সারাদিন কেটে যায় শুধু সুতোর ত্যারচা গিঁট খুলতে। এপাড় ওপাড় ধোঁয়ার ভেতরে এক অলীক কল্পছবি। আসলে এই মাটির ওপরে যার যতটুকু বরাদ্দ, বুঝে নিতে হয়। বোধের একচিলতে দশ বাই দশ কুঠরিতে রোদ্দুরের খামতি হলেই ঘরও অন্ধকার, চেতনাও।
চেতনার গল্পের হরেক বিদঘুটে আঁকাবাঁকা খাঁজে বিষণ্নতা তার নিজস্ব চলনছাপ রেখে একটানা হেঁটে যায়। স্কিজোফ্রেনিয়ার উপসর্গ নিউরনের লতায় পাতায়, অন্ধিসন্ধিতে, ক্রমশঃ গেড়ে বসে অখিল মৌরসিপাট্টা। নদীর ছলাত্ ছলে কেবলই হুইসেল বাজিয়ে যায় দূর কোনো পাহাড়ি স্টেশনের অবোধ নিরক্ষর ছাগচড়ানিয়া।
কুয়াশার বিচিত্র আচরণ আছড়ে পড়ে তার বহুরূপী রঙের বাহারে। নদী থেকে বেরিয়ে আসে সরীসৃপ নাহার। তার পেটে কখনো সখনো বয়ে যায় রূপকথার নায়ক নায়িকার চিরন্তন গল্প। সেখানেই একের পর এক মঞ্চস্থ হয় কত যুদ্ধ, কত ষড়রিপু প্রজননের আঁশফল কাহিনী, কত ষড়যন্ত্র, কত প্রেমের অকাল জলসমাধি। বাকি সময়টুকু আবছা, ভাসা ভাসা স্যাঁতসেঁতে কুয়াশা, শুধুই কুয়াশা।
সুতোর ম্যাজিক বলের জট যতই ছাড়ানোর চেষ্টা হয়, ততই যেন আরও বেশি করে কামড়ে ধরে, জাপটে আঁকড়ে ধরে বহুগুণা অতীতের লাল টালির ছাদ, সামনের সবুজ টেনিস লন, মোরামের ওপরে নড়বড়ে সাইকেল চলে যাওয়ার ব্যর্থ কিছু উপাখ্যান। সুতো ছাড়াতে ছাড়াতে দু প্রান্তে অবোধ্য সময়ে কখন যেন তৈরি হয়ে যায় দুই প্রকাণ্ড বল।
বোধের একচিলতে দশ বাই দশ কুঠরিতে রোদ্দুরের খামতি হলেই ঘরও অন্ধকার, চেতনাও। সুতো ছাড়াতে ছাড়াতে দু প্রান্তে অবোধ্য সময়ে যেন তৈরি হয়ে যায় দুই প্রকাণ্ড বল।
দারুণ ভাবে চিত্রায়িত হয়েছে সৌমিত্র। শুভ সকাল।