প্রতিদিন সকাল হবার আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায় রুমানার। ঘুম ভাঙ্গতেই পাশে একমাত্র ছেলে সাকিবের দিকে চোখ পড়ে। পাশ ফিরে ছেলের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকায়। হাত দিয়ে ছুঁয়ে যায় একপলক। মায়ার সাগরে হাবুডুবু খায় আরো কিছুক্ষণ। এরপর ফ্রেস হতে উঠে যায়। যাবার সময়ও আরো একবার ঘুমন্ত ছেলেকে ফিরে দেখে। দাম্পত্য জীবনের অনেক পরে এই একমাত্র সন্তানটি এসেছে। তাই একটু বেশী-ই ওর প্রতি ভালোলাগা-ভালোবাসা আর অণুক্ষণ চোখে চোখে রাখা।
আবাসিকের ৩ নাম্বার রোডের এই শেষ বাড়িটায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে ওরা থাকে। মাত্র চারজন মানুষ। স্বামী-সন্তান ছাড়া আর একজন কাজের মেয়ে রয়েছে। অনেক আগে থেকেই ওদের সাথে। এখন পরিবারের একজন সদস্যের মত হয়ে গেছে। চারতলায় থাকা। আর পাঁচ তলায় অফিস। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং রেসিডেন্স- পাশাপাশি রাখতেই পছন্দ সিরাজের। তবে আজ পর্যন্ত সে জানে না , সিরাজ কিসের ব্যবসা করে। এই ব্যাপারটি নিয়ে কখনো রুমানার সাথে আলাপ করেনি। পছন্দ ও করে না। সাফ বলে দিয়েছে, ব্যবসার ব্যাপারে জানার প্রয়োজন নাই তোমার। ঘর সামলাও তুমি। আমি দেখছি ওটা। তাই অফিসে বাসার কারও যাওয়াটা সুনজরে দেখে না সিরাজ। লোকজন যারা আসে, সবাই সোজা পাঁচতলাতে ‘ওভারসিজ এক্সপো’ নামের অফিসেই চলে যায়। কখনো বা ভুলে কেউ কেউ চারতলার কলিং বেল বাজিয়ে ফেলে। এমন ক্ষেত্রেই দু’ একজনকে যা দেখে রুমানা। তবে এমন খুব কমই হয়।
অনেক সময় ক্লায়েন্টরা আসে। নিচে তাদের গাড়ি অবস্থান করে। এদের গাড়ি বাসার গ্যারেজেও প্রবেশ করে না। রাস্তার পাশে পার্ক করা থেকে। অলস ড্রাইভারড়া ড্রাইভিং সিটের দরজা খোলা রেখে সিট বেন্ড করে ঘুমায়। কার সেটে বেজে চলে ড্রাইভারের পছন্দের গান । বাসায় ফেরার পথে এমন অনেক দেখেছে রুমানা। তাই ব্যাপারগুলো মনে এভাবে গেঁথে আছে।
সিরাজের ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ঠদের অনেকেই রাতে থেকে যায়। তখন তাদের খাবারের ব্যবস্থা রুমানাকে করতে হয়। কাজের মেয়ে খাবার সাজিয়ে রাখে অফিসের ডাইনিং রুমে। রুমানা যায় না কখনো। নিষেধ আছে। গত রাতেও একজনের জন্য ডিনারের ব্যবস্থা করতে হয়েছে ওকে। এরকম হাজারটা বিধি-নিষেধের ভিতর দিয়ে সিরাজ-রুমানার জীবন বয়ে চলে। তারপরও মানুষটিকে বড্ড ভালবাসে রুমানা। ভালবাসা অনুভব করা যায়। রুমানা সেটা আবার একটু বেশী-ই অনুভব করতে পারে। তাই সে ও ফিরিয়ে দেয় ভালবাসা। এভাবে ভালবাসার লেন-দেন করে করে আজ জীবনকে এতদূর নিয়ে এসেছে এই দম্পতি।
প্রতিদিন মর্ণিং ওয়াকে যাওয়াটা সিরাজের নিত্যকার অভ্যাস। ঝড়-বৃষ্টি কোনো কিছুই এর কোণো ব্যত্যয় ঘটাতে পারে না। সিরাজ যাবেই। রুমানা সামনের ব্যালকনিতা দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট সময়ে সিরাজের চলে যাওয়াটা দেখতে পায়। প্রাতঃকৃত্য সেরে সেই সময়ের আগেই সামনে আসে রুমানা।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন সিরাজের বের হয়ে যাওয়াটা দেখতে পেলনা, একটু চিন্তার রেখা ফুটে উঠে কপালে। এমন কখনোই হয় না। রুমানা কি আজ সময়ের পরে এলো? নাকি সিরাজ আজ আগেই বেরিয়ে গেছে? ঘড়ি ধরে সব কিছুতে অভ্যস্ত হওয়া মানুষটা আজই কি নিয়মের ব্যতিক্রম করে ফেললো!
