ট্যাগ আর্কাইভঃ দাউদের লিখালিখি

মানুষ হওন, অনন্য মানুষ …

মানুষের ঘরে জন্মেছি বলে মানুষ!
কুকুরের ঘরে জন্মালে কুকুর হতাম; আল্লাহতাহলা তো পৃথিবীর সকল রুহ একিই সাথে সৃষ্টি করেছিলেন। এটা তো আমাদের সৌভাগ্য আমরা মানুষ হয়ে জন্মেছি।
হ্যাঁ তার মধ্য বেশ কিছু মহা সৌভাগ্যবান আর কিছু হতভাগ্য ভাগ করে দিয়েছেন।
কেউ কালো কেউ সাদা
কেউ সুন্দর কেউ কুৎসিত
কেই পরিপূর্ণ কেউবা বিকলাঙ্গ; আবার কেউ জন্মেই সোনার চামচ মুখে পেয়েছেন
আর কেউ কিছুই না! কিন্তু সর্বোপরি সবাই মানুষ
আল্লাহর চোখে সবিই সুন্দর সবিই সমান, তিনি যাকে যেমন খুশি সৃষ্টি করেছেন, যাকে খুশি সম্মানিত করেছেন; যাকে ইচ্ছে বে হিসেব রিজিক দিয়েছেন।
আপনি সুন্দর
রূপসী, ধনী, কিংবা আপনার অনেক ক্ষমতা
অথবা আপনি অনেক জ্ঞানী, অনেক কিছু বুঝেন। চোখের ইশারায় অন্যকে বশ করে ফেলেন
যাকে ইচ্ছা আপনা যাকে ইচ্ছা পর করে দেন।
ইচ্ছে করলে বুকে তুলে নেন
আবার ইচ্ছা করলে লাথি মেরে ছুড়ে ফেলছেন;
আপনি যা বলছেন তা সবার উপরে, তার উপরে কিছু থাকলে সেটা মিথ্যা বলে নাক কুঁচকাচ্ছেন।
নিজেকে বিশাল শক্তি ধর
কিংবা অশেষ ক্ষমতাবান মনে করে এই যে আপনিও যাচ্ছে তা করে যাচ্ছেন, আপনি কি জানেন?
আপনার এই দাম্ভিকতায় এই অহমিকায় কত প্রাণ নিঃস্ব হচ্ছে?
জানেন যদিও
তবু না জানার ভান করছেন। উল্টা উপহাস করছেন তার নিঃস্বতা নিয়ে।
কেন আপনার এত ক্ষমতা এতো দাম্ভিকতা?
আল্লাহ আপনাকে সব দিয়েছেন বলেই? না কি আপনি আল্লাহ কে অস্বীকার করবেন?
করতেই পারেন!
কিন্তু নিজেকে মানুষ দাবী করা যাবেনা আর
হয় নিজেকে খোদা ঘোষণা করতে হবে নাইলে এক আল্লাহর দেয়া ক্ষমতা রিজিক আর রূপ গুনের শোকরিয়া আদায় করতে হবে।
এই শোকরিয়া আবার মুখে বলে আদায় করলে হবেনা
হয়না
শোকরিয়া আদায়ের জন্য আপনাকে কাজ করতে হবে, বিনয়ী আর প্রেমময় হতে হবে। আরেক জন কে
শোকরিয়ার রাস্তায় আনার চেষ্টা করতে হবে।
কারণ আপনি ধনী বলে মানুষ
আমি হত দরিদ্র বলে অমানুষ না।
আপনি আরাম আয়েশের জীবন ভোগ করছেন বলে অন্যের কষ্ট, অন্যের অভাব, দুঃখ, কিংবা অন্যের মন বুঝতে না পারলে আপনার কোন দোষ নাই
কিন্তু আপনি যখন সব বুঝার ভান করেন আর সত্য অস্বীকার করেন, মিথ্যাকে চাপিয়ে দেন তখন আপনার মনে রাখা উচিত আপনি যার সাথে এসব করছেন সেও মানুষ।
তারও জীবন আছে
ঈমান আছে
ধর্ম আছে
মন আছে
তারও স্বপ্ন আছে
আছে কোন না কোন আদর্শ।
আপনি জান না হয়তো-
আপনি যে বিষয় টা কে জুতার ধুলো মনে করে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছেন।
অন্যের কাছে সেই ধুলো পাক মাটির আশীর্বাদ।
আপনি কিছুই ভাবছেন না
ভাবতে হচ্ছে না
কারণ আপনার আছে, অনেক আছে
কিন্তু যার বালির প্রাসাদ ভেঙ্গে দিলেন তার হয়তো কার কিছুই ছিলো না
সেই বালির প্রাসাদই তার কাছে শ্রেষ্ঠ সম্বল হয়তো।
হতে পারে জীবন আপনার কাছে ফেসবুকের স্ট্যাটাস এর মত। যখন খুশি পোষ্ট দিলেন আবার ডিলিট করে ফেল্লেন।
আর সব কিছুর মত আপনি আপনার কর্ম কে সেরা মনে করছেন
ঠিক আছে
কিন্তু অন্যের টা নগণ্য ভাবছেন কেন?
এসব অহমিকায় গড়া মানুষ আমরা-
নিজে হাসি বলে অন্যের কান্না কে উপহাস করতে পছন্দ করি।
কিন্তু আমরা জানি না সে কান্নাই তার সুখ।
তার আনন্দ।
তার বেঁচে থাকা!!

