সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে ড. ইউনুসের আন্তর্জাতিক সফলতা

গতকাল তারাবিতে হুজুর যখন ফিলিস্তিনের মানুষদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ধরলেন হাউ মাউ কেঁদে উঠল সকলে। অনেককেই বলতে শুনছি, আমরা শুধু দোয়া করি, কিছুই করতে পারি না। কথা ঠিক । আমাদের কিছুই করার নেই। ঐ সব পিতারা যখন তাদের সন্তানদের রক্তমাখা শিশুদের হাতে নিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করে তখন অন্তর ফেটে যায়। আমরা আর্তনাদ করে উঠি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি। আমাদের যুব সমাজের অনেকে প্রতিবাদ মিছিল করে। কিন্তু আমরা সকলেই জানি ফিলিস্তিনের মানুষদের জন্য কিছু মানবিক সাহায্য ও দোয়া করা ছাড়া আমরা বড়ই অসহায়।
FB_IMG_1742476482266

FB_IMG_1742476487578

আবার এদিকে আমরা দেখি ভারতে এই রমজানের মধ্যে মুসলমানদের উপর জুলুম হইতাছে। এখানে আমরা একটা টু শব্দও করি না। আমরা অসহায় ভাবে জুলুমগুলি অবলোকন করি। আমরা সকলেই জানি ভারতীয় মুসলমানদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আমরা বড়ই অসহায়।

সাম্প্রদায়িকতা এমনই এক বিষয় যে, আমাদের এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার জুলুম করা হয়, রাজনৈতিক নানা সুবিধা আদায় করার জন্য। এখানে হিন্দুরা সব সময় কেমন জানি ছোট হয়ে থাকে। একবার আমার এক ভাড়াটিয়া বলে বসল, আপনারা আমাদের দেখবেন, আপনি আমাদের মা বাপ। তার কথায় আমি লজ্জিত হয়ে যাই। ওরা আমার উপর ভরসা করছে, আমি কখনও আল্লাহ ছাড়া এভাবে কারোর উপর ভরসা করি না, তাই বড়ই লজ্জিত হইয়া গেছি। আমি হিন্দু ভাড়াটিয়াকে বলি, শুনেন আপনি আমার ভাড়াটিয়া, অন্য মুসলমানর ভাড়াটিয়া যেমন, তেমনি। শুনেন এখানে আপনার উপর কেউ কিছু বলতে আইলে আমি আপনার পাশে আছি। কিন্তু লড়াইটা আপনাকেই করতে হবে। এদেশটা কারোর বাপের না, এখানে আপনি যেমন নাগরিক আমিও তেমনি নাগরিক।

ভদ্রলোক বলল, আপনারা এখানে স্থানীয়, বাড়ি করে আছেন অনেক বছর। ভাই, আমরা তাই আপনার কথা বললাম। আমি তাকে বললাম, কেউ কিছু কইছে? বলল, না কেউ কিছু কয় নাই তবু ভয়ে থাকি।

আমার মত আপনাদের মাঝে কারো কারো এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে নিশ্চয়ই।

আমি রাজনৈতিক নেতাদের মুখে সংখ্যালঘুদের উপর যাতে নির্যাতন না হয় তেমন আহ্বান শুনেছি। ধন্য হয়েছি, গুনগান গাইছি। কিন্তু এবারই প্রথম শুনেছি এই কথাটা যে, সংখ্যালঘু বলে কিছু নাই, আমরা সবাই বাংলাদেশি। শুধু যে মুখের কথা তাও নয়। দেখেছি, হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিতে গেছেন কেউ কেউ, যাদেরকে মনে করা হয় মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়।

আমাদের এখানে হিন্দুদের কোন নিরাপত্তা ঝুকি দেখিনি। মহল্লাবাসী সকলে আগের মতই আছি। কিন্তু এখনও হিন্দুদের মাঝে কেমন জানি একটা হীনমন্যতা দেখি।

৫ আগস্টের পর রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শেখ হাসিনা পালাইছে। তার অনুসারীদের বেশিরভাগই পালাইছে। কিন্তু এখনও রয়ে গেছে তাকে নিঃশর্ত সমর্থন দেয়া অনেকে। এর মাঝে মুসলিম আছে, হিন্দুদের বেশিরভাগ তার সমর্থক। শেখ হাসিনার সমর্থক আছে ভারতের সরকারি ও বিরোধীদলসহ সেই দেশের মিডিয়া। ভারতীয় সাংবাদিকরা যেখানেই সুযোগ পাইতাছে, বলে বেড়াইতেছে যে, বাংলাদেশের ভিতর হিন্দুদের উপর ব্যাপক জুলুম হইতাছে। তারা আমেরিকার উচ্চ পর্যায়ে যেখানে সুযোগ পাইছে সেখানে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে কথা বলছেই।
Untitled-5-67d91bd67bb4c
এর মধ্যে এলেন আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের হাই প্রোফাইলের ক্ষমতাধর একজন ভারতীয় বংশদ্ভূত মহিলা। তিনি যখন বলছিলেন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির কথা। সত্যি ভয় পেয়ে গেছি। একদিকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের উপর নৃশংসভাবে জুলুম করে বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের মেরে ফেলছে, আমেরিকা এই অমানবিক জুলুমকে সমর্থন করছে। আবার প্রসিডেন্ট ট্রাম্প বলছে মুসলিমরা হেইটার, তাদের হেইট করে।

সার্বিক বিবেচনায় মনে হতে থাকে এই বুঝি আমেরিকার সহযোগিতায় ভারত বাংলাদেশে হামলা করছে। কিন্তু না। আমেরিকা বলছে ডা. ইউনুসের সরকার যেই ভুমিকা রাখছে তা আমেরিকা সমর্থন করে। আর একটি সফলতা দেখতে পাওয়া গেল ড. ইউনুস স্যারের।
FB_IMG_1742477081765

এই বাংলাদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশি। এটা আমাদের দেশ। এই নীতিতে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।

আহা! আরও কিছু বেশি সময় যদি ইউনুস স্যারকে দেয়া যেত!!!