কত অখাদ্য, কুখাদ্য, হাবিজাবি লিখি যে! অর্থবহুলতা কিংবা অর্থহীনতার শব্দের একরাশ মালা গাঁথা। কখনো যাপিত জীবনের ক্লান্তি! কখনো দীর্ঘশ্বাসের উত্তপ্ততায় বাতাসকে উষ্ণ করে দেওয়া! আমি কি আদৌ কখনো নৈবেদ্য সাজিয়েছি? অর্থ বহুল, অর্থহীন স্বপ্নের জাল বুনে ছড়িয়ে দিতে পেরেছি ক্যানভাসে?
জানি, জীবনের ক্যানভাস বেশিরভাগ বেরং থাকে, কিংবা কোনো শ্যেড মেলেনি। মিলবেও না জানি। রঙ তো আর ইচ্ছে নদী নয়, বয়েই যাবে ইচ্ছেমত। রঙ দিয়ে জীবন রাঙায় ঠিকই, তবে রঙ তো থাকতে হয়। লাল আর হলুদ মিলে এক তীব্র আগুন রং হয়। তাতে কারো হৃদয় শীতল হয় কি?
শব্দেরা যেমন অদ্ভুত, এলোমেলো কিংবা অচেনা। রং গুলোও তেমন। কারো হয়ত বৈচিত্র্যে জীবন ভরে যায়। তবে, সেগুলো নেহাতই ক্ষণস্থায়ী। সমস্ত কিছু কে বুঝতে চায়? সমস্ত কিছু বুঝতে পারেই বা ক’জন? কেউ পারেনা। পৃথিবীতে খুব কমই বুঝতে পারে বা বুঝতে চায়। অদেখা একটা পৃথিবীতে বাস এই পৃথিবীর মাঝেই।
কোথাও যেমন সবকিছু স্পষ্ট। আবার কোথাও সবই অস্পষ্ট, ধোঁয়াটে, অজানা। জীবন আমাদের স্পষ্ট আর অস্পষ্ট এই দুই নিয়েই বহমান। কারো জীবন থেমে থাকেনা অজানা জানতে না পারায়, কারো জীবন থেমে থাকে না ভীষণ আঘাতে জর্জরিত হওয়ায়। “শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা”। নিয়মের নির্নিমেষ অদ্ভুত খেয়াল।
শব্দকে জঞ্জালের মতন লাগে মাঝে মাঝে। অথবা জালের মতন? কী অদ্ভুত এক ইন্দ্রজাল এই শব্দগুলোতে। জাল এবং জঞ্জাল, শুধু ‘জন’ মিলেই দু’টি আলাদা শব্দ করে দিলো, আলাদা অনুভূতি, আলাদা সম্পর্ক। মানুষও অনেক সময় জালের মতন, শুধুই আটকে থাকতে চায় মোহে আর মায়ায়। আবার ক্ষুদ্র কিছু ‘জন’ মিলেই তাকে হয়ত জঞ্জালে পরিণত করে দেয়।
প্রায়ই খোলা আকাশের দিকে চেয়ে ভাবি, এভাবে আকাশ দেখতাম ছেলেবেলাতেও, হয়ত অনেক বছর আগেও। অথচ সেই আকাশ আর এই আকাশ বদলে গেছে কতই। বুকের ভাষা, চোখের ভাষা, হৃদয়ের অনুভূতি বদলে গেছে অহর্নিশ। কে মাপতে পারে তা?
জানি থাকবো না একদিন। তবু এত মায়ায় জড়ানো, এত ঘৃণায় জড়ানো এই জীবনের প্রতি অনিচ্ছাকৃত ভাবেও তাকিয়ে অবাক লাগে। কত না বলা শব্দ, কত উত্তর না জানা প্রশ্নগুলো জমে থাকবে আইসবার্গ এর মতো মৃত্যুবধি। আচ্ছা, যদি আমি নাই হয়ে যাই? এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে, সত্যিই কি কেউ মনে রাখবে আমায়? জানি কেউ মনে রাখবে না। তবে সবসময় সবকিছু জানতে নেই।
মাঝে মাঝে কিছু আড়ালে থাকাই ভালো।
লেখাটা ভালো হয়েছে।
ধন্যবাদ কবি দিদি ভাই।
না সত্যিই সুন্দর বলেছেন দিদি
খুশি হলাম কবিবাবু।
'শব্দেরা যেমন অদ্ভুত, এলোমেলো কিংবা অচেনা। রং গুলোও তেমন। কারো হয়ত বৈচিত্র্যে জীবন ভরে যায়। তবে, সেগুলো নেহাতই ক্ষণস্থায়ী। সমস্ত কিছু কে বুঝতে চায়? সমস্ত কিছু বুঝতে পারেই বা ক’জন? কেউ পারেনা। পৃথিবীতে খুব কমই বুঝতে পারে বা বুঝতে চায়। অদেখা একটা পৃথিবীতে বাস এই পৃথিবীর মাঝেই।' __ অপূর্ব প্রিয় শব্দবন্ধু।
এভাবে আকাশ দেখতাম ছেলেবেলাতেও, হয়ত অনেক বছর আগেও। অথচ সেই আকাশ আর এই আকাশ বদলে গেছে কতই। বুকের ভাষা, চোখের ভাষা, হৃদয়ের অনুভূতি বদলে গেছে অহর্নিশ। কে মাপতে পারে তা?
* এভাবে সুন্দর করে চিত্রণ ক্ষমতা দিদি ভাই আপনার কাছেই দেখলুম… বিমোহিত না হয়ে পারি! শুভ কামনা নিরন্তর।
যাপিত জীবনের post mortem report তৈরী করেছেন অসাধারন এক আলপনায়। আপনার অনুভূতি, পর্যবেক্ষণ জীবনে সাগরের অত্যন্ত গহীন থেকে এসেছে।
আশা করি এমনি করেই লেখনী চলবে আর আমরা তা জানব।

সাবলীল এবং সুন্দর লেখা