স্রষ্টা আমাদের অন্য সব সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করেন নি, আমাদের মেধা দিয়েছেন ভাল মন্দ বাছ বিচারের জন্য বিবেক দিয়েছেন।
অন্যের সুখে সুখী
অন্যের দুঃখে দুঃখী হবার জন্য একটা মন দিয়েছেন
এই মন টাই আমাদের চালিকা শক্তি
আর ব্রেন বা মেধা হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু, যার ধর্ম হচ্ছে মালিকের জন্য মালিকের মঙ্গলের জন্য কাজ করা।
কিন্তু তার জন্য আমাদের মেধাকে কাজে লাগানো শিখতে হবে
মেধাকে ভালো ভালো চিন্তা দিতে হবে কাজ দিতে হবে, যে যতো বেশী ভালো চিন্তা ইতিবাচক চিন্তা করবে মেধা ততো বেশী মঙ্গলজনক কাজ করবে।
আর সে ততো বেশী সফল হবে!
আমাদের জাতীয় অধ্যাপক আবদুল্লা আবু সাঈদের একটি চমৎকার উকি আছে, তিনি বলেন “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়”
এই স্বপ্ন নির্মাণে আমাদের মন আর মেধার সঠিক সমন্বয় করতে হবে।
মেধা মননে অনন্য হতে পারলেই একজন মানুষ নিজেকে অনন্য মানুষের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
আর একজন অনন্য মানুষ একটি সমাজের জন্য, জাতির জন্য, দেশ তথা সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য আশীর্বাদ।।

সুতরাং মানুষ হওন। অনন্য মানুষ।।

দাউদুল ইসলাম

অত্যাচারী প্রভু

”সে দিনের প্রগতিশীল বন্ধু
আজ অত্যাচারী প্রভু;
শিল্পী তার ভৃত্য এবং শিল্প তার পণ্য”

উত্তরাধুনিকতা বই টি পড়েছিলাম কবি আরণ্যক টিটোর সাজেশনে-
উত্তরাধুনিক কবি এজাজ ইউসুফীর লিখা “উত্তরাধুনিকতা” গ্রন্থে সুজিত ঘোষের উপরোক্ত উক্তি টি রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেন।

আসলে আজকের বাস্তবতায় লক্ষ করলে কথাটির যথার্থতা উপলব্ধি করি হাড়ে হাড়ে। কোথায় আমাদের শিল্প আর শিল্পীর স্থান?
পরের ধানে পোদ্দারি করার মত মহাজনেরা যেভাবে আগ্রাসী থাবায় গ্রাস করছে আমাদের শিল্প সাহিত্য, আমাদের কবিতা, গান, পুরাকীর্তি, আমাদের ঐতিহ্য…
তাতে যে শিল্পের নিগূঢ় চেতনা অচিরেই ছিনতাই হয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই। যেভাবে ছিনতাই হয়েছে আমাদের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি…
সেই উপনিবেশিক ভাব ধারা
সেই প্রথা
আজ আবার হাজির হয়েছে শিল্পের নিপীড়ক হিসেবে।