ছেলে সাকিবের ঘুম ভাঙ্গে। তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে রুমানা। তবে এর ভিতরেও ক্ষণে ক্ষণে প্রিয় মানুষটির কথা মনে পড়ে। প্রতিদিন এই সময়ের ভিতরে ছেলেকে সাথে নিয়ে সিরাজের সকালের নাস্তা পর্ব সারা হয়ে যায়।
বিষণ্ন হেসে নিজের এই অদ্ভুত জীবন সম্পর্কে ভাবে সে। বেশীর ভাগ সময় সিরাজ পাঁচতলাতেই থাকে। এর ভিতরেই চলে জীবন-যৌবনের গান! একান্ত কাছে পাওয়াটা নির্ভর করে সিরাজের উপর। রাতটা বেশ দীর্ঘ লাগে রুমানার আজকাল। যদিও ছেলে পাশে থাকে। কিন্তু সব চাইতে প্রিয় সুদর্শন মানুষটির অভাব বড্ড অনুভব করে। কখনো কখনো ঘুম ভেঙ্গে গেলে, বিছানার একটা নিঃসঙ্গ অংশ কেন জানি ‘কিছু একটা না পাবার’ আক্ষেপকে বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে থাকে রুমটা যতক্ষণ আঁধার মিলিয়ে না যায়।
আরও এক ঘন্টা পার হয়। এবার উদ্বিগ্ন হয় রুমানা। মোবাইলে কল করে। রিং বেজে চলে। কিন্তু ধরে না কেউ। কিছু না ভেবেই- সিরাজের সকল বিধি-নিষেধের বেড়া ডিঙ্গিয়ে আজ প্রথমবার নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় রুমানা ও। পায়ে পায়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে পাঁচতলার দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ডোর বেলের সুইচে হাত স্পর্শ করে রুমানার। সুরেলা টুং টাং আওয়াজে মনটা আপনাতেই ভাল হয়ে যায় এই দিনের শুরুতে। কেউ আসে না। কি ভেবে ডোর-হ্যান্ডেলে মৃদু ধাক্কা দেয়। নিঃশব্দে খুলে যায় দরজা। রুমানা কয়েক পা হেঁটে গিয়েই থেমে যায়। আকাশ ভেংগে পড়ে যেন ওর মাথায়। জগৎ সংসার মুহুর্তে দুলে উঠে ওর চেতনাকে সাথে নিয়ে এলিয়ে পড়ে।
… …
আটচল্লিশ ঘন্টার ব্যবধানে একই থানার আয়ত্তাধীন এলাকায় আবারও খুন। সেইম প্যাটার্ণ। খুনি বোধহয় একজনই। আগের হত্যাকাণ্ডটির সাথে মিল রয়েছে। ও.সি মনোয়ার মাথার চুল ছিড়তে কেবল বাকি রেখেছেন। একতার সুরাহা করতে না করতেই দ্বিতীয় আঘাত এলো। কেউ কি বেছে বেছে তাঁর এলাকাতেই খুনগুলি করতে চাইছে? চাকরি সুবাদে কত ভয়ংকর ভয়ংকর লোকের সংস্পর্শে আসতে হয়েছে। তাদেরই কেউ কি ওকে ফ্যাসাদে ফেলতে খুনগুলি করছে? না হলে সে এই থানার চার্জ গ্রহণ করতে না করতেই অল্প সময়ের ভিতরে দু’দুটি খুন! অবাক লাগে।
তবে আবাসিকের ৩ নাম্বার রোডটির শেষ বাড়িটার সামনে পুলিশ জিপ থেকে নামতে নামতেই সে একটু আগের ভাবনাটা উড়িয়ে দেয়। নাহ! কেউ তাকে ফাঁসাতে গিয়ে এত ভয়ংকর কাজ করবে না। খুন দ্বারা ওকে কী বিপদে ফেলা যাবে? একটু চাপে থাকবে কিংবা তদন্তে সময় লাগবে একটু বেশী। এর বেশী আর কি হবে? কিন্তু নিজেকে নিয়ে ভাবছে না সে। দু’টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। মানুষ খুন হয়েছে দু’জন। এখন আইনের শাসন নিশ্চিত করার প্রথম ধাপটাতে অবস্থান করছে সে।
বাড়িটার মেইন গেট দিয়ে প্রবেশ করার সময় নিজের দৃঢ় চোয়াল মনের ভেতরের অনুভবকেও দমিয়ে রাখতে চায় যেন। কেউ একজন খেলা শুরু করেছে। বুদ্ধির খেলা। সে খেলায় শেষে তারই জয় হবে এটা যেমন জানে, তেমনি এটাও জানে, এই খেলায় ব্যর্থ হওয়া যাবে না। জিতলে প্রাপ্তির খাতায় যা-ই থাকুক না কেন, হারলে ক্যারিয়ারে দাগ লেগে যাবে। ব্যর্থতার। এতগুলো বছর কখনো এমন অনুভবে বিলীন হয়নি সে। এবার ও হবে না। টপ ফ্লোরের সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠতে উঠতে আরো একবার আগের হত্যাকান্ডটির কথা মনে পড়ে। এবার কতটা বীভৎস হবে কে জানে?
