অন্ত্যশূন্য গ্রহণকাল

অন্ত্যশূন্য গ্রহণকাল

আজ একটা সময়ে তোমার গলা শোনার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল সোনামন
সেই সময়ে সন্ধ্যা নামছিল পাখির পালকে তিরতিরে কাঁপন জড়িয়ে
রাস্তার দু পাশের পা ছড়িয়ে গল্প করতে বসা গাছেরা নিছক কৌতূহলে
ঝুঁকে পড়ে দেখছিল আমার অর্বাচীন কার্যকলাপ কেমন হাঁটিহাঁটি পা পা করে এগোচ্ছে
পেরিয়ে চলে যাওয়া কিছু মানুষ, কাজ আর বাড়ির মধ্যে যাদের হাইফেন নেই একেবারেই
তাচ্ছিল্যের খালি প্যাকেট ছুঁড়ে দিচ্ছিল আমার ক্ষণিক অবস্থানের দিকে
যেভাবে তাদের ব্যক্তিগত বউয়ের দল সোনাদানার হিসেবনিকেশের ফাঁকে
কর্পোরেশনের ভ্যাটে ছুঁড়ে দেয় মাসিক রক্তমাখা প্যাড;
তুমি তো জানোই, বহুবার বলেছি এখানে সান্ধ্যখাঁচায় রাত্রি নামে না বহুদিন হয়ে গেল
দিনও লুকিয়ে থাকে তঞ্চকতার ফেরারী আসামির মতো মেঘের আড়ালে
বলেছি শোন সোনামন আমার অর্জুনের চোখ কেবলই তোমাকেই খোঁজে অমলতাসের পাতায়;
অথচ সারাদিন আমার চেয়ে থাকা ফিরে আসে ব্যুমেরাং হয়ে আমারই বন্ধ হয়ে যাওয়া দ্বিচক্র যানের দিকে;
আজও সারাদিন তোমার গলা মেরুবলয়ের ওপারে অশ্রুতই থেকে গেল সোনামন!

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

1 thought on “অন্ত্যশূন্য গ্রহণকাল

  1. ইন্টারেস্টিং লিখা প্রিয় কবি সৌমিত্র চক্রবর্তী। তুমি পারোও বটে !!
    লিখার শিরোনাম দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। না জানি গম্ভীর কিছু হবে হয়তো।

    রাশি বিরহে সোনামন’কে আমারও কিছু বলতে ইচ্ছে করেছে। যেন বলি …
    আজও সারাদিন তোমার গলা মেরুবলয়ের ওপারে অশ্রুতই থেকে গেল সোনামন!
    https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।