ট্যাগ আর্কাইভঃ নীতিশ রায়ের কবিতা সমগ্র

বিয়ে বাড়ি

হৈচৈ হৈচৈ বিয়ে বাড়ির হৈ চৈ,
চারিদিকে লোকজন হরদম হৈ হৈ।
ছোট ছোট ছেলেমেয়ে মুখে হাসি সারাদিন,
আসবে বর আজ, মন নাচে ধিনধিন।
সূর্যটা যায় হেলে পশ্চিম আকাশে,
সানাই এর সুর বাজে দুর ঐ বাতাসে।
লোকজন সাথে নিয়ে বর এল সন্ধ্যায়,
চারিদিকে ছোটাছুটি, বর দেখে আসি আয়।
কিশোর কিশোরীরা আড় চোখে দেখে বর,
বুড়োবুড়ি মারে উঁকি, নিয়ে হাতে নিজ ছর।
বরনের কাজ শেষে এল বর ভিতরে,
চারিদিকে কারুকাজ বিবাহ বাসরে।
ব্যস্ত পাকঘর খাবার তৈরিতে,
রকমারী খাদ্য এসে গেল ট্রেতে।
কনে সেজে বসে আসে পশ্চিম এক ঘরে,
মেহেদিতে রাঙা হাত, হাসি সারা মুখ ভরে।
একে একে বিবাহের সব কাজ হল সারা,
শুরু হল বর কনের নব পথে পথ চলা।
বর বধুর গমনে বাড়ি হল শান্ত,
এভাবে হল শেষ বিয়ে বাড়ির আনন্দ।

বুকের মানিক

দুঃখী এক মাতা কেঁদে ফেরে একা
কোল জুড়ে হাহাকার।
দিলনা বিধাতা পুরিল না আশা
রহিল কালো আঁধার।
জোড় করি হাত জেগে সারা রাত
মানত করে দরগায়।
আলো দিলে কোলে ডাকিব তোমারে
পুঁজিব তোমার পায়।
চাহিল বিধাতা পুরিল আশা
কোল হল আলোকিত।
কুটিকুটি হাসে বসে মা পাশে
দেখে মুখ উচ্ছ্বাসিত।
যতদিন গেল বাড়িয়া উঠিল
বয়স পড়িল চারে।
মুখে আধো বোল সকলে পাগল
করিতে আদর তারে ।
একদিন দুপুরে সবার অগোচরে
ছুটিল নদীর চরে।
খেলে এক মনে অতি নির্জনে
কেউ নাই কাছে বা দূরে।
জোয়ারের পানি বাড়ে নিরবধি
ছাপিয়ে উঠে দু’কুল।
ভাসিয়ে নিল ঝরে পড়িল
জীবনের ফোটা ফুল।
মা খোঁজে একা চারিদিকে ফাঁকা
জলে ভরে দু’নয়ন।
কোথাও তো নাই কোথা ফিরে পাই
বুকের মানিক ধন।
ছলছল আঁখি সহসা দেখি
ভেসে উঠে ঐ দুরে।
হৃদয়ের পাখি দিল যে ফাঁকি
হৃদয়ের বাঁধ ছিড়ে।
নিষ্ঠুর বিধি পারিল না রুধি
কাড়িল বুকের মানিক।
ডাকিব না তার পূঁজিব না আর
দিব তারে শত ধিক্।