জানি আমার অনন্ত অপেক্ষা তোমার জন্য। পৃথিবীর বুক থেকে একদিন, জলছবি জমা হতে থাকে আর অভিমানের হাতে হাত রেখে নিশ্চুপে গুটিয়ে নিই নিজেকে। চার দেওয়ালের কোনে,জমে চলে আজন্ম অনুভূতি, রাত কেড়ে রাত নেমে আসে। ফাগুনের ফাগের আগুনে কে আর ঝাঁপ দিয়েছে আমার মতো? অসংখ্য অবজ্ঞার পরে,পড়ে থাকে নির্ভার আলো। সব ঘুম কেড়ে নিয়ে চলে গেছে রাজকীয় সে।
কোন এক কোনে দেখা গোধূলির আলোয় কেউ বলেছিল হাত দেখে, “হাতের রেখাগুলো বহুত খারাপ আছে রে, কখনোই কারো ভালবাসা পাবি না তুই বেটি “। কেউ আসবেনা জেনেও, তবুও আমি অপেক্ষার করি। অপেক্ষা করি তোমার ঠোঁটের স্বাদে। অপেক্ষা করি সবুজ সকালের, অপেক্ষা করি তোমার চোখের ছায়ার। তুমি কি অপেক্ষা কর না আমার জন্য? একেবারেই কর না? না? এক-দুই-তিন- করে দিন যায় আর আমার অপেক্ষার দিনগুলো কাটে এক একটা বছরের মতোই। বলেছিলাম তুমি ছাড়া আমার অত্যাচার কেউ সহ্য করবে না। বলেছিলাম বড্ডো অভিমানি কিন্তু আমি।বলেছিলাম তোমার হাতের আমায় দিলাম আদর করে রেখো। কথা দিয়েছিলে, এই হাত কখনোই ছাড়বেনা। কথা দিয়েছিলে এভাবেই ভালোবাসবে? কথা তো দেয়, কথাই তো ভাঙে। আমি আমার সর্বস্ব দিয়েই ভালোবেসেছি তোমায় , ভালোবাসার অধিকার বোধ থেকেই অভিমান আসে। হয়তো ভুল ছিলাম আমি, অভিমান করার অধিকার আমার ছিলো না। ক্ষমা চেয়েও, নতজানু হয়েছি বারবার তোমার কাছে একটু ভালবাসা পাবার আশায়। কিন্তু যার জীবন মরুভূমির মতো তাকে মরুদ্যানের স্বপ্নের বিলাসিতায় মানায় না।
জীবনের পর জীবন জন্ম নেবো, জন্মের পর জন্ম মৃত্যু, পৃথিবীর আবর্তে লাগবে জলছাপ, তবুও আমার অনন্ত অপেক্ষা তোমার জন্য। অপেক্ষার নীলরঙ বিষে চুঁয়ে যায় বুক। এক বুক হাহাকার মরুভূমি নিয়ে, একরাশ অভিমান পাহাড় গড়ে, দুই চোখ জমা জলে মাটি কেটে আর আট সাগরের জল চোখে নিয়ে, আমি অপেক্ষা করি। জানি অভিমান ভাঙানোর জন্য তুমি নেই। তুমি আসবেনা। কত নিষ্ঠুর তুমি। মাঝে মাঝে সব কিছু দুলে যায়, নড়ে যায়, ভেসে যায়। মিশে যায় শরীর অনন্ত অপেক্ষার বুকে। দিকভ্রষ্ট হলে নাকি? নতুন বসন্ত-চোখের অনাবিল ইশারায়? তবে কি আমাকে এতদিন যা বলেছিলে সব মিথ্যে ছিলো? আমি তো বিশ্বাস করেছি অন্ধের মতোই। ভালোবেসেছি আমার সর্বস্ব দিয়ে।
