বিশ্ব নারী দিবসের জ্বলন্ত কবিতা

news_257

বিশ্ব নারী দিবসের জ্বলন্ত কবিতা
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মধ্য দিয়ে নারীত্বের উৎসব পালিত হয়। জাতি, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে মহিলাদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতি জানানোর জন্য এই দিনটি পালিত হয়। এই দিনে প্রত্যেককে নারী অধিকার, লিঙ্গ সমতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হয়। পাশাপাশি মহিলাদের সমান অধিকারের লড়াই জোরদার করা এই দিনটি পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য।

আসুন, প্রচলিত সমাজব্যবস্থা ও রাষ্ট্র ঐক্যকে সুসংহত করতে নারীর অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে তুলতে হলে নারী সশক্তিকরণ আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হোক। নারী শুধু মা নয়, মেয়ে নয়, ভার্যা নয়, সহোদরা নয়, তিনি দেবী মহামায়ার অংশ। তাই মায়ের জাতিকে সম্মান না করতে পারলে দেশ কভু প্রগতির পথে এগোবে না। জয়গুরু!

বিশ্ব নারী দিবসের জ্বলন্ত কবিতা
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নারীর অপমান জাতির অপমান
বাঁচাও জাতির মান,
বিশ্ব নারী দিবসে আজিকে তাদের
দিতে হবে সম্মান।

নারীর সম্ভ্রম ভুলুণ্ঠিত আজি
ভুলতে কভু কি পারি?
বিশ্ব নারী দিবসে আজিকে,
জাগো সারা বিশ্বের নারী।

রজনী আঁধারে বসন কাড়ে,
ওরা কলির দুঃশাসন,
ওদের অত্যাচারে চলে নির্বিচারে
নারীহত্যা আর ধর্ষণ।

সতীনারী আজি লাঞ্ছিতা হয়ে
প্রাণ দেয় পলে পলে,
নারী ধর্ষণ দিকে দিকে আজ
দেশ গেছে রসাতলে।

মরিছে নারীরা অভিমান নিয়ে
জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ কায়া,
সেইদিন হতে নিখিল জগতে
নামিল শোকের ছায়া।

শোন কান পেতে রাত্রি নিশীথে
হাসে কারা খলখল,
হিসাব রাখি না অযুতা ধর্ষিতা
কেন জল মুছে অবিরল।

দিকেদিকে চলে নারী-ধর্ষণ আর
হত্যা রক্ত আর্তনাদ,
নারীরা ধর্ষিতা প্রতি পলেপলে,
কারা পাতে মৃত্যুফাঁদ?

সতীনারী হেথা জ্বলে পুড়ে মরে
পায় নাকো সুবিচার;
ধর্ষকে আজ ছেয়ে আছে দেশ,
দেশ জুড়ে হাহাকার।

মোছ আঁখিজল আগুন জ্বলুক,
দিকে দিকে জ্বালো আগুন,
এই বসুধায় নির্ষাতিতা নারী,
নারীহত্যা, রক্ত আর খুন।

নির্যাতিতা নারী জেগে ওঠো আজ
হাতে তুলে নাও মশাল,
দুচোখে জ্বলুক প্রতিশোধের আগুন
জেগে উঠুক মহাকাল।

অসুরে অসুরে ছেয়ে গেছে দেশ
অসুরে করিতে সংহার,
মহিষাসুরমর্দিনী রূপে আবির্ভূতা হয়ে
নাশো অসুর এ ধরার।

রণহুংকারে মেতে ওঠো নারী
আগুন জ্বলুক দুই চোখে,
বজ্রহুংকারে ফেটে পড়ো নারী
হয়ো না ক্ষুব্ধ কভু শোকে।

ত্রিশূল তুলে নাও মাগো আজি
বধিবারে ধরার মহিষাসুর,
বিশ্ববাসী দেখুক নারীশক্তি শংকা
সবাকার করো মা দূর।

জেগে ওঠো নারী ভীমা ভয়ংকরী
অসুর সংহারী মাগো তুমি,
করি শিরশ্ছিন্ন করো মা নিশ্চিহ্ন
অসুরমুক্ত করো বিশ্বভূমি।

রণ দুন্দুভি বাজিছে নিখিলে
জাগিছে বিশ্বের নারী,
দানবদলনী মহামায়া আজি
তুলে নাও তরবারি।

কবিতার পাতায় বিদ্রোহ আজি
ভুলতে কভু কি পারি?
অসুরে নাশিতে তাদের বধিতে
ত্রিশূল ধরো গো নারী।

নারীর অপমান জাতির অপমান
বাঁচাও জাতির মান,
বিশ্ব নারী দিবসে আজিকে তাদের
দিতে হবে সম্মান।

https://www.youtube.com/watch?v=LYord6PPQx4

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

1 thought on “বিশ্ব নারী দিবসের জ্বলন্ত কবিতা

  1. নারী শুধু মা নয়, মেয়ে নয়, ভার্যা নয়, সহোদরা নয়, তিনি দেবী মহামায়ার অংশ। তাই মায়ের জাতিকে সম্মান না করতে পারলে দেশ কভু প্রগতির পথে এগোবে না। জয়গুরু! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।