অসংখ্য কবি, সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, সৃজনশীলও সু চিন্তক নীরবে নিভৃতে জীবন যৌবন বিসর্জন দিচ্ছেন তাদের সৃষ্টির পেছনে।
রাতের পর রাত, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একিই একাগ্রতায় ডুবে থাকেন একটি নতুন কবিতা, একটি নতুন গান, একটি নতুন চিত্রের জন্য…
আর পুঁজিবাদেরা তাদের দেখে ভৃত্যের মত, তাদের সৃষ্টি কে দেখে নিতান্তই পণ্যের মত। তাদের কাছে এসব অন্যসব বস্তুর মত বেচাকেনার পণ্য। যা তারা
ইচ্ছেমত দামে কিনতে পারে, বেচতে পারে।
এরাই আবার নিজেদের স্বার্থে ব্যবস্থা করে নানান মঞ্চের। নানান ব্যানারের।
তথাকথিত পদক বা সম্মাননার নামে মজা লুটে।
এসব আজকাল সবাই জানে। ওপেন সিক্রেট। কিন্তু নীরবে দেখে যাওয়া ছাড়া, সহে যাওয়া ছাড়া চালচুলো হীন কবি, সাহিত্যিক দের কি-ই বা করার আছে?
যেমন- মানুষ প্রতিদিন এবড়ো থেবড়ো পথে চলছে, ওষ্টা খাচ্ছে, হোঁচট খাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে, ফের উঠে দাঁড়াচ্ছে ; কেউ দেখেছে কি-না সে লজ্জায় কোনমতে এদিক ওদিক করে পুনরায় পা বাড়াচ্ছে।
আবার, জানে ফলে বিষ মেশাচ্ছে, মাছ, তরকারি, থেকে শুরু করে সব খাবারে বিষ দিচ্ছে উৎপাদকেরা; তবু মানুষ খাচ্ছে, অসুস্থ হচ্ছে, ধীরে ধীরে মরছে, মরার আগ অবধি যত টা পারে বাঁচছে।
অন্যায় দেখছে, যে অন্যায় করছে তার ভয় নাই। বরং যে অন্যায় করতে দেখছে
সে ভয়ে মরছে।

এভাবে চলছে। হয়তো এভাবেই চলবে।
কিন্তু শিল্পী কি থেমে থাকবে? কবি কি উঠে দাঁড়াবে না?

রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য, তাদের কোন শেখ মুজিব নাই

আসলে রোহিঙ্গা দের এই দুর্ভোগের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। ওরা শত শত বছর ধরে রাখাইনে বসবাস করলেও নিজেদের মায়ানমার এর অধিবাসী করে দাঁড় করাতে পারেনি।

পারেনি তাদের মধ্যে একজন শেখ মুজিব হয়ে জন্ম নিতে। কিন্তু বছর বছর সন্তান জন্মদান আর পান চিবাতে ভুল করে নি। এক জন রোহিঙ্গাও নাই যে দাবী করতে পারে সে তার ধর্মের জন্য লড়ছে, অথচ তাদের মধ্যে ধর্মবাজ উগ্রভাব এর অভাব নাই। আইএস কিংবা মওদুদী চিন্তাধারার এক বিশাল জনগোষ্ঠী এই রোহিঙ্গারা।

কিন্তু বাংলাদেশ উদার মানসিকতার দেশ। যদিও অধিকাংশ রোহিঙ্গা মুসলমান- কিন্তু বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছেন নিপীড়িত মানুষ হিসেবে। আর প্রতিবেশী হিসেবে সেটা বাংলাদেশের মানবিক দায়িত্ব।

তবে মায়ানমার সরকার তাদের জাতিগত নিধন এর দায় এড়াতে পারবেনা। রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতন ও দেশান্তরি হতে বাধ্য করার অপরধে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সুতরাং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষনে প্রস্তাবিত পাচ দফা অনুযায়ী সু চি সরকার কে তার জনগনদের স্বদেশে ফেরত যাবার রাস্তা করে দিতে হবে।

অবশ্য আমাদের দেশে আজ যারা লোক দেখানো মায়া কান্নায় ব্যস্ত, তাদের অনেকেই চায় রোহিঙ্গা সমস্যা লেগে থাকুক। পারলে তাদের এদেশেই থাকতে দেয়া হোক-
এতে তাদের উপ্রি সুবিধা হয়, কারণ তাদের মতোই রোহিঙ্গারা উগ্র ধর্মান্ধ স্বভাবের। তা ছাড়া হত দরিদ্র এই জনগোষ্ঠীকে দিয়ে খুব সহজেই আইএস, জঙ্গীরা তাদের অপকর্ম করিয়ে নিতে পারবে।

অতএব, আমরা ভাবতেও চাই না যে
কোন ভাবে রোহিঙ্গা রা এই দেশে দীর্ঘ মেয়াদী বসবাস করছে বা করবে।

-দাউদুল ইসলাম


====\\=====