(কাল্পনিক; বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই)
জুলেখার পুত্র লায়েক হয়ে গেছে; সে এখন নিজের মতামত দিতে চায়; মাকে প্রভাবিত করতে চায়। জুলেখা নিরুপায়; পুত্রের অযাচিত উপদ্রব মেনে নেয়া ছাড়া কিছু করার নেই। তার চারপাশে অবিশ্বাসী মুখ, কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। যাকেই বিশ্বাস করেছে, সময়-সুযোগের সেই তাকে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। জুলেখা ঠেকে শিখেছে কিন্তু পুত্রের ব্যাপারে সে অসহায়।
জুলেখার রাজ্যের নাম ‘খালকাটা’ তার স্বামী কুমিরের চাষ করবে বলে এমন রাজ্যের পত্তন করেছিল। এই কুমির জুলেখার জন্য কাল হয়েছে, তার চারপাশে শুধুই কুমির। হা করা মুখ গিলে খাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
জুলেখা কিছুদিন ধরে অসুস্থ। কুমির সম্প্রদায় প্রায়ই তার অসুস্থতাকে উৎসব হিসাবে পালন করে। জুলেখার অসুস্থতার সুযোগে তার পুত্র সর্বেসর্বা বনে গেছে। কিন্তু তাকে কেউ পছন্দ করেনা। সে কুমির শ্রেষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।
সে জানে কেউ তাকে পছন্দ করে না তবু মাকে ব্যবহার করে সে তার আখের গোছাতে ব্যস্ত। মায়ের অসুস্থতা তার জন্য এনে দিয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। মায়ের চিকিৎসার ব্যাপারে উদাসীন, সুস্থ মায়ের চেয়ে অসুস্থ মা তার কাছে লোভনীয়। মায়ের অসুস্থতা বাইরে বিক্রি করে সে তার কর্ম ভালোভাবেই সম্পন্ন করতে পারছে।
জুলেখার অসুস্থতা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। কাউকে পাচ্ছে না যে একটু পাশে বসে মাথায় বুলিয়ে দেবে মমতার হাত। যারাই আসছে স্বার্থ নিয়ে আসছে। তাদের মুখ হাঁ করা; সুযোগ পেলেই গিলে ফেলবে।
জুলেখা নীরবে অশ্রু ফেলে আর ভাবে, স্বামীর ‘খালকাটা’র প্রায়শ্চিত্ত তাকে করতে হচ্ছে। স্বামীর অসংখ্য কুমির উৎপাদনের খেসারত এখন তাকে দিতে হচ্ছে। স্বামী যদি বুঝতো কিংবা জুলেখা যদি স্বামীকে বুঝাতে পারত কুমিরের চাষ করতে নেই তারা বিশ্বাসী হয় না তাহলে নিজের পুত্র হয়তো কুমির হতো না। পুত্র কুলাঙ্গারে পরিণত হতো না। স্বামীর কর্ম তাকে ভোগ করতে হচ্ছে।
জুলেখা অশ্রু ফেলে আর ভাবে…
লিখাটি পড়লাম। শুভ কামনা প্রিয় কবি প্রিয় আবু মকসুদ ভাই।