পলাতক_চাঁদ_অণুগল্প

এক ঝরঝর বাদর দিনে বেশ আগেই সন্ধ্যা নেমেছে। বৃষ্টিস্নাত ঝাপসা কাঁচের ওপারে দ্রুত সরে যায় দোকানগুলির আলো।
ট্রেনের জানালার পাশে বসে থাকা কণার কাছে কেমন ছবির মত মনে হয় সব! ক্লান্ত প্রহরগুলির নিঃশব্দে সরে যাওয়া ও লাগে ভালো।

– আজকাল তোমার তো কত কিছু-ই ভালো লাগে!
কোথা থেকে দমকা বাতাসের এক আউলা ঘূর্ণি প্রশ্নের সাথে বুকে করে বয়ে আনে সুগন্ধি প্রহর! পলকে বিবশ হতে গিয়েও থমকে যায়
নিভৃতচারী আরণ্যক মন।

‘কেয়োকার্পিণ’! সুগন্ধি তেলটি মানুষটির খুব পছন্দ ছিলো। কাঁধ অবধি নেমে যাওয়া ব্যাক ব্রাশ করা চুল ছুঁয়ে ছুয়ে. আশপাশটা সুঘ্রাণে মুখর করে দিয়ে, প্রিয় মানুষটি যখন ওর হাত ধরে হেঁটে যেতো.. জীবনটাকে কেন জানি সম্পুর্ণ মনে হতো!

ট্রেণ ভর্তি পুরুষদের দিকে তাকিয়ে ঘ্রাণের উৎসমূল খুঁজে ফেরে এক বিষন্ন নারী। বিভিন্ন অবয়বের এক একজন পুরুষ। কিন্তু ইদানিং এরা কেবলি পুরুষ! কেন জানি এরা মানুষ হতে চায় না এক ‘সিংগেল মাদারের’ সামনে।

প্রিয় মানুষটি যখন স্বেচ্ছায় পলাতক চাঁদ! পুরুষগুলো তখন মানুষ হয়ে উঠবে কেন?

____________________
#পলাতক_চাঁদ_অণুগল্প_৩১৯

Photo Credit: Akm Azad

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

2 thoughts on “পলাতক_চাঁদ_অণুগল্প

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।