পরিবেশ-পরিস্থিতি দ্বারা সময়ের মূল্যায়ন করা উচিত

24272

অযথা চিন্তা ভাবনা ও উদ্যত আচরণ মানুষকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয় তাই বলবো পরিবেশ-পরিস্থিতি দ্বারা সময়ের মূল্যায়ন করা উচিত। সুস্থ চিন্তা সুস্থ মস্তিষ্ক সুস্থ ভাবে চলতে মানুষকে সারাক্ষণ সহযোগিতা করে আমাদের জগৎ জীবনে সুস্থ্য ও সাবলীল চিন্তারাম মানুষের সংখ্যা নেহায়েতই নগণ্য। আমাদের জীবন যাপনের প্রত্যেকটি মুহূর্তের সময় জ্ঞান ও পরিবেশ পরিস্থিতির দ্বারা কিভাবে মূল্যায়ন করা উচিত! আমরা কি কখনো ধীর স্থির হতে পারি না?

সেই ক্ষেত্রে যদি নিজেদের রাগ, জেদ, ক্ষোভ কিংবা উত্তেজিত মনোভাবাপন্ন বিষয় গুলোকে চিহ্নিত করি, হঠকারিতা সিদ্ধান্তকে নিজেদের মস্তিস্ক জ্ঞানে সংযম করি, সংযত করি, প্রশমিত করি পরিশেষে তার পরবর্তী সিদ্ধান্তকে সঠিকভাবে পরিমাপ ও মূল্যায়ন করি তবে অনেক ভুল বুঝা বুঝির অবিবেচিত অভিযোগ বোধগুলো খুব সুন্দর ভাবে অবসান ঘটে। কিন্তু আমরা তা না করে যদি বারংবার নিজেদের ভেতরের রাগ-ক্ষোভ দ্বারা একটি সুন্দর পরিবেশকে বিশৃঙ্খলা রূপ দেই তবে তার ফলাফল অত্যন্ত কঠিন জটিল ও খারাপ পর্যায়ে ধাবিত হবে কোন সন্দেহ নেই।

তাই বলব আমরা আমাদের জীবনে যা কিছু করি না কেন তা অবশ্যই সময় ও সেই পরিস্থিতি দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে। যে মূল্যায়ণটি সঠিক ও নিরপেক্ষ অথবা তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে পরিগণিত হবে। যে কোন সমস্যার জটিল পরিস্থিতিকে হঠকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অবোধ সম্পন্ন চিন্তাধারায় ভঙ্গুর দশার দিকে নিয়ে যাওয়ার আগে ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থন করা অত্যন্ত জরুরি তা না করে কোনো ভাবেই জটিল পরিস্থিতি ঘোলাটে করা কোনোভাবেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

আমরা আপাদমস্তক ভাবে যে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করছি তা অবশ্যই বিবেক ও নিজের বিচক্ষণতার দ্বারা পরিমাপ করার পরেই তার পূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে কোন নির্দোষ মানুষকে সেই দোষে দোষী করে প্রদর্শিত করা নিতান্তই একজন মানবীয় গুণাবলীর মানুষ দ্বারা অপরাধ বলেই সাব্যস্ত হবে বলে মনে করি। যা একটি অপরাধ ঘটার পর আরেকটি অপরাধ ঘটার শামিল বলে মনে করি। তবে একটি কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে যে প্রত্যেকটি বুদ্ধিমান সম্পন্ন মানুষ ভুল করে, অপরাধ করে আমরা মানুষ বলেই আমাদের ভেতরে এই ধরনের অপরাধের সূচনা হয় বাস্তবায়ন হয় সূচিত হয়।

কিন্তু জেনে বুঝে যে মানুষ ভুল করবে সেটা কখনো ভুল হিসেবে গৃহীত হয় না। সেটি অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। ভুল আর অপরাধ এক নয় বলেই অপরাধের শাস্তি অবশ্যই গ্রহণ যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। আমাদের অস্তিত্বশীল জীবন জুড়ে তাই দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভুল/অপরাধ গ্রহণযোগ্য নয় (বড় ধরণের) মানুষের জীবনের যেকোনো সমস্যা সৃষ্টি করার অনেক পথ রয়েছে কিন্তু সমাধানের পথ বের করা বিচক্ষণতার দ্বারাই সম্ভব। তাই সমাধানে আসতে বিবেকের বিচক্ষণতা কে গ্রহণ করি না কেন তবেই না একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সমাধানের পথ সুগম হয়।