…
দ্বিতীয় খুনটা সবাইকে হেলিয়ে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো। সিরাজ নিজে রহস্যময় মানুষ হলেও, ওর কাছের মানুষেরা অত্যন্ত ক্ষমতাধর। বন্ধু-বান্ধব শুভানুধ্যায়ীরা ও যার যার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এবং ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে প্রশাসনের উপর মহলে তোলপাড় শুরু হল। এবার টনক নড়ে নির্দিষ্ট মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির। নড়ে চড়ে বসেন তিনি। যে দেশে গদাইলস্করি চালে ঘটনার নির্বাহ হয়, সেখানের প্রশাসনযন্ত্রও হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে যেন জেগে উঠল! প্রতিটি ইউনিট যার যার জায়গায় বিশেষ নির্দেশ পায়।
নিজের রুমে সেই ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি। এই মাত্র আইজিপি’র সাথে কথা শেষ করেছেন। এখন এতক্ষণের আলোচনার চৌম্বক অংশটুকু নিয়ে ভাবছেন। দু’টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু কেন জানি মনে হল তার- কোথাও না কোথায়ও- ঘটনা দু’টি একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে সব কিছু ছাপিয়ে বিস্ময়ের সাথে একটা ভাবনাই তাকে বিহ্বল করে তুলতে চায়, দ্বিতীয় খুনের কথা আজকের সকালে জানা গেছে। পত্রিকাওয়ালারা আগামীকাল যে তুলোধুনো করে ছাড়বে ওদের নিজস্ব স্টাইলে, সেটা ভেবেই মন খারাপ হল তার। সব দায় তখন এসে পড়বে তার মন্ত্রনালয়ের উপর। কেবিনেট মিটিঙয়ে ব্যাপারটি নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। ওখানে সবাই এক দল হলেও, এক মনের নন। তাই ভিতরে ভিতরে চলে রেষারেষি। হিংসা আর দলাদলি হাত ধরাধরি করে চলে সেখানের ক্ষমতাধর মানুষগুলির ভিতর।
একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে মোবাইল হাতে নেন। একটা বিশেষ নাম্বারে কল করে অপেক্ষা করেন। ওপাশে রিং বেজে চলে। এই নাম্বারের মালিকের সাথে কথা বলতে গিয়ে, অপেক্ষার সময়টি তার কাছে কখনোই বিরক্তিকর মনে হয় না।
…
আইজিপি’র সাথে কথা শেষ হলে, পাশে অপেক্ষমান এ.এস.পি সালাহউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে মোবাইল টেবিলে রাখেন এস.পি লোকমান হোসেন। দু’জনে কিছুক্ষণ নীরব থাকেন। শেষে সালাহউদ্দিন সিনিয়রকে জিজ্ঞেস করেন-
‘তিন নাম্বার রোডের ঘটনা, স্যার?’
এস.পি কে কেমন ক্লান্ত মনে হয়। বিষন্ন দৃষ্টি নিয়ে জুনিয়রকে দেখেন তিনি।
-হ্যা। সবাই তো এখন এই দুই খুন নিয়েই ব্যস্ত। … আচ্ছা, মনোয়ারকে তোমার কেমন মনে হয়?
