নগ্ন রাজপথে

জ্যোৎস্নার সংগ্রাম তখনও অবিরত জোনাকির বিরুদ্ধে, চাঁদের
জবাবদিহিতা সূর্যের প্রতি তীব্র হয়ে ওঠে, নক্ষত্রগুলো প্রচণ্ড গতিতে
ছোটে মাটির দিকে, দুয়ারে ছেয়ে যাওয়া তমাল
পিষ্ট হয় অপেক্ষারত প্রেমিকের পায়চারিতে;
তবে আজ রাতে তুমি কি আসবে?
সাদা ক্যানভাস আর তুলির আকর্ষণ ক্রমশ বিপরীত থেকে
বিপরীতমুখী- প্রত্যেকেই কর্মহীন-বেকার বসে ধুলোয় পুরোনো তাকে,
সারাদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে গাঙচিলের ডানার রং বিবর্ণ, ওদিকে
কোনো এক অখ্যাত কবির উচ্চারণ- ‘এ যেন গতকালের দৈনিক এক!’
তবে আজ রাতে তুমি কি আসবে?
অবলা নারীর রূপে যদি আসো-
তবে আরও একবার ধর্ষিতা হবে তুমি
আমাদের এই নগ্ন রাজপথে।

এই কলঙ্ক তোমার নয়, আমার;
এই নতমাথা তোমার নয়, আমার;
এর দায়ভার তোমাদের নয়, আমার;
শুধুই আমার।

প্রবাল মালো সম্পর্কে

ক্রমশ অবচেতনে বেড়ে যায় জয় আর পরাজয়ের বোঝা, ক্লান্ত আমি- নিজেকে লুকোই বালকের প্রথম প্রেমের চিহ্নের মতো। কোনো অর্জন নেই আমার- কেবলই অবক্ষয়-ধ্বংস-মৃত্যু, জয়ের আনন্দে বিহ্বলতা নেই- আছে গোপন কান্না, প্রতিটি প্রাপ্তির পেছনে উপলব্ধি ঘৃণার-সংশয় বোধের, প্রকৃতির নীরবতা-নম্রতার পেছনে হিংস্রতার প্রেতছায়া, মৃত্তিকার অগভীরে শেকড়ের ভয়ংকর নগ্নতার ছাপ, নদীর ঢেউয়ের গোপনীয়তা থেকে দোয়েলের সুমিষ্ট শিসের ঘ্রাণ, ঘাসের বেড়ে ওঠা নীরবে- কিছুই তো অজানা নয় মানুষগুলোর, তবু কেন এই অশনি সংকেত! ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে স্বীকারোক্তি দেবে কে? তোমার স্মৃতিগুলোতো ক্রমে অস্পষ্ট, তবুও তোমার দেহের ভঙ্গিমা সবচেয়ে সুখকর- সরল জীবনের মতো, সে-জীবন খোঁজে কবি, কবিতা, প্রেমিক, ঘাস, হৃদয়; তবু কেন মানুষ নয়!

1 thought on “নগ্ন রাজপথে

  1. যে প্রকৃতির সন্তান হয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি ক্রমশঃ; সেখানে এমন ছিলো না … যেখানে পারিপার্শ্বিক এবং সামাজিকভাবে আমরা নিজেদের এতোটা নিচে নামিয়ে আনার প্রতিযোগিতায় কখনও নামিনি। লজ্জাস্কর হলেও সত্য আমরা অনেক বদলে গেছি।

    কবিতায় প্রতিবাদ এবং অনুশোচনা ভালো এসেছে। শুভেচ্ছা মি. প্রবাল মালো।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।