ফরমালিন মুক্ত মটরশুঁটির ভিন্ন স্বাদ

p20180311-192059

ফরমালিন মুক্ত টাটকা মটরশুঁটি। ছবিটি নিজের বাসায় তোলা।

স্রষ্টা মানুষ সৃষ্টির অনেক আগে থেকে নাকি গাছ সৃষ্টি করেছেন। তাই গাছ ছাড়া এই সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের বেঁচে থাকা মুশকিল। গাছ শুধু দুর্যোগ মোকাবেলাই করে না, গাছ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনও তৈরি করে। গাছ আমাদের ফল দেয়, ফুল দেয়, জ্বালানি দেয়, দুর্যোগ হতে রক্ষা করে। আবার বাসস্থান তৈরি করার উপযোগী কাঠও দেয়। গাছ থেকেই ফুল, ফুল থেকে ফল। সব গাছ থেকেই আমরা শতভাগ খাঁটি ফল ও খাদ্যশস্য পেয়ে থাকি।

কিন্তু কিছু অসাধু মানুষের কারণে গাছ থেকে পাওয়া খাদ্যশস্য শতভাগ খাঁটি থাকে না। শতভাগ খাঁটি খাদ্য শস্যগুলো বিষ মিশিয়ে করে ফেলে বিষাক্ত। বর্তমানে সবকিছুর মধ্যেই ফরমালিন নামের একপ্রকার বিষ মেশানো। কি ফল, আর কি তরিতরকারি, বাদ নেই কোনোটাই। এমনকি বাজারে গুড়া মাছের মধ্যেও ফরমালিন মেশানো থাকে। যেই ফরমালিনের সাহায্যে কচিকলাও পাকিয়ে ফেলে, সেই ফরমালিন সবকিছুতেই। বর্তমানে এমন কোনও খাদ্যশস্য নেই যে, ফরমালিন ছাড়া। বিক্রেতারা যতই বলুক না কেন, যে এটা ফরমালিন ছাড়া। তবু কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ ব্যাপারে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।

আমার মতে বাজারে তরিতরকারি, শাকসবজি, ফলফলারি আর খাদ্যশস্যের মধ্যে অনেককিছুই ফরমালিন মুক্ত আছে। তারমধ্যে একমাত্র ফরমালিন মুক্ত হলো ‘মটরশুঁটি’। এই মটরশুঁটি একশোতে একশো পার্সেন্ট খাঁটি এবং ফরমালিন মুক্ত। এই মটরশুঁটি বিভিন্নরকম তরকারিতে ব্যবহার করা হয়। কেউ মাছে, কেউ খিচুড়ীতে, কেউ পোলাউ-বিরিয়ানিতেও ব্যবহার করে। এই মটরশুঁটি যখন নতুন বাজারে আসে, তখন দামও থাকে খুব চড়া। তখন প্রতি কেজি মটরশুঁটি ১২০ টাকা থেকে শুরু করে ১৩০/৪০ টাকায়ও বিক্রি হয়। তবু মানুষে কিনে নেয়, খায়। তবে খুব কম মানুষেই জানে তরকারি ছাড়া মটরশুঁটি কীভাবে খাওয়া যায়।

আগে অনেক মানুষকে মটরশুঁটি ভেজে খেতে দেখেছি, সেদ্ধ করে খেতে দেখেছি। ছোটবেলা অনেকভাবে নিজেও খেয়েছি এই মটরশুঁটি। এখনো বাজারে গেলে অন্তত আধা কেজি মটরশুঁটি আগেই কিনতে হবে, তারপর অন্যকিছু।

আগেকার সময়ে মটরশুঁটি হাট-বাজারে বিক্রি হতো না। যা হতো তা শুধু গৃহস্থরা ক্ষেতেই পাকিয়ে ঘরে আনতো। কাঁচা বা কচি মটরশুঁটি ক্ষেত থেকে নিজেদের জন্য কিছু তুলে আনতো। এখন সেই মটরশুঁটি স্বাদের তরকারির মধ্যে যেন প্রথম স্থান অর্জন করে নিয়েছে। কেউ সংসারের বাজার সদাই করলে, আগে কিনে থাকে মটরশুঁটি। এই মটরশুঁটির ভিন্ন স্বাদ ভিন্নভাবে কেউ গ্রহণ করেছে কিনা তা আমার জানা নেই। এই মটরশুঁটি সেদ্ধ করে খাওয়া মানে দুনিয়ার সবচাইতে সুস্বাদু খাবার খাওয়া। কীভাবে খাবেন তা জানিয়ে দিচ্ছি।

p20180311-192115

সেদ্ধ করা মটরশুঁটি। একটা একটা করে ধরুন, আর হালকা চাপ দিন। দেখবেন মটরগুলো বেরিয়ে আসছে। এরপর আরামে বসে বসে খেতে থাকুন।

প্রথমে আধা কেজি মটরশুঁটি ভালো করে বেছে নিন। সময় সময় এই মটরশুঁটিতে অনেকপ্রকার পোকামাকড় থাকে। সেগুলো ভালো করে দেখে নিন। এবার মটরশুঁটিগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করুন। পরিমাণ মতো পানি দিন, যাতে ভালো করে সেদ্ধ হতে পারে। চুলায় বাসানোর আগে পরিমাণ মতো লবণ দিন, স্বাদ বাড়বে। চুলায় বসানোর পর আধাঘণ্টা অপেক্ষা করুন। দেখবেন ভাত রান্না করার সময় যেভাবে টগবগ করে উতলায়, ঠিক সেভাবেই উতলাচ্ছে। আধাঘণ্টা পর চুলা থেকে পাত্র সহকারে নামিয়ে ফেলুন। এবার গরম পানি থেকে মটরশুঁটিগুলো ছেঁকে নিন। ঠাণ্ডা হতে সময় লাগতে পারে, তাই একটু অপেক্ষা করতে হবে। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তৈরি হয়ে গেল বিকালবেলার একটা সুন্দর টিফিন। এবার ছিলুন আর খেতে থাকুন আরামে। কেউ খেতে চাইলে তাকেও দিন। ভালো লাগলে আরও মানুষকে শেখান। প্রচার করুন ফরমালিন মুক্ত সেদ্ধ মটরশুঁটির ভিন্ন স্বাদ।

নিতাই বাবু সম্পর্কে

নিতাই বাবু ২০১৫ সালে তিনি শখের বশে একটা ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করে লেখালেখি শুরু করেন।তিনি লিখতেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কথা। লিখতেন নগরবাসীর কথা। একসময় ২০১৭ সালে সেই ব্লগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্লগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জনাব সাঈদ খোকন সাহেবের হাত থেকে ২০১৬ সালের সেরা লেখক সম্মাননা গ্রহণ করেন। সাথে নগর কথক উপাধিও পেয়ে যান। এরপর সেই ব্লগে লেখালেখির পাশাপাশি ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তিনি শব্দনীড় ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করেন। শব্দনীড় ব্লগে উনার প্রথম লেখা "আমি রাত জাগা পাখি" শিরোনামে একটা কবিতা। তিনি চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে লেখালেখি পছন্দ করেন এবং নিয়মিত শব্দনীড় ব্লগে লিখে যাচ্ছেন।

2 thoughts on “ফরমালিন মুক্ত মটরশুঁটির ভিন্ন স্বাদ

  1. মটরশুঁটি সেদ্ধ করে খাওয়া মানে দুনিয়ার সবচাইতে সুস্বাদু খাবার খাওয়া। সঠিক। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  2. চমৎকার মটরশুঁটির  পোষ্ট কবি নিতাই দা

    খুব স্বাদের খাবার—–

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।