে প্রবেশ করে কাটোয়া শহরের কাছে ভাগীরথীর সংগে মিলিত হয়েছে।অজয় মোট দৈর্ঘ্য ২৮৮ কিলোমিটার যার মধ্যে শেষ ১৫২ কিমি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।

অজয়ের প্রধান উপনদীগুলি হল ঝাড়খণ্ডের পাথরো ও জয়ন্তী এবং বর্ধমানের তুমুনি ও কুনুর। অজয়ের ধারা শুরু থেকে অনেকদুর অবধি ল্যাটেরাইট মাটির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বর্ধমানের আশুগ্রামে এসে শেষ পর্যন্ত পাললিক অববাহিকায় প্রবেশ করে। অজয়ের উপত্যকায় ঘন জঙ্গল ছিল। কিন্তু অধুনা খনিজ নিষ্কাষণ ও অন্যান্য মনুষ্যজনিত উপদ্রবে বেশিরভাগ জঙ্গল বিনষ্ট হয়ে গেছে।

অজয় নদীর জলধারা…….বয়ে চলে বারো মাস
অজয় নদীর কবিতা-২ (দ্বিতীয় পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয় নদীর জলের ধারা
বইছে নদী পাগল পারা
নদীর চরে বন শালিক আসে।

পূবের কোণে ফকির ডাঙা,
বনের টিয়া আসে মাছরাঙা,
ধরে ফড়িং হেথা সবুজ ঘাসে।

নদীর ধারে পিয়াল বনে,
নাচে গায় সাঁওতালগণে,
মাদল বাজায় বনে মহুল তলে।

আছে শ্মশান নদীর বাঁকে,
মৃতের দেহ জ্বলতে থাকে,
অশ্রু মুছে অজয় নদীর জলে।

স্মৃতি বিজড়িত নদীঘাট,
পূবে কাঁকনতলার মাঠ,
অজয় নদী বইছে আপন মনে।

দিনের শেষে রাত্রি আসে,
স্মৃতি সবই মানসে ভাসে,
পাখিরা গায় শাল পিয়াল বনে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

4 thoughts on “অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দ্বিতীয় পর্ব )

  1. অজয়ের ইতিহাস এবং অজয় নদীর কবিতার দ্বিতীয় পর্ব পড়লাম কবি। শুভেচ্ছা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন- প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

  2. দেখতে যেতে মন চাইছে, শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। আপনার সব লেখার মাঝেই বিশদবিবরণ লক্ষনীয়!  শুভেচ্ছা সহ শুভকামনাও থাকলো।         

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন- প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।