ছোট্ট একটা ভুলের এতোবড় শাস্তি! এতো নিষ্ঠুর তুমি? যাকে সত্যিই কেউ ভালবাসে তাকে কি কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়? তোমার আমার মাঝে, বড্ডো ভিড় জমে গেছে অবহেলার, তোমার অবহেলায় আমার বিসর্জন। আগুন রোদের মাঝে বাইরে যাই, কেউ জানেনা,প্রচন্ড জ্বরের ঘোরে দেখি,কাছে এসে হাত ধরেছ তুমি। আমার নিবিড়ভাবে ছুঁয়ে আছো তুমি। হঠাৎ ঘোর ভাঙে। বুকের ভিতর উপচে ওঠে সমুদ্র, ঢেউ এর মাথায় ঢেউ ভাঙে তুফান। ঝড় উঠল মন গুঁড়ো গুঁড়ো করে। মাথার ভিতর গর্জে ওঠে সাপ, অভিশাপে ছাই হয়ে যায় শরীর, আগুন নয়, দাবানলের মতো সব কিছু নিঃশেষ হোক আজ। শেষ হয়ে যাক আমার এই অভিশপ্ত জীবন।
বুকের ভিতর অনেক খানি আতর রেখেছি তোমার জন্য। পরের জন্মে যদি ফেরো সবটুকু তোমায় দেবো। বলেছিলাম জন্মের পর জন্ম শুধু মাত্র তোমায় ছুঁয়ে থাকব প্রিয় মন। জানি তুমি ভালো বাসোনি। ভালো বাসনা। তবু কেনো তোমার দিকেই চোখ? তবু কেনো তোমার মনেই মন? তবু কেনো তোমায় ভেবে ভেজে চোখের কোল? কয়েক কোটি জন্ম হতেও রাজি, ভুল করেও পর-জন্মে আবার যদি ডাকো! কোটি জন্ম লক্ষ জন্ম ছটফটে যন্ত্রণায়,হাজার জন্ম পাপস্খলন শেষে, শতেক জন্মে তোমাতেই শরণাং গত! সেইদিন গ্রহণ করবে আমায়?
এ জন্মটা তবে এ ভাবেই না হয় কাটুক।
লিখাটি পড়ে জীবনের প্রতি অদ্ভুত আকুলতা জন্মালো।
নিত্য যা পড়ি নিত্যই জীবন যেভাবে গড়ি; ঈশ্বর সবসময় ফেবারে থাকেন না।
একাকী সময় মানুষকে একাকী করে তোলে; মনকে অভিমানে ভরে তোলে।
অনুপ্রাণিত হলাম বন্ধু
হায় ওরে মানুষের মন! কেবলই ভালবাসা খুজে ফিরে! এক জনমে যদি মিটে নাকো আশ অনেক জনমের আশায় বুক বাধে। বড় জটিল, বড় করুণ, বড় অবুঝ।
ভীষণ জটিল .. ধন্যবাদ
এ জন্মটা তবে এ ভাবেই না হয় কাটুক। অসাধারণ বাতাবরণ। অভিনন্দন কবি রিয়া।
ধন্যবাদ প্রিয় কবি সুমন আহমেদ দা।
আপনার এমন গদ্য লিখার ভীষণ ভক্ত আমি প্রিয় কবি দি। জীবনের গল্প।
অনুপ্রাণিত হলাম কবি দিদি ভাই।
অসাধারণ কবি রিয়া।
খুশি হলাম দাদা।
অভিভুত হলাম কবি দি।
ধন্যবাদ কবি দি।
জীবন নিয়ে গল্প লেখা আপনাকেই মানায় শ্রদ্ধেয় কবি রিয়া দিদি। শুভেচ্ছা জানবেন।
অনুপ্রাণিত হলাম কবি দা।
বুকের ভিতর অনেক খানি আতর রেখেছি তোমার জন্য। পরের জন্মে যদি ফেরো সবটুকু তোমায় দেবো।
চমৎকার ।
শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
দি'ভাই,
চমৎকার কিছু কথা পড়ার পর, যেকোনো বেরসিকের মনেও ক্ষনিকের জন্য ভালবাসা জন্মাবে।
আপনার জন্য অনাবিল শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।