ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী করার পরিকল্পনা ফাঁস

৫ আগস্টের পর বাংলাদেশিদের মাথায় ভর করেছে একটা নাম- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

images

ওয়াজের সুপারস্টার মিজানুর রহমান আজারি, মুফতি ইব্রাহিম, রফিকুল্লাহ আফসারী, আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন মনমানসিকতার ইসলাম প্রচারকসহ- রমজানে দেশের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ আজ একটা নাম উচ্চারণ করছে- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। আপনি যদি জনগণের কন্ঠস্বরকে উপলব্ধি করতে পারেন তবে বুঝতে পারবেন- ডক্টর ইউনুস ইজ অন প্রেইজড। প্রসংশার বানে ভাসছেন – ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

বাঙালি ভূতগ্রস্তের মত আচরণ করছে। আর ভুত তাড়নী ওঝা হয়ে আসছে আর এক উচ্চারিত ইসমে আজম- নির্বাচন নির্বাচন।

৭১ পূর্ববর্তী বাঙালি জাতিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এক সাধারণ লেবাসের মাওলানা ও গরীব মানুষের সমাজতান্ত্রিক কন্ঠস্বর মহান নেতা মাওলানা ভাসানী ও ৭৫ পরবর্তী আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিন্তানায়ক ও রূপকার মেজর জিয়াউর রহমান। এই দুই নেতাই ছিলেন সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যতদ্রষ্টা, চালচলনে সাধারণ। এই দুই নেতা বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে ভালোবাসার সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে! অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই। সুযোগ পেয়েই তিনি নিজেকে আস্তে আস্তে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।

জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। যেন তাকে ভূতে ভর করেছে- আবোলতাবোল বলে বসলেন- তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার ইচ্ছা লালন করেন । মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

ওদিকে ভূতছাড়ানো জপমালা- নির্বাচন, নির্বাচন। এদিকে সরসিজ নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে দেখা!!! নাহ্, ভাবা যাচ্ছে নাহ্।

কি ভাবে সম্ভব?
কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে দীর্ঘমেয়াদী পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন। আর দিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক খেলায় মাতিয়ে তুলবেন। কিন্তু নিজ দেশ ও জাতি তাকে চাইছে। এ চাওয়া আরও দৃঢ হচ্ছে।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি মাওলানা ও মেজর সাহেবের পর তিনি হতে পারেন অনন্য গ্রহণযোগ্য নেতা। তিনি যেমনি আন্তর্জাতিক ভাবে কোয়ালিফাইড ও স্বীকৃত, তেমনি গরীব গন মানুষের জন্য আছে তার অর্থনৈতিক ভাবনা। পুঁজিবাদ ও কমিউনিস্ট মতাদর্শের ব্যর্থতার পর তার মতবাদ আলোচিত, স্বীকৃত। যদি তার অর্থনৈতিক মতবাদ থেকে সুদকে বাদ দেয়া যায় তবে বিস্মিত হয়ে লক্ষ করা যায় যে, তার চিন্তাধারা ইসলামি আদর্শের বিপরীততো নয়ই বরং সমার্থক। ( এই ব্যাপারে আলোচনা চলতে পারে)। ফলে এই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তার মতবাদ জনগন কতৃক সমাদৃত হতে পারে।

আমরা কেবল বলতে পারি। কিন্তু তিনি যোগ্যতা রাখেন। তার চালচলন অনাড়ম্বর, বেশভূষা সাধারণ, মানুষকে প্রভাবিত করার অনন্য দক্ষতা আছে তার। তাকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভূতগ্রস্ত মানুষের ডাকে।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী কয়েক মাসের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। কেমন হবে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামো। এটা তার মানের হলে হয়ে উঠবে একটা রাজনৈতিক দলের ইশতেহার।

বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে।

এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে পাস করিয়ে নেয়া হতে পারে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

এর মধ্যে আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ফিরে আসবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় কোন অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় থাকলে আইনমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সংশোধিত করে নিতে হবে।

এই বর্তমান সরকারের মধ্যে হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে যাদের কাজ হবে নির্বাচন করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের পদ হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা।

।। ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে সুদৃঢ করতে হবে এবং নির্বচনের প্রস্তুতি নিবে।।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা সর্বস্তরের ব্যাপক সাড়া ও সফলতা পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির ইতিহাসে অনন্য কর্ণধার।

মন্তব্য করুন