বাবা (৪)

“ভুগোলে কাঁচা হতে নেই
সবার আগে জানতে হয় নিজের অবস্থান”-
বাবা বলতেন, দেশ ভ্রমণ করাও অনেক সওয়াবের কাজ
জ্ঞানার্জনসহ নতুন জায়গা এবং পরিবেশ সম্পর্কেও জানা হয়।
“জীববিদ্যা জানার আগে নিজেকে জানো”
শুধুমাত্র বাবারাই বলতে পারেন এমন জ্ঞানের কথা
মানুষ খুব সহজে ভেঙ্গে পড়ার মতো যন্ত্র নয়
মানুষের অবস্থান সবার উপরে।
বাবা খুব দূরদর্শী মানুষ ছিলেন
চোখ বন্ধ করে বলে দিতেন অনেক কিছুই
জীবনকে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন
হতাশার কোন ছাপ গ্রাস করেনি কোনদিন
শত দৈন্যদশায় থাকার পরেও হাসি মুখে যখন বলতেন
‘আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি’
তখন এক অদ্ভুত আলো খেলা করতো বাবার চোখে – মুখে
যেন অগণিত সুখপাখি উড়ছে বাবার মাথার উপর
শুধু ধরার উপায়টুকু জানতে হয়
ভীষণ কৌশলী হয়ে বেঁচে থাকতে হয়
বাবা সুখে থাকার মন্ত্র জানতেন
জানতেন সুখ পাখি ধরার সমূহ কৌশল।

বাবা নেই! অনেকদিন হলো
মাথার ওপর থেকে সরে গিয়েছে ছাদ
আশ্রয় খুঁজি! এখানে – ওখানে – সেখানে
একটু ওম নিবো বাবার বুকের
সেই পরম নির্ভয়ের জায়গাটা আর নেই।

অনেক বছর হলো সুখ পাখিগুলোও উড়াল দিছে
আমার এখন ব্যস্ত সময় কাটে জীববিদ্যায়
ভূগোল সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞানও নেই
অনন্তকাল ধরে শুধু একটা ডাহুক ডেকে যায়
বেদনার ডাক!
বুকের ভেতর কোথায় যেন মোচড় মেরে ওঠে
ভারী হয়ে ওঠে ডান হাতের শাহাদত আঙুল
মনে হয় বাবা আমার আঙুল ধরে আছে
আমি পথ হাঁটছি! হাটঁছি!
নির্ভয়ে শত মাইলের পথ।

3 thoughts on “বাবা (৪)

  1. অসামান্য কবিতা উপহার। ধারাবাহিক লিখাটির অন্যান্য পর্বও পড়তে পেলে ভালো লাগতো। ধন্যবাদ কবি মোকসেদুল ইসলাম। ভালো থাকুন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  2. মোটকথা আপনার এই সিরিজটি হতে পারে করোনা কালের এই লিখিত দলিল। লিখে যান, সাথে আছি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।