শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (তৃতীয় পর্ব)

শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (তৃতীয় পর্ব)

শরৎ মানে সতেজতা। আর এই সতেজতাকে ঘিরে থাকে নানা ফুল। শরতের ফুলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হল কাশফুল আর শিউলি। বালুর চরগুলো হালকা আর লোমশ কাশফুলে ভরে উঠে এসময়। এ যেন প্রকৃতির এক সাদা গালিচা। শরতের রাতে সুগন্ধ বিলায় ছোট্ট ফুল শিউলি। আর সকালে কমলা-সাদা শিউলি ফুলে ভরে যায় শিউলি তলা।

জ্যোৎস্নাকে যারা উপভোগ করতে চান তাদের জন্য সেরা ঋতু শরৎ। নিজের সৌন্দর্যের সবটুকু ঢেলে শরতের জোছনা রাঙিয়ে রাখে প্রকৃতি। অন্য সময়ে জোছনার তুলনায় তাই শরতের জোছনা আবেদনময়ী বেশি। জোছনারাতে নদী পাড়ে বসে হালকা বাতাস আর শিউলির ঘ্রাণকে সঙ্গী করে চাঁদের মায়াজালে বন্দি হতে চান অনেকেই।

শরতের অন্যান্য ফুলগুলোর মধ্যে রয়েছে- শেফালি, হিমঝুরি, গগনশিরীষ, ছাতিম, পাখিফুল, পান্থপাদপ, বকফুল, মিনজিরি, কলিয়েন্ড্রা। কেবল তাই নয়, শরতের রূপের অংশ হয় শাপলা, শালুক, পদ্ম, জুঁই, কেয়া, কামিনী, মালতি, মল্লিকা, মাধবী, ছাতিম ফুল, বড়ই ফুল, দোলনচাঁপা, বেলি, জারুল, নয়নতারা, ধুতরা, ঝিঙে, জয়ন্ত্রী, রাধাচূড়া, স্থল পদ্মসহ নানা রকমের ফুল।

অজয় নদীর তীর ঘেঁষে কাশফুলের অপরূপ সমারোহ, উত্তরের বাতাসে সাদা কাশফুলের ঢেউ খেলা স্রোত, খালবিলে জলজ ফুলের রূপ-লাবণ্য প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে প্রেয়সীর মতো। শিউলির সৌরভ, ঘাসের ডগায় শিশিরের আল্পনা মনে করিয়ে দেয় শরৎ এসেছে।

নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (তৃতীয় পর্ব)

কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

সাদামেঘ দলে দলে আকাশেতে উড়ে চলে
সোনারোদ ঝরে আঙিনায়,
শরতের আগমনে ফুল ফুটে ফুলবনে
গুঞ্জরিয়া অলি তথা ধায়।

তরুর শাখায় পাখি কিচিমিচি ডাকি ডাকি
সুমধুর সুরে গায় গান,
সবুজ মাঠের পরে সকালে শিশির ঝরে
মাঠে সবুজের অভিযান।

কচি কচি ধানগাছে মাঠ সব ভরে আছে
ছাগল আলের ধারে চরে,
সবুজ ডাঙার পরে, গরু ও মহিষ চরে
এক সাথে সারাদিন ধরে।

রাখাল বাজায় বাঁশি মাঠে চাষ করে চাষী
সাঁঝ হলে ফিরে আসে ঘরে,
গাঁয়ের মন্দির মাঝে সন্ধ্যায় কাঁসর বাজে
ঢাক বাজে চিত্ত উঠে ভরে।

আকাশেতে তারা ফুটে পূর্ণিমার চাঁদ উঠে
জোছনায় ভরে চারিদিক,
অজয় নদীর চরে চাঁদের আলোক ঝরে,
নদীজল করে ঝিকমিক।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

4 thoughts on “শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (তৃতীয় পর্ব)

  1. শরতের শুভেচ্ছা-সহ শুভকামনা থাকলো।      

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।