বিজ্ঞাপনের শ্রমগল্প

বিজ্ঞাপনের শ্রমগল্প

ডায়লগটা একটা বিজ্ঞাপনের। আমাদের চারদিকে এখন দাদ, বিখাউজ,
কোমরের মোটা দাগ মিইয়ে দেবার বিজ্ঞাপন। আমাদের গোটা পরিকল্পনা
জুড়েই এখন রাজপথ। ফুটপাথ নেই। ফলে হেঁটে যাবার রাস্তা নেই। যারা
গাড়ির মালিক তাদের যাবার পথ আছে। আমাদের নেই।আমরা শ্রমজীবি
মানুষেরা জানি না, শিলাবৃষ্টি আমাদের বোরোধান তলিয়ে নিলে -দাঁড়াবো
কোথায়! নগরে প্যাকেজ রাজনীতি চলছে। খাদির পাঞ্জাবী পরে নেতারা
উদ্ধার করছেন আমাদের ভবিষ্যত। আর আমাদের সন্তানেরা হামাগুড়ি দিচ্ছে
ডোবায়। যে ডোবায় এখন পানিও নেই। শুধুই নর্দমা। কাদার ছড়াছড়ি।
সময় এলে অনেকেই আমাদেরকে চিনতে পারেন। সময় চলে গেলে আর চেনার
দরকার মনে করেন না। এই যে ধাউড় সম্প্রদায়, তারাই আমাদের নিয়ামক।
মাঝে মাঝে দূরে দাঁড়িয়ে তারাও বলেন- চেনা চেনা লাগে !
একটা চাকরির খোঁজে যে ছেলেটি গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়েছিল, সে-ও
অর্ধচন্দ্র খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কর্পোরেট অফিসটির সদর দরোজায়।
তার পিঠে বেদনার জন্মদাগ। কর্কট রোগে আক্রান্ত পিতার মুখ সম্বল করে
তার হাঁটু’টি আর চলতে চায় না। চলতে চায় না এখন অনেক কিছুই।
এই নগরটা পুড়ে গেলেও ক্ষতি নেই। কখনও কখনও পোড়া-ই ভাগ্যের
বলিরেখা। পোড়াবাড়িতেই গড়ে উঠে যে প্রাসাদ, কংকালগুলো তার সাক্ষী
হয়েই থেকে যাক আপাতত:।

____________________________
নিউইয়র্ক। পরিমার্জিত, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

3 thoughts on “বিজ্ঞাপনের শ্রমগল্প

  1. বেশ সমৃদ্ধ একটি লিখা পড়লাম। অভিনন্দন প্রিয় কবি প্রিয় ইলিয়াস ভাই। শুভ সন্ধ্যা।

  2. সমাজের এই দাদ বিখাউজ ভালো করার যে মলম – সেই মলম গুলো এখন বিভিন্ন দলভুক্ত। সেই আসল মলম মেলা বড়ই কঠিন। বর্তমান মলম গুলোর যেটাই মালিস করেন না কেনো – আপনার ঐ রোগ অন্য দিকে টার্ন নিয়ে এক মহারোগে পরিনত হতে পারে। সুতরাং আপাতত জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করা ছাড়া আর কি বা উপায়!!!https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_bye.gif

  3. বেশ একটি লেখা। সবসময়ের শুভেচ্ছা কবি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।