আমরা কি পারিনা নিজেদের জেদ রাগ-ক্ষোভ কে সংযম করতে, প্রশমিত করতে, অধৈর্য চিন্তাভাবনার রুপরেখা থেকে বেরিয়ে এসে ধৈর্যধারণ করতে, ধৈর্যের সাথে যেকোন জটিল ও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে?
তবে আমরা সবই পারি চাইলে সবকিছুই আমাদের দ্বারা সম্ভব। কিন্তু আমরা যা চিন্তা করিনা সেটাই যখন একজন মানুষ তার উদ্যত অবিবেচিত অবোধ সম্পন্ন নির্বুদ্ধি পরায়ণ মস্তিষ্ক দ্বারা অনুভব করে তবে সেটা নিতান্তই দুঃখজনক ও অপরাধমূলক কর্ম।

এই চিন্তা ভাবনা মানুষকে অনেক কঠিন ও জটিল পরিস্থিতিতে নিয়ে যায়। যা কোনো সুস্থ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ কোনভাবেই করতে পারে না কিংবা অন্য কেউ সেই মানুষ দ্বারা এমন জঘন্যতম কাজকে সমর্থন করবে না অথবা আশা করে না। তবে আমরা কি সমস্যা সমাধানের চেয়ে জটিলতর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে বা সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে না বসে সেটিকে ত্বরান্বিত করতে ভালোবাসি? আমার মনে হয় এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি যা সমাজ পরিবার ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গ্রথিত। আমাদের এই সমাজ ও পারিবারিক জীবনে এমন পরিবেশ তৈরি করার লোকের সংখ্যা যদি অত্যন্ত বেশি হয় তবে যেকোন সমস্যার শেষ পরিণতি ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে খারাপের দাঁড়ায় শেষ হতে পারে।

এখানে কোন কিছু ঘটার আগে ভালো হতে পারত কিন্তু সেই সমাপ্তিটা যদিও অনেক কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই উদঘাটন করা যেত তবে কারো মাঝে কোনভাবেই ভুল বোঝাবুঝির পরিবেশ সৃষ্টি কখনোই হতো না। তাই বলব ভেবে দেখুন উশৃংখল পরিবেশ তৈরির পূর্বে আমরা নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা কোনো অঘটন ছাড়াই সমাধানের পথ খুঁজে পেতে প্রত্যেকের জানমালের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে আমাদের জীবন ব্যবস্থায় সমস্যা আছে থাকবে যেখানে সমস্যা সেখানেই সমাধান এই সহজ ব্যাপারটা আমরা যদি না বুঝিয়ে তবে কোনো ভাবেই সেই মানুষটি বোধসম্পন্ন বলে বিবেচিত হয় না।

যে কোনো নতজানু পরিস্থিতি সমাজ ও পরিবারের বিশাল একটি ঝড় হিসেবে স্থাপিত হয় কিন্তু সেই ঝড়ে যদি আমরা সাঁতার ব্যাবহার না করি তাহলে সেই ঝড়ের সাথে নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
কোন উশৃংখল পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর যদি সেখানে জান ও মালের ক্ষতি হয় তবে সেখানে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টির অশনিসংকেত দেখা দেয় যে কোন ভাবেই কোন হৈহুল্লোড়ে শরীরকে ভাসিয়ে না দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টির ব্যবহার করুন এতে সমস্যার সমাধান সূচিত হয়।

1 thought on “পরিবেশ-পরিস্থিতি দ্বারা সময়ের মূল্যায়ন করা উচিত

  1. আমরা জীবনে যা কিছু করি না কেন তা অবশ্যই সময় ও পরিস্থিতি দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে। যে মূল্যায়ণটি সঠিক ও নিরপেক্ষ বা তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে পরিগণিত হবে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।