অত্যাচারী প্রভু

”সে দিনের প্রগতিশীল বন্ধু
আজ অত্যাচারী প্রভু;
শিল্পী তার ভৃত্য এবং শিল্প তার পণ্য”

উত্তরাধুনিকতা বই টি পড়েছিলাম কবি আরণ্যক টিটোর সাজেশনে-
উত্তরাধুনিক কবি এজাজ ইউসুফীর লিখা “উত্তরাধুনিকতা” গ্রন্থে সুজিত ঘোষের উপরোক্ত উক্তি টি রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেন।

আসলে আজকের বাস্তবতায় লক্ষ করলে কথাটির যথার্থতা উপলব্ধি করি হাড়ে হাড়ে। কোথায় আমাদের শিল্প আর শিল্পীর স্থান?
পরের ধানে পোদ্দারি করার মত মহাজনেরা যেভাবে আগ্রাসী থাবায় গ্রাস করছে আমাদের শিল্প সাহিত্য, আমাদের কবিতা, গান, পুরাকীর্তি, আমাদের ঐতিহ্য…
তাতে যে শিল্পের নিগূঢ় চেতনা অচিরেই ছিনতাই হয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই। যেভাবে ছিনতাই হয়েছে আমাদের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি…
সেই উপনিবেশিক ভাব ধারা
সেই প্রথা
আজ আবার হাজির হয়েছে শিল্পের নিপীড়ক হিসেবে।

অসংখ্য কবি, সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, সৃজনশীলও সু চিন্তক নীরবে নিভৃতে জীবন যৌবন বিসর্জন দিচ্ছেন তাদের সৃষ্টির পেছনে।
রাতের পর রাত, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একিই একাগ্রতায় ডুবে থাকেন একটি নতুন কবিতা, একটি নতুন গান, একটি নতুন চিত্রের জন্য…
আর পুঁজিবাদেরা তাদের দেখে ভৃত্যের মত, তাদের সৃষ্টি কে দেখে নিতান্তই পণ্যের মত। তাদের কাছে এসব অন্যসব বস্তুর মত বেচাকেনার পণ্য। যা তারা
ইচ্ছেমত দামে কিনতে পারে, বেচতে পারে।
এরাই আবার নিজেদের স্বার্থে ব্যবস্থা করে নানান মঞ্চের। নানান ব্যানারের।
তথাকথিত পদক বা সম্মাননার নামে মজা লুটে।
এসব আজকাল সবাই জানে। ওপেন সিক্রেট। কিন্তু নীরবে দেখে যাওয়া ছাড়া, সহে যাওয়া ছাড়া চালচুলো হীন কবি, সাহিত্যিক দের কি-ই বা করার আছে?
যেমন- মানুষ প্রতিদিন এবড়ো থেবড়ো পথে চলছে, ওষ্টা খাচ্ছে, হোঁচট খাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে, ফের উঠে দাঁড়াচ্ছে ; কেউ দেখেছে কি-না সে লজ্জায় কোনমতে এদিক ওদিক করে পুনরায় পা বাড়াচ্ছে।
আবার, জানে ফলে বিষ মেশাচ্ছে, মাছ, তরকারি, থেকে শুরু করে সব খাবারে বিষ দিচ্ছে উৎপাদকেরা; তবু মানুষ খাচ্ছে, অসুস্থ হচ্ছে, ধীরে ধীরে মরছে, মরার আগ অবধি যত টা পারে বাঁচছে।
অন্যায় দেখছে, যে অন্যায় করছে তার ভয় নাই। বরং যে অন্যায় করতে দেখছে
সে ভয়ে মরছে।

এভাবে চলছে। হয়তো এভাবেই চলবে।
কিন্তু শিল্পী কি থেমে থাকবে? কবি কি উঠে দাঁড়াবে না?

দাউদুল ইসলাম সম্পর্কে

সব সময় নিজেকে বলি- মানুষ হবি যদি- অন্ধকার ঘরে যখন একা থাকবি তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিস তুই কতটা মানুষ। কতটা তোর সভ্যতা কতটা তোর ভদ্রতা! স্নান ঘরে যখন একা শাওয়ারের নিচে দাঁড়াস- তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করিস কত টা আছে তোর মনুষত্বের রুচি! জিজ্ঞেস করিস কতটা তুই ভদ্র, সভ্য!

8 thoughts on “অত্যাচারী প্রভু

  1. সাহিত্য নিয়ে আলোচিত এই পোস্ট পূর্ণ স্বতন্ত্র উপহার হিসেবে গ্রহণ করলাম স্যার। অসাধারণ।

    1. এ বিষয়ে বিশদ আলোচনার জ্ঞান আমার একেবারেই অপ্রতুল।

      অনেক দূর ঘুরতে হবে তার পর যদি লিখার রসদ পাই পূনরায় লিখব

      বিনিয়াবনত সালাম ও ভালবাসা..  জানবেন স্যার।

       

  2. যদি ভাব কিনছো আমায় ভুল ভেবেছো

    কেনা যায় কন্ঠ আমার দফা দফা

    রুজি রোজগারের জন্য করছি রফা

    দুহাতের আঙুলগুলো কিনতে পার

    আপসে নেই আপত্তি নেই আমারো 

     

    টাকাতেই চলছে সবার পাকস্থলী

    কেনা আর বেচা নিয়েই গেরস্থালী

    প্রতিবাদী কন্ঠগুলো টাকার ব্যাপার

    প্রতিবাদ করতে গেলেও খাবার দাবার 

    সে তুমি শ্রমিক কিংবা তাধিন ধিনা

    পেটে চাই খাবার নয়তো  দিন চলেনা 

     

     

  3. কবি ভাই আসলেই একটু আলাদা বিষয় অনুধাবনে কবির দায় পূর্বক

    কবিরা জেগে উঠবেই,,,,,,,,,,হেমন্ত ভালোবাসা কবি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।