নিজকিয়া ১৯

সিটিসেন্টারে রেসিডেন্সী বারের ঠিক উল্টোদিক বরাবর ফুটপাতে
মাঝরাত্রির অন্ধকার ঠেলে এগিয়ে চলে ডানাওয়াল পরীর ছোট্ট ছেলে,
সারাগায়ে একফালি সুতোও… সারাটা দিনের বিকারের মতই…
অথচ নির্বিকল্প প্রশান্তিতে ফেলে যাওয়া ব্যস্ত পায়ের ছাপ মুছে এগোয়
শৈশবে রথের মেলায় হারিয়ে যাওয়া পরীর একমাত্র নাবালক সন্তান।
কবেকার শুকিয়ে যাওয়া দি দেন ঝাঁচকচক ফোয়ারার
মাপমতো কেন্দ্রীয় ভয়ানক ছুঁচলো আলপিনের ডগায়
খুশির অভিনয়ের মন্তাজ গড়ে তুলতে তুলতে পরীর ছেলের কঙ্কাল
পা দুলিয়ে খেলা করে সামন্তিক গত শতকের ফোয়ারায়,
ব্যস্ত সিটিসেন্টার ক্ষতবিক্ষত অ্যাসফল্টের হোঁচট এড়িয়ে চোখের শুকিয়ে যাওয়া জলের দাগ দেখেনা:
শুভমের সামনে, জাংশনের সামনে, সিটি রেসিডেন্সীর সামনে,
কোটি লেনদেনের আইসিআইসিআই ব্যাংকের সামনে জড়ো হওয়া সাবেক জঞ্জাল
হাওয়ার ঝোঁকায় উড়িয়ে মাঝরাত চিরে এগোয় পরীর ক্রীতদাস ছেলে।

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

1 thought on “নিজকিয়া ১৯

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।