‘কোন দিক থেকে মানে কোন এঙ্গেলে জানতে চাইচ্ছেন জানলে বলাটা সহজ হতো?’
– ওটা ওর এলাকা। নতুন পোষ্টিং হয়েছে। কতটা সামলাতে পারবে সেই ব্যাপারেই জিজ্ঞেস করছিলাম।
‘ তাঁর কাজের দক্ষতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই আমার স্যার। তবে অতিরিক্ত স্বাধীনচেতা মানুষ। একটু গোঁয়ার। তবে সেটা আইনের সীমার ভেতরে, আইনকে সামনে রেখেই। কিন্তু একবার যে কাজের পিছু নেবে সে, শেষ করেই ছাড়বে। তাঁর কাজের ধরণ অন্যদের থেকে একটু আলাদা। বিশাল কর্মপ্রস্তুতি এর ভিতরে একটা। সব কিছু গুছিয়ে জাল টেনে আনে সে। তাই সময় একটু বেশী লাগলেও, ফলাফল আসেই।’
– ওটাই তো সমস্যা। এই মুহুর্তে সময় আমাদের খুব অল্প। আচ্ছা, তুমি আর বখতিয়ার তো কোর্স-মেট ছিলে, তাই না?
একটু অবাক হয়ে সালাহউদ্দিন ওর বসের দিকে তাকায়। শেষে বলে-
‘ ওকে এই কেসে রাখতে চাইছেন না তো?’
এবারে হাসেন জুনিয়রের কথা শুনে এস.পি।
-হ্যা! আমি এই ঘটনার তদন্তে মনোয়ারের সাথে বখতিয়ারকেও রাখতে চাইছি।
‘সর্বনাশ হবে যে তাতে, স্যার! মনোয়ার আর বখতিয়ার-দু’জনের কর্মপদ্ধতি ভিন্ন। তা ছাড়া এর আগে মানিকগঞ্জের ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায়ও দু’জন এক সাথে কাজ করেছিল। ফলাফল আপনার জানা আছে নিশ্চয়ই, স্যার?’
একটু অসহিষ্ণু স্বরে জবাব দেন এস.পি,
-হ্যা, মনে আছে সব। কিন্তু দু’জনের যতই পদ্ধতিগত অমিল থাকুক, এই কাজে এবার দু’জনকে এক সাথে কাজ করতে হবে মিলেমিশে। আমি তোমাকে দায়িত্ব দিচ্ছি ওভারঅল দেখবার জন্য। তুমি আমার সাথে ওদের দু’জনের লিয়াজো রক্ষা করবে। আর ওদের দুজনকে জানাবে- এই কেসে নিজেদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে চাপা দিয়ে, একটা টিম হয়ে কাজ করতে। এটা আমার স্ট্রিক্ট অর্ডার- সেটা অফিসিয়ালি কি আন-অফিসিয়ালি যেভাবেই হোক, মানতে হবে ওদেরকে। জানিয়ে দিও তুমি।
যখন এ.এস.পি সালাহউদ্দিন এস.পি লোকমানের রুম থেকে বের হয়, বাইরে তখন রোদেলা দুপুর নিজের আগমনী বার্তা ঘোষণা করছে।
(ক্রমশঃ)
আবার একটি সাসপেন্স !! এই পর্বের শুরুটা কিন্তু অসাধারণ হয়েছে মি. মামুন।
ধন্যবাদ ভাইয়া। এভাবে একের পর এক সাসপেন্সের জট অনেকগুলি পর্ব শেষে ধীরে ধীরে খুলতে চাচ্ছি।

সাথে থাকার শুভেচ্ছা গ্রহন করুন।
ধীরে খুললে পাঠক মনও যে অস্থির হয়ে থাকে লেখককে বুঝতে হবে কিন্তু।
থাকুক ভাইয়া। অস্থিরতা শেষে গিয়ে সুস্থির বানাবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
হু! নিহার”দার কিরিটির গন্ধ পাইতেছি মনে হয়!

হ্যা খালিদ ভাই।
সেই শৈশবে আব্বার লাইব্রেরিতে নিহাররঞ্জন এর বইগুলি দেখতাম। পড়েছিও।
একধরণের ভালোলাগা বিরাজ করতো কেন জানি। এই ধরণের লেখা আমার এই প্রথম।
ধন্যবাদ আপনাকে।