দরজাটা এখনো খোলা আছে
ছিটকানি না দিয়ে জানালাটা একটু হেলিয়ে দিয়েছি মাত্র
অভিমান আর আত্মসম্মান বোধ থেকে
যেন তুমি বাইরে থেকে দেখে বুঝতে পারো
ওটা বন্ধ আছে !
মধ্য রাত্রিতে এখনো ঘুম ভেঙ্গে যায়
কিন্তু জানালার পাশে দাঁড়িয়ে তোমাতে আমাতে
আর জ্যোৎস্নান করা হয় না,
চাঁদের হাসিমাখা মুখটি দেখে তোমার মধুর কণ্ঠে
রবীন্দ্রনাথের সেই গান–
আমার ও পরান যাহা চায়
তুমি তাই তুমি তাইগো
আমারও পরান যাহা চায়
—শোনা হয় না !
রজনীগন্ধ্যা আর টকটকে লাল গোলাপ দিয়ে
ঘরের কোণে সাজিয়ে রাখা ছোট্ট ফুলদানিটা
এখনো অক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে,
দেয়ালে টাঙিয়ে রাখা স্মৃতির ফ্রেমে বন্দী
সেই ছবিটা–যেখানে আমার হাতের স্পর্শ
তোমার কাঁধ ছুঁয়েছিল–সেটা এখনো কথা বলে
এক আহত হৃদয়ের সাথে
–সকাল সন্ধ্যা কিংবা গহীন রাত্রিতে !
জানালার পাশে শিউলী ফুলের গাছটা
এখনো তার সৌরভ ছড়িয়ে দেয় এই
অন্ধকারময় ঘরের নিঃশব্দ বাতাসে।
মনে পড়ে খুব-খুব ভোরে উঠে তোমার শিউলী ফুল কুড়ানোর কথা
মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিউলী ফুলগুলো তোমার হাতের ডালিতে
কতো আলতো ভাবেই না ভরে রাখতে !
এখনো ভোর হয়
এখনো শিউলী ফুল ফোটে
মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে
একসময় তা মাটিতেই মিশে যায়
ধুলা বালি কিংবা পথযাত্রীর পায়ে পিষ্ট হয়ে !
শুধু শিউলী ফুলের গাছটা মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকে
আমার স্বপ্নের প্রতীকী হয়ে !!